আবদুল আযীয কাসেমি
রোজা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। একজন রোজাদার মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূর্ণ করা থেকে বিরত থাকে। নিঃসন্দেহে এটি অনেক বড় আমল।
কিন্তু এ মহান আমলটির দাবি হলো, একে অন্যান্য গুনাহের কলুষতা থেকেও পবিত্র রাখতে হবে। অর্থাৎ, রোজা রেখে এমন কোনো গুনাহে লিপ্ত হওয়া যাবে না, যা রোজার পবিত্রতা ও মাহাত্ম্য নষ্ট করে দেয়।
আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ দেখতে পাই, যারা রোজা রেখেও আরেকটি ফরজ ইবাদত নামাজ ছেড়ে দেয়। রোজা রাখা সত্ত্বেও অন্যের ওপর জুলুম থেকে বিরত হয় না। সুদ, ঘুষ ও হারাম ভক্ষণের মতো ভয়াবহ পাপ থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখতে পারে না। রোজা রেখেও কিছু মানুষ মাপে কম দেয়। রোজার মতো মহান আমলটি করা সত্ত্বেও গিবত ও পরনিন্দা, চোগলখুরি, অপর ভাইয়ের সম্মানহানি ইত্যাদিতে কিছু মানুষ ব্যস্ত সময় কাটায়।
সত্যি কথা হলো, এ ধরনের রোজাদারদের রোজার কোনো মূল্য আল্লাহর কাছে নেই। বরং এটি নিছকই কিছু সময় ক্ষুধার্ত থাকা। আর কিছু নয়।
এ প্রসঙ্গে কিছু হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রাখা সত্ত্বেও মিথ্যা কথা বলা এবং মিথ্যার ভিত্তিতে কাজ করা ছাড়তে পারেনি, তার পানাহার ত্যাগের আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি: ১৯০৩)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজা হলো বান্দার জন্য ঢালস্বরূপ, যতক্ষণ না এটাকে সে ভেঙে না ফেলে।’ বলা হলো, ‘এটা কীভাবে ভাঙা হয়?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘মিথ্যা অথবা গিবত তথা পরনিন্দার মাধ্যমে।’ (আল মুজামুল আওসাত: ৪৫৩৬)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) আরেক বর্ণনায় বলেন, নবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, রোজা থেকে তার প্রাপ্য কেবলই ক্ষুধার্ত থাকা ও পিপাসার্ত থাকা। এবং অনেক রাতের নামাজ আদায়কারী এমন আছে, যাদের এ নামাজের অংশ শুধুই দাঁড়িয়ে থাকা।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩৪৮১)
অর্থাৎ রোজার শিষ্টাচার বজায় না রাখার কারণে এবং রোজার সম্মান বিনষ্ট করার কারণে আল্লাহর কাছে সেটা আর গৃহীত হয় না। ফলে সেটা একেবারেই মূল্যহীন হয়ে যায়।
যেসব গুনাহের কথা একটু আগে উল্লেখ করা হয়েছে, এগুলো সব সময়ই ভয়ংকর কবিরা গুনাহ। তবে রমজান মাসে রোজা রেখে করা হলে সেটার ভয়াবহতা আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। যেখানে রোজার পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে প্রদান করবেন বলে ওয়াদা করেছেন, সেখানে যদি রোজার মাহাত্ম্যকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়, তবে যে সেটা কল্যাণকর কিছু বয়ে আনবে না—তা বলাই বাহুল্য।
রমজানে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ। কেননা, ব্যাপকভাবে মানুষের মধ্যে তখন নেক আমলের একটা প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যায়। সবাই সম্মিলিতভাবে কোনো কাজ করলে সেটা অত্যন্ত সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, অবাধ্য শয়তানদের রমজান মাসে বন্দী করে রাখা হয়। ফলে শয়তান কুমন্ত্রণা দেওয়ার সুযোগ পায় না। পাশাপাশি ক্ষুধার্ত থাকার কারণে পাপের প্রতি মন ধাবিত হয় না। কিন্তু মানুষের কুপ্রবৃত্তি তখনো সক্রিয় থাকে। তাই আমাদের উচিত হলো, রোজার সম্মান বজায় রেখে সকল প্রকার গুনাহ থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখা।
লেখক: শিক্ষক
রোজা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। একজন রোজাদার মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূর্ণ করা থেকে বিরত থাকে। নিঃসন্দেহে এটি অনেক বড় আমল।
কিন্তু এ মহান আমলটির দাবি হলো, একে অন্যান্য গুনাহের কলুষতা থেকেও পবিত্র রাখতে হবে। অর্থাৎ, রোজা রেখে এমন কোনো গুনাহে লিপ্ত হওয়া যাবে না, যা রোজার পবিত্রতা ও মাহাত্ম্য নষ্ট করে দেয়।
আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ দেখতে পাই, যারা রোজা রেখেও আরেকটি ফরজ ইবাদত নামাজ ছেড়ে দেয়। রোজা রাখা সত্ত্বেও অন্যের ওপর জুলুম থেকে বিরত হয় না। সুদ, ঘুষ ও হারাম ভক্ষণের মতো ভয়াবহ পাপ থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখতে পারে না। রোজা রেখেও কিছু মানুষ মাপে কম দেয়। রোজার মতো মহান আমলটি করা সত্ত্বেও গিবত ও পরনিন্দা, চোগলখুরি, অপর ভাইয়ের সম্মানহানি ইত্যাদিতে কিছু মানুষ ব্যস্ত সময় কাটায়।
সত্যি কথা হলো, এ ধরনের রোজাদারদের রোজার কোনো মূল্য আল্লাহর কাছে নেই। বরং এটি নিছকই কিছু সময় ক্ষুধার্ত থাকা। আর কিছু নয়।
এ প্রসঙ্গে কিছু হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রাখা সত্ত্বেও মিথ্যা কথা বলা এবং মিথ্যার ভিত্তিতে কাজ করা ছাড়তে পারেনি, তার পানাহার ত্যাগের আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি: ১৯০৩)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজা হলো বান্দার জন্য ঢালস্বরূপ, যতক্ষণ না এটাকে সে ভেঙে না ফেলে।’ বলা হলো, ‘এটা কীভাবে ভাঙা হয়?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘মিথ্যা অথবা গিবত তথা পরনিন্দার মাধ্যমে।’ (আল মুজামুল আওসাত: ৪৫৩৬)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) আরেক বর্ণনায় বলেন, নবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, রোজা থেকে তার প্রাপ্য কেবলই ক্ষুধার্ত থাকা ও পিপাসার্ত থাকা। এবং অনেক রাতের নামাজ আদায়কারী এমন আছে, যাদের এ নামাজের অংশ শুধুই দাঁড়িয়ে থাকা।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩৪৮১)
অর্থাৎ রোজার শিষ্টাচার বজায় না রাখার কারণে এবং রোজার সম্মান বিনষ্ট করার কারণে আল্লাহর কাছে সেটা আর গৃহীত হয় না। ফলে সেটা একেবারেই মূল্যহীন হয়ে যায়।
যেসব গুনাহের কথা একটু আগে উল্লেখ করা হয়েছে, এগুলো সব সময়ই ভয়ংকর কবিরা গুনাহ। তবে রমজান মাসে রোজা রেখে করা হলে সেটার ভয়াবহতা আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। যেখানে রোজার পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে প্রদান করবেন বলে ওয়াদা করেছেন, সেখানে যদি রোজার মাহাত্ম্যকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়, তবে যে সেটা কল্যাণকর কিছু বয়ে আনবে না—তা বলাই বাহুল্য।
রমজানে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ। কেননা, ব্যাপকভাবে মানুষের মধ্যে তখন নেক আমলের একটা প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যায়। সবাই সম্মিলিতভাবে কোনো কাজ করলে সেটা অত্যন্ত সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, অবাধ্য শয়তানদের রমজান মাসে বন্দী করে রাখা হয়। ফলে শয়তান কুমন্ত্রণা দেওয়ার সুযোগ পায় না। পাশাপাশি ক্ষুধার্ত থাকার কারণে পাপের প্রতি মন ধাবিত হয় না। কিন্তু মানুষের কুপ্রবৃত্তি তখনো সক্রিয় থাকে। তাই আমাদের উচিত হলো, রোজার সম্মান বজায় রেখে সকল প্রকার গুনাহ থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখা।
লেখক: শিক্ষক
রোজার মৌখিক নিয়ত যেকোনো ভাষায় হতে পারে। একান্ত আরবি ভাষায় হওয়া জরুরি নয়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১ / ৩৭৮)। বরং যারা আরবি বোঝে না, তাদের জন্য আরবিতে নিয়ত না করাই কর্তব্য। কারণ নিয়ত পড়া জরুরি নয়, নিয়ত করাই জরুরি।
৪ ঘণ্টা আগেরাসুল (সা.) সাহাবিদের তিনজন নেককার ব্যক্তির গল্প শুনিয়েছিলেন। হাদিসের ভাষ্যে স্পষ্টভাবে তাঁদের নাম ও বাসস্থানের কথা উল্লেখ নেই। তবে তাঁরা যে বনি ইসরাইলের লোক ছিলেন, এ কথার উল্লেখ আছে। এ গল্পে আল্লাহর ভয়, মা–বাবার প্রতি সদাচার, দোয়ার শক্তি এবং সৎকর্মের মহত্ত্ব ফুটে উঠেছে।
৪ ঘণ্টা আগে‘জ্ঞানের তরে শহীদ’ উপাধি পাওয়া এবং বিশ্ববিশ্রুত হাদিস গ্রন্থ ‘সহিহ্ মুসলিম’ রচয়িতা ইমাম মুসলিম বিন হাজ্জাজের খ্যাতি জগতজোড়া। যার অক্লান্ত পরিশ্রমে হাদিস শাস্ত্রে যোগ হয়েছে অসামান্য সব প্রামাণ্য। আজকের অবসরে সংক্ষেপে এ মহান মনীষীর জীবন নিয়ে আলোকপাত করার প্রয়াস পাব।
৭ ঘণ্টা আগেনিয়মিত খাওয়াদাওয়া করার সময় যেসব আদব অনুসরণ করতে হয়, তা ইফতারের সময়ও অনুসরণ করা চাই। তবে ইফতারের রয়েছে বিশেষ কিছু সুন্নত ও আদব। যথা— এক. সময় হওয়ার পরপরই ইফতার করা: সূর্যাস্তের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে কিংবা মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার শুরু করে দেওয়া সুন্নত।
১১ ঘণ্টা আগে