Ajker Patrika

আধুনিক আরবি ক্যালিগ্রাফির পথিকৃৎ এল সাইদ

এল সাইদ একালের সবচেয়ে প্রভাবশালী আরবি ক্যালিগ্রাফি শিল্পীদের একজন। আরবি ক্যালিগ্রাফির প্রথাগত ধারা ভেঙে মুক্ত হস্তশৈলীকে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় করতে বড় অবদান রাখছেন। তাঁর অনন্য শিল্পকর্মগুলো বিশ্বের সামনে আরবি ভাষাকে মানবিকতার ভাষ্যকার রূপে প্রতিষ্ঠিত করছে। ভাষিক গণ্ডির খোলস ছেড়ে আরবি অক্ষর বিশ্বজনীন হয়ে উঠছে তাঁরই জাদুকরি ছোঁয়ায়। তাঁর কাজের চুম্বকাংশ তুলে ধরেছেন ইজাজুল হক।

ইজাজুল হক
এল সাইদ। ছবি: সংগৃহীত
এল সাইদ। ছবি: সংগৃহীত

বেড়ে ওঠা

এল সাইদের জন্ম প্যারিসে, ১৯৮১ সালে। মা-বাবা দুজনই আরব তিউনিশিয়ান। ছোটকাল থেকেই আঁকাআঁকির প্রতি ঝোঁক ছিল। ফরাসি মাধ্যমে পড়াশোনা করেন এবং প্যারিসের বিভিন্ন আর্ট স্কুলে নিজেকে সমৃদ্ধ করেন। পারিবারিক পরিবেশে তিউনিশিয়ান আঞ্চলিক আরবিতে কথা বলা শিখলেও ১৮ বছর পর্যন্ত প্রমিত আরবির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। পরে নিজের শিকড় খুঁজতে গিয়ে আরবি ক্যালিগ্রাফির দিকে ঝোঁকেন। প্রাথমিক সময়ে প্রথাগত ক্যালিগ্রাফি চর্চা করলেও পরে নিজেকে সেই বেষ্টনীতে আটকে রাখতে পারেননি। শুরু করেন প্রথা ভাঙার কাজ।

প্রথাভাঙা শৈলীর যাত্রা

আরবি ক্যালিগ্রাফির প্রথাগত ধারায় যেসব শৈলী চর্চিত হয়, সেগুলোর কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন রয়েছে। ইসলামের প্রথম যুগ থেকেই কোরআন লিপিবদ্ধ করাকে কেন্দ্র করে আরবি অক্ষরশিল্প বিকশিত হতে থাকে। বিগত ১৪০০ বছর ধরে আরব বিশ্বে অনেক খত্ব বা অক্ষরশৈলী তৈরি হয়েছে। এসব খত্বে ক্যালিগ্রাফি চর্চাকারী শিল্পীর সংখ্যাও বিপুল। তবে আধুনিক শিল্পকলা সম্পর্কে জ্ঞান রাখা এল সাইদ দীর্ঘ চর্চার মধ্য দিয়ে সেই ধরাবাঁধা নিয়ম ভেঙে নতুন শৈলী গড়ে তোলেন, যা বিশ্বজুড়ে মুক্ত হস্তশৈলী নামে পরিচিত। এতে কোনো নিয়মকানুন নেই, যে অক্ষরটি যেভাবে করলে শিল্পীর মন সন্তুষ্ট হয়, সেভাবেই শিল্পী সাজাতে পারেন। এই ধারা বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে।

তাঁর শিল্পকর্মের ধরন

এল সাইদ ক্যালিগ্রাফিকে আর্টবোর্ড ও ক্যানভাস থেকে মুক্ত পরিসরে নিয়ে গেছেন। আরবি অক্ষরকে মুক্তভাবে বিশ্বমননের কাছে নিয়ে যাওয়াই তাঁর লক্ষ্যে পরিণত হয়। ফলে প্রথম প্রথম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আরবি অক্ষরের গ্রাফিতি করতে শুরু করেন। পরে তা ম্যুরাল ও ভাস্কর্যেও গড়ায়। এখন এল সাইদ একজন চিত্রকলা ও ভাস্কর্যের নিবেদিত শিল্পী। তিনি আরবি অক্ষরকে ক্যালিগ্রাফির ঐতিহ্যগত ধারার অনুপ্রেরণা নিয়ে আধুনিক শিল্পকলার মধ্য দিয়ে বিকশিত করে যাচ্ছেন। স্থান নির্বাচন, রং ও কম্পোজিশনের নান্দনিকতায় এল সাইদ নিজেই নিজের উদাহরণ। এ ছাড়া তাঁর প্রতিটি শিল্পকর্ম ঐক্য, শান্তি, সহাবস্থান ও স্বাধীনতার পক্ষে জোরালো বার্তা দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আরবি ভাষাকে মানবিকতার আহ্বানে উচ্চকিত করছে এসব কাজ।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাণকেন্দ্র দুবাই অপেরায় ক্যালিগ্রাফিক ম্যুরাল ‘ডিক্লারেশন’। ছবি: সংগৃহীত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাণকেন্দ্র দুবাই অপেরায় ক্যালিগ্রাফিক ম্যুরাল ‘ডিক্লারেশন’। ছবি: সংগৃহীত

উল্লেখযোগ্য কাজ

এল সাইদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্যালিগ্রাফি, ক্যালিগ্রাফিতি, ভাস্কর্য ও ম্যুরাল তৈরি করেছেন। বড় আকারে ক্যালিগ্রাফিতি করার ধারণা তিনিই প্রথম দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তিনি তিউনিশিয়া, কানাডা, ব্রাজিল, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অনেক দেশে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে—

পারসেপশন: এটি সম্ভবত বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যালিগ্রাফিতি। মিসরের কায়রোর মানশিয়াত নাসর নামক স্থানে এটি আঁকা হয়। মূলত এটি হলো শহরের আবর্জনা সংগ্রহকারী খ্রিষ্টানদের একটি সম্প্রদায়ের বসতি। জায়গাটি ভীষণ নোংরা ও অবহেলিত। ভাঙাচোরা ভবনে ঠাসা। সেখানে আলো ফেলতেই বড় বড় ৫০টি ভবনজুড়ে আঁকেন একটি রঙিন আরবি বাণী, যা কায়রোর মোকাত্তাম পর্বতের একটি পয়েন্ট থেকে পুরোপুরি দেখা যায়। তাতে লেখা আছে, ‘যে ব্যক্তি সূর্যের আলো স্পষ্ট করে দেখতে চায়, তাকে প্রথমে নিজের চোখ মুছে নিতে হবে।’

ব্রিজ: উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মাঝে একটি নিরপেক্ষ অঞ্চল আছে, যাকে ডিএমজেড বলা হয়। সেখানে কাঁটাতারের পাশে স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে দীর্ঘ এক ক্যালিগ্রাফিক ম্যুরাল তৈরি করেছেন এল সাইদ। এক অবিভক্ত কোরিয়ান কবির কয়েকটি পঙ্‌ক্তির আরবি অনুবাদের মাধ্যমে দুই কোরিয়াকে শান্তির বার্তা দেওয়া হয়েছে।

ডিক্লারেশন: এই ক্যালিগ্রাফিক ম্যুরাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাণকেন্দ্র দুবাই অপেরার সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। নিজার কাব্বানির একটি ভালোবাসার কবিতা রঙিন থ্রি-ডি ম্যুরালে এখানে জীবন্ত হয়ে ধরা দেয়।

মিরাজ আল-উলা: সৌদি আরবে গড়ে ওঠা নতুন পর্যটনকেন্দ্র আল-উলায় তৈরি হয়েছে এই ভাস্কর্য। মরুর বালুর রঙের সঙ্গে মিল রেকে প্যাঁচানো আরবি শব্দের বুননে গোল করে তৈরি এই শিল্পকর্ম আল-উলার সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। আরব পুরাণের একটি প্রেমের পঙ্‌ক্তি দিয়ে এটি সাজানো হয়।

মিসরের কায়রোর মানশিয়াত নাসরে ৫০টি ভবনজুড়ে আঁকা ক্যালিগ্রাফিতি ‘পারসেপশন’। ছবি: সংগৃহীত
মিসরের কায়রোর মানশিয়াত নাসরে ৫০টি ভবনজুড়ে আঁকা ক্যালিগ্রাফিতি ‘পারসেপশন’। ছবি: সংগৃহীত

এ ছাড়া এল সাইদের ক্যালিগ্রাফি নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট, ভার্জিনিয়ার ক্রাইসলার মিউজিয়াম অব আর্ট, ল্যুভর মিউজিয়াম আবুধাবিসহ বিশ্বখ্যাত বহু শিল্প জাদুঘরের সংগ্রহশালায় স্থান পেয়েছে।

স্বীকৃতি ও সম্মাননা

২০১৩ সালে এল সাইদ দুবাইয়ের রাজপরিবারের আমন্ত্রণে দুবাই চলে আসেন এবং সেখানকার একাধিক প্রজেক্টে যুক্ত হন। পরে তিনি দুবাইয়ে নিজের অফিস ও স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করে কার্যক্রম চালাতে শুরু করেন এবং সেখানেই থিতু হন। ২০১৫ সালে তিনি মার্কিন প্রভাবশালী মিডিয়া টিইডির ফেলো ও ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মনোনীত হন। কায়রোতে করা ক্যালিগ্রাফিতি ‘পারসেপশন’-এর জন্য তিনি অসংখ্য স্বীকৃতি লাভ করেন। বিশেষ করে ২০১৬ সালে ফরেন পলিসি ম্যাগাজিন কর্তৃক বৈশ্বিক চিন্তাবিদ স্বীকৃতি পান, ২০১৭ সালে ইউনেসকো শারজাহ প্রাইস ফর আরব কালচার এবং ২০১৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ফর পাবলিক আর্ট লাভ করেন। সর্বশেষ ২০২১ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তরুণ বিশ্বনেতাদের একজন মনোনীত হন। এ ছাড়া বিশ্বের বহু আর্ট প্ল্যাটফর্মে তাঁকে সম্মানিত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১১ মিনিট
ফজর০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
জোহর১১: ৫৪ মিনিট০৩: ৩৭ মিনিট
আসর০৩: ৩৮ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১১ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যেভাবে অন্যদের ভুল শুধরে দিতেন নবীজি

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।

ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।

মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।

রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১০ মিনিট
ফজর০৫: ১১ মিনিট০৬: ৩০ মিনিট
জোহর১১: ৫৩ মিনিট০৩: ৩৬ মিনিট
আসর০৩: ৩৭ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১০ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিসরে কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাসকে বিমানবন্দরে সংবর্ধনা

ইসলাম ডেস্ক 
৭০টি দেশকে হারিয়ে বাংলাদেশি হাফেজ আনাসের বিশ্বজয়। ছবি: সংগৃহীত
৭০টি দেশকে হারিয়ে বাংলাদেশি হাফেজ আনাসের বিশ্বজয়। ছবি: সংগৃহীত

মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাস বিন আতিককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর তাঁকে ছাদখোলা বাসে ঢাকার রাজপথে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বিমানবন্দরে সংবর্ধনায় অভিব্যক্তি প্রকাশ করছেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস।
বিমানবন্দরে সংবর্ধনায় অভিব্যক্তি প্রকাশ করছেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস।

এ সময় বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যে দেশের ক্বারীদের তিলাওয়াত শুনে কেরাত শিখি, সে দেশের প্রতিযোগিতায় আমার এই অর্জন সত্যিই অনেক আনন্দের। কেরাতের রাজধানীখ্যাত মিসরে গিয়ে এ বিজয় অর্জন বেশ কঠিন ছিল। তবে আমার ওস্তাদ, মা-বাবা এবং দেশের মানুষের দোয়ায় তা সম্ভব হয়েছে।’

হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করেছে আমার প্রিয় ছাত্র হাফেজ আনাস। সে বারবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সে আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।’

হাফেজ আনাস ও তার ওস্তাদ শায়েখ নেছার আহমদ আন নাছিরীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
হাফেজ আনাস ও তার ওস্তাদ শায়েখ নেছার আহমদ আন নাছিরীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয় বাংলাদেশ।

নেছার আহমদ আরও জানান, হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।

প্রসঙ্গত, হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত