ড. আলি আস-সাল্লাবি
পাখিদের উড়ালশৈলীর গভীর পর্যবেক্ষণ একজন মানুষকে পূর্ণরূপে বিশ্বাসী হতে এবং আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সঁপে দিতে সাহায্য করে। আল্লাহ তাআলা সর্বোৎকৃষ্ট সৃজনশীলতার অধিকারী এবং পাখি তাঁর আশ্চর্য সৃষ্টি। বর্তমানে পাখি বিশেষজ্ঞরা এমন এক সত্যে উপনীত হয়েছেন, যা জানলে অবিশ্বাসী মানুষও আল্লাহর বড়ত্ব ও শক্তিমত্তায় বিশ্বাস স্থাপন করতে বাধ্য হবেন। পবিত্র কোরআনের দুটি আয়াতে পাখিদের দুই ধরনের উড়ালকৌশলের কথা বিবৃত হয়েছে। এখানে আয়াত দুটির ব্যাখ্যা ও শিক্ষা তুলে ধরা হলো—
মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন পাখি
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আকাশের শূন্যগর্ভে নিয়ন্ত্রণাধীন পাখিদের দিকে তারা কি লক্ষ করে না? আল্লাহই ওদের স্থির রাখেন। অবশ্যই এতে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে শিক্ষা।’ (সুরা নাহল: ৭৯)
এ আয়াতে পাখির দেহে এবং বায়ুস্রোতে আল্লাহ তাআলার সেট করে দেওয়া ফাংশনের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে পাখিরা উড়তে পারে। পাখির আকাশে ওড়া এবং শূন্যে ভেসে বেড়ানোর জন্য দুটি উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক. হালকা ওজনের হওয়া এবং দুই. অতিমাত্রায় শক্তি ও বলপ্রয়োগ করা। এ ছাড়া দুটি ডানাও থাকা চাই, যা পাখিকে সহজভাবে আকাশে উড়তে এবং শূন্যে ভেসে বেড়াতে সহায়তা করে।
হালকা ওজন পাখির ওড়ার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি পাখিদের দেহাবয়বে বিভিন্নভাবে বিদ্যমান। যেমন:
পালকের গঠন: জীবনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য পাখি তাঁর পালকগুলো আবশ্যকভাবে পরিষ্কার রাখে এবং সব সময় উড়াল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। পালকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পাখি তার লেজের নিচের তৈলাক্ত গ্রন্থির ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। ওই তেলের মাধ্যমেই পাখিরা তাদের পালক পরিচ্ছন্ন ও ঝকঝকে রাখে। তেমনিভাবে সাঁতার কাটা, ডুব দেওয়া এবং বৃষ্টিমুখর আবহাওয়ায় চলাফেরা করার সময় সেই তেল তাদের পালকগুলোকে ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
কঙ্কাল: ফাঁপা ও হালকা হাড্ডি দিয়েই আল্লাহ পাখি সৃষ্টি করেছেন। তবে দেখতে কোমল মনে হলেও ভেতরের ভিত্তি মজবুত হওয়ার কারণে তা খুবই শক্ত। পাখির শ্বাসনালির সঙ্গে সংযুক্ত কিছু বায়বীয় শূন্যস্থান রয়েছে, যা তাদের শ্বাস নিতে, প্রাণবন্ত থাকতে এবং হালকা হতে সহায়তা করে। তেমনিভাবে তা তাকে অধিক পরিমাণে অক্সিজেন নেওয়ারও সুযোগ করে দেয়।
এ ছাড়া পাখিদেহের অ্যারোডাইনামিক আকৃতি তাকে তুলনামূলক কম প্রতিরোধের মাধ্যমে বাতাসের স্রোত কাটতে সহায়তা করে। শূন্যে উড়াল দিতে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে তার পাখাগুলোর অবদান মোটেও কম নয়।
ডানা মেলে ধরা পাখি
