ইয়াসিন আরাফাত
দিনটি ছিল ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার। ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রে যে হামলাটি চালানো হয়, সেটি ছিল শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ একটি হামলা। সেই হামলারই ২০ বছর আজ। শুধু মার্কিনদের জন্যই নয়, পুরো বিশ্ব চমকে গিয়েছিল সে ঘটনার ভয়াবহতায়। এভাবে হামলা চালানো যায়, তা কেউ এর আগে ভাবতেও পারেনি। আর এর মধ্য দিয়েই বিশ্ব দেখেছিল আত্মঘাতী হামলার এক বড় উত্থান।
হামলায় ব্যবহৃত তিনটি যাত্রীবাহী জেট বিমান ছিনতাই করে সেগুলো দিয়ে আঘাত হানা হয় নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে। যে ঘটনায় নিহত হয় ২ হাজার ৯৯৬ মানুষ। হামলার উদ্দেশ্যে ছিনতাই করা অন্য উড়োজাহাজটি মার্কিন পক্ষ ধ্বংস করতে পেরেছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ছিনতাইকারীরা ছোট ছোট দলে পূর্ব আমেরিকার আকাশপথ দিয়ে ওড়া চারটি উড়োজাহাজ একই সঙ্গে ছিনতাই করে। তারপর সেগুলো তারা ব্যবহার করে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আঘাত হানার জন্য বিশাল ও নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে।
সেদিন দুটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার ভবনে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৮টা ৪৬ মিনিটে প্রথম উড়োজাহাজটি আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে এবং দ্বিতীয়টি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত করা হয় এর অল্পক্ষণ পর, সকাল ৯টা ৩ মিনিটে। দুটি ভবনেই আগুন ধরে যায়। ভবন দুটির উপরতলায় মানুষজন আটকা পড়ে যায়। শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। দুটি ভবনই ছিল ১১০ তলা। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে দুটি ভবনই বিশাল ধুলার ঝড় তুলে মাটিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে পড়ে।
তৃতীয় উড়োজাহাজটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির উপকণ্ঠে ছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের বিশাল এই সদর দপ্তর পেন্টাগন ভবন। এর পর, সকাল ১০টা ৩ মিনিটে চতুর্থ উড়োজাহাজটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভানিয়ার এক মাঠে। ছিনতাই হওয়া চতুর্থ উড়োজাহাজের যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পর সেটি পেনসিলভানিয়ায় বিধ্বস্ত হয়। ধারণা করা হয়, ছিনতাইকারীরা চতুর্থ উড়োজাহাজটি দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল ভবনের ওপর আঘাত হানতে চেয়েছিল।
ছিনতাইকারী ছিল মোট ১৯ জন। এদের মধ্যে তিনটি দলে ছিল পাঁচজন করে, যারা উড়োজাহাজ হামলা চালায় টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে। আর যে উড়োজাহাজ পেনসিলভানিয়ায় ভেঙে পড়ে, তাতে ছিনতাইকারী দলে ছিল চারজন। প্রত্যেক দলে একজন ছিনতাইকারীর পাইলটের প্রশিক্ষণ ছিল। এই ছিনতাইকারীরা তাদের পাইলটের ট্রেনিং নেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইং স্কুলে। পনেরোজন ছিনতাইকারী ছিলেন সৌদি আরবের। দুজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের, একজন মিসরের ও একজন লেবাননের।
৯/১১ হামলায় সব মিলিয়ে মারা গিয়েছিল ২,৯৭৭ জন। এই হিসাবের মধ্যে ১৯ জন ছিনতাইকারী অন্তর্ভুক্ত নেই। নিহতদের বেশির ভাগই ছিল নিউইয়র্কের লোক। সর্বকনিষ্ঠ নিহতের বয়স ছিল দুই বছর। নাম ক্রিস্টিন লি হ্যানসন। তার বাবা-মায়ের সঙ্গে সে একটি উড়োজাহাজের যাত্রী ছিল। নিহত সর্বজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির নাম রবার্ট নর্টন। তাঁর বয়স ছিল ৮২। তিনি ছিলেন অন্য আরেকটি উড়োজাহাজে এবং তাঁর স্ত্রী জ্যাকুলিনের সঙ্গে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।
