Ajker Patrika

ভুটানের আকর্ষণীয় ১০ ভ্রমণ গন্তব্য

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪: ৫৩
ভুটানের আকর্ষণীয় ১০ ভ্রমণ গন্তব্য

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই।

ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধরনের বাগানের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। হরেক জাতের বন্যপ্রাণীর আবাসও দেশটিতে। আবহাওয়াও খুব আরামদায়ক। হবে না-ই বা কেন? এটি যে কার্বন নেগেটিভ কান্ট্রি (যে পরিমাণ কার্বন ছাড়ে, তার চেয়ে শোষণক্ষমতা বেশি)। ভুটানে অসাধারণ সুন্দর সব জায়গার মধ্যে আপাতত ১০টিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। 

১. থিম্পু

ভুটানের রাজধানী শহরটিতে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। পাহাড়চূড়ার বুদ্ধ পয়েন্টের বড় আকর্ষণ গৌতম বুদ্ধের বিশাল এক সোনালি মূর্তি। ২০০৬ সালে কাজ শুরু হলেও ১৬৯ ফুট উঁচু বুদ্ধ ভাস্কর্য এবং অন্যান্য মূর্তিসহ গোটা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন হয় ২০১৫। কয়েকটা সিঁড়ি পেরিয়ে ভেতরে গিয়ে ছোট ছোট আরও অনেক বুদ্ধমূর্তির দেখা পাবেন।

বিভিন্ন তাকে সাজিয়ে রাখা। সঙ্গের গাইড যখন জানাবেন আট ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এক লাখ এবং ১২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ২৫ হাজার ব্রোঞ্জের বুদ্ধ স্ট্যাচু আছে এখানে, তখন রীতিমতো চমকাবেন।

বিশাল চত্বর থেকে উপভোগ করবেন চারপাশের তুষারের টুপি পরা উঁচু সব পর্বতের রূপ। চত্বরে বেশ কিছু মাঝারি আকারের মূর্তি আছে। বুদ্ধ পয়েন্ট এখন থিম্পুর অঘোষিত প্রতীকে পরিণত হয়েছে। 

শহরের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী চু মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহর থেকে গাড়িতে চেপে মিনিট পনেরো-কুড়ি গেলে পৌঁছে যাবেন ‘জিগমে দরজি ন্যাশনাল পার্কে’। এই বনের আয়তন কম নয়, ৪ হাজার ৩১৬ বর্গকিলোমিটার। গোটা ভুটানের প্রায় ৯ ভাগের এক ভাগ। মোটামুটি ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতার এলাকা আছে এর আওতায়। ট্র্যাকারদের স্বর্গরাজ্য জিগমে দর্জি জাতীয় উদ্যান, বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার প্রচুর ট্র্যাকার এই জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান। বনে বাঘ ছাড়া মিলবে মেঘলা চিতা, মাস্ক ডিয়ার, বন্য কুকুর, হিমালয়ান কালো ভালুক, লাল পান্ডার মতো প্রাণীদের। হিমালয়ের তুষারছাওয়া উঁচু সব শৃঙ্গও পড়েছে এর সীমানায়। ভুটানের জাতীয় প্রাণী টাকিনও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এই জঙ্গলে। আধা গরু-আধা ছাগল বলতে পারেন এই জন্তুটিকে। অবশ্য এই প্রাণীকে সহজে দেখতে চাইলে যেতে পারেন থিম্পুর টাকিন রিজার্ভে। 

পারো বিমানবন্দরের রানওয়ে এবং পাশের পাহাড় দেখে চোখ জুড়াবে২. পারো

পারোর কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এর আশ্চর্য সুন্দর বিমানবন্দরটির কথা। প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক, শীতল এক বাতাস আপনার শরীর জুড়িয়ে দেবে। রানওয়ের পরেই পাহাড়সারি মনটা ভালো করে দেবে। নেট ঘেঁটে যতটা জানতে পেরেছি, পারো শহরটা গড়ে উঠেছে বেশি দিন হয়নি, ১৯৮৫ সালে একটা মূল সড়ক দিয়ে এর শুরু। তখন এর দুই পাশে ছিল কেবল বর্ণিল সব দোকান। ধীরে ধীরে আরও দালানকোঠা হয়। 

ভুটানের জাতীয় জাদুঘর পারোতেই। পাহাড়ের ওপরে। মূল ভবনটি গোল, ঐতিহ্যবাহী লাল-সাদা এক দালান। তা জং নামে পরিচিত বহু পুরোনো এই বিল্ডিংটাকে ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়ানচুকের নির্দেশে ১৯৬৮ সালে সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। তা জং মানে হলো ওয়াচ টাওয়ার। সত্যি এখানে দাঁড়ালে নিচের পারো উপত্যকা নিমেষে চোখের সামনে চলে আসবে। তবে প্রথমে নজর যাবে দুটি জংয়ের দিকে। বেশি মশহুর রিনপাং জং। এটা একই সঙ্গে দুর্গ এবং বৌদ্ধমন্দির বা গুম্ফা। এখন পারোর প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এখান থেকে সবুজ পারো উপত্যকায়, মাঝে মাঝে বর্ণিল সব ভুটানি বাড়ি-ঘর, ফসলের খেত চোখ জুড়িয়ে দেবে। 

শহরের বাইরের দিকটা কেমন মায়া মাখানো। বড় জায়গা নিয়ে কয়েকটা রিসোর্ট, ভুটানিদের ছোট ফার্ম হাউস, চাষ করা জমিগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পারো শহর কেটে চলে গেছে ভুটানের বড় নদীগুলোর একটি পা চু। 

পাহাড়ের চাতালে ঝুলতে থাকা মনাস্ট্রি৩. টাইগার নেস্ট

ভুটানের নাম শুনলে কোন দৃশ্যটা সবার আগে মনের পর্দায় ভাসতে থাকে, বলুন তো? আমিই বলে দিচ্ছি, উঁচু পাহাড়ের চাতালে ঝুলতে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর এক মনাস্ট্রি বা গুম্ফা। কথাটা আমার নিজের বেলায়ও খাটে। প্রথম যখন ভুটান ভ্রমণের কথা ভাবছিলাম, মাথায় ঘুরছিল টাইগার নেস্ট বা পারো টেকটসাংয়ের ছবিই। পারো শহর থেকে টাইগার নেস্টের নিচের পার্ক মতো জায়গাটিতে পৌঁছাতে মিনিট ২৫-৩০ লাগবে। ঢংঢং শব্দে কয়েকটা সেতু পেরোবেন পথে। এর মধ্যে একটা বেশ বড়। টাইগার নেস্ট বা ‘বাঘের বাসা’র মূল প্রবেশপথের বাইরে হরেক জাতের স্যুভেনির নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। কতক দূর যেতেই মোটামুটি খোলামেলা, তবে একটু এবড়োখেবড়ো এক জমিতে অনেকগুলো ঘোড়া চড়তে দেখবেন। যাঁরা পাহাড় বাইতে সাহস করেন না, তাঁদের চূড়ায় পৌঁছে দেবে এই ঘোড়া। 

গাছপালাময় এক জায়গা থেকেই ট্রেকিং আর হাইকিংয়ের পথের শুরু। কয়েকটি বোর্ডে এই ট্রেইলে কী ধরনের পাখির দেখা মিলতে পারে তা ছবিসহ চিহ্নিত করা হয়েছে। টাইগার নেস্টে উঠতে হয় ঘোরানো-প্যাঁচানো অনেকটা পথ পেরিয়ে। গুম্ফাটা সাগর সমতল থেকে ৩১০০ মিটার উচ্চতায়!

আপনার নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে এর নাম টাইগার নেস্ট কেন? বাঘের বাসা আছে কি? ১৬৯২ সালে প্রথম তৈরি হয় এটি। কথিত আছে গুরু রিনপোচ একটা বাঘিনীর পিঠে চড়ে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারের জন্য তিব্বত থেকে এখানে এসেছিলেন। তাই এমন নামকরণ। অপর একটি কিংবদন্তি বলছে, গুরু তাঁর এক অভিজাত ভক্তের পীড়াপীড়িতে তাঁকে বাঘিনী বানিয়ে পিঠে সওয়ার হয়ে ওঠেন উঁচু পাহাড়টিতে। ওই বাঘিনী নাকি উড়ে পেরিয়েছিল দূরত্বটা। 

চেলালা পাস৪. চেলালা পাস 

গাড়িতে করে যাওয়া যায় ভুটানের এমন সবচেয়ে উঁচু জায়গা চেলালা পাস। উচ্চতা ৩ হাজার ৯৮৮ মিটার। পাহাড়ি রাস্তাটা ভয়ানক আঁকাবাঁকা, বিপজ্জনক। অবশ্য ভুটানের চালকেরা সাধারণত গাড়ি চালান সতর্কতার সঙ্গে। কখনো কখনো দূরে পাহাড়ের গায়ে টাইগার নেস্টটের চেহারাও দেখবেন চেলালা পাসে যাওয়ার পথে। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভূপ্রকৃতিতে বৈচিত্র্য নজর কাড়বে। নতুন নতুন প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিত হবেন। শীতও বাড়বে। এখানে শীতে এত্তো বরফ পড়ে যে অনেক সময় এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। রেসকিউ পার্টি এসে বরফ পরিষ্কার করলেই তবে গাড়ি চলে। এদিকে রাস্তা সরু। উল্টো পাশ থেকে গাড়ি আসে কি না, বুঝতে সতর্ক থাকতে হয়। 

চেলালায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামলেই মনে হবে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছেন। পাহাড়ের ওপরের দোকান থেকে গরম-গরম পাকোরা, বেসনে চুবানো ফুলকপি খেয়ে উষ্ণতা খুঁজতে পারেন।

পাহাড়ে কিনারে দাঁড়াতেই হিমালয়ের তুষারঢাকা পর্বতমালাগুলো নজর কাড়বে। নিচে এক পাশে পারো ভ্যালি, আরেক পাশে হা ভ্যালি। ওপর থেকে এই উপত্যকার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়াবে। 

দোচুলা পাসের মূল আকর্ষণ এখানকার স্তুপাগুলো৫. দোচুলা পাস 

থিম্পু থেকে পুনাখা যাওয়ার পথে পড়ে দোচুলা পাস। সাগর সমতল থেকে প্রায় ৩ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় এটি। এখান থেকে হিমালয়ের উঁচু উঁচু বরফঢাকা চূড়াগুলো দেখা যায়। তবে শর্ত আছে একটা, আকাশ থাকতে হবে পরিষ্কার। এদের মধ্যে আছে ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট মাসানগাংও। দোচুলা পাসের মূল আকর্ষণ এখানকার স্তুপাগুলো। সাদা-লালে মেশানো এখানকার ১০৮ স্তুপা দেখে চোখ জুড়াবে। বৌদ্ধভিক্ষুদের ধ্যানের জায়গা স্তুপা। এই স্তুপাগুলো বানানো হয় কুইন মাদার আসি দরজি ওয়াংমো ওয়ানচুকের নির্দেশে, ২০০৪ সালে। একটা গুম্ফাও আছে দোচুলায়। অবশ্য ভুটানে দেখা বিভিন্ন প্রাচীন, পুরোনো গুম্ফাগুলোর তুলনায় এটা নেহাত ছোট। 

জায়গাটি পড়েছে ভুটানের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সীমানায়। চারপাশে তাই লম্বা লম্বা গাছের রাজত্ব। আশপাশে সাইপ্রেস, ওক ও বার্চ গাছের রাজত্ব। পার্কের সীমানায় হেঁটে বেড়ানোর কয়েকটি ট্রেইল আছে, বিশেষ করে রডোডেনড্রন ট্রেইলটা অনেক সুন্দর। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা, ভুটানের বড় দুটি জঙ্গল জিগমে দর্জি ও জিগমে সিঙ্গির মাঝে প্রাকৃতিক করিডর এই উদ্যান। তাই এখানে বাঘ, চিতা বাঘ আর লাল পান্ডার মতো দুর্লভ বন্য জন্তুর দেখা পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য সময় ও ধৈর্য দুটোই চাই। 

 পুনাখার ঝুলন্ত সেতু৬. পুনাখা

দোচুলা পাসের পর পুনাখা যাওয়ার পথটা ভারি সুন্দর। ডান পাশে গা ঘেঁষেই উঠে গেছে পাহাড়। তাই তাকিয়ে বেশি কিছু দেখতে পাবেন না। তবে বাঁয়ে তাকালেই চোখ জুড়াবে। একটু দূরে গাছপালায় ঢাকা সবুজ পাহাড়, এখানে-সেখানে দৃষ্টিনন্দন সব বাড়িঘর। কিছুক্ষণ পর বেশ উঁচুতে কয়েকটা স্থাপনা দেখবেন, ওটা নানারি। নারী ভিক্ষুরা ওখানে প্রশিক্ষণ নেন, ধ্যান করেন। বাঁয়ে নদীও চলবে। 

