ইজাজুল হক, ঢাকা
মরক্কোর বাণিজ্যিক রাজধানী কাসাব্লাংকায় অবস্থিত দ্বিতীয় হাসান মসজিদ বিশ্বের বড় মসজিদগুলোর একটি। আটলান্টিক মহাসাগরের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এ মসজিদ নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী ও সুউচ্চ মিনারের কারণে বিখ্যাত। এটি প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশ মরক্কোর সবচেয়ে বড় মসজিদ এবং প্রধানতম পর্যটনকেন্দ্রও। মরক্কোর মুসলিম ঐতিহ্যের স্মারক দ্বিতীয় হাসান মসজিদের ইতিহাস, নির্মাণশৈলী, বৈশিষ্ট্য ও পরিষেবা এখানে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
নির্মাণ ইতিহাস
মরক্কোর রাজা দ্বিতীয় হাসান এ বিশাল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন এবং নিজের নামেই মসজিদের নাম রাখেন। আটলান্টিক তীরের প্রাচীন শহর কাসাব্লাংকাকেই তিনি এই স্থাপনার জন্য উপযুক্ত বিবেচনা করেন। ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনশোর নকশায় ১৯৮৬ সালে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ১৯৯৩ সালে মহানবী (সা.)-এর জন্মদিনে উদ্বোধন করা হয়। তৎকালীন প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা মরক্কো সরকারের ছিল না। ফলে দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনুদান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় এবং দেশটির ১ কোটির বেশি মানুষ তাতে অংশ নেন। এ ছাড়া আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
নির্মাণশৈলী
ইসলামি স্থাপত্যশৈলী ও মরক্কোর ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীর মিশেলে মসজিদের নকশা করা হয়। মসজিদের একেকটি অংশ বিশ্বের একেকটি বিখ্যাত মসজিদের অনুকরণে নকশা করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে ৬ হাজার শিল্পী ও কারিগর মসজিদের ভেতর ও বাইরের দৃষ্টিনন্দন নকশা, মোজাইক, দামি পাথর ইত্যাদি বসানোর কাজ করেন। কিছু গ্রানাইটের স্তম্ভ এবং ৫৬টি বিশাল ঝাড়বাতি ইতালি থেকে আনা হয়। অন্য সব উপাদান মরক্কোর বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়। মসজিদের কিছু অংশ সমুদ্রের পানিতে ভাসমান, সেখানে স্বচ্ছ কাচের ওপর দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় সমুদ্রের উচ্ছলতা।
অনন্য বৈশিষ্ট্য
নয় হেক্টর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এ মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ১০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির ভেতরে ২৫ হাজার এবং বাইরের চত্বরে ৮০ হাজার মুসল্লি দাঁড়াতে পারেন। নারীদের জন্য রয়েছে আরও ৫ হাজার আসন।
মসজিদের মূল হলঘরটি আয়তাকার, এর দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার, প্রস্থ ১০০ মিটার এবং উচ্চতা ৬০ মিটার। হলঘরের বিশাল ছাদ ৭৮টি বিরাট স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ৩ হাজার ৪০০ বর্গমিটারের এ ছাদের অর্ধেক অংশ যান্ত্রিকভাবে উন্মুক্ত করার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। ছাদ বন্ধ থাকলে অর্ধশতাধিক ঝাড়বাতি মসজিদে আলো ছড়িয়ে রাখে। আর উন্মুক্ত করে দিলে সূর্যের আলো ও চাঁদের জোছনা উপভোগ করতে পারেন মুসল্লিরা।
মসজিদ কমপ্লেক্সের ভেতরে রয়েছে মাদ্রাসা, হাম্মামখানা, জাদুঘর, সম্মেলন কক্ষ এবং লাইব্রেরি। মসজিদের উঠানে রয়েছে ৪১টি পানির ফোয়ারা। রয়েছে সবুজ বাগানও। শুধু মাদ্রাসার আয়তনই প্রায় ৫ হাজার বর্গমিটার। মরক্কোর বিখ্যাত কারাউইন বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এখানে পাঠদান করা হয়।
মসজিদের মিনার
মসজিদের মিনারটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মসজিদের মিনার। সর্বোচ্চ মিনারের মুকুট কয়েক দশক ধরে রাখার পর আলজিয়ার্সের গ্র্যান্ড মসজিদের মিনারের কাছে কয়েক বছর আগে হার মানতে হয়েছে এ মিনারটিকে। ২১০ মিটার উঁচু এই মিনারের চূড়ায় লেজার বিম আছে, যা পবিত্র কাবাঘরের দিকে রঙিন আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায়। রাতের আঁধারে ৩০ কিলোমিটার দূর থেকেও এই আলো দেখা যায়। মিনারটির গায়ে সবুজ, গাঢ় সবুজ এবং নীল রঙের টাইলস দিয়ে কারুকাজ করা। কাসাব্লাংকা শহরের যে কোনো স্থান থেকে মসজিদের মিনারটি দেখা যায়।
পর্যটকদের পদচারণা
পশ্চিম দিকে মুসলিম বিশ্বের সর্ব শেষ প্রান্ত হিসেবে পরিচিত এ মসজিদ দেশ-বিদেশের পর্যটকদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য। এ মসজিদে অমুসলিম দর্শনার্থীদেরও প্রবেশাধিকার রয়েছে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য মসজিদে আরবি, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান ও স্প্যানিশ ভাষার পর্যটন গাইডও রয়েছে। মসজিদে প্রবেশ করতে হলে দর্শনার্থীদের অবশ্যই ইসলামি ড্রেস কোড মানতে হয়। মসজিদে অমুসলিমদের জন্য ইসলামের পরিচিতিমূলক কর্মশালারও আয়োজন করা হয়।
মরক্কোর বাণিজ্যিক রাজধানী কাসাব্লাংকায় অবস্থিত দ্বিতীয় হাসান মসজিদ বিশ্বের বড় মসজিদগুলোর একটি। আটলান্টিক মহাসাগরের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এ মসজিদ নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী ও সুউচ্চ মিনারের কারণে বিখ্যাত। এটি প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশ মরক্কোর সবচেয়ে বড় মসজিদ এবং প্রধানতম পর্যটনকেন্দ্রও। মরক্কোর মুসলিম ঐতিহ্যের স্মারক দ্বিতীয় হাসান মসজিদের ইতিহাস, নির্মাণশৈলী, বৈশিষ্ট্য ও পরিষেবা এখানে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
নির্মাণ ইতিহাস
মরক্কোর রাজা দ্বিতীয় হাসান এ বিশাল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন এবং নিজের নামেই মসজিদের নাম রাখেন। আটলান্টিক তীরের প্রাচীন শহর কাসাব্লাংকাকেই তিনি এই স্থাপনার জন্য উপযুক্ত বিবেচনা করেন। ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনশোর নকশায় ১৯৮৬ সালে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ১৯৯৩ সালে মহানবী (সা.)-এর জন্মদিনে উদ্বোধন করা হয়। তৎকালীন প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা মরক্কো সরকারের ছিল না। ফলে দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনুদান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় এবং দেশটির ১ কোটির বেশি মানুষ তাতে অংশ নেন। এ ছাড়া আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
নির্মাণশৈলী
ইসলামি স্থাপত্যশৈলী ও মরক্কোর ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীর মিশেলে মসজিদের নকশা করা হয়। মসজিদের একেকটি অংশ বিশ্বের একেকটি বিখ্যাত মসজিদের অনুকরণে নকশা করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে ৬ হাজার শিল্পী ও কারিগর মসজিদের ভেতর ও বাইরের দৃষ্টিনন্দন নকশা, মোজাইক, দামি পাথর ইত্যাদি বসানোর কাজ করেন। কিছু গ্রানাইটের স্তম্ভ এবং ৫৬টি বিশাল ঝাড়বাতি ইতালি থেকে আনা হয়। অন্য সব উপাদান মরক্কোর বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়। মসজিদের কিছু অংশ সমুদ্রের পানিতে ভাসমান, সেখানে স্বচ্ছ কাচের ওপর দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় সমুদ্রের উচ্ছলতা।
অনন্য বৈশিষ্ট্য
নয় হেক্টর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এ মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ১০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির ভেতরে ২৫ হাজার এবং বাইরের চত্বরে ৮০ হাজার মুসল্লি দাঁড়াতে পারেন। নারীদের জন্য রয়েছে আরও ৫ হাজার আসন।
মসজিদের মূল হলঘরটি আয়তাকার, এর দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার, প্রস্থ ১০০ মিটার এবং উচ্চতা ৬০ মিটার। হলঘরের বিশাল ছাদ ৭৮টি বিরাট স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ৩ হাজার ৪০০ বর্গমিটারের এ ছাদের অর্ধেক অংশ যান্ত্রিকভাবে উন্মুক্ত করার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। ছাদ বন্ধ থাকলে অর্ধশতাধিক ঝাড়বাতি মসজিদে আলো ছড়িয়ে রাখে। আর উন্মুক্ত করে দিলে সূর্যের আলো ও চাঁদের জোছনা উপভোগ করতে পারেন মুসল্লিরা।
মসজিদ কমপ্লেক্সের ভেতরে রয়েছে মাদ্রাসা, হাম্মামখানা, জাদুঘর, সম্মেলন কক্ষ এবং লাইব্রেরি। মসজিদের উঠানে রয়েছে ৪১টি পানির ফোয়ারা। রয়েছে সবুজ বাগানও। শুধু মাদ্রাসার আয়তনই প্রায় ৫ হাজার বর্গমিটার। মরক্কোর বিখ্যাত কারাউইন বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এখানে পাঠদান করা হয়।
মসজিদের মিনার
মসজিদের মিনারটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মসজিদের মিনার। সর্বোচ্চ মিনারের মুকুট কয়েক দশক ধরে রাখার পর আলজিয়ার্সের গ্র্যান্ড মসজিদের মিনারের কাছে কয়েক বছর আগে হার মানতে হয়েছে এ মিনারটিকে। ২১০ মিটার উঁচু এই মিনারের চূড়ায় লেজার বিম আছে, যা পবিত্র কাবাঘরের দিকে রঙিন আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায়। রাতের আঁধারে ৩০ কিলোমিটার দূর থেকেও এই আলো দেখা যায়। মিনারটির গায়ে সবুজ, গাঢ় সবুজ এবং নীল রঙের টাইলস দিয়ে কারুকাজ করা। কাসাব্লাংকা শহরের যে কোনো স্থান থেকে মসজিদের মিনারটি দেখা যায়।
পর্যটকদের পদচারণা
পশ্চিম দিকে মুসলিম বিশ্বের সর্ব শেষ প্রান্ত হিসেবে পরিচিত এ মসজিদ দেশ-বিদেশের পর্যটকদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য। এ মসজিদে অমুসলিম দর্শনার্থীদেরও প্রবেশাধিকার রয়েছে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য মসজিদে আরবি, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান ও স্প্যানিশ ভাষার পর্যটন গাইডও রয়েছে। মসজিদে প্রবেশ করতে হলে দর্শনার্থীদের অবশ্যই ইসলামি ড্রেস কোড মানতে হয়। মসজিদে অমুসলিমদের জন্য ইসলামের পরিচিতিমূলক কর্মশালারও আয়োজন করা হয়।
একজন মুমিনের জন্য তার জীবনকে ইসলামের নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালিত করা এবং ইসলামে যা কিছু নিষিদ্ধ, তা ত্যাগ করা আবশ্যক। হাদিস শরিফে এটাকে উত্তম ধার্মিকতা আখ্যা দেওয়া হয়েছে। হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন...
১ ঘণ্টা আগেআসর শব্দের অর্থ সময়। পবিত্র কোরআনে আসর নামে একটি সুরা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা আসর বা সময়ের শপথ করেছেন। মুসলিমরা দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, তার তৃতীয় ওয়াক্তকে আসর নামে অভিহিত করা হয়। এ ছাড়াও পবিত্র কোরআনে এটিকে সালাত আল-ওসতা বা মধ্যবর্তী নামাজ হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে।
১ দিন আগেজ্ঞানগর্ভ ও উপদেশে ভরা কোরআন জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি গাইড বই। মানুষ কোথায় কখন কী করবে, কেন করবে, কীভাবে করবে—তা বলে দেওয়া হয়েছে কোরআনে। কোরআন তথা আল্লাহপ্রদত্ত আসমানি কিতাবের হিদায়াতের বাইরে কোনো সঠিক জীবনদর্শন নেই, কোনো ধর্মদর্শন নেই, কোনো মুক্তির পথ নেই। মানবজাতির সূচনালগ্নেই কথাটি জানিয়ে দেওয়া
২ দিন আগেএকজন মুমিনের কাছে রমজান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। মহানবী (সা.) এ পবিত্র মাসকে বেশ গুরুত্ব দিতেন। অন্যান্য কাজকর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে অধিক পরিমাণে ইবাদতে মশগুল হতেন। সাহাবিদের অভ্যাসও ছিল একই রকম। গুরুত্ব বিবেচনায় রমজানের প্রস্তুতিও শুরু হতো বেশ আগে থেকেই। রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকেই মহানবী (সা.) অধীর আগ
২ দিন আগে