Ajker Patrika

মিমার সিনান: ইসলামি স্থাপত্যের কিংবদন্তি

মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ 
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৫, ২১: ০২
শেহজাদে জামি বা শাহজাদা মসজিদ, ইস্তানবুল, তুরস্ক। ছবি: সংগৃহীত
শেহজাদে জামি বা শাহজাদা মসজিদ, ইস্তানবুল, তুরস্ক। ছবি: সংগৃহীত

মিমার সিনান (১৪৮৯–১৫৮৮) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের স্থাপত্যশিল্পের এক রত্ন। তিনি উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রধান স্থপতি হিসেবে পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই উসমানীয় স্থাপত্যশিল্প উৎকর্ষের চূড়া স্পর্শ করেছিল। তিনি প্রায় ৩০০টি স্থাপনা নির্মাণ করেন, যেগুলোর মধ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, সেতু, প্রাসাদসহ অনেক ধরনের স্থাপনা অন্তর্ভুক্ত। তাঁর কাজ শুধু ইসলামি স্থাপত্যশিল্পের গৌরব বৃদ্ধি করেনি, বরং বিশ্ব স্থাপত্যেও একটি নতুন ধারার সূচনা করেছে।

প্রাথমিক জীবন

মিমার সিনানের জন্ম ১৪৮৯ সালে, আনাতোলিয়ার কায়সেরি অঞ্চলের আগারনাস গ্রামে। তাঁর পরিবার ছিল খ্রিষ্টান এবং তাঁর নাম ছিল জোসেফ। উসমানীয় সাম্রাজ্যের দেভশিরমে প্রথা অনুসারে তাঁকে অল্প বয়সে সুলতানের সেবায় আনা হয়। এই প্রথায় খ্রিষ্টান পরিবার থেকে প্রতিভাবান যুবকদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিয়ে তাঁদের সামরিক বা প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।

সেনাবাহিনীতে যোগদানের পর তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং ‘মিমার সিনান’ নামে পরিচিত হন। সেনাজীবনে তাঁর প্রকৌশল ও স্থাপত্য দক্ষতা প্রমাণিত হয়। সামরিক প্রশিক্ষণের সময় তিনি গণিত, প্রকৌশল ও হস্তশিল্পে দক্ষতা অর্জন করেন, যা পরবর্তী সময়ে তাঁকে স্থাপত্যশিল্পে সফলতা এনে দেয়।

উসমানীয় সাম্রাজ্যে অবদান

১৫৩৯ সালে মিমার সিনান উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রধান স্থপতি (মিমারবাশি) হিসেবে নিযুক্ত হন। এই পদে তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর কাজ করেন এবং তাঁর পরিকল্পনায় সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মিত হয়। তাঁর কাজ শুধু ইস্তাম্বুলেই সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থাপনা নির্মাণ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে—

সেলিমিয়া মসজিদ (১৫৭৫, এদিরনে): মিমার সিনানের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি হিসেবে ধরা হয় সেলিমিয়া মসজিদকে। সুলতান দ্বিতীয় সেলিমের আদেশে নির্মিত মসজিদটি কেন্দ্রীয় গম্বুজের উচ্চতা, ব্যাস এবং স্থাপত্যিক নকশার জন্য আজও বিস্ময় জাগায়। এটি উসমানীয় স্থাপত্যের উৎকর্ষের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।

সুলেমানিয়া মসজিদ (১৫৫৭, ইস্তাম্বুল): সুলতান সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্টের নামে নির্মিত এই মসজিদ উসমানীয় স্থাপত্যের অন্যতম গৌরব। এটি ইস্তাম্বুল শহরের একটি প্রধান নিদর্শন এবং এর জটিল নকশা ও বিশাল আকার মিমার সিনানের প্রতিভার পরিচায়ক।

মিহরিমাহ সুলতান মসজিদ: এটি সুলতান সুলেমানের কন্যা মিহরিমাহ সুলতানের জন্য নির্মিত। এই মসজিদ মিমার সিনানের নকশাগত কৌশলের একটি নিখুঁত উদাহরণ। এর আলো-বাতাসের প্রাকৃতিক প্রবাহ এবং নান্দনিকতা স্থপতিদের জন্য আজও অনুপ্রেরণা।

সেতু ও অন্যান্য স্থাপনা: মিমার সিনান শুধু মসজিদ নির্মাণেই দক্ষ ছিলেন না, তিনি সেতু, প্রাসাদ এবং অন্যান্য কাঠামোও নির্মাণ করেছেন। তার নির্মিত মাগলোভা সেতু ইস্তাম্বুলের কাছে অবস্থিত এবং এটি তার স্থাপত্যের এক অমর নিদর্শন।

স্থাপত্যশৈলী

মিমার সিনানের স্থাপত্যকর্মে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা তাঁর দক্ষতা এবং সৃজনশীলতার পরিচায়ক। যেমন:

গম্বুজ নির্মাণ: মিমার সিনান ইসলামি স্থাপত্যে গম্বুজ নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি নতুন মান তৈরি করেন। তাঁর নির্মিত মসজিদগুলোর গম্বুজ স্থায়িত্ব ও নান্দনিকতার জন্য বিখ্যাত।

ভারসাম্য ও শৃঙ্খলা: তাঁর নকশাগুলোতে স্থাপত্যিক ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে, যা ওই সময়ের অন্যান্য স্থাপত্য থেকে আলাদা।

আলো-বাতাসের প্রাকৃতিক প্রবাহ: তাঁর নির্মিত স্থাপনাগুলোতে প্রাকৃতিক আলো এবং বাতাস প্রবাহের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ছিল, যা পরিবেশবান্ধব এবং ব্যবহারকারীদের জন্য আরামদায়ক।

ইসলামি শিল্পের সৌন্দর্য: মিমার সিনান ইসলামি নকশার সঙ্গে প্রকৌশল দক্ষতার এমন সমন্বয় করেন, যা তার স্থাপত্যকে অনন্য করে তোলে।

উত্তরাধিকার

মিমার সিনানের স্থাপত্যকর্ম তাঁর জীবদ্দশায়ই অসংখ্য প্রশংসা অর্জন করে। তাঁর কাজ শুধু উসমানীয় সাম্রাজ্যের জন্য নয়, বরং বিশ্বস্থাপত্যের ইতিহাসের জন্য একটি মাইলফলক। ১৫৮৮ সালে তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর ছাত্র ও অনুগামীরা তাঁর ধারাকে অব্যাহত রাখেন। তাঁর কাজ পরে ইউরোপ এবং অন্যান্য অঞ্চলের স্থাপত্যে প্রভাব ফেলে।

মিমার সিনানের স্থাপত্যকর্ম আজও অটুট রয়েছে এবং এটি ইসলামি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি জীবন্ত নিদর্শন। তাঁর কাজ আমাদের শেখায় যে প্রতিভা, অধ্যবসায় এবং সৃজনশীলতার মিশ্রণ একটি জাতির ইতিহাসকে বদলে দিতে পারে।

সূত্র:

গডফ্রে গুডউইন। সিনান: ওসমানীয় স্থাপত্য এবং তার উত্তরাধিকার। থেমস অ্যান্ড হাডসন, ১৯৭১।

গুলরু নেকিপোগলু। সিনান যুগ: ওসমানীয় সাম্রাজ্যে স্থাপত্য সংস্কৃতি। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০৫।

সিনানের ইসলামী উত্তরাধিকার। ইসলামিক আর্টস মিউজিয়াম, ইস্তাম্বুল আর্কাইভস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনের কারণে এগিয়ে এল কওমি মাদ্রাসার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর কেন্দ্রীয় বোর্ড পরীক্ষা এগিয়ে আনা হয়েছে। কওমি সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) ও বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার পূর্বঘোষিত তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

নতুন সূচি অনুযায়ী, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ জানুয়ারী (শনিবার)। এ ছাড়া ২০২৬ সালের দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার)।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়।

আল-হাইআতুল উলয়ার অফিস ব্যবস্থাপক মু. অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ৬৬ নম্বর সভার সিদ্ধান্ত ও ১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মনিটরিং সেলের সভার সিদ্ধান্তক্রমে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, ২৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। টানা ১০ দিন পরীক্ষা চলার পর ৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পরীক্ষা শেষ হবে।

প্রথম দিনের পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং শেষ হবে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে। অবশিষ্ট ৯ দিন পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ৯টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে।

প্রথম দিন তিরমিজি শরিফ প্রথম খণ্ডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর শেষ দিন পরীক্ষা হবে মুওয়াত্তায়ে ইমাম মালিক ও মুওয়াত্তায়ে ইমাম মুহাম্মদ কিতাবের।

এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের প্রধান পরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী জানান, বেফাকের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ জানুয়ারী (শনিবার)। শুক্রবারসহ চলবে ২৪ জানুয়ারি (শনিবার) পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শুরু হচ্ছে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ কোরআন প্রতিযোগিতা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট সিজন-২ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে। ‘টি কে গ্রুপ’-এর উদ্যোগে এই ‘ইসলামিক রিয়্যালিটি শো’টি দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিজনেস ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোফাচ্ছেল হক দেশবরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ, আলেম ও শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেধাবী কিশোর-কিশোরী হাফেজদের জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরা এবং তাদের মূল্যায়ন করার উদ্দেশ্যে পুষ্টি পবিত্র কোরআন চর্চার যে যাত্রা শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। আমাদের বিশ্বাস, দ্বিতীয় এই আসরে পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট আরও জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, টি কে গ্রুপের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ইসলামের খেদমতে এই আয়োজন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে টি কে গ্রুপের পরিচালক (এইচআর) আলমাস রাইসুল গনিও বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারি এবং ‘পুষ্টি ভার্সেস অব লাইট’-এর প্রধান বিচারক শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। তিনি বলেন, ‘কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে পবিত্র কোরআনের প্রতি অনুরাগী করতে এই আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। সমাজে ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় টি কে গ্রুপের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খুদে প্রতিভাবান হাফেজগণ প্রাথমিক অডিশন রাউন্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। অভিজ্ঞ বিচারক এবং আলেমগণের বিবেচনায় সেরা প্রতিযোগীরা মূল পর্বে অংশগ্রহণ করবে। রিজিওনাল অডিশনে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীরা পুষ্টির পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় উপহার পাবে।

২২ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী অডিশন পর্ব শুরু হবে। চূড়ান্ত পর্ব পবিত্র রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিন বিকেল ৫টা হতে মাগরিবের আজানের আগে দেশের অন্যতম চ্যানেল ‘নাইন’-এ প্রচারিত হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে বিজয়ীরা পাবেন লক্ষাধিক টাকাসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

সংবাদ সম্মেলনে টি কে গ্রুপের বিভিন্ন ইউনিটের হেড অব সেলস, হেড অব বিজনেসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রবীণ সুফি পীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি আর নেই

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে যে আমল

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)

মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।

দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)

অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত