হোয়াইট হাউস নিয়ে ৮ তথ্য

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৫৭
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ২৩
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন এবং অফিস দুটিই হোয়াইট হাউস। ছবি: ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থাৎ আবারও তাঁর ঠিকানা হতে যাচ্ছে হোয়াইট হাউসে। এই সুযোগে চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক হোয়াইট হাউস সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য—যা না জানলেই নয়।

জর্জ ওয়াশিংটন হোয়াইট হাউসের চূড়ান্ত নকশা অনুমোদন করলেও এখানে থাকার সুযোগ হয়নি তাঁর। ছবি: উইকিপিডিয়া
জর্জ ওয়াশিংটন হোয়াইট হাউসের চূড়ান্ত নকশা অনুমোদন করলেও এখানে থাকার সুযোগ হয়নি তাঁর। ছবি: উইকিপিডিয়া

হোয়াইট হাউসে থাকেননি জর্জ ওয়াশিংটন

১৭৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন যে জায়গায় হোয়াইট হাউস তৈরি হবে সেটি নির্বাচনের পাশাপাশি এর চূড়ান্ত নকশা অনুমোদন করেন। ১৭৯২ সালের ১৩ অক্টোবর ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় এবং শুরু হয় নির্মাণকাজ। তবে জর্জ ওয়াশিংটন, যার প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ শেষ হয় ১৭৯৭ সালে এবং মারা যান ১৭৯৯ সালে, কখনো এখানে বসবাসের সুযোগ পাননি। প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জন অ্যাডামস ভবনটিতে বাস করা শুরু করেন ১৭৮০ সালে। অথচ মজার ঘটনা হোয়াইট হাউস যে শহরে অবস্থিত তার নামই জর্জ ওয়াশিংটনের নামে।

ফিলাডেলফিয়া শহর কর্তৃপক্ষ তার নিজস্ব ভবন তৈরি করেছিল প্রেসিডেন্টের জন্য।  ছবি: উইকিপিডিয়া
ফিলাডেলফিয়া শহর কর্তৃপক্ষ তার নিজস্ব ভবন তৈরি করেছিল প্রেসিডেন্টের জন্য। ছবি: উইকিপিডিয়া

হোয়াইট হাউসের নিজেদের সংস্করণ তৈরি করে আরেকটি শহরে

নতুন শহর ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদোপম দালানটি তৈরি হবে এতে মোটেই খুশি ছিল না ফিলাডেলফিয়া। ১৭৯০-র দশকে জর্জ ওয়াশিংটন এবং অন্যদের ফিলাডেলফিয়াতে থাকার জন্য প্রলুব্ধ করার উপায় হিসেবে শহরটি তার নিজস্ব প্রাসাদ তৈরি করেছিল প্রেসিডেন্টের জন্য। তখন অস্থায়ী রাজধানী ছিল শহরটি। তবে ওয়াশিংটন সেখানে থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ফিলাডেলফিয়ার অন্য জায়গায় থাকেন।

১৯০১ সালের আগে পর্যন্ত হোয়াইট হাউস তার নাম পায়নি। ।  ছবি: উইকিপিডিয়া
১৯০১ সালের আগে পর্যন্ত হোয়াইট হাউস তার নাম পায়নি। । ছবি: উইকিপিডিয়া

১৯০১ সালের আগে পর্যন্ত হোয়াইট হাউস তার নাম পায়নি

১৮০০ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের অফিশিয়াল বাসভবন এটি। তবে ১৯০১ সালে থিয়োডর রুজভেল্ট ভবনটির এই নাম ব্যবহার করার আগে হোয়াইট হাউস নাম পায়নি এটি সরকারিভাবে। এর আগে ‘দ্য প্রেসিডেন্টস হাউস’ বা ‘দ্য প্রেসিডেন্টস ম্যানশন’ নামে পরিচিত ছিল।

কেউ কেউ দাবি করেন, নামটি ১৮১৪ সালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরে আলোচনায় আসে, যখন ধোঁয়ায় দাগযুক্ত দেয়ালগুলোতে সাদা রং করা হয়। যদিও ঐতিহাসিকেরা বলছেন যে এই দাবি ভিত্তিহীন।

১৮১৪ সালে ব্রিটিশরা আসল হোয়াইট হাউস পুড়িয়ে দেয়। ছবি: হোয়াইট হাউস হিস্টরিকেল অ্যাসোসিয়েশন
১৮১৪ সালে ব্রিটিশরা আসল হোয়াইট হাউস পুড়িয়ে দেয়। ছবি: হোয়াইট হাউস হিস্টরিকেল অ্যাসোসিয়েশন

মূল হোয়াইট হাউসের সামান্যই অবশিষ্ট আছে

১৮১৪ সালে মার্কিন বাহিনী কানাডার পার্লামেন্টে আগুন দেওয়ার পর ব্রিটিশরা আসল হোয়াইট হাউস পুড়িয়ে দেয়। তবে জর্জ ওয়াশিংটনের বিখ্যাত গিলবার্ট স্টুয়ার্ট পেইন্টিং সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। এ ছাড়া বাইরের কিছু পাথরের দেয়ালই কেবল আগুন থেকে বেঁচে গিয়েছিল।

হোয়াইট হাউস সংস্কারের জন্য প্রয়োজন হয়  ৫৭০ গ্যালন রং। ছবি: সংগৃহীত
হোয়াইট হাউস সংস্কারের জন্য প্রয়োজন হয় ৫৭০ গ্যালন রং। ছবি: সংগৃহীত

তিন টন রং

অন্য যেকোনো ঐতিহাসিক ভবনের মতোই, হোয়াইট হাউসকে নতুনের মতো ঝকঝকে দেখাতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন। তবে গোটা ভবনটির জন্য যে পরিমাণ রং লাগে, তা চমকে দেবে যে কাউকে। পরিমাণটি ৫৭০ গ্যালন বা তিন টন। শুধু বাসভবনের অংশ রং করতে প্রয়োজন হয় ৩০০ গ্যালন রং।

ওপর থেকে দেখা হোয়াইট হাউস। ছবি: উইকিপিডিয়া
ওপর থেকে দেখা হোয়াইট হাউস। ছবি: উইকিপিডিয়া

এত্ত বড়!

হোয়াইট হাউস বিশাল একটি দালান, তাতে কারও সন্দেহ থাকার কথা নয়। কিন্তু কতটা বড়? ছয় স্তরে এতে ১৩২টি কামরা এবং ৩২টি বাথরুম আছে। এ ছাড়া দরজা আছে ৪১২টি, জানালা ১৪৭টি, ফায়ারপ্লেস ২৮টি। সিঁড়ি আছে আটটি, এলিভেটর তিনটি।

হোয়াইট হাউস ১৬৮ ফুট লম্বা এবং ৮৫ ফুট চওড়া। দক্ষিণ অংশের উচ্চতা ৭০ ফুট এবং উত্তর অংশের উচ্চতা ৬০ ফুট ৪ ইঞ্চি। ভবনটি এবং এর এলাকা ছড়িয়েছে ১৮ একর জায়গা নিয়ে।

ট্রুম্যান হোয়াইট হাউসের একটি ব্যাপক সংস্কার এবং পুনরুদ্ধার প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন। ছবি: সংগৃহীত
ট্রুম্যান হোয়াইট হাউসের একটি ব্যাপক সংস্কার এবং পুনরুদ্ধার প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন। ছবি: সংগৃহীত

বিদায় ঘণ্টা বেজেছিল

১৯৪৮ সালে ব্যবহারের অযোগ্য বলে ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল হোয়াইট হাউস। তখন প্রকৌশলীরা আবিষ্কার করেছিলেন যে এটি কাঠামোগতভাবে ভালো অবস্থায় নেই এবং ধসে পড়ার কাছাকাছি অবস্থায় আছে। প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যান হোয়াইট হাউস থেকে বের হয়ে ব্লেয়ার হাউসে বসবাস করতে বাধ্য হন।

ট্রুম্যান তখন হোয়াইট হাউসের একটি ব্যাপক সংস্কার এবং পুনরুদ্ধার প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন, যা ১৯৫২ সালে সম্পন্ন হয়েছিল।

ভূত রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকন। ছবি: উইকিপিডিয়া
ভূত রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকন। ছবি: উইকিপিডিয়া

হোয়াইট হাউস কি ভুতুড়ে

অসংখ্য প্রেসিডেন্ট, ফার্স্ট লেডি, কর্মচারী এবং অতিথি ঐতিহাসিক ভবনটির বিভিন্ন কামরায় ভূত দেখার কথা বলেছেন। অ্যাবিগেল অ্যাডামসের ভূতকে ইস্ট রুমের দিকে যেতে দেখা গেছে, যেখানে তিনি তাঁর কাপড় ঝুলিয়ে রাখতেন। ভবনটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূত আব্রাহাম লিংকন। কুলিজ, জনসন ও রুজভেল্ট প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তাঁদের স্ত্রী লিংকনের ভূত দেখার দাবি করেন। এমনকি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হোয়াইট হাউসে থাকার সময় লিংকনের ভূত দেখার কথা জানিয়েছিলেন।

রিডার্স ডাইজেস্ট ও কনস্টিটিউশন সেন্টার ডট ওরগ অবলম্বনে ইশতিয়াক হাসান

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত