Ajker Patrika

কর্মস্থলে বেশি চাপে ভোগে জেনারেশন জেড, কারণ জানালেন মনোবিজ্ঞানী

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ২৯
কর্মস্থলে বেশি চাপে ভোগে জেনারেশন জেড, কারণ জানালেন মনোবিজ্ঞানী

শিল্পায়নের যুগে কর্মস্থলের চাপ সামলে উঠার লড়াই মানুষের জন্য নতুন নয়। কাজের চাপ আবার সবার জন্য একরকম নয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই যুগের মানুষদের জন্য সেই চাপ একেবারেই ভিন্ন। এক্ষেত্রে জেনারেশনের জেড (জেন জেড) অর্থাৎ বিংশ শতকের শেষ তিন বছর থেকে বর্তমান শতকের প্রথম যুগে জন্ম নেওয়া মার্কিন প্রজন্ম সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপে ভোগেন।  

যুক্তরাষ্ট্রের মনোবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক বলছেন, প্রযুক্তির কারণে জেন জেড আগের প্রজন্মের চেয়ে বেশি চাপের সম্মুখীন হন। কারণ পেশাগত কাজ ও ব্যক্তিজীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে দিচ্ছে না। এর ফলে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

এর মূল কারণ হলো— পেশাগত কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সীমানা ছাড়াই বেড়ে উঠেছে এই প্রজন্ম।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যাথলিন পাইক বলেন, কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার পর কর্মীদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা হতো না। তবে এখন এই সীমা লঙ্ঘন হচ্ছে। 

১৯৯৭ সাল থেকে ২০১২ সালে জন্ম নেওয়া সবাই জেনারেশন জেড প্রজন্মের অংশ। এর আগের প্রজন্ম হলো মিলেনিয়াল। ২০১০ এর পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জন্ম নেওয়াদের বলা হবে জেনারেশন আলফা ও এর পরে জন্ম নেওয়াদের বলা হবে জেনারেশন বেটা। 

এই জেনারেশন জেড কর্মক্ষেত্রে চাপ সামলানো নিয়ে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়ে। এর মূলত কারণ— এই প্রজন্ম এমন এক সময়ে বেড়ে উঠেছে, যখন পেশাগত কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সীমানা প্রায় উঠে গেছে।

বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়ান মাইন্ড অ্যাট ওয়ার্কের সিইও ও প্রেসিডেন্ট এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ক্যাথলিন পাইক বলেন, পুরোনো প্রজন্ম তাদের ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রযুক্তি–প্ররোচিত এই চাপের মুখোমুখি হয়নি। যখন পুরোনো প্রজন্মের কর্মজীবন শুরু হয়, তখন এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন পৃথিবী ছিল। 

জেন জেডের পেশাগত কাজ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রজন্মের তরুণদের আরও বেশি সময় বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। 

অধ্যাপক পাইক বলেন, ৫০ বছর আগে যখন জ্যেষ্ঠ নির্বাহীরা কাজ শুরু করছিলেন, তখন তাদের কোনো সেলফোন, ইন্টারনেট, ফেডেক্স ছিল না। প্রযুক্তির কারণেই তরুণ কর্মীদের পেশাগত জীবনের লড়াই শুরু হয়েছে। 

তিনি বলেন, অতীতে রিয়েল টাইম বা তাৎক্ষণিক যোগাযোগের তেমন সুযোগ ছিল না। কর্মীরা বাড়ি যাওয়ার পর তাঁদের সঙ্গে স্থাপন ছিল কঠিন। তখনকার প্রাকৃতিক কাঠামোয় প্রচুর বিশ্রামের সময় মিলত। এখন এটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। তাই পেশাগত কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে স্পষ্ট সীমারেখা টানার চেষ্টা করছে জেনারেশন জেড।

ক্যাথলিন বলেন, জেনারেশন জেড কিছুটা ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। এটি স্পষ্ট প্রজন্মগত পার্থক্য। এজন্য অনেক তরুণ পেশাজীবীর মধ্যে ‘মজুরি অনুযায়ী কাজ’ (অর্থাৎ নিজের দায়িত্বের বাইরে অন্য কাজ না করা) বা ‘নীরবে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার’ মত প্রবণতা দেখা যায়। বেশিরভাগই চাকরি ধরে রাখতে এবং একইসঙ্গে অবসাদ এড়াতে ন্যূনতম কাজ করছেন। 

ক্যাথলিন আরও বলেন, জেন জেড প্রজন্ম কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনাকে স্বাভাবিক হিসেবে পরিণত করলেও অনেকে স্বাভাবিক আবেগ ও মানসিক অসুস্থতার মধ্যে পার্থক্য ভুলে যাচ্ছেন। কারণ, কাজ শেষ করার জন্য চাপ বা উদ্বিগ্ন সাহায্য করতে পারে। সব সময় এসব গুরুতর মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ নয়। 

তিনি বলেন, কীভাবে দক্ষতা তৈরি করতে হয়, কীভাবে সাহায্য চাইতে হয় ও কীভাবে নতুন সক্ষমতার উদ্ভাবন করতে হয়- এসব শেখার মাধ্যমে সাফল্য আসে। এসবই কর্মক্ষেত্রে পরিপক্বতা আনে।

তথ্যসূত্র: বিজনেস ইনসাইডার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত