মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
প্রশ্ন: রমজানে বিশেষ অসুস্থতায় কয়েকটি রোজা রাখতে পারিনি। এই রোজাগুলো কখন কাজা আদায় করতে হবে? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই। সাকিবুল হক, রাজশাহী
উত্তর: পবিত্র রমজান মাসজুড়ে রোজা রাখা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর ফরজ। তবে অসুস্থতা ও সফরকালীন অবস্থায় রোজা না রাখার অনুমতি আছে এবং মেয়েদের ঋতুস্রাব ও সন্তান প্রসব-পরবর্তী স্রাবের সময় রোজা রাখা নিষেধ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেগুলো কাজা করে দেওয়া আবশ্যক।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নির্দিষ্ট কয়েক দিন (অর্থাৎ রমজান মাসে) রোজা রাখতেই হবে। (তবে সে সময়ে) যদি তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকে অথবা সফরে থাকে, সে অন্য সময়ে (ছুটে যাওয়া) দিনগুলো পূর্ণ করে নেবে (অর্থাৎ, যে কয়টা রোজা ছুটে গেছে, সেগুলো অন্য সময়ে কাজা করে দিতে হবে)।’ (সুরা বাকারা: ১৮৪)
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) বেঁচে থাকা অবস্থায় আমাদের যখন ঋতুস্রাব হতো (এবং এ কারণে আমাদের নামাজ ও রোজা ছুটে যেত), তখন তিনি আমাদের ছুটে যাওয়া রোজাগুলো কাজা করে দেওয়ার নির্দেশ দিতেন, কিন্তু নামাজ কাজা করার নির্দেশ দিতেন না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কাজা রোজা কখন রাখতে হবে
চার মাজহাবের সব আলেমের সর্বসম্মত মত অনুসারে, রমজানের পর থেকে শুরু করে পরের রমজান আসার আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় কাজা রোজা রাখা যাবে। আয়েশা (রা.) সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে একদম শাবান মাসে গিয়ে বিগত রমজানের কাজা রোজা রেখেছেন এমন বর্ণনা আছে হাদিসে। (বুখারি ও মুসলিম)
তবে যথাসম্ভব দ্রুত কাজা করে দেওয়া উত্তম। কিন্তু কেউ যদি পরবর্তী রমজান পর্যন্ত কাজা রোজা রাখতে বিলম্ব করে, তার ব্যাপারে আলেমদের দুটি মত আছে। এক. মালেকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাবের মত অনুসারে তাকে কাজার পাশাপাশি প্রতিটি রোজার জন্য ফিদইয়া (১.৬৫ কেজি গম অথবা সমপরিমাণ মূল্য) আদায় করতে হবে। অবশ্য হানাফি মাজহাব অনুসারে তখনো শুধু কাজা করে দিলে যথেষ্ট হবে। ইবনু উসাইমিনসহ আরও অনেকে এ মত অবলম্বন করেছেন। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ)
যেভাবে কাজা রোজা রাখবেন
ছুটে যাওয়া রোজাগুলো একনাগাড়ে রাখতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সময় ও সুযোগ অনুসারে একটা, দুইটা করে কাজা করা যাবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘রমজানের রোজা আলাদা আলাদা অথবা লাগাতার—যেভাবে ইচ্ছা রাখা যাবে।’ (দারাকুতনি) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রমজানের কাজা রোজা আলাদা আলাদা করে রাখতে কোনো অসুবিধা নেই। (বুখারি, তা’লিকাত)
কাজা আদায়ের আগে মারা গেলে
অসুস্থতার কারণে রোজা ছুটে যাওয়ার পর যদি সুস্থ হওয়ার আগেই মারা যায়, তাহলে কাজা বা ফিদইয়া কিছুই দিতে হবে না। (আল মাবসুত) তবে কেউ যদি এমন অবস্থায় মারা যায় যে তার জিম্মায় রোজা কাজা ছিল এবং তা আদায় করার সময় ও সামর্থ্যও ছিল, তাহলে সে যদি অসিয়ত করে যায়, তাহলে তার সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকে রোজার ফিদইয়া (প্রতি রোজার জন্য ১.৬৫ কেজি গম অথবা সমপরিমাণ মূল্য) আদায় করতে হবে। অসিয়ত করে না গেলেও ওয়ারিশরা নিজেদের পক্ষ থেকে ফিদইয়া দিতে পারবে। (ফাতাওয়া শামি) তবে ইমাম শাফেয়ি, নববি, ইবনে বাজসহ অনেক আলেম বলেন, এমন অবস্থায় মৃত ব্যক্তির অলি (নিকটাত্মীয়) তার পক্ষ থেকে রোজা আদায় করে দিতে পারবেন। কারণ, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে রোজা কাজা থাকা অবস্থায় মারা গেছে, তার আত্মীয় তার পক্ষ থেকে রোজা আদায় করে দেবে।’ (বুখারি, মুসলিম, আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ)
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ,শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
প্রশ্ন: রমজানে বিশেষ অসুস্থতায় কয়েকটি রোজা রাখতে পারিনি। এই রোজাগুলো কখন কাজা আদায় করতে হবে? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই। সাকিবুল হক, রাজশাহী
উত্তর: পবিত্র রমজান মাসজুড়ে রোজা রাখা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর ফরজ। তবে অসুস্থতা ও সফরকালীন অবস্থায় রোজা না রাখার অনুমতি আছে এবং মেয়েদের ঋতুস্রাব ও সন্তান প্রসব-পরবর্তী স্রাবের সময় রোজা রাখা নিষেধ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেগুলো কাজা করে দেওয়া আবশ্যক।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নির্দিষ্ট কয়েক দিন (অর্থাৎ রমজান মাসে) রোজা রাখতেই হবে। (তবে সে সময়ে) যদি তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকে অথবা সফরে থাকে, সে অন্য সময়ে (ছুটে যাওয়া) দিনগুলো পূর্ণ করে নেবে (অর্থাৎ, যে কয়টা রোজা ছুটে গেছে, সেগুলো অন্য সময়ে কাজা করে দিতে হবে)।’ (সুরা বাকারা: ১৮৪)
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) বেঁচে থাকা অবস্থায় আমাদের যখন ঋতুস্রাব হতো (এবং এ কারণে আমাদের নামাজ ও রোজা ছুটে যেত), তখন তিনি আমাদের ছুটে যাওয়া রোজাগুলো কাজা করে দেওয়ার নির্দেশ দিতেন, কিন্তু নামাজ কাজা করার নির্দেশ দিতেন না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কাজা রোজা কখন রাখতে হবে
চার মাজহাবের সব আলেমের সর্বসম্মত মত অনুসারে, রমজানের পর থেকে শুরু করে পরের রমজান আসার আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় কাজা রোজা রাখা যাবে। আয়েশা (রা.) সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে একদম শাবান মাসে গিয়ে বিগত রমজানের কাজা রোজা রেখেছেন এমন বর্ণনা আছে হাদিসে। (বুখারি ও মুসলিম)
তবে যথাসম্ভব দ্রুত কাজা করে দেওয়া উত্তম। কিন্তু কেউ যদি পরবর্তী রমজান পর্যন্ত কাজা রোজা রাখতে বিলম্ব করে, তার ব্যাপারে আলেমদের দুটি মত আছে। এক. মালেকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাবের মত অনুসারে তাকে কাজার পাশাপাশি প্রতিটি রোজার জন্য ফিদইয়া (১.৬৫ কেজি গম অথবা সমপরিমাণ মূল্য) আদায় করতে হবে। অবশ্য হানাফি মাজহাব অনুসারে তখনো শুধু কাজা করে দিলে যথেষ্ট হবে। ইবনু উসাইমিনসহ আরও অনেকে এ মত অবলম্বন করেছেন। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ)
যেভাবে কাজা রোজা রাখবেন
ছুটে যাওয়া রোজাগুলো একনাগাড়ে রাখতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সময় ও সুযোগ অনুসারে একটা, দুইটা করে কাজা করা যাবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘রমজানের রোজা আলাদা আলাদা অথবা লাগাতার—যেভাবে ইচ্ছা রাখা যাবে।’ (দারাকুতনি) ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রমজানের কাজা রোজা আলাদা আলাদা করে রাখতে কোনো অসুবিধা নেই। (বুখারি, তা’লিকাত)
কাজা আদায়ের আগে মারা গেলে
অসুস্থতার কারণে রোজা ছুটে যাওয়ার পর যদি সুস্থ হওয়ার আগেই মারা যায়, তাহলে কাজা বা ফিদইয়া কিছুই দিতে হবে না। (আল মাবসুত) তবে কেউ যদি এমন অবস্থায় মারা যায় যে তার জিম্মায় রোজা কাজা ছিল এবং তা আদায় করার সময় ও সামর্থ্যও ছিল, তাহলে সে যদি অসিয়ত করে যায়, তাহলে তার সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকে রোজার ফিদইয়া (প্রতি রোজার জন্য ১.৬৫ কেজি গম অথবা সমপরিমাণ মূল্য) আদায় করতে হবে। অসিয়ত করে না গেলেও ওয়ারিশরা নিজেদের পক্ষ থেকে ফিদইয়া দিতে পারবে। (ফাতাওয়া শামি) তবে ইমাম শাফেয়ি, নববি, ইবনে বাজসহ অনেক আলেম বলেন, এমন অবস্থায় মৃত ব্যক্তির অলি (নিকটাত্মীয়) তার পক্ষ থেকে রোজা আদায় করে দিতে পারবেন। কারণ, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে রোজা কাজা থাকা অবস্থায় মারা গেছে, তার আত্মীয় তার পক্ষ থেকে রোজা আদায় করে দেবে।’ (বুখারি, মুসলিম, আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ)
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ,শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
সন্ধ্যাবেলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। মহানবী (সা.) সাহাবিদের এসব আমল করার উপদেশ দিতেন। এখানে কয়েকটি আমলের
১৭ ঘণ্টা আগেইবাদতের নিয়তে করা সব কাজই নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। আর নেক আমল মানুষের জীবনের প্রকৃত সম্পদ। এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে জান্নাত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারাই জান্নাতের অধিকারী, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।’ (সুরা বাকারা: ৮২)
২ দিন আগেভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
৩ দিন আগে