বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস নিজস্ব অর্থায়নে ট্রেইনি এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ইউএস-বাংলা। দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। অ্যাভিয়েশন সেক্টরে দক্ষ পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার্সসহ টেকনিক্যাল ও ননটেকনিক্যাল কর্মী তৈরি করছে, যার মাধ্যমে দেশের আকাশ পরিবহন খাত লাভবান হচ্ছে। 

অগ্রসরমাণ বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন খাত। অ্যাভিয়েশন সেক্টরের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার সংকটে পড়ছে বিশ্বের প্রায় সব বিমান সংস্থা। আর এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা অত্যন্ত দক্ষ ও সাহসিকতার সহিত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। 

যেকোনো বিমান সংস্থার বিমানবহরে এয়ারক্রাফট সংযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, কিন্তু তা সহজেই স্বল্পতম সময়ে পূরণ করা যায় না। বহরে নতুন এয়ারক্রাফট সংযোজন ও নতুন রুটের ব্যাপ্তি ঘটানোর পূর্বেই ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা এয়ারলাইনসের সুষ্ঠু ও সঠিক পরিকল্পনারই অংশ। 

পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলা ইউএস-বাংলা ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দুটি ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। বর্তমানে ৮টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও ৯টি এটিআর ৭২-৬০০সহ মোট ২০টি এয়ারক্রাফট আছে বিমানবহরে। পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের মধ্যে দুটি ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস-৩৩০ যুক্ত করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। 

আবেদনের যোগ্যতা: একটি এয়ারলাইনসের এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সর্বাগ্রে। অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। যেসব মেধাবী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিতে জিপিএ ৪.৫সহ জিপিএ ৪ অথবা ‘ও’ লেভেলে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিতে ন্যূনতম ৫ বিষয়ে গ্রেড-এ এবং ‘এ’ লেভেলে গণিত, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানসহ ন্যূনতম ২ বিষয়ে গ্রেড-বি পেয়েছেন তাঁরা আবেদনের জন্য যোগ্য হবেন। প্রার্থীকে ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরাও আবেদন করার সুযোগ পাবেন। 

আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশি হতে হবে এবং অন্য কোনো দেশের নাগরিক হতে পারবে না। আবেদনের সময় বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ২৫ বছর। উচ্চতা–১৬০ সেন্টিমিটার (৫ ফুট ৩ ইঞ্চি) হতে হবে। প্রার্থীর ওজন হতে হবে বিএমআইয়ের উচ্চতার আনুপাতিক হারে। প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। দৃষ্টিশক্তি হতে হবে ৬/৬। অধূমপায়ী ও নন-অ্যালকোহলিক হতে হবে। যেকোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। 

প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া: ট্রেইনি এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আইকিউ টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা (ইংরেজি, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন), অ্যাপ্টিটিউড, সাইকোমেট্রিক, মেডিকেল ও মৌখিক পরীক্ষা। সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ট্রেইনি এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ারের জন্য নির্বাচন করা হবে। 

সুযোগ-সুবিধা: সফলভাবে দুই বছর মেয়াদি ট্রেনিং শেষ করার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন। অন্যান্য সুবিধাসহ পর্যায়ক্রমে বেতন ধার্য হবে মাসিক দুই লাখ টাকা। অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে দুটি উৎসব বোনাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, সম্পূর্ণ বিনা খরচে খাবারের ব্যবস্থা, এয়ার টিকিট। একজন প্রশিক্ষণার্থীর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার অপেক্ষায় থাকবে ইউএস-বাংলা। সঙ্গে অ্যাভিয়েশন দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ইতিহাস সৃষ্টি করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস।

অনলাইনে আবেদনের নিয়ম: এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার প্রোগ্রামের জন্য। আবেদনের শেষ তারিখ ২০ নভেম্বর, ২০২৩। যেকোনো ধরনের তদবির প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।