পুনাখায় ঢুকে ভেতরের একটা রাস্তা ধরে কিছু দূর গেলে ডান পাশে পাবেন অপরূপ এক নদী। পাথরের ওপর দিয়ে ঝিরঝির করে বয়ে চলেছে জল। ওপরে সেতু। দূরে দেখা দিল পুনাখা জং। একই সঙ্গে দুর্গ আর ধর্মীয় কাঠামো বলতে পারেন এই জংকে। পুনাখা জং তৈরি হয়েছে সেই ১৬৩৭-৩৮ সালে। এখন পুনাখা জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর। ভুটানি স্থাপত্যরীতিতে তৈরি দালানটি মুগ্ধ করবে আপনাকে। পুনাখা জংয়ের সীমানায় ঢুকতে হয় নদীর ওপর একটা সেতু পেরিয়ে। পুনাখা উপত্যকার দুই নদীর মাঝখানে জংটি। আদপে পো চু হলো নদ, মো চু নদী। পো চোর উৎপত্তি পুনাখার পাহাড়ের হিমবাহের বরফগলা পানিতে হলেও মো চু এসেছে সেই তিব্বতের লাসা থেকে। কাঠের ব্রিজের ওপর থেকে নিচে নদীর স্বচ্ছ জলে মাছ দেখা যায়। 

জংয়ের পেছনের গেট পেরিয়ে রওনা দেবেন ঝুলন্ত সেতুর দিকে। প্রথমে দুই পশে গাছপালার গার্ড দেওয়া পাকা সড়ক, তারপর পাহাড়ের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মেঠোপথে। ৫০০ ফুটের বেশি লম্বা ঝুলন্ত সেতুটা সাং চু নদীর ওপর। দুই পাশে সিমেন্টের ব্লকের মাঝখানে শক্ত তার দিয়ে তৈরি। হাঁটার সময় সেতুর সঙ্গে দুলতে থাকবেন আপনিও। সেতুর গায়ে অনেক রঙিন পতাকা, সব সময়ই নাকি এই সেতুতে এমন অজস্র পতাকা ঝোলে অশুভ আত্মাদের দূরে রাখতে। ঝুলন্ত সেতু থেকে নিচের নদীটা ধরা দেবে আরও মোহনীয় চেহারায়। রাফটিং করতে দেখবেন মানুষকে। ওপাশে পাহাড়, সমতলে ধানখেত—সবকিছুই দারুণ! এই সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ তো বটেই; বিভিন্ন গবাদিপশুও চলাচল করে। 

বুমথাং উপত্যকা৭. বুমথাং উপত্যকা

ভুটানিদের কাছে ধর্মীয় দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এটি। প্রায় ২ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত বুমথামে অনেক পুরোনো বৌদ্ধমন্দির আছে।

পর্যটকদের, বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয় এক গন্তব্য এটি। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে তাঁদের। পুনাখা থেকে বুমথাং যাওয়ার পথে খাড়া পাহাড়ের ওপর মেঘের রাজ্যে ট্রংসা জংও পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। ওই পথেই বেশ কয়েকটি ঝর্ণাও চোখে পড়ে। এগুলোর জল অবশ্য শীতে জমে বরফ হয়ে থাকে। প্রচুর আপেল বাগানেরও দেখা মেলে এই উপত্যকায়। অনেক পর্যটকই একে আদর করে ডাকেন ‘পুবের সুইজারল্যান্ড’। নানা ধরনের উৎসবের জন্যও বিখ্যাত জায়গাটি। 

ওপর থেকে দেখা হা উপত্যকা৮. হা ভ্যালি

হা ভ্যালি বা হা উপত্যকা ইদানীং ভুটানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খুব প্রিয় এক গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। উপত্যকাটি বিখ্যাত এখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি দুর্গ ও বৌদ্ধমন্দির আছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম লাখাং কারপো (সাদা মন্দির) ও লাখাং নাগপো (কালো মন্দির), ১০০ বছরের পুরোনো মন্দির তাগচু গোয়েম্বা। দবিজ জং নামে পাহাড়চূড়ার পাঁচতলা দুর্গটিও এখানকার বিখ্যাত গন্তব্যগুলোর একটি। পারো থেকে দূরত্ব বেশি না হওয়ায় অনায়াসে সেখানে একটি কিংবা দুটি দিন কাটাতে পারেন। 

 ফুন্টসলিংয়ে ভুটান গেট। ছবি: টুইটার৯. ফুন্টসলিং 

বিশেষ করে যেসব বাংলাদেশি পর্যটক ভারত হয়ে ভুটানে ঢোকেন, তাঁদের কাছে বেশ পরিচিত ফুন্টসলিং। ছোট্ট এই শহরে আছে কুমির প্রজননকেন্দ্র, ভুটান গেট, মনাস্ট্রি। ফুন্টসলিংয়ের উঁচুনিচু রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা। রাস্তার পাশেই ছোট-বড় শপিংমল, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাহারি ফুলের দোকান পাবেন। বাজারে আশপাশের পাহাড়ে উৎপাদিত নানা ফল পাবেন। মোটের ওপর নীরব, শান্তিময় প্রাকৃতিক পরিবেশে যাঁরা দুটি দিন কাটাতে চান, তাঁরা ভুটান ভ্রমণের সময় শহরটির জন্য দুটি দিন রাখতে পারেন। 

ওয়াংদুয়ে ফোদরাং জং১০. ওয়াংদুয়ে ফোদরাং

ভুটানের আর একটি বিখ্যাত গন্তব্য। পুনাখার দক্ষিণে অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং সেন্ট্রাল হাইওয়ে ধরে মধ্য ভুটানে পৌঁছার আগে সর্বশেষ শহর। ওয়াংদুয়ে ফোদরাং উপত্যকার ওপরের অংশ পশু চারণভূমি হিসেবে খুব বিখ্যাত। বাঁশের নানা সামগ্রী এবং স্লেট ও নানান পাথর কুঁদে তৈরি বিভিন্ন জিনিসের জন্যও আলাদা নাম আছে জায়গাটির।

পুনাখা চু ও তাং চু নদীর সংযোগস্থলে এক পাহাড়ের ওপর অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং জংও আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। 

সূত্র. হিমালয়ান গ্লেসিয়ার. কম, থ্রিলো ফিলিয়া ডট কম, উইকিপিডিয়া

ভ্রমণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনুষ্ঠানের আগে ত্বকের যত্ন নেবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজিং করুন। ছবি: পেক্সেলস
ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজিং করুন। ছবি: পেক্সেলস

সব ঠিক চলছিল। কিন্তু যেই অনুষ্ঠানের তারিখ পড়ে গেল, উঠল মুখে ব্রণ কিংবা লাল হয়ে উঠল র‍্যাশ! মেজাজ হয়ে উঠল তিরিক্ষি। কিন্তু অনুষ্ঠানে তো যেতে হবে। এমন অবস্থায় যে সব সময় পারলারেই যেতে হয়, তা নয়। ঘরে বসেও এর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের দিন ত্বক অনেকটাই স্বাস্থ্য়োজ্জ্বল দেখাবে। অনুষ্ঠানের এক সপ্তাহ আগে থেকে যেভাবে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন–

ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজিং করুন

ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিন। ছবি: পেক্সেলস
ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিন। ছবি: পেক্সেলস

প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে প্রথমে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিন। যত্ন নেওয়ার আগে অবশ্যই নিজের ত্বকের ধরন কেমন, সেটি জানা জরুরি। যাঁদের ত্বক স্বাভাবিক, তাঁরা শীতে ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এক চা-চামচ চালের গুঁড়া, এক চা-চামচ ময়দা, এক চা-চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে পুরো মুখে দু-তিন মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এরপর প্যাক ব্যবহার করতে হবে।

প্যাক তৈরিতে আপেল পেস্ট এক চা-চামচ, মসুরের ডালের বেসন এক চা-চামচ, অর্ধেক ডিমের কুসুম ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।

শীতকালে শুষ্ক ত্বকের বেশি যত্নের প্রয়োজন। এ ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে মসুর ডাল বাটার সঙ্গে এক টেবিল চামচ গরম দুধ মিশিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় পুরো মুখে লাগাতে হবে। এতে ত্বকের মরা কোষ উঠে আসবে ও রোমকূপগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটা ফেসওয়াশের মতো ব্যবহার করতে হবে। পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার পর প্যাক লাগাতে হবে। ত্বক তৈলাক্ত হলে এক চা-চামচ গ্রিন টি গুঁড়া নিয়ে এর সঙ্গে এক চা-চামচ টক দই মিশিয়ে পুরো মুখে দু-তিন মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া দারুচিনি গুঁড়া এক চা-চামচ, এক চা-চামচ মুলতানি মাটি, ডিমের সাদা অংশ এগুলো ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এ প্যাক ব্যবহারের ফলে ময়শ্চারাইজারের ভারসাম্য ঠিক থাকবে।

ডিপ ক্লিনজিং

প্রথমে ক্লিনজার ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী জেল, ফোম বা ক্রিম টাইপ ক্লিনজার বেছে নিতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বা ফোম ক্লিনজার বেছে নিন। শুষ্ক বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং ক্লিনজার উপযুক্ত। ত্বক ভেজানোর জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। এতে বন্ধ রোমকূপ খুলে যাবে। এক মিনিটের জন্য বৃত্তাকার গতিতে ক্লিনজার ঘষুন। হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ঘষুন এবং পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করে শুকিয়ে নিন।

ব্যবহার করুন এক্সফোলিয়েটর। ঘষে ঘষে ত্বকে ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এরপর স্টিম করুন। পরের ধাপে ত্বকের উপযোগী ফেস মাস্ক দিয়ে ডিপ ক্লিন করুন। এ ক্ষেত্রে ক্লে ব্ল্যাক মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মুখ ধুয়ে সব শেষে টোনার ও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

স্কিন হোয়াইটনিং ট্রিটমেন্ট

মুখের ত্বকের সঙ্গে গলা, ঘাড়, হাত ও পুরো শরীরের রঙের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে যত্ন নিতে হবে পুরো শরীরের ত্বকের। মসুর ডাল বাটা পরিমাণমতো নিয়ে এর সঙ্গে লেবুর খোসাবাটা, পরিমাণমতো টক দই ও নারকেল তেল মিশিয়ে পুরো শরীরে মেখে নিয়মিত ম্যাসাজ করে গোসল করে নিতে হবে। সপ্তাহে দুই দিন করতে হবে এটি। এতে করে ত্বকের মরা কোষ উঠে গিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়বে। এ ছাড়া ত্বকের কোমলতা বজায় থাকবে।

হাত ও পায়ের যত্ন

সপ্তাহে অন্তত দুদিন বাড়িতে পেডিকিউর ও মেনিকিউর করতে হবে। অনুষ্ঠানের দিন পারলার থেকে একবার পেডিকিউর ও মেনিকিউর করিয়ে নিলে ভালো। কারণ, পারলারে ম্যাসাজ খুব ভালো হয়। ডিপ ক্লিনও করা সম্ভব।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও স্কিনক্র‍্যাফট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেটি ডিসেম্বর: বিশ্বের অন্যতম বড় উৎসব

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সাধারণত ৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে ডেটি ডিসেম্বর। ছবি: ট্রাভেল ট্যাংক
সাধারণত ৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে ডেটি ডিসেম্বর। ছবি: ট্রাভেল ট্যাংক

নাইজেরিয়ার বড় শহর লাগোস সারা বছর ব্যস্ত থাকে। তবে বছরের শেষ দিকে এই বিশাল শহর যেন রূপ বদলে আরও বেশি সরগরম হয়ে ওঠে। এর কারণ ডেটি ডিসেম্বর। এটি শহরের বার্ষিক উৎসব। একে ঘিরে পুরো শহর সেজে ওঠে ঝলমলে আলোয়। রাত হয়ে ওঠে সংগীতময়, রাস্তাজুড়ে থাকে উৎসবমুখর মানুষের ঢল। সংগীত, খাদ্য, পানীয় ডিসেম্বরে সব যেন ফোয়ারা ছোটায় লাগোসে। হবে নাই-বা কেন। এটি যে পৃথিবীর অন্যতম বড় উৎসব!

তবে এ বছরের উৎসবের আবহে আনন্দের পাশাপাশি রয়েছে একধরনের অস্বস্তিকর সুর। অর্থনৈতিক চাপ, নিরাপত্তাহীনতা—সব মিলিয়ে উৎসবের উচ্ছ্বাসে খানিক ছেদই পড়ছে।

২০২৪ সালের ডেটি ডিসেম্বর থেকে লাগোস রাজ্য সরকার পর্যটন ও বিনোদন খাত থেকে আয় করেছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বেশি। ছবি: এএফপি
২০২৪ সালের ডেটি ডিসেম্বর থেকে লাগোস রাজ্য সরকার পর্যটন ও বিনোদন খাত থেকে আয় করেছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বেশি। ছবি: এএফপি

সাধারণত ৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা ডেটি ডিসেম্বর কখনো কখনো গড়িয়ে যায় জানুয়ারি মাসেও। একটার পর একটা অনুষ্ঠান হয় দেশজুড়ে, যেখানে স্থানীয়রা তো বটেই, বিদেশি পর্যটকেরাও হাত খুলে খরচ করে।

এই সময় বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দেশে ফেরেন নাইজেরিয়ার প্রবাসীরা। তাঁরা সঙ্গে নিয়ে আসেন মোটা অঙ্কের অর্থ। ফলে লাগোস পরিণত হয় এক বিশাল কার্নিভ্যালের নগরীতে। যেখানে রাস্তা থাকে যানজটে ঠাসা আর চলে রাতজুড়ে উচ্চ শব্দের গান।

‘ডেটি’ শব্দটির অর্থ ‘নোংরা’—অর্থাৎ সব নিয়ম ভেঙে মুক্তভাবে আনন্দ করা। আর ঠিক সেটাই ঘটে লাগোসে। উৎসব, কনসার্ট, পপ-আপ মার্কেট, সৈকত পার্টি আর বিয়ের অনুষ্ঠান সব একের পর এক চলতে থাকে। প্রতিটিই বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ হওয়ার প্রতিযোগিতা।

২০২৪ সালে একের পর এক বড় আয়োজন ছিল। ছিল গ্র্যামি মনোনীত শিল্পী ডেভিডো ও ওলামিদেকে নিয়ে ফ্লাইটাইম ফেস্ট, সমুদ্রতীরে উইজকিডের ভাইবস অন দ্য বিচ এবং শহরজুড়ে ১৫টি আফ্রোবিটস পার্টি নিয়ে মাই আফ্রোবিটস ডেটি ডিসেম্বর উদ্‌যাপিত হয়।

এ বছরের আয়োজনও কম কিছু নয়। এবার আয়োজিত হচ্ছে পামওয়াইন মিউজিক ফেস্টিভ্যাল, পিক ডেটি ভাইবস, দ্য বনফায়ার এক্সপেরিয়েন্স, জুমা জুক্স লাইভ ইন লাগোস এবং ফুডি ইন লাগোস ফেস্টিভ্যাল।

সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ

ডেটি ডিসেম্বর আফ্রিকার সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণে ভূমিকা রাখছে। ছবি: এএফপি
ডেটি ডিসেম্বর আফ্রিকার সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণে ভূমিকা রাখছে। ছবি: এএফপি

২০১৭ সালে পামওয়াইন মিউজিক ফেস্টিভ্যাল প্রতিষ্ঠা করেন ওয়ালে ডেভিস। তিনি বলেন, ‘ডেটি ডিসেম্বর নামটা আসার আগেও ডিসেম্বর আমাদের কাছে সব সময়ই ডেটি ছিল। এখন সেটা শুধু আরও বড় হয়েছে।’ দেশের ভেতর ও প্রবাস থেকে আসা দর্শনার্থীদের কারণে গত দুই বছর এই উৎসব আরও বড় হয়েছে। অনেক লাগোসবাসী সারা বছর পরিকল্পনা করেন এই সময়কে ঘিরে। ৩৫ বছর বয়সী উদ্যোক্তা ওমোটয়োসি আকিনকুয়াদে চীনে ব্যবসায়িক কাজে মাসের পর মাস ঘুরেছেন। তিনি বলেন, ‘ডেটি ডিসেম্বর মানেই কষ্টকর পরিশ্রম থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া।’

নিউইয়র্ক থেকে তৃতীয়বারের মতো আসা জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ মিমি এগেসিওনু একে বলেন, ‘একটি অসাধারণ উৎসব এটি। প্রতিদিন যেন নতুন কোনো আন্তর্জাতিক তারকাকে দেখা যায়। এই অনুভূতি পৃথিবীর আর কোথাও নেই।’

বাড়ে মাছ আর পানীয়র দাম

ডেটি ডিসেম্বর নতুন কিছু নয়। দুই দশক ধরে নাইজেরিয়ার পূর্বাঞ্চলে কার্নিভ্যাল ক্যালাবার হয়ে আসছে। তবে বিশ্বজুড়ে আফ্রোবিটস সংগীতের জনপ্রিয়তার প্রভাব এই উৎসবে পড়েছে। পর্যটন বিশেষজ্ঞ ইকেচি উকোর মতে, প্রবাসীরা এই উৎসবে যোগ দিতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করেন। ফলে এটি দিন দিন বিলাসবহুল হয়ে উঠছে।

এর প্রভাব পড়েছে দামে। আগস্ট থেকেই বিমানভাড়া বেড়ে যায়। নাইজেরিয়ার এয়ারলাইনসে ইকোনমি টিকিটের দাম দ্বিগুণ হয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার নাইরায় পৌঁছায়। পানীয়র দামও প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। চাহিদা শুধু নাইট লাইফেই সীমাবদ্ধ নয়। সেলুন, দরজির দোকান—সবখানেই চাপ। কুকুর হেয়ার সেলুন আগস্ট থেকেই বুকিং নেয় এবং ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরোপুরি পূর্ণ।

উৎসবের ছায়ায় অন্ধকার বাস্তবতা

২০২৪ সালের ডেটি ডিসেম্বর থেকে লাগোস রাজ্য সরকার পর্যটন ও বিনোদন খাত থেকে আয় করেছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বেশি। এদিকে প্রবাসীদের ওপর ৫০০ ডলারের ‘ট্যুরিজম ট্যাক্স’ আরোপের প্রস্তাব ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বাতিল করা হয়। সরকারকে এখানে হস্তক্ষেপ না করে নিরাপত্তা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

তবে উৎসবের মধ্যেও অনেক অন্ধকার দিক রয়েছে। নাইজেরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংসতা, অপহরণ ও নিরাপত্তাহীনতা নিত্যসঙ্গী। তবু জীবন থেমে থাকে না। পর্যটন বিশেষজ্ঞ উকো বলেন, ‘কয়েক দিনের জন্য হলেও যদি এই উৎসব আমাদের দুঃখ ভুলতে সাহায্য করে, তাহলে সেটাই যথেষ্ট। ডেটি ডিসেম্বর বন্ধ করলে সমস্যাগুলো এমনিতেই মিটে যাবে, এমন নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এক অগোছালো স্ক্র্যাপবুকের ফ্যাশন স্মৃতি: ২০০০ থেকে ২০২৫ এ প্রত্যাবর্তন

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা 
এখনকার পরিমিতি বোধের যুগে শূন্য দশকের  ফ্যাশন ফিরছে আবার। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
এখনকার পরিমিতি বোধের যুগে শূন্য দশকের ফ্যাশন ফিরছে আবার। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

একুশ শতকের প্রথম দশক, অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল এক অদ্ভুত ফ্যাশনের সময়। তখন আভিজাত্যের চেয়ে আস্ফালন ছিল বেশি! সূক্ষ্মতা তখন প্রায় মৃত। চারদিকে শুধু পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। মাই স্পেসের জন্য আয়নায় তোলা অগোছালো ছবি। আর ছিল আত্মবিশ্বাসের জয়গান। বলা যেতেই পারে, ২০০০ সালের দিকে আত্মবিশ্বাসই ছিল আসল স্টাইল। এখনকার পরিমিত ফ্যাশনের যুগে সেই বিশৃঙ্খলা আবার ফিরে আসছে। না, ঠিক বিশৃঙ্খলা নয়, একে বলা যেতে পারে শৃঙ্খলাবদ্ধ বিশৃঙ্খলা। ২০২৫ এর নতুন প্রজন্ম খুঁজছে সেই রঙিন উন্মাদনা। তারা চাইছে সেই কেয়ারফ্রি স্টাইল। সামাজিক মাধ্যমেও বিভিন্ন সময় অনেকে মজা করে ভিডিও বানান এমন ছবি তোলার স্টাইলে। কিংবা বড় বড় ব্র্যান্ডের বিলবোর্ডে এমনকি ফ্যাশন ম্যাগাজিনগুলোতেও আমরা এমন এলোমেলো স্টাইলে দাঁড়ানো ছবি দেখি এখন। তার মানে, দেড়-দুই দশকের পুরোনো ফ্যাশন ও স্টাইল ফিরছে আবার প্রবলভাবেই?

আনুষঙ্গিক যখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু

সেই সময় চশমা মানেই ছিল চোখের ওপর এক রঙিন পর্দা। ছবি: পেক্সেলস
সেই সময় চশমা মানেই ছিল চোখের ওপর এক রঙিন পর্দা। ছবি: পেক্সেলস

সেই সময় চশমা মানেই ছিল বিশাল কিছু। নীল, গোলাপি বা বেগুনি লেন্স। চোখের ওপর যেন একটা রঙিন পর্দা। প্যারিস হিল্টনের সেই চশমাগুলো ছিল রাজকীয়। পুরো পৃথিবীটাই যেন সেই চশমার রঙে সুন্দর দেখাত। এখন আবারও ফিরে এসেছে সেই স্টাইল। সেই সময় ঠোঁটে ছিল গ্লসের ছটা। এত উজ্জ্বল যে একটু হলেই যেন আয়নার কাজ চলে যাবে। মার্কিন সংগীতশিল্পী, গীতিকার, অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, ব্যবসায়ী জেনিফার লোপেজ বা জে লো সেই গ্লসি ঠোঁটকে আইকনিক করেছিলেন। এমনকি তৎকালীন কিছু ফ্যাশন ম্যাগাজিনে এগুলো বোনাস হিসেবেও দেওয়া হতো। ‘গ্ল্যামার’ ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, ২০২৫ এ জে লো এই আঠালো টিউবগুলো আবারও জনপ্রিয় করে সবার হ্যান্ডব্যাগে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন।

সেই সময়ের বেশ কিছু মোটিফও আবার ফিরে এসেছে। যেমন প্রজাপতি। এটি ছিল মেয়েলি ঢঙের এক চমৎকার প্রকাশ। ২০০০ সালের দিকে ফ্যাশন ট্রেন্ডের একটি বড় অংশজুড়ে চুলে ছিল প্রজাপতি ক্লিপ। মারিয়া ক্যারির সেই মায়াবী ট্রেন্ড। চোকার থেকে শুরু করে টপ পর্যন্ত ছিল প্রজাপতির উড়ে বেড়ানো। আবারও চুলের কাঁকড়া ব্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ক্লিপ পর্যন্ত প্রজাপতির সেই ওড়াউড়ি চোখে পড়ছে মার্কেটে ঘুরলে।

আবারও মিলেছে আরাম আর সাহস

সেই সময় ঠোঁটে ছিল গ্লসের ছটা। জেনিফার লোপেজ গ্লসি ঠোঁটকে আইকনিক করে তুলেছিলেন। ছবি: পেক্সেলস
সেই সময় ঠোঁটে ছিল গ্লসের ছটা। জেনিফার লোপেজ গ্লসি ঠোঁটকে আইকনিক করে তুলেছিলেন। ছবি: পেক্সেলস

অসম্ভব ছোট এই পার্সগুলো শূন্য দশকের শুরুর দিকে আইকন হয়ে উঠেছিল। সেগুলো এখন আবারও আমরা দেখছি। এখনকার একটা স্মার্টফোন সেখানে ঢোকানো সম্ভব নয়। তারপরেও আউটফিটের সঙ্গে মিলিয়ে ছোট ব্যাগ নেওয়াই এখন ফ্যাশন হয়ে উঠেছে। অনেকে মনে করেন, এটা নতুন ফ্যাশন ধারা। তাদের জন্য বলে রাখি, এটাও ফ্যাশন জগতে নতুন কিছু নয়, শূন্য দশকের ফ্যাশন। তখন ব্যাগগুলোতে একটি ফ্লিপ ফোন এবং লিপ গ্লসের বেশি কিছু আঁটত না। ২০০২ সালের প্রায় প্রতিটি পাপারাজ্জি শটে এগুলো অমর হয়ে আছে। এগুলো ছিল চপল, মেয়েলি এবং ব্যবহারিক উপযোগিতার প্রতি তোয়াক্কাহীন। গত বছরেই কাজলসহ বেশ কিছু বলিউড অভিনেত্রী শাড়ির সঙ্গে মোটা বেল্ট পরে একটি ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি করেছিলেন। বলে রাখি, এটাও নতুন কিছু নয়। সেই প্রথম দশকে কোমরে ঝোলানো থাকত বিশাল সব বেল্ট। কখনো জিনসের নিচে, কখনো পোশাকের ওপর। বেল্টগুলো যেন ছিল একেকটা রহস্য।