প্রথম উড়োজাহাজটি যখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত করে, তখন ভেতরে আনুমানিক ১৭ হাজার ৪০০ জন লোক ছিল। নর্থ টাওয়ারের যে অংশে উড়োজাহাজ আঘাত করে, তার ওপরের কোনো তলার মানুষই প্রাণে বাঁচেনি। তবে সাউথ টাওয়ারে যেখানে আঘাত করে, তার ওপরের অংশ থেকে ১৮ জন প্রাণে বেঁচেছিল। হতাহতের মধ্যে ৭৭টি দেশের মানুষ ছিলেন।
নিউইয়র্ক শহরে যারা প্রথম ঘটনাস্থলে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় এগিয়ে যান, তাঁদের মধ্যে মারা যান ৪৪১ জন। দমকলকর্মীদের অনেকে বিষাক্ত বর্জ্যের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১১ সেপ্টেম্বরের ওই হামলার পর থেকে সারা বিশ্বে আকাশ ভ্রমণের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
নিউইয়র্কে হামলার স্থান, যেখানে টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেই ‘গ্রাউন্ড জিরো’র ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করতে সময় লেগেছিল আট মাসেরও বেশি। ওই স্থানে এখন তৈরি হয়েছে একটি জাদুঘর এবং একটি স্মৃতিসৌধ। ভবনগুলো আবার নির্মিত হয়েছে, তবে ভিন্ন নকশায়। সেখানে মধ্যমণি হিসেবে নির্মিত হয়েছে ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা ‘ফ্রিডম টাওয়ার’—যা উচ্চতায় আগের নর্থ টাওয়ারের চেয়েও বেশি। নর্থ টাওয়ারের উচ্চতা ছিল ১,৩৬৮ ফুট। আর নতুন ফ্রিডম টাওয়ার ১,৭৭৬ ফুট উঁচু। পেন্টাগন পুনর্নির্মাণে সময় লেগেছিল এক বছরের কিছু কম। ২০০২ সালের আগস্টের মধ্যে পেন্টাগনের কর্মচারীরা আবার তাঁদের কর্মস্থলে ফিরে যান।
উগ্র মতাদর্শের ইসলামপন্থী সংগঠন আল-কায়েদা আফগানিস্তান থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীন এই গোষ্ঠী মুসলিম বিশ্বে সংঘাত সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তাঁর মিত্র দেশগুলোকে। ওই হামলার এক মাসেরও কম সময় পর প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আফগানিস্তান আক্রমণ করেন আল-কায়েদাকে নিশ্চিহ্ন করতে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই অভিযানে যোগ দেয় আন্তর্জাতিক মিত্র জোট। ক্ষমতাচ্যুত করা হয় তৎকালীন আফগানিস্তানের তৎকালীন তালেবান সরকারকে। যুদ্ধ শুরুর কয়েক বছর পর ২০১১ সালে মার্কিন সৈন্যরা অবশেষে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পায় প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে এবং তাঁকে হত্যা করে।
নাইন-ইলেভেন হামলার অভিযুক্ত পরিকল্পনাকারী, খালিদ শেখ মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয় পাকিস্তানে ২০০৩ সালে। এর পর থেকে তাঁকে গুয়ানতানামো বে’র বন্দীশিবিরে যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে আটক করে রাখা হয়। যুক্তরাষ্ট্র স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার থেকে খালিদ শেখ মোহাম্মদসহ পাঁচজনের বিচার আবার শুরু হয়েছে। সবশেষ ২০১৯ সালের শুরুর দিকে ৯/১১ হামলার অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এই বিচার প্রায় ১৭ মাস ধরে স্থগিত করে রাখা হয়।
প্রায় ২০ বছর পর মার্কিন সৈন্য আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছে। দেশটির ক্ষমতায় আবারও এসেছে তালেবান। আল-কায়েদা এখনো আছে। আফ্রিকায় সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোতে আল-কায়েদা সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী। তবে আফগানিস্তানের ভেতরেও এখন আল-কায়েদার সদস্য রয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন—উগ্র এই গোষ্ঠী আবার আফগানিস্তানে তাদের ঘাঁটি গাড়তে সচেষ্ট হবে।
আরও পড়ুন:
দিনটি ছিল ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার। ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রে যে হামলাটি চালানো হয়, সেটি ছিল শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ একটি হামলা। সেই হামলারই ২০ বছর আজ। শুধু মার্কিনদের জন্যই নয়, পুরো বিশ্ব চমকে গিয়েছিল সে ঘটনার ভয়াবহতায়। এভাবে হামলা চালানো যায়, তা কেউ এর আগে ভাবতেও পারেনি। আর এর মধ্য দিয়েই বিশ্ব দেখেছিল আত্মঘাতী হামলার এক বড় উত্থান।
