ইজাজুল হক, ঢাকা
নশ্বর পৃথিবীতে বিরামহীন বয়ে চলে সময়। দিন যায়, রাত আসে। সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে এক সময় ফুরিয়ে যায় বছরও। পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে উজ্জ্বল আলোময় ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোময় করেছেন এবং তাদের গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যেন তোমরা বছর গুনতে পারো এবং সময়ের হিসাব করতে পারো।’ (সুরা ইউনুস: ৫)
সময়ের এই অমোঘ নিয়ম লঙ্ঘিত হওয়ার নয়। তবে কখনো-কখনো মহান আল্লাহ তাঁর অসীম ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে কোরআন-হাদিসের ভাষ্য থেকে জানা যায়। সেসব ঘটনার একটি উজাইর (আ.)-এর ঘটনা। তিনি ছিলেন এমন এক মহান ব্যক্তি, যাঁর জন্য সময় এক শ বছর থেমে গিয়েছিল। এক শ বছর পর্যন্ত সময়ের কোনো প্রভাব তাঁকে স্পর্শ করেনি। এই ঘটনা ঘটেছে ইসা (আ.)–এর জন্মের বেশ আগে কোনো এক সময়ে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা পরকালে বিশ্বাসের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে কয়েকটি ঘটনা বয়ান করেছেন—উজাইর (আ.)-এর এ ঘটনা সেগুলোর একটি।
কোরআনের বর্ণনায় উজাইর (আ.)-এর ঘটনা
পরকাল সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল নতুন নয়। এমনকি নবীদের অনেকেই পরকাল সম্পর্কে মহান আল্লাহকে জিজ্ঞেস করেছেন। যা মরে যায়, পচে-গলে মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তা কীভাবে ফের হুবহু আগের মতো করে হাশরের ময়দানে জীবিত করা হবে, তা নিয়ে মানুষের সংশয়, কৌতূহল ও অবিশ্বাসের অন্ত নেই। তবে মানুষের এই সংশয় দূর করতে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে যুক্তি তুলে ধরেছেন। তুলে এনেছেন অতীতের অনেক ঘটনাও।
তেমনি একটি ঘটনার অবতারণা করে আল্লাহ তাআলা বলেন— অথবা সেই ব্যক্তির মতো, যে বাড়িঘর ভেঙে ছাদের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে থাকা এক জনপদ হয়ে যাচ্ছিল। সে বলল, ‘মরে যাওয়ার পর আল্লাহ একে কীভাবে জীবিত করবেন?’ এরপর আল্লাহ তাঁকে এক শ বছর মৃত রাখলেন। এরপর ফের জীবিত করলেন এবং বললেন, ‘তুমি কত দিন এভাবে ছিলে?’ সে বলল, ‘একদিন বা একদিনেরও কিছু কম সময়।’ তিনি বললেন, ‘বরং তুমি এক শ বছর এভাবে ছিলে। তোমার পানাহারের উপকরণগুলো দেখো, পচেনি। আর তোমার গাধাকে দেখো, আর আমি যেন তোমাকে মানুষের জন্য উদাহরণ বানাতে পারি, হাড়গুলো দেখো, কীভাবে আমি তা জুড়ে দেই এবং তাতে মাংসের আবরণ পরিয়ে দেই।’ পরে যখন তার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হলো, তখন সে বলল, ‘আমি জানি, আল্লাহ সবকিছুই করার ক্ষমতা রাখেন।’ (সুরা বাকারা: ২৫৯)
ইবনে কাসির (রহ.) আয়াতের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন
আয়াতে উজাইর (আ.)-এর কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রসিদ্ধ মতে তাঁর সম্পর্কেই এ আয়াত নাজিল হয়েছে। বুখতানাসসার নামের এক জালিম শাসক ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসে গণহত্যা চালান এবং পুরো বসতি ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন। একজন মানুষও জীবিত ছাড়েননি। সেই বিরান জেরুজালেম হয়েই যাচ্ছিলেন উজাইর (আ.)। তখন জনশূন্য বসতির এই ধ্বংসস্তূপ দেখে তাঁর মনে কৌতূহল জেগেছিল, এমন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া জনপদকে কেমন করে মহান আল্লাহ হাশরের ময়দানে ফের জীবিত করবেন। তখন আল্লাহ তাঁকেই মৃত্যু দেন এবং সেই স্থানে রেখে দেন।
এরপর কেটে যায় এক শ বছর। শহরটি আবার নতুন প্রাণে সজীব হয়ে ওঠে। বনি ইসরাইল শহরে ফিরে এসে নতুনভাবে বাঁচতে শুরু করে। তখন আল্লাহ তাআলা উজাইর (আ.)-কে ফের জীবিত করেন। প্রথমে তাঁর দুই চোখে প্রাণ ফিরিয়ে দেন, যাতে দেহের বাকি অংশ কীভাবে ফের প্রাণ ফিরে পাচ্ছে, তা দেখে তিনি শিখতে পারেন।
পুরো দেহে প্রাণ ফিরলে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতার মাধ্যমে তাঁকে প্রশ্ন শুরু করেন—কত দিন এভাবে ছিলে। যেহেতু দিনের শুরুতেই মারা গিয়েছিলেন এবং এখনো দিনের কিছু অংশ বাকি আছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁর উত্তর ছিল—একদিন বা তারও কম সময়। কিন্তু আল্লাহ তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়ে বললেন—এক শ বছর পর তোমাকে জীবিত করেছি। সুতরাং পরকালেও এভাবেই জীবিত করা হবে।
উজাইর (আ.)-এর চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হওয়ার আগেই আল্লাহ দলিল উপস্থাপন করে দিলেন। বললেন, দেখো, তোমার দেহের মতো এখানে যে আঙুর, তীনফল ও শরবত ছিল, তা হুবহুই রেখে দিয়েছি, এগুলোর স্বাদ-গন্ধে কোনো পরিবর্তন আনিনি, তবে তোমার যে গাধাটি ছিল, তা দেখো পচে-গলে একাকার হয়ে গেছে এবং কীভাবে তা আমি ফের জীবিত করছি; দেখো, কীভাবে হাড়গুলো জোড়া লাগিয়ে মাংসের প্রলেপ দিয়ে দিচ্ছি। চোখের সামনে এমন আশ্চর্য ঘটনা দেখে উজাইর (আ.)-এর কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আল্লাহ সবকিছুই পারেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১ / ৬৮৭-৬৮৯)
উজাইর (আ.) কি নবী ছিলেন
উজাইর (আ.) একজন আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন এটুকুতে কারও দ্বিমত নেই। নবী ছিলেন কি না তা নিয়ে মুফাসসিরদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। প্রসিদ্ধ মতে, তিনি নবী ছিলেন। ইবনে কাসির (রহ.) এই মত গ্রহণ করেছেন। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া)
তবে অনেকের মতে, তিনি যে নবী ছিলেন, এর পক্ষে কোরআন-হাদিসে কোনো দলিল পাওয়া যায় না। বরং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি জানি না তুব্বা বাদশাহ অভিশপ্ত, নাকি নয়। আমি জানি না উজাইর নবী; নাকি নয়।’ তাই তাঁকে নবী বলা উচিত হবে না। তবে এই হাদিসের সনদ অনেকেই দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। যাই হোক, এ ঘটনার শিক্ষার সঙ্গে তাঁর নবী হওয়া-না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
ঘটনার শিক্ষা হলো, সময়ের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহরই হাতে। তিনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। পরকালে তিনি সব সৃষ্টিকে ফের জীবিত করে কর্মফল দেবেন। তাই সময় থাকতে পরকালের প্রস্তুতি নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একটি বছর ফুরিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরু হলো, এই বছরটিও একদিন ফুরিয়ে যাবে। এভাবেই আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই মৃত্যুর পরের জীবনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখনই। আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন চোখ স্থির হয়ে যাবে, চাঁদ আলো হারাবে, সূর্য ও চাঁদকে এক জায়গায় করা হবে, সেদিন মানুষ বলবে—পালাব কোথায়?’ (সুরা কিয়ামা: ৭-১০)
নশ্বর পৃথিবীতে বিরামহীন বয়ে চলে সময়। দিন যায়, রাত আসে। সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে এক সময় ফুরিয়ে যায় বছরও। পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে উজ্জ্বল আলোময় ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোময় করেছেন এবং তাদের গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যেন তোমরা বছর গুনতে পারো এবং সময়ের হিসাব করতে পারো।’ (সুরা ইউনুস: ৫)
সময়ের এই অমোঘ নিয়ম লঙ্ঘিত হওয়ার নয়। তবে কখনো-কখনো মহান আল্লাহ তাঁর অসীম ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে কোরআন-হাদিসের ভাষ্য থেকে জানা যায়। সেসব ঘটনার একটি উজাইর (আ.)-এর ঘটনা। তিনি ছিলেন এমন এক মহান ব্যক্তি, যাঁর জন্য সময় এক শ বছর থেমে গিয়েছিল। এক শ বছর পর্যন্ত সময়ের কোনো প্রভাব তাঁকে স্পর্শ করেনি। এই ঘটনা ঘটেছে ইসা (আ.)–এর জন্মের বেশ আগে কোনো এক সময়ে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা পরকালে বিশ্বাসের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে কয়েকটি ঘটনা বয়ান করেছেন—উজাইর (আ.)-এর এ ঘটনা সেগুলোর একটি।
কোরআনের বর্ণনায় উজাইর (আ.)-এর ঘটনা
পরকাল সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল নতুন নয়। এমনকি নবীদের অনেকেই পরকাল সম্পর্কে মহান আল্লাহকে জিজ্ঞেস করেছেন। যা মরে যায়, পচে-গলে মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তা কীভাবে ফের হুবহু আগের মতো করে হাশরের ময়দানে জীবিত করা হবে, তা নিয়ে মানুষের সংশয়, কৌতূহল ও অবিশ্বাসের অন্ত নেই। তবে মানুষের এই সংশয় দূর করতে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে যুক্তি তুলে ধরেছেন। তুলে এনেছেন অতীতের অনেক ঘটনাও।
তেমনি একটি ঘটনার অবতারণা করে আল্লাহ তাআলা বলেন— অথবা সেই ব্যক্তির মতো, যে বাড়িঘর ভেঙে ছাদের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে থাকা এক জনপদ হয়ে যাচ্ছিল। সে বলল, ‘মরে যাওয়ার পর আল্লাহ একে কীভাবে জীবিত করবেন?’ এরপর আল্লাহ তাঁকে এক শ বছর মৃত রাখলেন। এরপর ফের জীবিত করলেন এবং বললেন, ‘তুমি কত দিন এভাবে ছিলে?’ সে বলল, ‘একদিন বা একদিনেরও কিছু কম সময়।’ তিনি বললেন, ‘বরং তুমি এক শ বছর এভাবে ছিলে। তোমার পানাহারের উপকরণগুলো দেখো, পচেনি। আর তোমার গাধাকে দেখো, আর আমি যেন তোমাকে মানুষের জন্য উদাহরণ বানাতে পারি, হাড়গুলো দেখো, কীভাবে আমি তা জুড়ে দেই এবং তাতে মাংসের আবরণ পরিয়ে দেই।’ পরে যখন তার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হলো, তখন সে বলল, ‘আমি জানি, আল্লাহ সবকিছুই করার ক্ষমতা রাখেন।’ (সুরা বাকারা: ২৫৯)
ইবনে কাসির (রহ.) আয়াতের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন
আয়াতে উজাইর (আ.)-এর কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রসিদ্ধ মতে তাঁর সম্পর্কেই এ আয়াত নাজিল হয়েছে। বুখতানাসসার নামের এক জালিম শাসক ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসে গণহত্যা চালান এবং পুরো বসতি ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন। একজন মানুষও জীবিত ছাড়েননি। সেই বিরান জেরুজালেম হয়েই যাচ্ছিলেন উজাইর (আ.)। তখন জনশূন্য বসতির এই ধ্বংসস্তূপ দেখে তাঁর মনে কৌতূহল জেগেছিল, এমন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া জনপদকে কেমন করে মহান আল্লাহ হাশরের ময়দানে ফের জীবিত করবেন। তখন আল্লাহ তাঁকেই মৃত্যু দেন এবং সেই স্থানে রেখে দেন।
এরপর কেটে যায় এক শ বছর। শহরটি আবার নতুন প্রাণে সজীব হয়ে ওঠে। বনি ইসরাইল শহরে ফিরে এসে নতুনভাবে বাঁচতে শুরু করে। তখন আল্লাহ তাআলা উজাইর (আ.)-কে ফের জীবিত করেন। প্রথমে তাঁর দুই চোখে প্রাণ ফিরিয়ে দেন, যাতে দেহের বাকি অংশ কীভাবে ফের প্রাণ ফিরে পাচ্ছে, তা দেখে তিনি শিখতে পারেন।
পুরো দেহে প্রাণ ফিরলে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতার মাধ্যমে তাঁকে প্রশ্ন শুরু করেন—কত দিন এভাবে ছিলে। যেহেতু দিনের শুরুতেই মারা গিয়েছিলেন এবং এখনো দিনের কিছু অংশ বাকি আছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁর উত্তর ছিল—একদিন বা তারও কম সময়। কিন্তু আল্লাহ তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়ে বললেন—এক শ বছর পর তোমাকে জীবিত করেছি। সুতরাং পরকালেও এভাবেই জীবিত করা হবে।
উজাইর (আ.)-এর চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হওয়ার আগেই আল্লাহ দলিল উপস্থাপন করে দিলেন। বললেন, দেখো, তোমার দেহের মতো এখানে যে আঙুর, তীনফল ও শরবত ছিল, তা হুবহুই রেখে দিয়েছি, এগুলোর স্বাদ-গন্ধে কোনো পরিবর্তন আনিনি, তবে তোমার যে গাধাটি ছিল, তা দেখো পচে-গলে একাকার হয়ে গেছে এবং কীভাবে তা আমি ফের জীবিত করছি; দেখো, কীভাবে হাড়গুলো জোড়া লাগিয়ে মাংসের প্রলেপ দিয়ে দিচ্ছি। চোখের সামনে এমন আশ্চর্য ঘটনা দেখে উজাইর (আ.)-এর কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আল্লাহ সবকিছুই পারেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১ / ৬৮৭-৬৮৯)
উজাইর (আ.) কি নবী ছিলেন
উজাইর (আ.) একজন আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন এটুকুতে কারও দ্বিমত নেই। নবী ছিলেন কি না তা নিয়ে মুফাসসিরদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। প্রসিদ্ধ মতে, তিনি নবী ছিলেন। ইবনে কাসির (রহ.) এই মত গ্রহণ করেছেন। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া)
তবে অনেকের মতে, তিনি যে নবী ছিলেন, এর পক্ষে কোরআন-হাদিসে কোনো দলিল পাওয়া যায় না। বরং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি জানি না তুব্বা বাদশাহ অভিশপ্ত, নাকি নয়। আমি জানি না উজাইর নবী; নাকি নয়।’ তাই তাঁকে নবী বলা উচিত হবে না। তবে এই হাদিসের সনদ অনেকেই দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। যাই হোক, এ ঘটনার শিক্ষার সঙ্গে তাঁর নবী হওয়া-না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
ঘটনার শিক্ষা হলো, সময়ের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহরই হাতে। তিনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। পরকালে তিনি সব সৃষ্টিকে ফের জীবিত করে কর্মফল দেবেন। তাই সময় থাকতে পরকালের প্রস্তুতি নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একটি বছর ফুরিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরু হলো, এই বছরটিও একদিন ফুরিয়ে যাবে। এভাবেই আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই মৃত্যুর পরের জীবনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখনই। আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন চোখ স্থির হয়ে যাবে, চাঁদ আলো হারাবে, সূর্য ও চাঁদকে এক জায়গায় করা হবে, সেদিন মানুষ বলবে—পালাব কোথায়?’ (সুরা কিয়ামা: ৭-১০)
সন্ধ্যাবেলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। মহানবী (সা.) সাহাবিদের এসব আমল করার উপদেশ দিতেন। এখানে কয়েকটি আমলের
২০ ঘণ্টা আগেইবাদতের নিয়তে করা সব কাজই নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। আর নেক আমল মানুষের জীবনের প্রকৃত সম্পদ। এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে জান্নাত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারাই জান্নাতের অধিকারী, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।’ (সুরা বাকারা: ৮২)
২ দিন আগেভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
৩ দিন আগে