ডেনিম আর মেটালিকের জাদু

ফ্যাশন জগৎ জুড়ে তখন ছিল ডেনিমের রাজত্ব। ছবি: পেক্সেলস
ফ্যাশন জগৎ জুড়ে তখন ছিল ডেনিমের রাজত্ব। ছবি: পেক্সেলস

একটা সময় জিনস ছিল বিস্ময়। তখন লো-রাইজ বা লো-কাট জিনস ছিল সবার প্রিয়। মার্কিন গায়িকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের হাত ধরে এটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। এর পাশাপাশি ছিল বুট কাট আর ফ্লেয়ার্ড জিনস। ফ্যাশন জগৎ জুড়ে তখন ডেনিমের রাজত্ব। সেই ঢিলেঢালা জিনস আবারও তরুণ-তরুণীদের আলমারিতে জায়গা করে নিয়েছে। কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আজ আবারও সেই ডেনিম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জিনসের পাশাপাশি শীতে ডেনিমের জ্যাকেট—সবই তাদের পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে চলে এসেছে।

সেই সময় মানুষ ভবিষ্যতের নেশায় বুঁদ ছিল। চারদিকে শুধু রুপালি আর মেটালিকের ছোঁয়া। সিলভার জ্যাকেট বা হলোগ্রাফিক স্কার্ট। এমনকি চুলের রংও হয়ে গিয়েছিল রুপালি। যেন সবাই মহাকাশ ভ্রমণের জন্য তৈরি। এটি ছিল এক রঙিন আশাবাদ। আর জেন-জিদের হাত ধরে বর্তমানে সারা বিশ্ব বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখছে। তাদের চোখেও রঙিন স্বপ্ন, বদলের একটা বিশেষ রং। তাই তাদের ফ্যাশনে আবারও মেটালিকের ছোঁয়া উঠে এসেছে।

লোগোম্যানিয়া আর লাক্সারি

সে সময়, অর্থাৎ সেই শূন্য দশকে ফ্যাশন যেন ফিসফিস করত না, চিৎকার করত। ব্র্যান্ডের নাম গায়ে জড়িয়ে রাখাই ছিল দস্তুর। ডিওরের স্যাডেল ব্যাগ কিংবা ফেন্ডির লোগো। লোকে যেন আধা মাইল দূর থেকেও ব্র্যান্ড চিনতে পারে। সেটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য। সেই প্রবণতা আবারও ফিরে এসেছে। দাম বেশি হলেও ব্র্যান্ডেই মানুষের আরাম পৌঁছে গেছে। বিষয়টা অনেকটা সমাজে মুখ দেখানোর মতো বাড়াবাড়ির পর্যায়েও চলে যায় অনেক সময়।

সেই সময় টিনএজ ফ্যাশনে ছিল লেয়ার্ড ট্যাংকের ছড়াছড়ি। একটার ওপর একটা রঙিন কামিজ বা টপ। সঙ্গে ছোট ছোট গ্রাফিক টি-শার্ট। তাতে গ্লিটার দিয়ে লেখা থাকত অদ্ভুত সব কথা। প্রতিটি পোশাক ছিল ব্যক্তিত্বের এক-একটা ছোট সংস্করণ; যা আজও জনপ্রিয়। অবশ্য সব সময় ফ্যাশন ছিল প্রতিবাদের ভাষা।

অনুভূতির এক অগোছালো স্ক্র্যাপবুক

শূন্য দশক কোনো নিয়ম মানেনি। এটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এক ফ্যাশন ধারা। কোনো ক্ষমা না চাওয়া পপসংস্কৃতির ফসল। সে সময় ফ্যাশন কালজয়ী হতে চায়নি। বড় বড় সিলুয়েট আর বড় বড় অনুভূতির গল্প ছিল সেটি। সেই অদম্য উৎসাহের কারণেই আজ ২০২৫-এ এসেও আমরা বারবার সেই দিনগুলোর দিকে ফিরে তাকাই।

সূত্র: শোবিজ ডেইলি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রেমে বিয়ের কথা বললেই ব্লক খাবেন, দুঃখের পোস্টে হা হা পাবেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৫
আজকের রাশিফল: প্রেমে বিয়ের কথা বললেই ব্লক খাবেন, দুঃখের পোস্টে হা হা পাবেন

মেষ

আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, কিন্তু পকেট তলানিতে। আজ আপনার সাহস দেখে পাড়ার কুকুরও কুর্নিশ করবে। ইন্টারভিউতে ডাক আসতে পারে; তবে যাওয়ার সময় পকেটে একটা চকলেট রাখবেন, যদি মাথা ঘুরে যায়! প্রেমে আজ ‘বিয়ে’ শব্দটা উচ্চারণ করবেন না, উল্টো দিক থেকে ব্লক খাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ পারসেন্ট। টাকা লেনদেনে আজ বাঘের মতো সতর্ক থাকুন, না হলে বিড়ালের মতো কাঁদতে হবে।

বৃষ

পেশায় পালোয়ান, নেশায় ঘুমকাতুরে। আজ শেয়ার বাজার আপনার দিকে হাসবে। কিন্তু সাবধানে, হাসা মানেই যে লাভ তা নয়, উপহাসও হতে পারে! রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল ভাঙবেন না। আজ পুলিশ আপনাকে ‘স্পেশাল গেস্ট’ বানাতে খুব আগ্রহী। পুরোনো অসুখ নিয়ে সুসংবাদ পাবেন; হয়তো জানবেন ওটা আসলে অসুখই ছিল না, আলসেমি ছিল! দুপুরের পর কাজে গতি আসবে, তবে বিরিয়ানি খেলে সেই গতি আবার বিছানামুখী হবে।

মিথুন

সৃজনশীলতা ফেটে বেরোচ্ছে, কিন্তু কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। আজ কাউকে ধার দেবেন না। ধার দেওয়া মানেই সেই বন্ধুকে চিরতরে হারিয়ে ফেলা। অফিসে আজ খুব মন দিয়ে কাজ করুন, বসের নজর আজ সিসিটিভির চেয়েও ধারালো। প্রেমে আজ কোনো আত্মীয়র কারণে অশান্তি হতে পারে। আত্মীয়দের থেকে দূরে থাকুন, শান্তিতে থাকুন। সৃজনশীল হোন, কিন্তু রান্নায় বেশি এক্সপেরিমেন্ট করতে যাবেন না।

কর্কট

আজ আপনি একটু বেশিই সেন্টিমেন্টাল। আজ চোখে জল আর নাকে সর্দি—দুটিই সমানতালে আসতে পারে। ব্যবসা শুরুর জন্য দিনটা ভালো, কিন্তু পার্টনার হিসেবে নিজের ছায়াকেও বিশ্বাস করবেন না। বিচক্ষণতা বজায় রাখুন, না হলে লোকজন আপনাকে ইমোশনাল ফুল বানিয়ে চলে যাবে। আজ ফেসবুকে দুঃখের পোস্ট দেবেন না। কেউ এসে সান্ত্বনা নয়, হা হা রিঅ্যাক্ট দিয়ে যাবে।

সিংহ

সকালে রাজা, সন্ধ্যায় ভিখারি (মানসিকভাবে)। সকালের দিকে সব জরুরি কাজ সেরে নিন। কারণ, সূর্য ডুবলে আপনার মেজাজও ডুববে। স্ত্রীর সঙ্গে তর্কে জেতার চেষ্টা করা মানে হলো আগ্নেয়গিরিতে ঝাঁপ দেওয়া। আজ আত্মবিশ্বাসের অভাবে কাজে একটু ব্যাঘাত ঘটতে পারে, তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দশবার বলুন, ‘আই অ্যাম দ্য বস!’ মায়ের শরীর ভালো থাকবে, তাই আজ একবেলা রান্না থেকে ছুটি পেতে পারেন।

কন্যা

নিখুঁত হতে গিয়ে জেরবার। বন্ধুদের সঙ্গে ট্যুর প্ল্যান ক্যানসেল হতে পারে। কারণ, সেই এক—আপনার খুঁতখুঁতে স্বভাব! পরীক্ষার ফল ভালো হবে, তবে তার আগে হার্টবিট কন্ট্রোল করুন। সম্পর্কের ক্ষেত্রে আজ একটু নমনীয় হোন, রোবটের মতো লজিক খুঁজলে একা থাকতে হবে। আজ পুরোনো কোনো বন্ধুর ফোন আসতে পারে, সম্ভবত সে টাকা ধার চাইবে।

তুলা

অর্থ আসছে, কিন্তু যাচ্ছে রকেটের গতিতে। আজ আপনার অর্থভাগ্য খুব ভালো, কিন্তু সমস্যা হলো খরচের হাতটা অক্টোপাসের মতো। স্ত্রী আপনার মনের কথা বুঝবে, কিন্তু আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিলটা বুঝবে কি? সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তা ছাড়ুন, ওরা আপনার চেয়ে বেশি স্মার্ট। বিদেশের কারও সঙ্গে কথা হতে পারে, তবে সেটা স্ক্যাম কল কি না যাচাই করে নিন।

বৃশ্চিক

রহস্যময় হাসি আর পকেটভর্তি টাকা। ব্যবসায় আজ লক্ষ্মীলাভের যোগ আছে। বন্ধুদের আজ ডিনার খাওয়াতে হতে পারে, তাই পালানোর রাস্তা আগে থেকে ঠিক করে রাখুন। আধ্যাত্মিক চিন্তায় মনে শান্তি মিলবে, তবে সেটা যেন শুধু মশারির ভেতরেই সীমাবদ্ধ না থাকে। শেয়ার বাজারে আজ একটু ঝুঁকি নিতেই পারেন, তবে হারলে আমাকে দোষ দেবেন না!

ধনু

কঠোর পরিশ্রম, কিন্তু রেজাল্ট তথৈবচ। বকেয়া টাকা পাওয়ার যোগ আছে, তবে সেটা আদায় করতে গিয়ে গলা শুকিয়ে যাবে। প্রেমে আজ সত্যবাদী থাকুন, একটা মিথ্যা ধরা পড়লে কপালে শনির দশা নিশ্চিত। রূপচর্চার জন্য আজ বেশ কিছু টাকা গচ্চা যেতে পারে, কিন্তু তাতে মুখ কতটা চকচক করবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সন্ধ্যার পর হুট করে মন খারাপ হতে পারে; এক কাপ কড়া চা খান।

মকর

কাজের নেশায় বুঁদ, শরীর বলছে ‘আর না’। আজ আপনার পরিশ্রম দেখে পিঁপড়ারা লজ্জা পাবে। পরিবারে আপনার মতামতের দাম বাড়বে, তবে সেটা শুধু মেনু ঠিক করার ক্ষেত্রেই হতে পারে। তীর্থযাত্রার সুযোগ আসতে পারে, অন্তত পাড়ার মোড়ের মন্দির পর্যন্ত তো বটেই। বেশি ইমোশনাল হবেন না, বিশেষ করে অফিসের গ্রুপ চ্যাটে।

কুম্ভ

মনের ভেতর হাজার প্রশ্ন, উত্তর নেই একটাও। চাকরি বদলানোর চিন্তা আজ মাথায় ঘুরবে, কিন্তু ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে তাকালে সেই চিন্তা কর্পূরের মতো উবে যাবে। বন্ধুদের অবহেলা করবেন না, ওরাই বিপদের সময় চপ-মুড়ি নিয়ে হাজির হবে। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন, তাতে ভাগ্য না ফিরলেও শরীর ঠিক থাকবে। কোনো চুক্তিতে সই করার আগে অন্তত তিনবার বানানগুলো চেক করুন।

মীন

স্বপ্নের ঘোরে দিন কাটে, বাস্তবে শুধু ধাক্কা। পরিবারের কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আজ কনফিউজড হয়ে যাবেন। আজ আপনার মিষ্টি কথায় কাজ হাসিল হবে, এমনকি আজরাইলকেও বোধহয় কফি খাইয়ে ফেরত পাঠাতে পারবেন। ব্যবসায়িক কাজে বন্ধুদের পূর্ণ সহযোগিতা পাবেন। আজ আপনার মেধা চমকাবে, তবে সেটা যেন শুধু ফেসবুক কুইজেই শেষ না হয়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত