আমজাদ ইউনুস
ইতিকাফ শব্দের অর্থ অবস্থান করা। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, নিয়তসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এমন মসজিদে কেবল ইবাদতের উদ্দেশ্যে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে।
রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহর নৈকট্য এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ রজনী তথা শবে কদর লাভের অন্যতম মাধ্যম।
রাসুল (সা.) তাঁর মদিনার জীবনে প্রতি রমজানে ইতিকাফ করতেন। এক রমজানে কোনো কারণে ইতিকাফ ছুটে গেলে পরবর্তী রমজানে ২০ দিন ইতিকাফ করে তা পূরণ করে নিয়েছেন। (আবু দাউদ: ২৪৬৩)
পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্যও ইতিকাফের অনুমতি ও বৈধতা রয়েছে। তবে নারীদের জন্য ইতিকাফ করা মুস্তাহাব। আর পুরুষদের জন্য তা সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। তাই রমজানের শেষ দশকে মহল্লার মসজিদে ন্যূনতম একজন পুরুষ ইতিকাফ করলে সবাই দায়মুক্ত হয়ে যাবে। তবে নারীর ইতিকাফ পুরুষের জন্য যথেষ্ট নয়।
রাসুল (সা.) পবিত্র স্ত্রীগণ ইতিকাফ করতেন। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী (সা.) মৃত্যু পর্যন্ত রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন।’ (বুখারি: ২০২৬; মুসলিম: ১১৭২)
একজন নারী যেকোনো প্রকারের মসজিদে ইতিকাফ করতে পারেন। সেটা পাঞ্জেগানা মসজিদ তথা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাত হয় এমন মসজিদ হওয়া শর্ত নয়। কারণ জামাতে নামাজ আদায় করা নারীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়। (আল-মুগনি, ইবনে কুদামা: ৪ / ৪৬৪)
হানাফি মাজহাব এবং অন্যান্য ফকিহদের ভাষ্যমতে, নারীগণ যেভাবে ঘরে নামাজ পড়েন, ঠিক সেভাবে তাঁরা ঘরেই ইতিকাফ করবেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা ঘরে নামাজের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গা থাকলে সেখানেই ইতিকাফ করবেন। আর কোনো জায়গা সুনির্দিষ্ট না থাকলে ইতিকাফের আগে ইবাদতের জন্য উপযোগী একটি জায়গা নির্ধারণ করে নেবেন। অবশ্য কোনো নারী মসজিদে ইতিকাফ করলেও তা শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে নিজ ঘরে ইতিকাফ করাই নারীর জন্য উত্তম। এটিই বিশুদ্ধ মত। (উমদাতুল কারি: ১১ / ১৪৮; আল মাবসুত লি-সারাখসি: ৩ / ১১৯)
নারীদের ইতিকাফের জন্য স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন। ইতিকাফ একটি নফল ইবাদত। ইতিকাফের জন্য স্বামীর অনুমতি আবশ্যক। আয়েশা (রা.) ইতিকাফের আগে রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। অতএব, স্বামী বা অভিভাবক অনুমতি দিলে ইতিকাফ করা উচিত এবং যদি কোনো নারী তাঁর স্বামীর অনুমতি ছাড়া ইতিকাফ করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমের অভিমত হলো, তাঁর স্বামী চাইলে তাঁকে ইতিকাফ ভেঙে ফেলতে হবে। (ফাতহুল বারি: ৪ / ৩২৫; বুলুগুল আমানি: ১০ / ২৫০)
যে মসজিদে নারীরা ইতিকাফ করবেন সেখানে তাঁদের জন্য সম্পূর্ণ পর্দার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাঁদের অজু, গোসল এবং বাথরুমের আলাদা ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাঁদের ইতিকাফের স্থানের অংশটি অবশ্যই পুরুষদের যাতায়াত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হতে হবে। আর যদি এ ধরনের সুযোগ–সুবিধা না থাকে এবং ফিতনার সম্ভাবনা থাকে, তবে নারীদের মসজিদে ইতিকাফ না করাই উত্তম। (ফাতহুল বারি: ৪ / ৩২৫ /)
নারীদের ঋতুস্রাব অবস্থায় ইতিকাফ করা যাবে না। কেননা এ অবস্থায় রোজা রাখা যায় না। আর সুন্নত ইতিকাফের জন্য রোজাদার হওয়া শর্ত। (বাদায়েউস সানায়ে: ২ / ২৭৪; ফাতাওয়া আলমগিরি: ১ / ২১১)
ইতিকাফ শুরু করার পর ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। পরে শুধু একদিনের ইতিকাফ রোজাসহ কাজা করতে হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া: ৪ / ৫০২)
ইতিকাফ অবস্থায় কোনো ভাবেই স্বামী–স্ত্রীর মেলামেশা করা যাবে না। করলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। (ফাতাওয়া শামি: ৩৪৪২)
ইতিকাফ অবস্থায় গিবত ও অশ্লীল কথাবার্তা পরিহার করে কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ পাঠ, ইস্তিগফারসহ নফল ইবাদতে মগ্ন থাকা উচিত।
লেখক: শিক্ষক
ইতিকাফ শব্দের অর্থ অবস্থান করা। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, নিয়তসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এমন মসজিদে কেবল ইবাদতের উদ্দেশ্যে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে।
রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহর নৈকট্য এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ রজনী তথা শবে কদর লাভের অন্যতম মাধ্যম।
রাসুল (সা.) তাঁর মদিনার জীবনে প্রতি রমজানে ইতিকাফ করতেন। এক রমজানে কোনো কারণে ইতিকাফ ছুটে গেলে পরবর্তী রমজানে ২০ দিন ইতিকাফ করে তা পূরণ করে নিয়েছেন। (আবু দাউদ: ২৪৬৩)
পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্যও ইতিকাফের অনুমতি ও বৈধতা রয়েছে। তবে নারীদের জন্য ইতিকাফ করা মুস্তাহাব। আর পুরুষদের জন্য তা সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। তাই রমজানের শেষ দশকে মহল্লার মসজিদে ন্যূনতম একজন পুরুষ ইতিকাফ করলে সবাই দায়মুক্ত হয়ে যাবে। তবে নারীর ইতিকাফ পুরুষের জন্য যথেষ্ট নয়।
রাসুল (সা.) পবিত্র স্ত্রীগণ ইতিকাফ করতেন। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী (সা.) মৃত্যু পর্যন্ত রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন।’ (বুখারি: ২০২৬; মুসলিম: ১১৭২)
একজন নারী যেকোনো প্রকারের মসজিদে ইতিকাফ করতে পারেন। সেটা পাঞ্জেগানা মসজিদ তথা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জামাত হয় এমন মসজিদ হওয়া শর্ত নয়। কারণ জামাতে নামাজ আদায় করা নারীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়। (আল-মুগনি, ইবনে কুদামা: ৪ / ৪৬৪)
হানাফি মাজহাব এবং অন্যান্য ফকিহদের ভাষ্যমতে, নারীগণ যেভাবে ঘরে নামাজ পড়েন, ঠিক সেভাবে তাঁরা ঘরেই ইতিকাফ করবেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা ঘরে নামাজের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গা থাকলে সেখানেই ইতিকাফ করবেন। আর কোনো জায়গা সুনির্দিষ্ট না থাকলে ইতিকাফের আগে ইবাদতের জন্য উপযোগী একটি জায়গা নির্ধারণ করে নেবেন। অবশ্য কোনো নারী মসজিদে ইতিকাফ করলেও তা শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে নিজ ঘরে ইতিকাফ করাই নারীর জন্য উত্তম। এটিই বিশুদ্ধ মত। (উমদাতুল কারি: ১১ / ১৪৮; আল মাবসুত লি-সারাখসি: ৩ / ১১৯)
নারীদের ইতিকাফের জন্য স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন। ইতিকাফ একটি নফল ইবাদত। ইতিকাফের জন্য স্বামীর অনুমতি আবশ্যক। আয়েশা (রা.) ইতিকাফের আগে রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। অতএব, স্বামী বা অভিভাবক অনুমতি দিলে ইতিকাফ করা উচিত এবং যদি কোনো নারী তাঁর স্বামীর অনুমতি ছাড়া ইতিকাফ করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমের অভিমত হলো, তাঁর স্বামী চাইলে তাঁকে ইতিকাফ ভেঙে ফেলতে হবে। (ফাতহুল বারি: ৪ / ৩২৫; বুলুগুল আমানি: ১০ / ২৫০)
যে মসজিদে নারীরা ইতিকাফ করবেন সেখানে তাঁদের জন্য সম্পূর্ণ পর্দার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাঁদের অজু, গোসল এবং বাথরুমের আলাদা ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাঁদের ইতিকাফের স্থানের অংশটি অবশ্যই পুরুষদের যাতায়াত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হতে হবে। আর যদি এ ধরনের সুযোগ–সুবিধা না থাকে এবং ফিতনার সম্ভাবনা থাকে, তবে নারীদের মসজিদে ইতিকাফ না করাই উত্তম। (ফাতহুল বারি: ৪ / ৩২৫ /)
নারীদের ঋতুস্রাব অবস্থায় ইতিকাফ করা যাবে না। কেননা এ অবস্থায় রোজা রাখা যায় না। আর সুন্নত ইতিকাফের জন্য রোজাদার হওয়া শর্ত। (বাদায়েউস সানায়ে: ২ / ২৭৪; ফাতাওয়া আলমগিরি: ১ / ২১১)
ইতিকাফ শুরু করার পর ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। পরে শুধু একদিনের ইতিকাফ রোজাসহ কাজা করতে হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া: ৪ / ৫০২)
ইতিকাফ অবস্থায় কোনো ভাবেই স্বামী–স্ত্রীর মেলামেশা করা যাবে না। করলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। (ফাতাওয়া শামি: ৩৪৪২)
ইতিকাফ অবস্থায় গিবত ও অশ্লীল কথাবার্তা পরিহার করে কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ পাঠ, ইস্তিগফারসহ নফল ইবাদতে মগ্ন থাকা উচিত।
লেখক: শিক্ষক
একজন মুমিনের জন্য তার জীবনকে ইসলামের নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালিত করা এবং ইসলামে যা কিছু নিষিদ্ধ, তা ত্যাগ করা আবশ্যক। হাদিস শরিফে এটাকে উত্তম ধার্মিকতা আখ্যা দেওয়া হয়েছে। হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন...
২১ মিনিট আগেআসর শব্দের অর্থ সময়। পবিত্র কোরআনে আসর নামে একটি সুরা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা আসর বা সময়ের শপথ করেছেন। মুসলিমরা দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, তার তৃতীয় ওয়াক্তকে আসর নামে অভিহিত করা হয়। এ ছাড়াও পবিত্র কোরআনে এটিকে সালাত আল-ওসতা বা মধ্যবর্তী নামাজ হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে।
১ দিন আগেজ্ঞানগর্ভ ও উপদেশে ভরা কোরআন জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি গাইড বই। মানুষ কোথায় কখন কী করবে, কেন করবে, কীভাবে করবে—তা বলে দেওয়া হয়েছে কোরআনে। কোরআন তথা আল্লাহপ্রদত্ত আসমানি কিতাবের হিদায়াতের বাইরে কোনো সঠিক জীবনদর্শন নেই, কোনো ধর্মদর্শন নেই, কোনো মুক্তির পথ নেই। মানবজাতির সূচনালগ্নেই কথাটি জানিয়ে দেওয়া
২ দিন আগেএকজন মুমিনের কাছে রমজান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। মহানবী (সা.) এ পবিত্র মাসকে বেশ গুরুত্ব দিতেন। অন্যান্য কাজকর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে অধিক পরিমাণে ইবাদতে মশগুল হতেন। সাহাবিদের অভ্যাসও ছিল একই রকম। গুরুত্ব বিবেচনায় রমজানের প্রস্তুতিও শুরু হতো বেশ আগে থেকেই। রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকেই মহানবী (সা.) অধীর আগ
২ দিন আগে