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তারা কি তাদের ওপরের দিকে পাখিগুলোর প্রতি লক্ষ করে না, যারা ডানা মেলে ধরে আবার গুটিয়ে নেয় তথা ডানা ঝাপটিয়ে ওড়ে? দয়াময় ছাড়া অন্য কেউই তাদের স্থির রাখেন না। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছুর সম্যক দ্রষ্টা।’ (সুরা মুলক: ১৯)
পাখির উড়ালকৌশলে এমন সব অবাক করা শিক্ষা রয়েছে, যা কেবল অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং তথা উড্ডয়ন প্রকৌশল এবং ডাইনামিকস তথা গতিবিদ্যার সমৃদ্ধি ও উৎকর্ষের কারণেই মানুষের সামনে এসেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, দুটি শান্ত ডানার সাহায্যেই, নাড়াচাড়া না করেই পাখিরা শূন্যে উড়তে পারে, এমনকি তারা উড়তে উড়তে দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যেতে পারে।
পাখির উড়ালকৌশল ও বিজ্ঞান
বিজ্ঞান বলে, ডানা মেলে ধরা পাখিগুলো এমন সহায়ক বায়ুস্রোতে ভেসে বেড়ায়, যেটি কোনো প্রতিবন্ধকের সঙ্গে বাতাসের সংঘর্ষের কারণে অথবা উষ্ণ বায়ুর কলামগুলো ওপরে ওঠার ফলে সৃষ্টি হয়। বায়ু শান্ত থাকলে কলামগুলো দাঁড়িয়ে থাকে এবং পাখিরা ডানা মেলে ধরে সর্পিল গতিতে ওড়ে। বায়ুপ্রবাহ প্রবল হলে কলামগুলো আনুভূমিক হয়ে উল্টে যায়; তখন পাখিরা লম্বা সরলরেখায় ডানা মেলে ধরে উড়ে চলে।
বিজ্ঞান আরও জানায়, প্রতিটি পাখি যখন ডানা ঝাপটায় তখন তা তার পেছনের পাখিটি থেকে এক স্তর ওপরে উঠে যায় এবং এর ওপর ভিত্তি করেই পরিযায়ী পাখিরা সম্মিলিতভাবে ইংরেজি ভি আকৃতি ধারণ করে। এ পদ্ধতিতে একা পথ চলার তুলনায় কমপক্ষে ৭১ শতাংশ বেশি দ্রুতবেগে তারা পথ চলতে পারে। সেই গতিপথ থেকে কোনো পাখি বের হলে হঠাৎ মাধ্যাকর্ষণ ও বায়ুর শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়ে, তাই পাখিরা দ্রুতই আগের সিকুয়েন্সে ফিরে আসে, যাতে সংঘবদ্ধতা থেকে প্রাপ্ত শক্তি ও সহায়তা থেকে উপকৃত হওয়া যায়। দলনেতা যখন শক্ত প্রতিরোধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন সেটি পেছনে চলে যায় এবং অন্য নেতার জন্য নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়। এভাবেই পর্যায়ক্রমে নেতৃত্ব দেওয়া হয়। পেছনের সদস্যরা সামনের সদস্যদের উৎসাহ জোগাতে চিৎকার করতে থাকে।
পাখিদের উড়ালশৈলীর বর্ণনা—ডানা মেলে ধরা ও গোটানোই আধুনিক অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মূল থিউরি। ১০০ বছর আগেও এ সত্য মানুষের অজানা ছিল। ডানা মেলে ধরার অর্থ পাখির দুই ডানা নাড়াচাড়া না করে সোজাসুজি মেলে ধরা। দূরের পথ পাড়ি দিতে পাখি শূন্যে ভেসে বেড়ায়—চলা বা ওপরে ওঠার সময় তারা বায়ুস্রোতের সাহায্য নেয় এবং ধীরে অবতরণের সময় মাধ্যাকর্ষণের সাহায্য নেয়। তখন তার ডানা ঝাপটানো বা অনবরত ওপর-নিচ করার প্রয়োজন পড়ে না। প্রথমবারের ঝাপটানো তাকে সামনের দিকে নিয়ে যায় এবং দ্বিতীয়বার ঝাপটানো তাকে ওপরের দিকে তুলে দেয়।
বিজ্ঞান বলে, পাখির ডানাই উড়োজাহাজ তৈরির রোলমডেল। ধারাবাহিক অনুশীলনের জন্য কিছু পাখা ছোট ও শক্ত হয়। দ্রুতগতিতে ওড়ার জন্য কিছু পাখা চিকন ও ধারালো হয়। ওপরে ওঠার জন্য কিছু পাখির পাখা লম্বা ও প্রশস্ত হয়। বায়ুমণ্ডলে সহজে ভেসে বেড়ানোর জন্য কিছু পাখা চিকন ও লম্বা হয়। আল্লাহ তাআলা প্রতিটি পাখির দেহকেই ওড়ার জন্য পূর্ণ উপযোগী করে সৃষ্টি করেছেন এবং প্রয়োজনমতো উপাদান দিয়েছেন। কিছু পাখি কয়েক মাস ধরে আকাশে উড়তে থাকে; শূন্যেই তারা খাওয়াদাওয়া করে এবং ঘুমোয়। এসব ঐশ্বরিক প্রযুক্তি দেখেই বিজ্ঞানীরা উড়োজাহাজ তৈরির প্রযুক্তি সমৃদ্ধ করছে।
লেখক: লিবিয়ান লেখক ও ইতিহাসবিদ, আল জাজিরা আরবি থেকে সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: ইজাজুল হক
পাখিদের উড়ালশৈলীর গভীর পর্যবেক্ষণ একজন মানুষকে পূর্ণরূপে বিশ্বাসী হতে এবং আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সঁপে দিতে সাহায্য করে। আল্লাহ তাআলা সর্বোৎকৃষ্ট সৃজনশীলতার অধিকারী এবং পাখি তাঁর আশ্চর্য সৃষ্টি। বর্তমানে পাখি বিশেষজ্ঞরা এমন এক সত্যে উপনীত হয়েছেন, যা জানলে অবিশ্বাসী মানুষও আল্লাহর বড়ত্ব ও শক্তিমত্তায় বিশ্বাস স্থাপন করতে বাধ্য হবেন। পবিত্র কোরআনের দুটি আয়াতে পাখিদের দুই ধরনের উড়ালকৌশলের কথা বিবৃত হয়েছে। এখানে আয়াত দুটির ব্যাখ্যা ও শিক্ষা তুলে ধরা হলো—
মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন পাখি
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আকাশের শূন্যগর্ভে নিয়ন্ত্রণাধীন পাখিদের দিকে তারা কি লক্ষ করে না? আল্লাহই ওদের স্থির রাখেন। অবশ্যই এতে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে শিক্ষা।’ (সুরা নাহল: ৭৯)
এ আয়াতে পাখির দেহে এবং বায়ুস্রোতে আল্লাহ তাআলার সেট করে দেওয়া ফাংশনের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে পাখিরা উড়তে পারে। পাখির আকাশে ওড়া এবং শূন্যে ভেসে বেড়ানোর জন্য দুটি উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক. হালকা ওজনের হওয়া এবং দুই. অতিমাত্রায় শক্তি ও বলপ্রয়োগ করা। এ ছাড়া দুটি ডানাও থাকা চাই, যা পাখিকে সহজভাবে আকাশে উড়তে এবং শূন্যে ভেসে বেড়াতে সহায়তা করে।
হালকা ওজন পাখির ওড়ার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি পাখিদের দেহাবয়বে বিভিন্নভাবে বিদ্যমান। যেমন:
পালকের গঠন: জীবনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য পাখি তাঁর পালকগুলো আবশ্যকভাবে পরিষ্কার রাখে এবং সব সময় উড়াল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। পালকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পাখি তার লেজের নিচের তৈলাক্ত গ্রন্থির ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। ওই তেলের মাধ্যমেই পাখিরা তাদের পালক পরিচ্ছন্ন ও ঝকঝকে রাখে। তেমনিভাবে সাঁতার কাটা, ডুব দেওয়া এবং বৃষ্টিমুখর আবহাওয়ায় চলাফেরা করার সময় সেই তেল তাদের পালকগুলোকে ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
কঙ্কাল: ফাঁপা ও হালকা হাড্ডি দিয়েই আল্লাহ পাখি সৃষ্টি করেছেন। তবে দেখতে কোমল মনে হলেও ভেতরের ভিত্তি মজবুত হওয়ার কারণে তা খুবই শক্ত। পাখির শ্বাসনালির সঙ্গে সংযুক্ত কিছু বায়বীয় শূন্যস্থান রয়েছে, যা তাদের শ্বাস নিতে, প্রাণবন্ত থাকতে এবং হালকা হতে সহায়তা করে। তেমনিভাবে তা তাকে অধিক পরিমাণে অক্সিজেন নেওয়ারও সুযোগ করে দেয়।
এ ছাড়া পাখিদেহের অ্যারোডাইনামিক আকৃতি তাকে তুলনামূলক কম প্রতিরোধের মাধ্যমে বাতাসের স্রোত কাটতে সহায়তা করে। শূন্যে উড়াল দিতে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে তার পাখাগুলোর অবদান মোটেও কম নয়।
ডানা মেলে ধরা পাখি
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তারা কি তাদের ওপরের দিকে পাখিগুলোর প্রতি লক্ষ করে না, যারা ডানা মেলে ধরে আবার গুটিয়ে নেয় তথা ডানা ঝাপটিয়ে ওড়ে? দয়াময় ছাড়া অন্য কেউই তাদের স্থির রাখেন না। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছুর সম্যক দ্রষ্টা।’ (সুরা মুলক: ১৯)
পাখির উড়ালকৌশলে এমন সব অবাক করা শিক্ষা রয়েছে, যা কেবল অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং তথা উড্ডয়ন প্রকৌশল এবং ডাইনামিকস তথা গতিবিদ্যার সমৃদ্ধি ও উৎকর্ষের কারণেই মানুষের সামনে এসেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, দুটি শান্ত ডানার সাহায্যেই, নাড়াচাড়া না করেই পাখিরা শূন্যে উড়তে পারে, এমনকি তারা উড়তে উড়তে দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যেতে পারে।
পাখির উড়ালকৌশল ও বিজ্ঞান
বিজ্ঞান বলে, ডানা মেলে ধরা পাখিগুলো এমন সহায়ক বায়ুস্রোতে ভেসে বেড়ায়, যেটি কোনো প্রতিবন্ধকের সঙ্গে বাতাসের সংঘর্ষের কারণে অথবা উষ্ণ বায়ুর কলামগুলো ওপরে ওঠার ফলে সৃষ্টি হয়। বায়ু শান্ত থাকলে কলামগুলো দাঁড়িয়ে থাকে এবং পাখিরা ডানা মেলে ধরে সর্পিল গতিতে ওড়ে। বায়ুপ্রবাহ প্রবল হলে কলামগুলো আনুভূমিক হয়ে উল্টে যায়; তখন পাখিরা লম্বা সরলরেখায় ডানা মেলে ধরে উড়ে চলে।
বিজ্ঞান আরও জানায়, প্রতিটি পাখি যখন ডানা ঝাপটায় তখন তা তার পেছনের পাখিটি থেকে এক স্তর ওপরে উঠে যায় এবং এর ওপর ভিত্তি করেই পরিযায়ী পাখিরা সম্মিলিতভাবে ইংরেজি ভি আকৃতি ধারণ করে। এ পদ্ধতিতে একা পথ চলার তুলনায় কমপক্ষে ৭১ শতাংশ বেশি দ্রুতবেগে তারা পথ চলতে পারে। সেই গতিপথ থেকে কোনো পাখি বের হলে হঠাৎ মাধ্যাকর্ষণ ও বায়ুর শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়ে, তাই পাখিরা দ্রুতই আগের সিকুয়েন্সে ফিরে আসে, যাতে সংঘবদ্ধতা থেকে প্রাপ্ত শক্তি ও সহায়তা থেকে উপকৃত হওয়া যায়। দলনেতা যখন শক্ত প্রতিরোধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন সেটি পেছনে চলে যায় এবং অন্য নেতার জন্য নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়। এভাবেই পর্যায়ক্রমে নেতৃত্ব দেওয়া হয়। পেছনের সদস্যরা সামনের সদস্যদের উৎসাহ জোগাতে চিৎকার করতে থাকে।
