জীবনধারা ডেস্ক
বড়লাট হার্ডিঞ্জকে মারতে গিয়ে বিফল হলেন রাসবিহারী বসু। তারপরে ভারতব্যাপী সশস্ত্র আন্দোলনের প্রচেষ্টা, তাও বিফল। বড়লাটের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা বলে কথা! তবে চেষ্টাগুলো বিফলে গেলেও ইংরেজরা তত দিনে বুঝে গেছে, এই রাসবিহারী বসু যেনতেন মানুষ নন।
ভারতের কোনায় কোনায় তত দিনে ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর কাণ্ডকীর্তির কথা! তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে ইংরেজ সরকার। ধরতেই হবে যেভাবে হোক। ছদ্মবেশ ধারণে কিংবদন্তিসহ হলেও এবার রাসবিহারী বসুকে ‘রণ ছোড়’ হতে হলো। মানে, যাকে বলে, স্ট্র্যাটেজিক রিট্রিট। পালাতে হলো দেশ ছেড়ে।
১৯১৫ সালে প্রিয়নাথ ঠাকুর নাম নিয়ে পালিয়ে গিয়ে তিনি উঠলেন জাপানে। টোকিওতে আলাপ হলো চীনা বিপ্লবী সান ইয়াৎ সেনের সঙ্গে। তাঁর সাহায্যে জাপানের সিঞ্জিকো শহরের নাকামুরায়া নামে এক বেকারিতে আশ্রয় হলো রাসবিহারী বসুর। বেসমেন্টে লুকিয়ে থাকতেন তিনি। সেই বেকারির মালিক ছিলেন আইজো সোমা। তাঁর কন্যার নাম ছিল তোশিকো সোমা। পরবর্তীতে এই তোশিকোর সঙ্গেই বাংলার বিপ্লবী রাসবিহারীর প্রেম ও বিয়ে হয়।
গল্পটা বলতে হলো জাপানের বিখ্যাত মুরগির মাংসের পদ নাকামুরায়া চিকেনের কথা বলতে গিয়ে। নাকামুরায়া বেকারিতে থাকার সময় একদিন রাসবিহারী বসু আদা, রসুন, আলু, পেঁয়াজ আর টক দই দিয়ে রেঁধেছিলেন বাঙালির মতে মুরগির ঝোল। সেই ঝোল খেয়ে জাপানিরা তো পাগল! ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ল সে খাবারের সুনাম। সে খাবারের নাম রয়ে গেল সেই নাকামুরায়া বেকারির নামেই। তৈরি হলো জাপানের একটি জনপ্রিয় পদ, ‘নাকামুরায়া কারি’। আজও জাপানের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় এই পদটির পাশে লেখা থাকে, ‘আ কারি বর্ন আউট অব ইন্ডিয়ান রেভল্যুশন।’
বিখ্যাত এ মুরগির মাংসের রেসিপিটি দিয়ে দেওয়া হলো পাঠকদের জন্য। এই অতিষ্ঠ গরমের কোনো একদিন রান্না করে খেতে খেতে রাসবিহারী বসুর নাম স্মরণ করবেন।
উপকরণ
মুরগির মাংস ১ কেজি, হলুদ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, জিরে বাটা ২ টেবিল চামচ, ধনে বাটা ২ টেবিল চামচ, শুকনো মরিচ বাটা ১ চা–চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা বাটা ৪ টেবিল চামচ, টক দই ৫০ গ্রাম, কাঁচামরিচ, লবণ ও চিনি স্বাদমতো, বড় রসুনের খোসাসহ কোয়া ১৫ থেকে ২০ টি, তেল পরিমাণ মতো, গরম মসলা বাটা ১ চা–চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ।
প্রণালি
মুরগির টুকরোগুলো ধুয়ে সামান্য লবণ ও হলুদ দিয়ে মাখিয়ে রাখতে হবে আধা ঘণ্টা। তারপর জল ঝরিয়ে নিয়ে হালকা বাদামি করে ভেজে রাখতে হবে।
এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজতে হবে। কিছুটা ভাজা হলে আদা ও রসুন বাটা দিয়ে আবারও ভাজতে হবে।
আদা, রসুনের কাঁচা গন্ধ চলে গেলে হলুদ, জিরা, ধনে ও শুকনো মরিচ বাটা দিয়ে একটু ভেজে নিয়ে পেঁয়াজ বেরেস্তা বাটা দিয়ে আরেকটু ভাজতে হবে। এরপর জল ঝরিয়ে টক দই দিতে হবে। স্বাদমতো লবণ ও চিনি দিয়ে কষাতে হবে। মসলা থেকে যখন তেল ছেড়ে আসতে থাকবে তখন ভেজে রাখা মুরগির টুকরোগুলো দিয়ে কষাতে হবে।
ভালো করে কষানো হয়ে গেলে পরিমাণ মতো গরম জল দিতে হবে। ফুটে উঠলে কাঁচামরিচ এবং খোসাসহ রসুনের কোয়াগুলো দিতে হবে। ঝোল ঘন হয়ে এলে গরম মসলা বাটা দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে ঢাকনা দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে তারপর পরিবেশন করতে হবে।
ছবি এবং লেখা: জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
রান্না ও রেসিপি : সুস্মিতা মুখোপাধ্যায়
বড়লাট হার্ডিঞ্জকে মারতে গিয়ে বিফল হলেন রাসবিহারী বসু। তারপরে ভারতব্যাপী সশস্ত্র আন্দোলনের প্রচেষ্টা, তাও বিফল। বড়লাটের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা বলে কথা! তবে চেষ্টাগুলো বিফলে গেলেও ইংরেজরা তত দিনে বুঝে গেছে, এই রাসবিহারী বসু যেনতেন মানুষ নন।
ভারতের কোনায় কোনায় তত দিনে ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর কাণ্ডকীর্তির কথা! তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে ইংরেজ সরকার। ধরতেই হবে যেভাবে হোক। ছদ্মবেশ ধারণে কিংবদন্তিসহ হলেও এবার রাসবিহারী বসুকে ‘রণ ছোড়’ হতে হলো। মানে, যাকে বলে, স্ট্র্যাটেজিক রিট্রিট। পালাতে হলো দেশ ছেড়ে।
১৯১৫ সালে প্রিয়নাথ ঠাকুর নাম নিয়ে পালিয়ে গিয়ে তিনি উঠলেন জাপানে। টোকিওতে আলাপ হলো চীনা বিপ্লবী সান ইয়াৎ সেনের সঙ্গে। তাঁর সাহায্যে জাপানের সিঞ্জিকো শহরের নাকামুরায়া নামে এক বেকারিতে আশ্রয় হলো রাসবিহারী বসুর। বেসমেন্টে লুকিয়ে থাকতেন তিনি। সেই বেকারির মালিক ছিলেন আইজো সোমা। তাঁর কন্যার নাম ছিল তোশিকো সোমা। পরবর্তীতে এই তোশিকোর সঙ্গেই বাংলার বিপ্লবী রাসবিহারীর প্রেম ও বিয়ে হয়।
গল্পটা বলতে হলো জাপানের বিখ্যাত মুরগির মাংসের পদ নাকামুরায়া চিকেনের কথা বলতে গিয়ে। নাকামুরায়া বেকারিতে থাকার সময় একদিন রাসবিহারী বসু আদা, রসুন, আলু, পেঁয়াজ আর টক দই দিয়ে রেঁধেছিলেন বাঙালির মতে মুরগির ঝোল। সেই ঝোল খেয়ে জাপানিরা তো পাগল! ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ল সে খাবারের সুনাম। সে খাবারের নাম রয়ে গেল সেই নাকামুরায়া বেকারির নামেই। তৈরি হলো জাপানের একটি জনপ্রিয় পদ, ‘নাকামুরায়া কারি’। আজও জাপানের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় এই পদটির পাশে লেখা থাকে, ‘আ কারি বর্ন আউট অব ইন্ডিয়ান রেভল্যুশন।’
বিখ্যাত এ মুরগির মাংসের রেসিপিটি দিয়ে দেওয়া হলো পাঠকদের জন্য। এই অতিষ্ঠ গরমের কোনো একদিন রান্না করে খেতে খেতে রাসবিহারী বসুর নাম স্মরণ করবেন।
উপকরণ
মুরগির মাংস ১ কেজি, হলুদ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, জিরে বাটা ২ টেবিল চামচ, ধনে বাটা ২ টেবিল চামচ, শুকনো মরিচ বাটা ১ চা–চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা বাটা ৪ টেবিল চামচ, টক দই ৫০ গ্রাম, কাঁচামরিচ, লবণ ও চিনি স্বাদমতো, বড় রসুনের খোসাসহ কোয়া ১৫ থেকে ২০ টি, তেল পরিমাণ মতো, গরম মসলা বাটা ১ চা–চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ।
প্রণালি
মুরগির টুকরোগুলো ধুয়ে সামান্য লবণ ও হলুদ দিয়ে মাখিয়ে রাখতে হবে আধা ঘণ্টা। তারপর জল ঝরিয়ে নিয়ে হালকা বাদামি করে ভেজে রাখতে হবে।
এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজতে হবে। কিছুটা ভাজা হলে আদা ও রসুন বাটা দিয়ে আবারও ভাজতে হবে।
আদা, রসুনের কাঁচা গন্ধ চলে গেলে হলুদ, জিরা, ধনে ও শুকনো মরিচ বাটা দিয়ে একটু ভেজে নিয়ে পেঁয়াজ বেরেস্তা বাটা দিয়ে আরেকটু ভাজতে হবে। এরপর জল ঝরিয়ে টক দই দিতে হবে। স্বাদমতো লবণ ও চিনি দিয়ে কষাতে হবে। মসলা থেকে যখন তেল ছেড়ে আসতে থাকবে তখন ভেজে রাখা মুরগির টুকরোগুলো দিয়ে কষাতে হবে।
ভালো করে কষানো হয়ে গেলে পরিমাণ মতো গরম জল দিতে হবে। ফুটে উঠলে কাঁচামরিচ এবং খোসাসহ রসুনের কোয়াগুলো দিতে হবে। ঝোল ঘন হয়ে এলে গরম মসলা বাটা দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে ঢাকনা দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে তারপর পরিবেশন করতে হবে।
ছবি এবং লেখা: জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
রান্না ও রেসিপি : সুস্মিতা মুখোপাধ্যায়
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে