যত্নআত্তি

বাগানবিলাসের সাতসতেরো

শীতকাল যেমন ঠান্ডার সময়, তেমনি বাগানবিলাসেরও। মাটি থেকে দেয়াল বেয়ে ছাদে উঠে যাওয়া ছাড়াও বাগানবিলাস এখন দেখা যায় টবেও। পার্পল ছাড়া বেশ কয়েকটি রঙে এখন দেখা যায় এই ফুল। ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শফিক বিপ্লব জানিয়েছেন বাগানবিলাসের আদ্যোপান্ত। লিখেছেন মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮: ০২
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ২৫
ছবি: সংগৃহীত

এই ফুলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিখ্যাত ফরাসি আবিষ্কারক লুই অটোইন ডি বোগেনভিলিয়ার নাম। তাঁর নামেই এ গাছের নাম রাখা হয়েছিল বোগেনভিলিয়া। আর এটিকে বাংলায় প্রথম বাগানবিলাস বলে ডেকেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কমবেশি সারা বছর ফুল দেখা গেলেও শীতকালে এর যেন বান ডাকে।

বোগেনভিলিয়ার বৈজ্ঞানিক নামটি অবশ্য খুব একটা খটমট নয়—বোগেনভিলিয়া স্পেকটিবিলিস। এটি গুল্মজাতীয় বৃক্ষ। কমলা, বেগুনি, গোলাপি, লাল, হলুদ ও সাদা সাদা রঙে দেখা যায়। তবে কয়েকটি রঙের মিশ্রণেও এ ফুল হয়ে থাকে। এর আদি নিবাস ব্রাজিল ও দক্ষিণ আমেরিকা। উষ্ণমণ্ডলীয় দেশসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে গৃহসজ্জা কিংবা বাড়ির চারপাশের সৌন্দর্য বাড়াতে বাগানবিলাস লাগানো হয়।

পৃথিবীতে প্রায় ১৮ প্রজাতির বাগানবিলাস রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে থাই, ইন্ডিয়ান ও আমেরিকান গৃহসজ্জা উল্লেখযোগ্য। আমাদের দেশে বোগেনভিলিয়ার গ্ল্যাব্রা-জাতীয় প্রজাতিটি ‘কাগজ ফুল’ নামে বহুল পরিচিত। টবে ছোট গাছে নানা আকার দিয়ে বাগানবিলাসের বর্ণিল বাগান করা সম্ভব।

গাছের দাম

বাগানবিলাসের রুট স্টক চারা, গুটি কলম ও গ্রাফটিং চারা পাওয়া যায়। দাম ১৫০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। কম দামে বাগানবিলাসের শুভ্রা, থিমা, পার্থ, ক্যালোপনিয়া গোল্ড ও চিত্রা জাতের চারা পাওয়া যাবে। মাঝারি দামের জনপ্রিয় প্রজাতি হলো মাহারা সিরিজ (সাদা, লাল, হলুদ, পিংক ও চেরি), চিলি সিরিজ, ডিলাইট সিরিজ, ফরমুসা সিরিজ, ভেরা সিরিজ। ভিএফ বা ফায়ার ফ্লেম রুবি, মহারানি, আদারানা, সুবর্ণা, ওয়াটার মিলন, মিস ইভা সিরিজ, হাওয়ান সিরিজের বাগানবিলাসের দাম বেশি। বেশি দামি প্রজাতি সব হাইব্রিড।

শহরে বাগান করতে যা দরকার

  • সারা দিন রোদ থাকে এমন খোলা ছাদ বা বারান্দা।
  • ভালো ড্রেনেজ সুবিধার টব।
  • সুষম মিশ্রিত মিডিয়া বা মাটি। মাটির মিশ্রণে থাকবে ৫০ শতাংশ কৃষিজমির মাটি, ১০ শতাংশ নদীর পলি বালু, ৩০ শতাংশ জৈব সার (ভার্মি কম্পোস্ট, ভালো পচা গোবর সার), ৫ শতাংশ পাতা পচা সার, ৪ শতাংশ কোকো পিট এবং ১ শতাংশ হাড়ের গুঁড়া ও শিং কুচি।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

টবের আকার

  • ছোট চারার জন্য টবের আকার ৫ ইঞ্চি
  • ৬ মাসের গাছের জন্য ১০ ইঞ্চি
  • ১ বছরের গাছের জন্য ১২ থেকে ১৬ ইঞ্চি।

পরিচর্যা

বাগানবিলাসের নিবিড় পরিচর্যা দরকার। পানি দিতে হবে পরিমাণমতো। পানি বেশি বা কম হলে বাগানবিলাস গাছ মরে যাবে। পানি দেওয়ার ওপর এতে ফুল আসা ও ফুল ঝরা নির্ভর করে।

রোগ বা পোকা তেমন হয় না বাগানবিলাসে। তবে গোড়া পচতে শুরু করলে গাছ মারা যায়। কাণ্ড পচে যেতে পারে। মাইটে পাতা কুঁকড়েও যায় কখনো কখনো। বাগানবিলাসে ভালো ফুল আনার কৌশল হলো পিনচিং ও ছাঁটা। লতানো বলে নিয়মিত গাছ না ছাঁটলে টবে রাখা কষ্টকর হয়ে যায়।

সাবধানতা

  • ভারী ও টানা বৃষ্টি এ গাছের ক্ষতি করে। বৃষ্টির দিন গাছ শেডে রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • এটি ছায়ায় ফুল দেয় কম। সারা দিন রোদ থাকে এমন জায়গায় রাখতে হবে।
  • গোড়া পচা থেকে গাছ বাঁচাতে পানি দিতে হবে পরিমিত পরিমাণ।

আয়ও করা যায়

বাগানবিলাস বহুমাত্রিক বর্ণিল গন্ধবিহীন ফুল। বাঁচে বহুদিন, বনসাই করেও রাখা যায়। চারা বা বনসাই করে বিক্রি করে বাগানবিলাস আয়েরও উৎস হতে পারে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত