অপ্রত্যাশিতভাবে নতুন আরেকটি মায়া শহর আবিষ্কৃত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০০: ৩৮
নতুন শহরটির কোনো ছবি নেই, তবে এটি কাছাকাছি ক্যালাকমুল শহরের পিরামিড মন্দিরের মতোই ছিল। ছবি: বিবিসি

মেক্সিকোর জঙ্গলের নিচে চাপা পড়ে থাকা বিশাল একটি মায়া শহর আবিষ্কৃত হয়েছে। মঙ্গলবার বিবিসি জানিয়েছে, একটি প্রত্নতাত্ত্বিক দল মেক্সিকোর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ক্যাম্পেচে রাজ্যে পিরামিড, খেলাধুলার মাঠ, বিভিন্ন স্থানের মধ্যে আন্তঃ সংযোগকারী কিছু পথ এবং উন্মুক্ত একাধিক চত্বর খুঁজে পেয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক ধরনের লেজার জরিপের সাহায্যে ওই শহরটির অস্তিত্ব খুঁজে পায় দলটি। পরে তাঁরা কাছাকাছি একটি লেকের নামানুসারে এই শহরের নামকরণ করেছেন ভ্যালেরিয়ানা। তাঁদের বিশ্বাস, ঘনত্বের দিক থেকে নতুন শহরটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম মায়া সাইট ক্যালাকমুলের পরই দ্বিতীয় বৃহত্তম।

বিবিসি জানিয়েছে, লুক অল্ড-থমাস নামে একজন প্রত্নতাত্ত্বিক ইন্টারনেটে ডেটা ব্রাউজ করার সময় অপ্রত্যাশিতভাবে শহরটির সন্ধান পান। লিডার প্রযুক্তির মাধ্যমে নিচে থাকা বস্তুর ম্যাপ তৈরি করে তিনি ওই বিশাল প্রাচীন শহরের ছবি দেখতে পান।

৭৫০ থেকে ৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে শহরটিতে ৩০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের বসবাস করত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই হিসেবে ওই অঞ্চলটিতে বর্তমানে বসবাসকারী মানুষের চেয়েও প্রাচীন শহরটির মানুষের সংখ্যা ছিল বেশি।

এই গবেষণার সহ-লেখক অধ্যাপক মার্সেলো ক্যানুতো মনে করেন, শহরটি সমৃদ্ধ এবং জটিল সংস্কৃতির আবাসস্থল ছিল। তবে শহরটির পতন এবং কেন এটি পরিত্যক্ত হয়েছিল, সে সম্পর্কে নিশ্চিত নন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। তবে এই পতনের নেপথ্যে জলবায়ু পরিবর্তন একটি কারণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

নতুন আবিষ্কৃত শহর ভ্যালেরিয়ানাকে দেখে মনে হচ্ছে, এটি কোনো রাজধানী কিংবা গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। শহরটির আয়তন ছিল প্রায় ১৬.৬ বর্গ কিলোমিটার এবং এর দুটি প্রধান কেন্দ্র ছিল। কেন্দ্রের ২ কিলোমিটারের মধ্যে বড় বড় ভবনও ছিল। ভবনগুলোতে ঘন বসতি ছিল এবং এগুলো সড়কের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল।

শহরটিতে দুটি উন্মুক্ত চত্বরও ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে মায়া সভ্যতার লোকজন উপাসনা করত। এ ছাড়াও এই শহরে একটি আদালত ব্যবস্থাও ছিল। প্রমাণ পাওয়া গেছে জলাধার থাকারও।

অল্ড-থমাস এবং অধ্যাপক মার্সেলো ক্যানুতো জঙ্গলে তিনটি আলাদা সাইট জরিপ করে বিভিন্ন আকারের ৬ হাজার ৭৬৪টি ভবন আবিষ্কার করেছেন।

এই আবিষ্কারে বিষয়ে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজের অধ্যাপক এলিজাবেথ গ্রাহাম বলেন, ‘মায়ারা জটিল শহর বা নগরে বসবাস করত; বিচ্ছিন্ন গ্রামে নয় এটি তার প্রমাণ।’

প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, ৮০০ খ্রিষ্টাব্দের পর যখন মায়া সভ্যতা ধসে পড়তে শুরু করে তখন আংশিকভাবে অত্যধিক জনসংখ্যার কারণে এবং জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় অক্ষমতার কারণে শহরটির পতন ঘটেছিল।

অল্ড-থমাস মনে করেন, শহরটি খরাকবলিত হলে এর পুরো ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল এবং মানুষ দূর দুরান্তে পাড়ি জমিয়েছিল।

এ ছাড়া যুদ্ধ ও ষোড়শ শতকে স্প্যানিশ আক্রমণকারীরা ওই অঞ্চলগুলো দখলে নিলে মায়া শহরগুলোর পতন অনিবার্য হয়ে উঠেছিল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত