ফখরুল ইসলাম
ঠিক ২০ বছর আগে টেলিভিশনের পর্দায় বিশ্বজুড়ে যে নিষ্ঠুর দৃশ্য ভেসে উঠেছিল, সেই স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বুকে সন্ত্রাসী হামলার পর প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ কথিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ৷সেই যুদ্ধের শেষ কবে হবে, দুই দশক পরে এসেও নিশ্চিত নয় বিশ্ববাসী। যদিও এরই মধ্যে ন্যাটো সৈন্যরা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু কবিতায় আছে—‘চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়’।
৯/১১ হামলার দুই দশক পর এসে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, দিনটির এক ঐতিহাসিক মাত্রা রয়েছে। ৯/১১ এর জেরেই সারা বিশ্বে নতুন এক যুগের সূচনা হয়েছে ৷ পাল্টে গেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের রাজনীতির চরিত্র ৷
টুইন টাওয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরারষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী কথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে বিশ্ব মোটেই নিরাপদ হয়ে ওঠেনি। বরং হিতে বিপরীতটাই ঘটেছে ৷ সারা বিশ্বের অনেক দেশেই তালেবানের মতো অনেকগুলো গোষ্ঠী মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ৷ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে ওসামা বিন লাদেনসহ তাঁর অনেক ভক্ত মারা গেছে ঠিকই। কিন্তু অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে তাঁর ভক্ত সংখ্যাও বেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে তারা সংগঠিত হয়ে দেশে দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। জবাবে সন্ত্রাস মোকাবিলায় ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা অভিযান শুরু করে। তৈরি হয় যুদ্ধাবস্থা। জঙ্গি হামলা নতুন মাত্রা লাভ করে। ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ শিরোনামে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিশ্ব রাজনীতি। মারণাস্ত্রের ব্যবহারে আল-কায়েদাকে পুরোপুরি দুর্বল করা সম্ভব হলেও মধ্যপ্রাচ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এতে দিন দিন বিশ্ব নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
৯/১১ হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের পাল্টা জবাবে, ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ার পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্গীন। মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা সমাধানেরও কোনো লক্ষণ নেই ৷আরব বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা আজ হাওয়ায় ভাসমান।
লাভ কী হয়েছে?
যে ৯/১১ হামালার জেরে ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, তাতে ২ হাজার ৯৯৬ জন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। আহত হন ৬ হাজারের বেশি মানুষ এবং ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যমানের অবকাঠামো ও সম্পদ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুধু আফগানিস্তানে দুই দশকে শুধু মার্কিন সমর্থিত আফগান বাহিনীরই ৭০ হাজার লোক নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিহত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার সেনা। আহত হয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি। বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত অর্ধ-কোটি মানুষ। তালেবানসহ বেসামরিক মানুষের নিহত হওয়ার পরিসংখ্যানটি এ থেকেই বোঝা সম্ভব। এ ছাড়া দুই দশকের এই যুদ্ধে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি শুধু আফগানিস্তানের হিসাব। আর যদি পুরো সময়ের সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের হিসাব ধরা হয়, তবে এর পরিমাণ ৮ লাখ কোটি ডলারের কম নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে ব্রাউন ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায়।
ইরাক যুদ্ধে ২০০৩ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৪ হাজার ৫৮৬ জন সেনা নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মিলিটারি টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছে ৮৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ২০১৪ সাল থেকে আইএস নির্মূলের খরচও ধরা হয়েছে।
এ ছাড়া বিবিসির এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মার্কিন বাহিনীর হাতে লাখের ওপরে ইরাকি মারা গেছেন। চিরতরে পঙ্গু হয়েছে হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু। এদিকে সিরিয়াসহ অন্যসব দেশে চলা যুদ্ধের হতাহত এবং খরচের হিসাব বাদই রয়েছে। এককথায় বলতে গেলে ৯/১১ হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের পাল্টা জবাবে দুই দশক ধরে চলা যুদ্ধে বিশ্বের লাভ হয়েছে কোটি কোটি মানুষের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব, বাস্তুচ্যুত ও ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের অপব্যয়। এর বাইরে যদি কারও লাভ থেকে থাকে, তবে তা অস্ত্র ব্যবসায়ীদের।
আরও পড়ুন:
ঠিক ২০ বছর আগে টেলিভিশনের পর্দায় বিশ্বজুড়ে যে নিষ্ঠুর দৃশ্য ভেসে উঠেছিল, সেই স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বুকে সন্ত্রাসী হামলার পর প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ কথিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ৷সেই যুদ্ধের শেষ কবে হবে, দুই দশক পরে এসেও নিশ্চিত নয় বিশ্ববাসী। যদিও এরই মধ্যে ন্যাটো সৈন্যরা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু কবিতায় আছে—‘চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়’।
৯/১১ হামলার দুই দশক পর এসে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, দিনটির এক ঐতিহাসিক মাত্রা রয়েছে। ৯/১১ এর জেরেই সারা বিশ্বে নতুন এক যুগের সূচনা হয়েছে ৷ পাল্টে গেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের রাজনীতির চরিত্র ৷
টুইন টাওয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যুক্তরারষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী কথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে বিশ্ব মোটেই নিরাপদ হয়ে ওঠেনি। বরং হিতে বিপরীতটাই ঘটেছে ৷ সারা বিশ্বের অনেক দেশেই তালেবানের মতো অনেকগুলো গোষ্ঠী মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ৷ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে ওসামা বিন লাদেনসহ তাঁর অনেক ভক্ত মারা গেছে ঠিকই। কিন্তু অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে তাঁর ভক্ত সংখ্যাও বেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে তারা সংগঠিত হয়ে দেশে দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। জবাবে সন্ত্রাস মোকাবিলায় ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা অভিযান শুরু করে। তৈরি হয় যুদ্ধাবস্থা। জঙ্গি হামলা নতুন মাত্রা লাভ করে। ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ শিরোনামে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিশ্ব রাজনীতি। মারণাস্ত্রের ব্যবহারে আল-কায়েদাকে পুরোপুরি দুর্বল করা সম্ভব হলেও মধ্যপ্রাচ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এতে দিন দিন বিশ্ব নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
৯/১১ হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের পাল্টা জবাবে, ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ার পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্গীন। মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা সমাধানেরও কোনো লক্ষণ নেই ৷আরব বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা আজ হাওয়ায় ভাসমান।
লাভ কী হয়েছে?
যে ৯/১১ হামালার জেরে ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, তাতে ২ হাজার ৯৯৬ জন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। আহত হন ৬ হাজারের বেশি মানুষ এবং ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যমানের অবকাঠামো ও সম্পদ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুধু আফগানিস্তানে দুই দশকে শুধু মার্কিন সমর্থিত আফগান বাহিনীরই ৭০ হাজার লোক নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিহত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার সেনা। আহত হয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি। বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত অর্ধ-কোটি মানুষ। তালেবানসহ বেসামরিক মানুষের নিহত হওয়ার পরিসংখ্যানটি এ থেকেই বোঝা সম্ভব। এ ছাড়া দুই দশকের এই যুদ্ধে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি শুধু আফগানিস্তানের হিসাব। আর যদি পুরো সময়ের সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের হিসাব ধরা হয়, তবে এর পরিমাণ ৮ লাখ কোটি ডলারের কম নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে ব্রাউন ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায়।
ইরাক যুদ্ধে ২০০৩ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৪ হাজার ৫৮৬ জন সেনা নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মিলিটারি টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছে ৮৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ২০১৪ সাল থেকে আইএস নির্মূলের খরচও ধরা হয়েছে।
এ ছাড়া বিবিসির এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মার্কিন বাহিনীর হাতে লাখের ওপরে ইরাকি মারা গেছেন। চিরতরে পঙ্গু হয়েছে হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু। এদিকে সিরিয়াসহ অন্যসব দেশে চলা যুদ্ধের হতাহত এবং খরচের হিসাব বাদই রয়েছে। এককথায় বলতে গেলে ৯/১১ হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের পাল্টা জবাবে দুই দশক ধরে চলা যুদ্ধে বিশ্বের লাভ হয়েছে কোটি কোটি মানুষের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব, বাস্তুচ্যুত ও ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের অপব্যয়। এর বাইরে যদি কারও লাভ থেকে থাকে, তবে তা অস্ত্র ব্যবসায়ীদের।
আরও পড়ুন:
একজন বাক্প্রতিবন্ধী তরুণকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সৎকারের জন্য চিতায় ওঠানোর ঠিক আগমুহূর্তে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন রোহিতাশ! দুপুর ২টা নাগাদ চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফ্রিজিং করে রাখা হয়।
৩ ঘণ্টা আগেউত্তর কোরিয়াকে তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সৈন্য সহায়তা নিচ্ছে রাশিয়া। আজ শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
৪ ঘণ্টা আগেইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ইসরায়েলের ‘‘শেষ এবং রাজনৈতিক মৃত্যু’ হিসাবে অভিহিত করেছে ইরান।
৪ ঘণ্টা আগেভারতের মণিপুর রাজ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সেখানে আরও ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ওই রাজ্যটিতে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোট ২৮৮টি কোম্পানি মোতায়েন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
৫ ঘণ্টা আগে