হামলায় ব্যবহৃত তিনটি যাত্রীবাহী জেট বিমান ছিনতাই করে সেগুলো দিয়ে আঘাত হানা হয় নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে। যে ঘটনায় নিহত হয় ২ হাজার ৯৯৬ মানুষ। হামলার উদ্দেশ্যে ছিনতাই করা অন্য উড়োজাহাজটি মার্কিন পক্ষ ধ্বংস করতে পেরেছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ছিনতাইকারীরা ছোট ছোট দলে পূর্ব আমেরিকার আকাশপথ দিয়ে ওড়া চারটি উড়োজাহাজ একই সঙ্গে ছিনতাই করে। তারপর সেগুলো তারা ব্যবহার করে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আঘাত হানার জন্য বিশাল ও নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে।
সেদিন দুটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার ভবনে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৮টা ৪৬ মিনিটে প্রথম উড়োজাহাজটি আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে এবং দ্বিতীয়টি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত করা হয় এর অল্পক্ষণ পর, সকাল ৯টা ৩ মিনিটে। দুটি ভবনেই আগুন ধরে যায়। ভবন দুটির উপরতলায় মানুষজন আটকা পড়ে যায়। শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। দুটি ভবনই ছিল ১১০ তলা। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে দুটি ভবনই বিশাল ধুলার ঝড় তুলে মাটিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে পড়ে।
তৃতীয় উড়োজাহাজটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির উপকণ্ঠে ছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের বিশাল এই সদর দপ্তর পেন্টাগন ভবন। এর পর, সকাল ১০টা ৩ মিনিটে চতুর্থ উড়োজাহাজটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভানিয়ার এক মাঠে। ছিনতাই হওয়া চতুর্থ উড়োজাহাজের যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পর সেটি পেনসিলভানিয়ায় বিধ্বস্ত হয়। ধারণা করা হয়, ছিনতাইকারীরা চতুর্থ উড়োজাহাজটি দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল ভবনের ওপর আঘাত হানতে চেয়েছিল।
ছিনতাইকারী ছিল মোট ১৯ জন। এদের মধ্যে তিনটি দলে ছিল পাঁচজন করে, যারা উড়োজাহাজ হামলা চালায় টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে। আর যে উড়োজাহাজ পেনসিলভানিয়ায় ভেঙে পড়ে, তাতে ছিনতাইকারী দলে ছিল চারজন। প্রত্যেক দলে একজন ছিনতাইকারীর পাইলটের প্রশিক্ষণ ছিল। এই ছিনতাইকারীরা তাদের পাইলটের ট্রেনিং নেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইং স্কুলে। পনেরোজন ছিনতাইকারী ছিলেন সৌদি আরবের। দুজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের, একজন মিসরের ও একজন লেবাননের।
৯/১১ হামলায় সব মিলিয়ে মারা গিয়েছিল ২,৯৭৭ জন। এই হিসাবের মধ্যে ১৯ জন ছিনতাইকারী অন্তর্ভুক্ত নেই। নিহতদের বেশির ভাগই ছিল নিউইয়র্কের লোক। সর্বকনিষ্ঠ নিহতের বয়স ছিল দুই বছর। নাম ক্রিস্টিন লি হ্যানসন। তার বাবা-মায়ের সঙ্গে সে একটি উড়োজাহাজের যাত্রী ছিল। নিহত সর্বজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির নাম রবার্ট নর্টন। তাঁর বয়স ছিল ৮২। তিনি ছিলেন অন্য আরেকটি উড়োজাহাজে এবং তাঁর স্ত্রী জ্যাকুলিনের সঙ্গে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।
প্রথম উড়োজাহাজটি যখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত করে, তখন ভেতরে আনুমানিক ১৭ হাজার ৪০০ জন লোক ছিল। নর্থ টাওয়ারের যে অংশে উড়োজাহাজ আঘাত করে, তার ওপরের কোনো তলার মানুষই প্রাণে বাঁচেনি। তবে সাউথ টাওয়ারে যেখানে আঘাত করে, তার ওপরের অংশ থেকে ১৮ জন প্রাণে বেঁচেছিল। হতাহতের মধ্যে ৭৭টি দেশের মানুষ ছিলেন।
নিউইয়র্ক শহরে যারা প্রথম ঘটনাস্থলে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় এগিয়ে যান, তাঁদের মধ্যে মারা যান ৪৪১ জন। দমকলকর্মীদের অনেকে বিষাক্ত বর্জ্যের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১১ সেপ্টেম্বরের ওই হামলার পর থেকে সারা বিশ্বে আকাশ ভ্রমণের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
নিউইয়র্কে হামলার স্থান, যেখানে টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেই ‘গ্রাউন্ড জিরো’র ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করতে সময় লেগেছিল আট মাসেরও বেশি। ওই স্থানে এখন তৈরি হয়েছে একটি জাদুঘর এবং একটি স্মৃতিসৌধ। ভবনগুলো আবার নির্মিত হয়েছে, তবে ভিন্ন নকশায়। সেখানে মধ্যমণি হিসেবে নির্মিত হয়েছে ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা ‘ফ্রিডম টাওয়ার’—যা উচ্চতায় আগের নর্থ টাওয়ারের চেয়েও বেশি। নর্থ টাওয়ারের উচ্চতা ছিল ১,৩৬৮ ফুট। আর নতুন ফ্রিডম টাওয়ার ১,৭৭৬ ফুট উঁচু। পেন্টাগন পুনর্নির্মাণে সময় লেগেছিল এক বছরের কিছু কম। ২০০২ সালের আগস্টের মধ্যে পেন্টাগনের কর্মচারীরা আবার তাঁদের কর্মস্থলে ফিরে যান।
উগ্র মতাদর্শের ইসলামপন্থী সংগঠন আল-কায়েদা আফগানিস্তান থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীন এই গোষ্ঠী মুসলিম বিশ্বে সংঘাত সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তাঁর মিত্র দেশগুলোকে। ওই হামলার এক মাসেরও কম সময় পর প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আফগানিস্তান আক্রমণ করেন আল-কায়েদাকে নিশ্চিহ্ন করতে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই অভিযানে যোগ দেয় আন্তর্জাতিক মিত্র জোট। ক্ষমতাচ্যুত করা হয় তৎকালীন আফগানিস্তানের তৎকালীন তালেবান সরকারকে। যুদ্ধ শুরুর কয়েক বছর পর ২০১১ সালে মার্কিন সৈন্যরা অবশেষে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পায় প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে এবং তাঁকে হত্যা করে।
নাইন-ইলেভেন হামলার অভিযুক্ত পরিকল্পনাকারী, খালিদ শেখ মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয় পাকিস্তানে ২০০৩ সালে। এর পর থেকে তাঁকে গুয়ানতানামো বে’র বন্দীশিবিরে যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে আটক করে রাখা হয়। যুক্তরাষ্ট্র স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার থেকে খালিদ শেখ মোহাম্মদসহ পাঁচজনের বিচার আবার শুরু হয়েছে। সবশেষ ২০১৯ সালের শুরুর দিকে ৯/১১ হামলার অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এই বিচার প্রায় ১৭ মাস ধরে স্থগিত করে রাখা হয়।
প্রায় ২০ বছর পর মার্কিন সৈন্য আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছে। দেশটির ক্ষমতায় আবারও এসেছে তালেবান। আল-কায়েদা এখনো আছে। আফ্রিকায় সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোতে আল-কায়েদা সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী। তবে আফগানিস্তানের ভেতরেও এখন আল-কায়েদার সদস্য রয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন—উগ্র এই গোষ্ঠী আবার আফগানিস্তানে তাদের ঘাঁটি গাড়তে সচেষ্ট হবে।
আরও পড়ুন:
একজন বাক্প্রতিবন্ধী তরুণকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সৎকারের জন্য চিতায় ওঠানোর ঠিক আগমুহূর্তে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন রোহিতাশ! দুপুর ২টা নাগাদ চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফ্রিজিং করে রাখা হয়।
৪ ঘণ্টা আগেউত্তর কোরিয়াকে তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সৈন্য সহায়তা নিচ্ছে রাশিয়া। আজ শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
৪ ঘণ্টা আগেইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ইসরায়েলের ‘‘শেষ এবং রাজনৈতিক মৃত্যু’ হিসাবে অভিহিত করেছে ইরান।
৫ ঘণ্টা আগেভারতের মণিপুর রাজ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সেখানে আরও ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ওই রাজ্যটিতে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোট ২৮৮টি কোম্পানি মোতায়েন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
৫ ঘণ্টা আগে