পাখিদের উড়ালশৈলীর বর্ণনা—ডানা মেলে ধরা ও গোটানোই আধুনিক অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মূল থিউরি। ১০০ বছর আগেও এ সত্য মানুষের অজানা ছিল। ডানা মেলে ধরার অর্থ পাখির দুই ডানা নাড়াচাড়া না করে সোজাসুজি মেলে ধরা। দূরের পথ পাড়ি দিতে পাখি শূন্যে ভেসে বেড়ায়—চলা বা ওপরে ওঠার সময় তারা বায়ুস্রোতের সাহায্য নেয় এবং ধীরে অবতরণের সময় মাধ্যাকর্ষণের সাহায্য নেয়। তখন তার ডানা ঝাপটানো বা অনবরত ওপর-নিচ করার প্রয়োজন পড়ে না। প্রথমবারের ঝাপটানো তাকে সামনের দিকে নিয়ে যায় এবং দ্বিতীয়বার ঝাপটানো তাকে ওপরের দিকে তুলে দেয়।
বিজ্ঞান বলে, পাখির ডানাই উড়োজাহাজ তৈরির রোলমডেল। ধারাবাহিক অনুশীলনের জন্য কিছু পাখা ছোট ও শক্ত হয়। দ্রুতগতিতে ওড়ার জন্য কিছু পাখা চিকন ও ধারালো হয়। ওপরে ওঠার জন্য কিছু পাখির পাখা লম্বা ও প্রশস্ত হয়। বায়ুমণ্ডলে সহজে ভেসে বেড়ানোর জন্য কিছু পাখা চিকন ও লম্বা হয়। আল্লাহ তাআলা প্রতিটি পাখির দেহকেই ওড়ার জন্য পূর্ণ উপযোগী করে সৃষ্টি করেছেন এবং প্রয়োজনমতো উপাদান দিয়েছেন। কিছু পাখি কয়েক মাস ধরে আকাশে উড়তে থাকে; শূন্যেই তারা খাওয়াদাওয়া করে এবং ঘুমোয়। এসব ঐশ্বরিক প্রযুক্তি দেখেই বিজ্ঞানীরা উড়োজাহাজ তৈরির প্রযুক্তি সমৃদ্ধ করছে।
লেখক: লিবিয়ান লেখক ও ইতিহাসবিদ, আল জাজিরা আরবি থেকে সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: ইজাজুল হক
আসর শব্দের অর্থ সময়। পবিত্র কোরআনে আসর নামে একটি সুরা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা আসর বা সময়ের শপথ করেছেন। মুসলিমরা দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, তার তৃতীয় ওয়াক্তকে আসর নামে অভিহিত করা হয়। এ ছাড়াও পবিত্র কোরআনে এটিকে সালাত আল-ওসতা বা মধ্যবর্তী নামাজ হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগেজ্ঞানগর্ভ ও উপদেশে ভরা কোরআন জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি গাইড বই। মানুষ কোথায় কখন কী করবে, কেন করবে, কীভাবে করবে—তা বলে দেওয়া হয়েছে কোরআনে। কোরআন তথা আল্লাহপ্রদত্ত আসমানি কিতাবের হিদায়াতের বাইরে কোনো সঠিক জীবনদর্শন নেই, কোনো ধর্মদর্শন নেই, কোনো মুক্তির পথ নেই। মানবজাতির সূচনালগ্নেই কথাটি জানিয়ে দেওয়া
১ দিন আগেএকজন মুমিনের কাছে রমজান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। মহানবী (সা.) এ পবিত্র মাসকে বেশ গুরুত্ব দিতেন। অন্যান্য কাজকর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে অধিক পরিমাণে ইবাদতে মশগুল হতেন। সাহাবিদের অভ্যাসও ছিল একই রকম। গুরুত্ব বিবেচনায় রমজানের প্রস্তুতিও শুরু হতো বেশ আগে থেকেই। রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকেই মহানবী (সা.) অধীর আগ
১ দিন আগেহাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্যের স্মারক টুপি। ইসলামের সূচনাকাল থেকেই টুপি পরিধানের চল রয়েছে। ফিকহের দৃষ্টিকোণে টুপি পরা সুন্নত। মহানবী (সা.) সর্বদা টুপি পরতেন, হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তার প্রমাণ মেলে। সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী যুগের সব অনুসরণীয় মুসলিম টুপি পরেছেন। শালীনতা ও সৌন্দর্যের আবরণ টুপি মুসলমানদের
১ দিন আগে