কিসিঞ্জারকে ‘সবচেয়ে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী’ বলল মার্কিন গণমাধ্যম

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১৭: ০৮
Thumbnail image

যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের নিজ বাড়িতে গতকাল বুধবার মারা গেছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুর খবরের শিরোনাম ‘হেনরি কিসিঞ্জার, আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী, ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন’ করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম হাফপোস্ট। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির একসময়কার প্রতাপশালী ব্যক্তি কিসিঞ্জারের ভূমিকা ছিল। কিন্তু তিনি তাঁর সিদ্ধান্তের জন্য কখনো অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। 

হেনরি কিসিঞ্জারের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর সঙ্গে ভিয়েতনাম জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। ভিয়েতনামের যুদ্ধে দক্ষিণ ভিয়েতনামের পক্ষে যুদ্ধে নেমেছিল আমেরিকা। ভিয়েতনাম প্রসঙ্গে হেনরি কিসিঞ্জারকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়েছেন অনেক সমালোচক। 

কারণ, কিসিঞ্জার সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধ সংঘটনে যুক্তরাষ্ট্রকে পরিচালিত করেছিলেন। আর তা হলো কম্বোডিয়ায় চার বছর ধরে গোপন বোমা হামলা। এ হামলায় অগণিত বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছিলেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সঙ্গে হেনরি কিসিঞ্জার। ছবি: সংগৃহীতকম্বোডিয়ায় দেড় লাখের মতো নাগরিক নিহতের ধারণা করা হলেও কিসিঞ্জার এই সংখ্যাটিকে ৫০ হাজার বলে উল্লেখ করেন। পরে কংগ্রেসের হস্তক্ষেপে এই সিক্রেট বোম্বিং বন্ধ হয়। 

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির দায়িত্বে থাকাকালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। কিসিঞ্জার পাকিস্তানের কাছে অবৈধ অস্ত্র বিক্রির নির্দেশও দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে বাঙালির বিরুদ্ধে নৃশংস দমন-পীড়নে এই অস্ত্র ব্যবহার করেছিল পাকিস্তান। 

এ ছাড়া কিসিঞ্জার ১৯৭৩ সালে চিলিতে সামরিক অভ্যুত্থান এবং ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশীয় আগ্রাসনে সমর্থন দিয়েছিলেন তিনি। আর্জেন্টিনার সামরিক একনায়কত্বকেও সমর্থন দিয়েছিলেন কিসিঞ্জার। ফোর্ড প্রশাসনের সময় কিসিঞ্জারের নীতি আফ্রিকা, বিশেষ করে অ্যাঙ্গোলায় গৃহযুদ্ধে ইন্ধন জুগিয়েছিল। 

হেনরি কিসিঞ্জারের আট বছর মার্কিন সরকারের প্রশাসনে দায়িত্ব পালনকালে নানা রকম সংঘাত ও দমনমূলক শাসকদের সমর্থন করেছিলেন। যার ফলে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটেছিল। 

কিন্তু এসব অপকর্ম বা হত্যার জন্য কখনো অনুশোচনা প্রকাশ করেননি কিসিঞ্জার। এমনকি তাঁর জীবদ্দশায় কখনো তাঁকে এসবের জন্য কোনো মূল্য চোকাতে হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত