ফ্যাক্টচেকাররাও রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট, বাদ দিল ফেসবুক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ০৩
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০১: ২১
Thumbnail image
মার্ক জাকারবার্গ। ছবি: সংগৃহীত

ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে স্বাধীন ফ্যাক্টচেকার ব্যবহারের পরিবর্তে নতুন ‘কমিউনিটি নোটস’ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে মেটা। এর মাধ্যমে কোনো পোস্টের সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব মূলত ব্যবহারকারীদের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার একটি ব্লগ পোস্ট এবং ভিডিও বার্তায় মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, ‘তৃতীয় পক্ষের মডারেটররা খুব বেশি রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন। তাই আমাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে।’

এই বিষয়ে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের নতুন প্রধান জোয়েল ক্যাপলান বলেছেন—তৃতীয় পক্ষের মডারেটরদের ওপর নির্ভর করা একটি সৎ উদ্যোগ ছিল। তবে এটি প্রায় সময়ই ব্যবহারকারীদের সেন্সরশিপের দিকে পরিচালিত করত।

এদিকে অনলাইনে ঘৃণা এবং ভুল তথ্য প্রতিরোধে কাজ করা সংস্থাগুলো মেটার নতুন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে গ্লোবাল উইটনেসের অ্যাভা লি বলেছেন, ‘এই ঘোষণা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করার একটি কৌশলমাত্র।’

লি আরও বলেন, ‘সেন্সরশিপ থেকে বিরত থাকার দাবি আসলে নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে ঘৃণা এবং ভুল তথ্য ছড়ানোর দায় এড়ানোর একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ।’

মেটার বর্তমান তৃতীয় পক্ষের ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রামটি ২০১৬ সালে চালু হয়েছিল। এর মাধ্যমে পোস্টগুলোর সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য স্বাধীন কতগুলো ফ্যাক্টচেকিং সংগঠনের কাছে পাঠানো হতো। এভাবে ভুল বা বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত পোস্টগুলোতে সতর্কতা লেবেল যুক্ত করা হতো এবং সেগুলো নিউজ ফিড থেকে সরিয়ে দেওয়া হতো।

বিবিসি জানিয়েছে, মেটার নতুন কমিউনিটি নোটস পদ্ধতিটি প্রাথমিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে চালু হবে। এই ব্যবস্থায় বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ব্যবহারকারীরা পোস্টের ওপর প্রাসঙ্গিক মন্তব্য বা ব্যাখ্যা যুক্ত করতে পারবেন।

মেটার ব্লগ পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন নীতিমালা রাজনৈতিক আলোচনার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করবে। বিশেষ করে, অভিবাসন, লৈঙ্গিক পরিচয় এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আগের বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে।

এই পরিবর্তনগুলো এমন এক সময়ে আসছে, যখন প্রযুক্তি সংস্থাগুলো এবং তাদের শীর্ষ নির্বাহীরা ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিষেকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ট্রাম্প অতীতে মেটার সমালোচনা করে ফেসবুককে ‘জনগণের শত্রু’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জাকারবার্গ ও ট্রাম্পের সম্পর্ক উন্নত হয়েছে।

সম্প্রতি স্যার নিক ক্লেগকে প্রতিস্থাপন করে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান হিসেবে জোয়েল ক্যাপলানের পদোন্নতিকে অনেকে মেটার রাজনৈতিক অগ্রাধিকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।

সেন্ট জনস ইউনিভার্সিটির আইনের সহযোগী অধ্যাপক কেট ক্লনিক বলেন, ‘এটি গত কয়েক বছরে ক্রমবর্ধমান একটি প্রবণতার প্রতিফলন। বিশেষ করে, এক্স-এর মালিকানায় ইলন মাস্কের আসার পর থেকে এটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’

প্ল্যাটফর্মগুলো আগে যেখানে নিরাপত্তা ও বিশ্বাস স্থাপনের জন্য চাপের মুখে ছিল, এখন তারা সম্পূর্ণ বিপরীত পথে ফিরে যাচ্ছে, তিনি যোগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত