শাওয়াল মাসে বিয়ে করা কি সুন্নত

Thumbnail image

প্রশ্ন: অনেকেই বলে থাকেন, শাওয়াল মাসে বিয়ে করা সুন্নত। আবার অনেকে মুস্তাহাব বলেন। এ বিষয়টি কতটুকু সঠিক? ইসলামি শরিয়তে এই বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আছে? বিস্তারিত জানতে চাই। 
সালওয়া রহমান, চট্টগ্রাম

উত্তর: শাওয়াল একটি মর্যাদাপূর্ণ মাস। কোরআনে বর্ণিত চার সম্মানিত মাসের একটি। তবে শাওয়াল মাসে বিয়ে করা সুন্নত বা মুস্তাহাব হিসেবে যে কথাটি প্রচলিত আছে, সেটির কোনো ভিত্তি নেই। এই মাসে বিয়ে করার আলাদা কোনো ফজিলত-মর্যাদার কথা কোরআন-হাদিসে বর্ণিত হয়নি। মহানবী (সা.)-এর বিয়েগুলো বছরের বিভিন্ন মাসে হয়েছে। সুতরাং বিয়ের ক্ষেত্রে শাওয়ালের বিশেষ কোনো ফজিলত নেই। তবে শাওয়াল মাসে বিয়ে করা যাবে না—এমন ধারণাও জাহিলি যুগের কুসংস্কারের একটি। 

ইসলামে নির্দিষ্ট কোনো মাস, দিন বা সময়ে বিয়ে করার কথা আসেনি। তাই বছরের যেকোনো সময়ে বিয়ে করাই সুন্নতসম্মত। আলিমগণ বলেন, এ কারণে শুধু শাওয়ালে বিয়ে করা সুন্নত বা মুস্তাহাব বলা সংগত নয়; বরং বিয়ের মতো কল্যাণময় কাজ দেরি না করে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি করে ফেলাই উত্তম। 

শুভ-অশুভ দিন দেখে বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা ইসলামি বিশ্বাসের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এই রীতি সম্পূর্ণ অজ্ঞতাপূর্ণ বিশ্বাস। জাহিলি যুগের মানুষের বিশ্বাস ছিল—শাওয়াল মাসে বিয়েশাদি করা অশুভ ও অকল্যাণকর। এ কথার জবাব দিয়ে হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘রাসুল (সা.) আমাকে শাওয়াল মাসেই বিয়ে করেছেন, শাওয়াল মাসেই বাসর করেছেন। তাঁর অনুগ্রহ লাভে আমার চেয়ে ভাগ্যবান স্ত্রী আর কে আছেন?’ (মুসলিম: ৩৩৫২) 

এই হাদিস থেকে অনেকে ধারণা করেন, শাওয়াল মাসে বিয়ে করা সুন্নত। তবে এটি সঠিক নয়; বরং জাহিলি যুগের কুপ্রথা বন্ধেই আয়েশা (রা.) এ কথা বলেছিলেন। শাওয়াল মাসে বিয়ে করা যদি মুস্তাহাব হতো, তাহলে মহানবী (সা.) সব বিয়ে এ মাসেই করতেন। উম্মতকেও এ মাসে বিয়ে করতে উৎসাহিত করতেন। সাহাবিগণও এ মাসেই বিয়ে করার চেষ্টা করতেন। কিন্তু হাদিসের কিতাবগুলোতে এমন কোনো কথা পাওয়া যায় না। 

এ বিষয়ে ইমাম শাওকানি (রহ.) বলেন, ‘এটি শরিয়তের বিধান—যার পক্ষে দলিল নেই। মহানবী (সা.) বছরের বিভিন্ন সময়ে বিয়ে করেছেন। তিনি বিশেষ কোনো সময় অনুসন্ধান করেননি। শাওয়াল মাসে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে হজরত আয়েশা (রা.)-এর বিয়ে হওয়ার কারণেই যদি এই মাসে বিয়ে করাকে মুস্তাহাব বলতে হয়, তাহলে তিনি অন্য যত মাসে বিয়ে ও বাসর করেছেন, সেগুলোকেও সুন্নত বা মুস্তাহাব বলতে হবে। তবে এমনটি কেউ বলেননি।’ (নায়লুল আওতার-শাওকানি: ৬ / ২২৫) 

উত্তর দিয়েছেন
মুফতি আবু সওবান
শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা ফিরে আসছে কি?

সদা প্রস্তুত থাকতে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে সেনাপ্রধানের আহ্বান

ভিসা জটিলতায় ভ্রমণকর হারাচ্ছে সরকার

বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন পাকিস্তানের আইএসআই প্রধান, দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের

মাস্কের চাপেই ডিওজিই থেকে রামাস্বামীর পদত্যাগ, শুরুতেই ট্রাম্প প্রশাসনে অন্তর্দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত