মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
প্রশ্ন: কোরবানির বিধান কী? তা কখন কার জন্য আবশ্যক হয়? বিস্তারিত জানতে চাই।
আবদুল করিম, মানিকগঞ্জ
উত্তর: কোরবানি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখে ইসলামি শরিয়ত-নির্ধারিত পশু আল্লাহর নামে জবাইয়ের মাধ্যমে এই ইবাদত পালন করা হয়। এটি একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। পশু জবাই না করে তার মূল্য গরিবদের মধ্যে বণ্টন করলে কোরবানি আদায় হবে না।
কোরবানির বিধান
পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে কোরবানি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশে নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি দাও।’ (সুরা কাউসার: ২) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন-মরণ জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই নিবেদিত।’ (সুরা আনআম: ১৬২) আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম ঠিক করে দিয়েছি, যেন আল্লাহ তাদের যে চতুষ্পদ জন্তু দান করেছেন, সেগুলোর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে।’ (সুরা হজ: ৩৪)
মহানবী (সা.)-এর অসংখ্য হাদিসেও কোরবানির আবশ্যকতা ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) মদিনায় ১০ বছর অবস্থান করেছেন এবং প্রতিবছর কোরবানি দিয়েছেন।’ (আহমদ ও তিরমিজি) অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে না আসে।’ (ইবনে মাজাহ) আরেক হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘হে মানুষ, প্রতিবছর প্রতিটি পরিবারের ওপর কোরবানি ও আতিরাহ (ইসলামের প্রাথমিক যুগে রজব মাসে কোরবানি করার প্রথা ছিল, তাকে আতিরাহ বলা হয়। পরবর্তী সময়ে তা রহিত হয়ে যায়) ওয়াজিব।’ (আবু দাউদ ও তিরমিজি)
উপর্যুক্ত আয়াত ও হাদিসের আলোকে আলেমরা এ ব্যাপারে একমত যে কোরবানি ইসলামি শরিয়তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ও ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)সহ আরও অনেক আলেমের মতানুসারে সামর্থ্যবানদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব তথা অবশ্যপালনীয়। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ)
কোরবানি কখন কার জন্য আবশ্যক
প্রাপ্তবয়স্ক, মানসিকভাবে সুস্থ মুকিম (মুসাফির নয়) এমন প্রত্যেক নর-নারীর কোরবানি করা ওয়াজিব, যারা ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে। টাকাপয়সা, সোনা-রুপা, অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে লাগে না এমন জমি, প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাব কোরবানির নিসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
নিসাবের পরিমাণ হলো, স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ ভরি এবং রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে ৫২ ভরি। টাকাপয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হলো এর মূল্য সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিন্ন ভিন্ন বস্তুর একত্র মূল্যের পরিমাণ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের সমান হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে। (আল মহিতুল বুরহানি, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া)
কোরবানির ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়; বরং জিলহজের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে যেকোনো সময় নিসাবের মালিক হলে কোরবানি ওয়াজিব হবে। (বাদায়েউস সানায়ে)
নাবালক, পাগল, মুসাফির নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়। (ফাতাওয়া শামি)
উত্তর দিয়েছেন, মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ, শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
প্রশ্ন: কোরবানির বিধান কী? তা কখন কার জন্য আবশ্যক হয়? বিস্তারিত জানতে চাই।
আবদুল করিম, মানিকগঞ্জ
উত্তর: কোরবানি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখে ইসলামি শরিয়ত-নির্ধারিত পশু আল্লাহর নামে জবাইয়ের মাধ্যমে এই ইবাদত পালন করা হয়। এটি একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। পশু জবাই না করে তার মূল্য গরিবদের মধ্যে বণ্টন করলে কোরবানি আদায় হবে না।
কোরবানির বিধান
পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে কোরবানি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশে নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি দাও।’ (সুরা কাউসার: ২) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন-মরণ জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই নিবেদিত।’ (সুরা আনআম: ১৬২) আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম ঠিক করে দিয়েছি, যেন আল্লাহ তাদের যে চতুষ্পদ জন্তু দান করেছেন, সেগুলোর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে।’ (সুরা হজ: ৩৪)
মহানবী (সা.)-এর অসংখ্য হাদিসেও কোরবানির আবশ্যকতা ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) মদিনায় ১০ বছর অবস্থান করেছেন এবং প্রতিবছর কোরবানি দিয়েছেন।’ (আহমদ ও তিরমিজি) অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে না আসে।’ (ইবনে মাজাহ) আরেক হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘হে মানুষ, প্রতিবছর প্রতিটি পরিবারের ওপর কোরবানি ও আতিরাহ (ইসলামের প্রাথমিক যুগে রজব মাসে কোরবানি করার প্রথা ছিল, তাকে আতিরাহ বলা হয়। পরবর্তী সময়ে তা রহিত হয়ে যায়) ওয়াজিব।’ (আবু দাউদ ও তিরমিজি)
উপর্যুক্ত আয়াত ও হাদিসের আলোকে আলেমরা এ ব্যাপারে একমত যে কোরবানি ইসলামি শরিয়তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ও ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)সহ আরও অনেক আলেমের মতানুসারে সামর্থ্যবানদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব তথা অবশ্যপালনীয়। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ)
কোরবানি কখন কার জন্য আবশ্যক
প্রাপ্তবয়স্ক, মানসিকভাবে সুস্থ মুকিম (মুসাফির নয়) এমন প্রত্যেক নর-নারীর কোরবানি করা ওয়াজিব, যারা ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে। টাকাপয়সা, সোনা-রুপা, অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে লাগে না এমন জমি, প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাব কোরবানির নিসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
নিসাবের পরিমাণ হলো, স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ ভরি এবং রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে ৫২ ভরি। টাকাপয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হলো এর মূল্য সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিন্ন ভিন্ন বস্তুর একত্র মূল্যের পরিমাণ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের সমান হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে। (আল মহিতুল বুরহানি, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া)
কোরবানির ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়; বরং জিলহজের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে যেকোনো সময় নিসাবের মালিক হলে কোরবানি ওয়াজিব হবে। (বাদায়েউস সানায়ে)
নাবালক, পাগল, মুসাফির নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়। (ফাতাওয়া শামি)
উত্তর দিয়েছেন, মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ, শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
ভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
২০ ঘণ্টা আগেজুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
২ দিন আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
২ দিন আগে