মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
মানুষকে সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে হয়। তাই মানুষের ভালো থাকার জন্য সমাজ ভালো থাকা শর্ত। সমাজ নষ্ট হয়ে গেলে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। নষ্ট সমাজে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা থাকে না। চারদিকে বিরাজ করে ভীতি ও আতঙ্ক। পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও বিশ্বাস কমে যায়। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, হত্যা, দুর্নীতি ইত্যাদি জঘন্য অপরাধের মহামারি।
সমাজ কেন নষ্ট হয়
মানবীয় দুর্বলতার কারণে মানুষ নানা অপকর্মে জড়িত হয়। ভুল-বোঝাবুঝি, মতের অমিল কিংবা স্বার্থের সংঘাত থেকে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এটি স্বাভাবিক। তবে এই অপকর্মের বিষ এবং দ্বন্দ্বের আগুন যেন পুরো সমাজকে আচ্ছন্ন করতে না পারে, তার জন্য একটা ভারসাম্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থা থাকতে হয়, যা গোষ্ঠী, শ্রেণি ও দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সমাজের সমস্যাবলি চিহ্নিত করে তা প্রতিহত করবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করবে।
কোনোভাবেই যদি এই ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ে কিংবা নির্দিষ্ট শ্রেণির স্বার্থ তাকে প্রভাবিত করে ফেলে, তখনই সমাজ নষ্ট হতে শুরু করে। আইনের শাসন ও সুবিচার না থাকায় অপরাধপ্রবণতা বাড়তে থাকে, যার মাশুল শুধু অপরাধীদের নয়, বরং সমাজের প্রত্যেককেই দিতে হয়। এ বিষয়ে সতর্ক করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর সেই ফিতনা থেকে সতর্ক থেকো, যার অনিষ্ট কেবল তোমাদের অপরাধকারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।’ (সুরা আনফাল: ২৫)
এখানে ফিতনা বলতে একটি সর্বব্যাপী সামাজিক অনাচার বোঝানো হয়েছে। এই অনাচার মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ে মানুষের জীবনে দুর্ভোগ ও ধ্বংস ডেকে আনে। শুধু যারা অপরাধ করে, তারাই এই দুর্ভোগ ও ধ্বংসের শিকার হয় না, বরং এর শিকার তারাও হয়, যারা এই অপরাধে জর্জরিত সমাজে বসবাস করা বরদাশত করে নেয়। (তাফহিমুল কোরআন)
সুস্থ সমাজকে নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে, তদ্রূপ নষ্ট হয়ে যাওয়া সমাজকে সুস্থ করে তুলতে ইসলামের রয়েছে সুন্দর নীতিমালা। কোরআন, হাদিস ও সিরাতের আলোকে তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
নৈতিক শিক্ষা ও চরিত্র সংশোধন
সমাজ থেকে অরাজকতা দূর করতে হলে সমাজের সদস্যদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও সচ্চরিত্র হতে হয়। তাই ইসলামে নৈতিকতায় অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মুহাম্মদ (সা.)কে রাসুল হিসেবে পাঠানোর অন্যতম মৌলিক কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ‘সে তাদের (পাপাচার ও চরিত্রহীনতার পঙ্কিলতা থেকে) পরিশুদ্ধ করবে এবং কিতাব ও প্রজ্ঞা শেখাবে।’ (সুরা জুমা: ২) রাসুল (সা.) বলেন, ‘উন্নত চরিত্রের পূর্ণতাদানের জন্যই আমাকে পাঠানো হয়েছে।’ (বায়হাকি)
বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠা
সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সবার মধ্যে একতার বন্ধন থাকা জরুরি। সামাজিক বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীকেন্দ্রিক স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতে পারলেই কেবল একটি আদর্শ ও সুখী সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। এ ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই রাসুল (সা.) আরবের শতধাবিভক্ত এবং যুগ যুগ ধরে গোষ্ঠীকেন্দ্রিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত লোকজনকে নিয়ে কায়েম করেছিলেন মানবেতিহাসের সর্বোৎকৃষ্ট সমাজ।
এদিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জু মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং দলাদলি কোরো না। আল্লাহ তোমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন, সে কথা স্মরণ রেখো। তোমরা ছিলে পরস্পরের শত্রু। তিনি তোমাদের হৃদয়গুলো জুড়ে দিয়েছেন। ফলে তাঁর অনুগ্রহ ও মেহেরবানিতে তোমরা ভাই ভাই হয়ে গেছো। তোমরা একটি অগ্নিকুণ্ডের কিনারে দাঁড়িয়ে ছিলে। আল্লাহ সেখান থেকে তোমাদের বাঁচিয়ে নিয়েছেন।’ (সুরা আল ইমরান: ১০৩)
তারপর অনৈক্য সৃষ্টি করতে পারে এমন সব বিষয়কে ইসলাম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। যেমন—একজন আরেকজনকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা, খারাপ নামে ডাকা, কারও ব্যাপারে অনুমাননির্ভর মন্তব্য করা, গিবত করা এবং দোষ অন্বেষণ করা। (সুরা হুজুরাত: ১১-১২)
অনুরূপভাবে পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করা, সম্পর্ক ছিন্ন করা, একজনের বিক্রির ওপর আরেকজনের বিক্রি, বিয়ের ক্ষেত্রে একজনের প্রস্তাবের ওপর আরেকজনের প্রস্তাব দেওয়া এবং তিন দিনের বেশি সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন থাকা ইত্যাদি। (বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি)
নিরপেক্ষ আদালতের ব্যবস্থা
অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক শৃঙ্খলা সুসংহত রাখার জন্য ইসলাম এমন একটা আদালতের ব্যবস্থা গঠন করতে বলে, যা জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণির পক্ষপাতিত্ব করবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর লোকজনের মধ্যে ফয়সালা করার সময় আদল ও ন্যায়নীতিসহকারে ফয়সালা করো।’ (সুরা নিসা: ৫৮) রাসুল (সা.)-এর সময়ে মাখজুমি গোত্রের এক নারী চুরি কররায় তার ওপর শাস্তি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো। কিন্তু যেহেতু ওই নারী উচ্চবংশীয় ছিলেন, তাই তার বংশের লোকজন রাসুল (সা.)-এর অত্যন্ত প্রিয় সাহাবি উসামা (রা.)-এর মাধ্যমে তার শাস্তি মওকুফ করার আবেদন করেন। এতে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি কি আমাকে আল্লাহর বিচার বাস্তবায়ন না করতে সুপারিশ করছ?’ এরপর সবার উদ্দেশে বললেন, ‘তোমাদের আগের লোকজনের ধ্বংস হওয়ার কারণ ছিল, তাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত কেউ চুরি করলে তাকে ছেড়ে দিত আর সাধারণ কেউ করলে তার শাস্তি কার্যকর করত। আল্লাহর কসম, যদি মুহাম্মদের মেয়ে ফাতেমাও চুরি করত, আমি তার হাত কেটে দিতাম।’ (বুখারি)
পরকালের বিশ্বাস ও জবাবদিহি
ইসলামের সবার মনে এই বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত করে দেয়, পরকালে দুনিয়ার ভালো-খারাপ কর্মের হিসাবনিকাশ হবে। এরপর ভালো কর্মের পুরস্কারস্বরূপ জান্নাত দান করা হবে এবং মন্দ কর্মের শাস্তিস্বরূপ জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এই বিশ্বাস মানুষের মনে ভালো কাজের প্রতি আগ্রহ ও মন্দ কাজের প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি করে, যা সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষায় বড় ভূমিকা পালন করে।
লেখক: শিক্ষক
মানুষকে সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে হয়। তাই মানুষের ভালো থাকার জন্য সমাজ ভালো থাকা শর্ত। সমাজ নষ্ট হয়ে গেলে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। নষ্ট সমাজে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা থাকে না। চারদিকে বিরাজ করে ভীতি ও আতঙ্ক। পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও বিশ্বাস কমে যায়। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, হত্যা, দুর্নীতি ইত্যাদি জঘন্য অপরাধের মহামারি।
সমাজ কেন নষ্ট হয়
মানবীয় দুর্বলতার কারণে মানুষ নানা অপকর্মে জড়িত হয়। ভুল-বোঝাবুঝি, মতের অমিল কিংবা স্বার্থের সংঘাত থেকে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এটি স্বাভাবিক। তবে এই অপকর্মের বিষ এবং দ্বন্দ্বের আগুন যেন পুরো সমাজকে আচ্ছন্ন করতে না পারে, তার জন্য একটা ভারসাম্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থা থাকতে হয়, যা গোষ্ঠী, শ্রেণি ও দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সমাজের সমস্যাবলি চিহ্নিত করে তা প্রতিহত করবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করবে।
কোনোভাবেই যদি এই ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ে কিংবা নির্দিষ্ট শ্রেণির স্বার্থ তাকে প্রভাবিত করে ফেলে, তখনই সমাজ নষ্ট হতে শুরু করে। আইনের শাসন ও সুবিচার না থাকায় অপরাধপ্রবণতা বাড়তে থাকে, যার মাশুল শুধু অপরাধীদের নয়, বরং সমাজের প্রত্যেককেই দিতে হয়। এ বিষয়ে সতর্ক করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর সেই ফিতনা থেকে সতর্ক থেকো, যার অনিষ্ট কেবল তোমাদের অপরাধকারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।’ (সুরা আনফাল: ২৫)
এখানে ফিতনা বলতে একটি সর্বব্যাপী সামাজিক অনাচার বোঝানো হয়েছে। এই অনাচার মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ে মানুষের জীবনে দুর্ভোগ ও ধ্বংস ডেকে আনে। শুধু যারা অপরাধ করে, তারাই এই দুর্ভোগ ও ধ্বংসের শিকার হয় না, বরং এর শিকার তারাও হয়, যারা এই অপরাধে জর্জরিত সমাজে বসবাস করা বরদাশত করে নেয়। (তাফহিমুল কোরআন)
সুস্থ সমাজকে নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে, তদ্রূপ নষ্ট হয়ে যাওয়া সমাজকে সুস্থ করে তুলতে ইসলামের রয়েছে সুন্দর নীতিমালা। কোরআন, হাদিস ও সিরাতের আলোকে তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
নৈতিক শিক্ষা ও চরিত্র সংশোধন
সমাজ থেকে অরাজকতা দূর করতে হলে সমাজের সদস্যদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও সচ্চরিত্র হতে হয়। তাই ইসলামে নৈতিকতায় অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মুহাম্মদ (সা.)কে রাসুল হিসেবে পাঠানোর অন্যতম মৌলিক কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ‘সে তাদের (পাপাচার ও চরিত্রহীনতার পঙ্কিলতা থেকে) পরিশুদ্ধ করবে এবং কিতাব ও প্রজ্ঞা শেখাবে।’ (সুরা জুমা: ২) রাসুল (সা.) বলেন, ‘উন্নত চরিত্রের পূর্ণতাদানের জন্যই আমাকে পাঠানো হয়েছে।’ (বায়হাকি)
বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠা
সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সবার মধ্যে একতার বন্ধন থাকা জরুরি। সামাজিক বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীকেন্দ্রিক স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতে পারলেই কেবল একটি আদর্শ ও সুখী সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। এ ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই রাসুল (সা.) আরবের শতধাবিভক্ত এবং যুগ যুগ ধরে গোষ্ঠীকেন্দ্রিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত লোকজনকে নিয়ে কায়েম করেছিলেন মানবেতিহাসের সর্বোৎকৃষ্ট সমাজ।
এদিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জু মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং দলাদলি কোরো না। আল্লাহ তোমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন, সে কথা স্মরণ রেখো। তোমরা ছিলে পরস্পরের শত্রু। তিনি তোমাদের হৃদয়গুলো জুড়ে দিয়েছেন। ফলে তাঁর অনুগ্রহ ও মেহেরবানিতে তোমরা ভাই ভাই হয়ে গেছো। তোমরা একটি অগ্নিকুণ্ডের কিনারে দাঁড়িয়ে ছিলে। আল্লাহ সেখান থেকে তোমাদের বাঁচিয়ে নিয়েছেন।’ (সুরা আল ইমরান: ১০৩)
তারপর অনৈক্য সৃষ্টি করতে পারে এমন সব বিষয়কে ইসলাম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। যেমন—একজন আরেকজনকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা, খারাপ নামে ডাকা, কারও ব্যাপারে অনুমাননির্ভর মন্তব্য করা, গিবত করা এবং দোষ অন্বেষণ করা। (সুরা হুজুরাত: ১১-১২)
অনুরূপভাবে পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করা, সম্পর্ক ছিন্ন করা, একজনের বিক্রির ওপর আরেকজনের বিক্রি, বিয়ের ক্ষেত্রে একজনের প্রস্তাবের ওপর আরেকজনের প্রস্তাব দেওয়া এবং তিন দিনের বেশি সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন থাকা ইত্যাদি। (বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি)
নিরপেক্ষ আদালতের ব্যবস্থা
অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক শৃঙ্খলা সুসংহত রাখার জন্য ইসলাম এমন একটা আদালতের ব্যবস্থা গঠন করতে বলে, যা জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণির পক্ষপাতিত্ব করবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর লোকজনের মধ্যে ফয়সালা করার সময় আদল ও ন্যায়নীতিসহকারে ফয়সালা করো।’ (সুরা নিসা: ৫৮) রাসুল (সা.)-এর সময়ে মাখজুমি গোত্রের এক নারী চুরি কররায় তার ওপর শাস্তি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো। কিন্তু যেহেতু ওই নারী উচ্চবংশীয় ছিলেন, তাই তার বংশের লোকজন রাসুল (সা.)-এর অত্যন্ত প্রিয় সাহাবি উসামা (রা.)-এর মাধ্যমে তার শাস্তি মওকুফ করার আবেদন করেন। এতে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি কি আমাকে আল্লাহর বিচার বাস্তবায়ন না করতে সুপারিশ করছ?’ এরপর সবার উদ্দেশে বললেন, ‘তোমাদের আগের লোকজনের ধ্বংস হওয়ার কারণ ছিল, তাদের মধ্যে সম্ভ্রান্ত কেউ চুরি করলে তাকে ছেড়ে দিত আর সাধারণ কেউ করলে তার শাস্তি কার্যকর করত। আল্লাহর কসম, যদি মুহাম্মদের মেয়ে ফাতেমাও চুরি করত, আমি তার হাত কেটে দিতাম।’ (বুখারি)
পরকালের বিশ্বাস ও জবাবদিহি
ইসলামের সবার মনে এই বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত করে দেয়, পরকালে দুনিয়ার ভালো-খারাপ কর্মের হিসাবনিকাশ হবে। এরপর ভালো কর্মের পুরস্কারস্বরূপ জান্নাত দান করা হবে এবং মন্দ কর্মের শাস্তিস্বরূপ জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এই বিশ্বাস মানুষের মনে ভালো কাজের প্রতি আগ্রহ ও মন্দ কাজের প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি করে, যা সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষায় বড় ভূমিকা পালন করে।
লেখক: শিক্ষক
আসর শব্দের অর্থ সময়। পবিত্র কোরআনে আসর নামে একটি সুরা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা আসর বা সময়ের শপথ করেছেন। মুসলিমরা দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, তার তৃতীয় ওয়াক্তকে আসর নামে অভিহিত করা হয়। এ ছাড়াও পবিত্র কোরআনে এটিকে সালাত আল-ওসতা বা মধ্যবর্তী নামাজ হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগেজ্ঞানগর্ভ ও উপদেশে ভরা কোরআন জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি গাইড বই। মানুষ কোথায় কখন কী করবে, কেন করবে, কীভাবে করবে—তা বলে দেওয়া হয়েছে কোরআনে। কোরআন তথা আল্লাহপ্রদত্ত আসমানি কিতাবের হিদায়াতের বাইরে কোনো সঠিক জীবনদর্শন নেই, কোনো ধর্মদর্শন নেই, কোনো মুক্তির পথ নেই। মানবজাতির সূচনালগ্নেই কথাটি জানিয়ে দেওয়া
১ দিন আগেএকজন মুমিনের কাছে রমজান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। মহানবী (সা.) এ পবিত্র মাসকে বেশ গুরুত্ব দিতেন। অন্যান্য কাজকর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে অধিক পরিমাণে ইবাদতে মশগুল হতেন। সাহাবিদের অভ্যাসও ছিল একই রকম। গুরুত্ব বিবেচনায় রমজানের প্রস্তুতিও শুরু হতো বেশ আগে থেকেই। রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকেই মহানবী (সা.) অধীর আগ
১ দিন আগেহাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্যের স্মারক টুপি। ইসলামের সূচনাকাল থেকেই টুপি পরিধানের চল রয়েছে। ফিকহের দৃষ্টিকোণে টুপি পরা সুন্নত। মহানবী (সা.) সর্বদা টুপি পরতেন, হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তার প্রমাণ মেলে। সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী যুগের সব অনুসরণীয় মুসলিম টুপি পরেছেন। শালীনতা ও সৌন্দর্যের আবরণ টুপি মুসলমানদের
১ দিন আগে