দেশব্যাপী চলছে তীব্র লোডশেডিং। রাজধানী ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ থাকছে না পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। মধ্যরাতে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে বেশ কয়েকবার। গ্রামের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ডলারের সংকটের কারণে কয়লা ও গ্যাসের জোগান দিতে না পারায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম থাকায় দেশব্যাপী গ্রাহকদের এই তীব্র গরমের ভেতরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে।লোডশেডিং ও ডলারের সংকট থেকে কবে নাগাদ দেশের মানুষ পরিত্রাণ পেতে পারে—এসব বিষয়ে কথা বলেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক সাজ্জাদ হোসেন।
আজকের পত্রিকা: লোডশেডিং পরিস্থিতি যেভাবে দেশের মানুষকে ভোগাচ্ছে, এই প্রেক্ষাপটে সামনের দিনগুলোতে একটু স্বস্তি দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
হাবিবুর রহমান: দেশে চলমান লোডশেডিংয়ের অবনতি হওয়ার পেছনে কারণগুলো আমাদের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিস্তারিত বলেছেন। দেশে ভয়াবহ গরম পড়ছে। গরম না কমলে চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের আশা, এই মাসের ১০-১২ তারিখের দিকে দেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে। তারপর হয়তো লোডশেডিং একটু কমতে পারে। বর্তমানে যে গরম পড়ছে, সেটা বাংলাদেশে কখনো আমরা দেখিনি। আগে আমাদের দিন ও রাতের বেলায় পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা কখনো ১৫ হাজার মেগাওয়াট হতো না। আজকে (গতকাল সোমবার) বেলা ৩টার সময় বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াট ছিল। রাতের বেলায়ও একই পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। অন্যদিকে চলমান লোডশেডিংয়ের সঙ্গে ডলার ও কয়লার সংকট তো আছেই।
আজকের পত্রিকা: পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের ন্যাশনাল লোড ডিসপাচ সেন্টারের তথ্য বলছে, গতকাল বেলা ৩টায় ১৫ হাজার ৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল মাত্র ১১ হাজার মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ৪ হাজার ৭৯ মেগাওয়াট। উৎপাদন ও চাহিদার এই বিশাল ঘাটতি মোকাবিলা করা আপনাদের জন্য দিনে দিনে কি কঠিন হয়ে যাচ্ছে?
হাবিবুর রহমান: ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় একটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে আমরা কিছু তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর পরিকল্পনা করছি। সেটার জন্য হয়তো দু-এক দিন সময় লাগবে। তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে চলমান লোডশেডিং আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে একটু উন্নতি করতে পারে। তবে দেশব্যাপী তীব্র দাবদাহ চলার কারণে আগামী ১২ তারিখ পর্যন্ত মানুষকে লোডশেডিং নিয়ে একটু কষ্ট ভোগ করতে হতে পারে।
আজকের পত্রিকা: পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের কারণে যে সমস্যা হচ্ছে তা উপশমের জন্য আপনি যে বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলছেন, সেগুলা কী?
হাবিবুর রহমান: খুলনায় যেসব ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, সেগুলো আমরা চালানোর পরিকল্পনা করছি। একই সঙ্গে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অবস্থিত এস আলম গ্রুপের এস এস পাওয়ার থেকে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পরিকল্পনা করছি। আদানীর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আরও বেশি বিদ্যুৎ আনার পরিকল্পনা করছি। বর্তমান লোডশেডিংয়ের সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের হাতে যেসব বিকল্প ব্যবস্থা আছে, সবগুলো চেষ্টা করা হচ্ছে। চেষ্টার কোনো কমতি রাখছি না। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা এখন দিনে ও রাতে একই রকম থাকলে লোডশেডিং ম্যানেজ করা খুবই কষ্টকর। দেখা যাচ্ছে, বিকেলের দিকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকছে, রাত ৮টার দিকেও একই চাহিদা থাকছে। এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার মতো আমাদের দেশে বর্তমানে জ্বালানি পণ্যের জোগান নেই। এ জন্য লোডশেডিংয়ের তীব্রতা দেখা দিচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: খুলনার ডিজেলভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে কত মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে?
হাবিবুর রহমান: খুলনায় ২২৫ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতার একটি ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী দু-এক দিনের মধ্যে পুনরায় উৎপাদন শুরু হবে। একই সঙ্গে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অবস্থিত এস আলম গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কিছু বিদ্যুৎ এলে পরিস্থিতি একটু উন্নতি হতে পারে। তবে লোডশেডিং যাবে না। লোডশেডিং চলতে থাকবে। শুধু পরিস্থিতির একটু উন্নতি হতে পারে। চলতি মাসের ১২ তারিখের দিকে বৃষ্টিবাদল শুরু হলে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।
আজকের পত্রিকা: এস আলমের এসএস পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার যে পরিকল্পনা বলছেন, তা কতটুকু বাস্তবসম্মত, যেখানে তাদের পর্যাপ্ত কয়লা নাই? একই সঙ্গে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানিও এখনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন তৈরি করতে পারেনি। অতীতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও এখন উৎপাদন বন্ধই আছে। এ ছাড়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের এখনো বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়নি।
হাবিবুর রহমান: অতীতে এস আলমের এস এস পাওয়ার থেকে ৩০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এই মুহূর্তে পূর্ণ সক্ষমতার এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে হয়তো উৎপাদন করা যাবে না, তবে এখন ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত উৎপাদন করতে পারব। গতকালও আমরা এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। একসময় আমরা এসএস পাওয়ার থেকে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। এই মাসের ১০-১২ তারিখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য তাদের কিছু কয়লা আসবে। আপনি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি এখনো সঞ্চালন লাইন তৈরি করতে পারেনি বলে যে তথ্য দিয়েছেন সেটাও ঠিক। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রথম ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতার, মানে ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করতে এখনো দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে।
আজকের পত্রিকা: বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সম্প্রতি দেশের চলমান তীব্র লোডশেডিং মোকাবিলায় এস আলমের এসএস পাওয়ারকে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য অনুরোধ করেছে। সে জন্য তারা এখন কিছু উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি।
হাবিবুর রহমান: আমরা এখন চলমান লোডশেডিং মোকাবিলার জন্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আংশিক বিদ্যুৎ নিচ্ছি। বর্তমান লোডশেডিংয়ের প্রেক্ষাপটে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এ জন্য আমাদেরও কষ্টের সীমা নেই। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যাতে তাড়াতাড়ি বৃষ্টি হয়। বর্ষাকালে বৃষ্টি না হলে তো একটা সমস্যা।
আজকের পত্রিকা: দেশে ডলারের সংকট আছে আমরা আগে থেকেই জানতাম। গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে, সেটাও জানা ছিল। ডলার-সংকটের কারণে যে জ্বালানিপণ্য কেনা যাচ্ছে না, সেটা কি আরেকটু ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা যেত না?
হাবিবুর রহমান: এ বছর একটু গরম বেশি পড়ছে। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় যদি দেখেন, তাপমাত্রা কখনো এই সময়ে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠেনি অতীতে। আগে তাপমাত্রা উঠত সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অতীতে আমরা দেখেছি রাত ১০টার পর বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। কিন্তু বর্তমানে রাত ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি থাকে। বর্তমানে অতিরিক্ত গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে ২০০০ মেগাওয়াট। সেটা যদি বাদ দেন, তাহলে দেখা যাবে দেশের লোডশেডিং পরিস্থিতি অনেক নিয়ন্ত্রণে থাকত। ডলার-সংকটের কারণে আমরা বেশ কিছু এলসি খুলতে পারিনি কয়লা, তেল-গ্যাস আমদানির জন্য। সে জন্য অতিরিক্ত ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের যে চাহিদা গরমের কারণে তৈরি হয়েছে, সেটা বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জোগান দেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। লোডশেডিং দেশব্যাপী তীব্র আকার ধারণ করেছে অতিরিক্ত গরমের কারণে।
আজকের পত্রিকা: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এখন যে ডলারের সংকট, সেটা তো এক দিনে তৈরি হয়নি। অনেক আগে থেকেই এই সংকট চলে আসছিল। সবকিছু জানার পরও কেন আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
হাবিবুর রহমান: ডলারের জোগান দেওয়ার কাজ কিন্তু আমার না। আমাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে কোনো লাভ নেই। কয়লাসহ অন্যান্য জ্বালানিপণ্য আমদানির জন্য ডলারের জোগান দিতে আমি যে পরিমাণ দৌড়ঝাঁপ করেছি, আপনাকে বলে বোঝানো যাবে না।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ।
আজকের পত্রিকা: লোডশেডিং পরিস্থিতি যেভাবে দেশের মানুষকে ভোগাচ্ছে, এই প্রেক্ষাপটে সামনের দিনগুলোতে একটু স্বস্তি দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
হাবিবুর রহমান: দেশে চলমান লোডশেডিংয়ের অবনতি হওয়ার পেছনে কারণগুলো আমাদের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিস্তারিত বলেছেন। দেশে ভয়াবহ গরম পড়ছে। গরম না কমলে চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের আশা, এই মাসের ১০-১২ তারিখের দিকে দেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে। তারপর হয়তো লোডশেডিং একটু কমতে পারে। বর্তমানে যে গরম পড়ছে, সেটা বাংলাদেশে কখনো আমরা দেখিনি। আগে আমাদের দিন ও রাতের বেলায় পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা কখনো ১৫ হাজার মেগাওয়াট হতো না। আজকে (গতকাল সোমবার) বেলা ৩টার সময় বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াট ছিল। রাতের বেলায়ও একই পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। অন্যদিকে চলমান লোডশেডিংয়ের সঙ্গে ডলার ও কয়লার সংকট তো আছেই।
আজকের পত্রিকা: পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের ন্যাশনাল লোড ডিসপাচ সেন্টারের তথ্য বলছে, গতকাল বেলা ৩টায় ১৫ হাজার ৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল মাত্র ১১ হাজার মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ৪ হাজার ৭৯ মেগাওয়াট। উৎপাদন ও চাহিদার এই বিশাল ঘাটতি মোকাবিলা করা আপনাদের জন্য দিনে দিনে কি কঠিন হয়ে যাচ্ছে?
হাবিবুর রহমান: ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় একটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে আমরা কিছু তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর পরিকল্পনা করছি। সেটার জন্য হয়তো দু-এক দিন সময় লাগবে। তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে চলমান লোডশেডিং আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে একটু উন্নতি করতে পারে। তবে দেশব্যাপী তীব্র দাবদাহ চলার কারণে আগামী ১২ তারিখ পর্যন্ত মানুষকে লোডশেডিং নিয়ে একটু কষ্ট ভোগ করতে হতে পারে।
আজকের পত্রিকা: পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের কারণে যে সমস্যা হচ্ছে তা উপশমের জন্য আপনি যে বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলছেন, সেগুলা কী?
হাবিবুর রহমান: খুলনায় যেসব ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, সেগুলো আমরা চালানোর পরিকল্পনা করছি। একই সঙ্গে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অবস্থিত এস আলম গ্রুপের এস এস পাওয়ার থেকে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পরিকল্পনা করছি। আদানীর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আরও বেশি বিদ্যুৎ আনার পরিকল্পনা করছি। বর্তমান লোডশেডিংয়ের সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের হাতে যেসব বিকল্প ব্যবস্থা আছে, সবগুলো চেষ্টা করা হচ্ছে। চেষ্টার কোনো কমতি রাখছি না। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা এখন দিনে ও রাতে একই রকম থাকলে লোডশেডিং ম্যানেজ করা খুবই কষ্টকর। দেখা যাচ্ছে, বিকেলের দিকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকছে, রাত ৮টার দিকেও একই চাহিদা থাকছে। এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার মতো আমাদের দেশে বর্তমানে জ্বালানি পণ্যের জোগান নেই। এ জন্য লোডশেডিংয়ের তীব্রতা দেখা দিচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: খুলনার ডিজেলভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে কত মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে?
হাবিবুর রহমান: খুলনায় ২২৫ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতার একটি ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী দু-এক দিনের মধ্যে পুনরায় উৎপাদন শুরু হবে। একই সঙ্গে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অবস্থিত এস আলম গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কিছু বিদ্যুৎ এলে পরিস্থিতি একটু উন্নতি হতে পারে। তবে লোডশেডিং যাবে না। লোডশেডিং চলতে থাকবে। শুধু পরিস্থিতির একটু উন্নতি হতে পারে। চলতি মাসের ১২ তারিখের দিকে বৃষ্টিবাদল শুরু হলে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।
আজকের পত্রিকা: এস আলমের এসএস পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার যে পরিকল্পনা বলছেন, তা কতটুকু বাস্তবসম্মত, যেখানে তাদের পর্যাপ্ত কয়লা নাই? একই সঙ্গে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানিও এখনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন তৈরি করতে পারেনি। অতীতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও এখন উৎপাদন বন্ধই আছে। এ ছাড়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের এখনো বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়নি।
হাবিবুর রহমান: অতীতে এস আলমের এস এস পাওয়ার থেকে ৩০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এই মুহূর্তে পূর্ণ সক্ষমতার এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে হয়তো উৎপাদন করা যাবে না, তবে এখন ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত উৎপাদন করতে পারব। গতকালও আমরা এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। একসময় আমরা এসএস পাওয়ার থেকে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। এই মাসের ১০-১২ তারিখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য তাদের কিছু কয়লা আসবে। আপনি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি এখনো সঞ্চালন লাইন তৈরি করতে পারেনি বলে যে তথ্য দিয়েছেন সেটাও ঠিক। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রথম ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতার, মানে ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করতে এখনো দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে।
আজকের পত্রিকা: বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সম্প্রতি দেশের চলমান তীব্র লোডশেডিং মোকাবিলায় এস আলমের এসএস পাওয়ারকে কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য অনুরোধ করেছে। সে জন্য তারা এখন কিছু উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি।
হাবিবুর রহমান: আমরা এখন চলমান লোডশেডিং মোকাবিলার জন্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আংশিক বিদ্যুৎ নিচ্ছি। বর্তমান লোডশেডিংয়ের প্রেক্ষাপটে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এ জন্য আমাদেরও কষ্টের সীমা নেই। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যাতে তাড়াতাড়ি বৃষ্টি হয়। বর্ষাকালে বৃষ্টি না হলে তো একটা সমস্যা।
আজকের পত্রিকা: দেশে ডলারের সংকট আছে আমরা আগে থেকেই জানতাম। গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে, সেটাও জানা ছিল। ডলার-সংকটের কারণে যে জ্বালানিপণ্য কেনা যাচ্ছে না, সেটা কি আরেকটু ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা যেত না?
হাবিবুর রহমান: এ বছর একটু গরম বেশি পড়ছে। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় যদি দেখেন, তাপমাত্রা কখনো এই সময়ে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠেনি অতীতে। আগে তাপমাত্রা উঠত সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অতীতে আমরা দেখেছি রাত ১০টার পর বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। কিন্তু বর্তমানে রাত ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি থাকে। বর্তমানে অতিরিক্ত গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে ২০০০ মেগাওয়াট। সেটা যদি বাদ দেন, তাহলে দেখা যাবে দেশের লোডশেডিং পরিস্থিতি অনেক নিয়ন্ত্রণে থাকত। ডলার-সংকটের কারণে আমরা বেশ কিছু এলসি খুলতে পারিনি কয়লা, তেল-গ্যাস আমদানির জন্য। সে জন্য অতিরিক্ত ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের যে চাহিদা গরমের কারণে তৈরি হয়েছে, সেটা বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জোগান দেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। লোডশেডিং দেশব্যাপী তীব্র আকার ধারণ করেছে অতিরিক্ত গরমের কারণে।
আজকের পত্রিকা: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এখন যে ডলারের সংকট, সেটা তো এক দিনে তৈরি হয়নি। অনেক আগে থেকেই এই সংকট চলে আসছিল। সবকিছু জানার পরও কেন আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
হাবিবুর রহমান: ডলারের জোগান দেওয়ার কাজ কিন্তু আমার না। আমাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে কোনো লাভ নেই। কয়লাসহ অন্যান্য জ্বালানিপণ্য আমদানির জন্য ডলারের জোগান দিতে আমি যে পরিমাণ দৌড়ঝাঁপ করেছি, আপনাকে বলে বোঝানো যাবে না।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ।
ইউনিক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন। পর্যটনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মনজুরুল ইসলাম।
০৩ অক্টোবর ২০২৪বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, সুফি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোনো বিভাজনমূলক এজেন্ডায় রাজনীতির দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা দৃঢ়ভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ফাঁদে আটকা পড়তে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করি। কোনোভাবেই তা হতে দেওয়া যাবে না।
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪‘আমি এটাকে ঠিক রাজনৈতিক ভাবাদর্শ বলব না। আমি এটাকে বলব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, সেটা আমার পারিবারিক শিক্ষা। আমাদের ঘরের ডাইনিং টেবিল থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিবারের বড়দের সাথে আমরা দ্বিমত পোষণ করতে পেরেছি। ছোট থেকে বড়, কারও কোনো কথা বা কাজ ভুল মনে হলে সেটাকে আমরা তার প্রতি স
৩১ আগস্ট ২০২৪একেক মানুষ বেছে নেন একেক পেশা। তাঁদের মধ্যে কারও কারও পেশা একটু ভিন্ন ধরনের। যেমন—মো. মুনসুর আলী ওরফে মন্টু খলিফা। বাপ-দাদার পেশাকে ভালোবেসে শিশুদের খতনা করানো বা হাজামের কাজ বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। জীবনে পার করেছেন প্রায় ৮৫ বছর। জানিয়েছেন গত ৬০ বছরে ২ লাখের বেশি শিশুর মুসলমানি বা সুন্নতে খতনা দিয়
৩০ মার্চ ২০২৪