শাকেরা তাসনীম ইরা, ঢাকা
অন্যতম পর্যটকপ্রিয় দেশ থাইল্যান্ড। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ ছুটি কাটাতে ছোটে সে দেশে। আর সে দেশেরই এক নারী যদি পড়ে যান বাংলাদেশের প্রেমে, তাহলে গল্পটা না শুনলে ঠিক ভাত হজম হবে না। শুরুতে আমিও যে অবাক হইনি, তা নয়। সে বিস্ময়ের ভার কাটাতেই তাঁর খোঁজে নেমে গেলাম মাসুদ রানার মতো। থাইল্যান্ডের চাচৌংসা প্রদেশের অধিবাসী সেই বিদেশিনীকে পেয়ে গেলাম ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। সেখানে বন্ধুর বাসায় ছিলেন তিনি। দেখা হলো সেখানেই। তবে খুব বেশি সময় পাওয়া গেল না। কারণ পরদিনই তাঁর ফিরতি ফ্লাইট।
বাসায় ঢুকেই যে বিদেশিনীর দেখা পাওয়া গেল, তা নয়। সৌজন্য বিনিময় হলো তাঁর বন্ধুর সঙ্গে। বিদেশিনীর জন্য অপেক্ষা করতে হলো আরও কিছুটা সময়। তিনি আসার আগ পর্যন্ত কথা হচ্ছিল তাঁর বন্ধুর সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, বাংলা বোঝেন না ওই নারী, ইংরেজিটাও কোনোভাবে চালিয়ে নিতে হবে। শুনেই যেন গলাটা একটু শুকিয়ে গেল আমার। শুকনো গলা ভেজাতে টেবিলে নাশতার প্লেটে সাজিয়ে রাখা তরমুজ থেকে এক পিস তুলে মুখে পুরতেই, লাল টুকটুকে শাড়ি পরে সামনে এসে দাঁড়ালেন তিনি। ইংরেজিতে অভিবাদন জানাতেই আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন, ‘আমি সাইফুন।’ তারপর শুরু হলো আলাপ। তবে বাংলা ভাষার কথোপকথন ওই ‘আমি সাইফুন’ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রইল। আড্ডা চলল ইংরেজি ভাষায়।
বন্ধুর আমন্ত্রণ
সাইফুন বাংলাদেশের খোঁজ পেয়েছেন তাঁর এ দেশীয় বন্ধুর কাছে। এক বছরে তিনি তৃতীয় দফায় বাংলাদেশে এসেছেন। প্রথমবার বাঙালি বন্ধুর নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে এসেই প্রেমে পড়ে যান বাংলাদেশের। এ দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ—সবকিছুতেই অভিভূত তিনি। জানতে চেয়েছিলাম, বন্ধুর আবদার রাখতেই কি এতবার আসা? প্রশ্ন শুনে সলজ্জ হাসি হাসলেন সাইফুন। তারপর বলেন, মূলত তিনি ঘুরতে পছন্দ করেন। মাত্র সাত দিন সময় নিয়ে এসেছিলেন বলে প্রথমবার খুব একটা ঘোরাঘুরি করা সম্ভব হয়নি। তাই দ্বিতীয়বার এসেছিলেন এক মাসের জন্য। তাতেও সাধ মেটেনি বলে সময় পেয়ে আবারও চলে এসেছেন বাংলাদেশে।
২০ জেলায় ভ্রমণ
রাতারগুল, জাফলং, টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বাংলাদেশের প্রায় ২০টি জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছেন সাইফুন। এর মধ্যে ভালো লেগেছে কক্সবাজার আর রাজশাহী। কক্সবাজারের পাঁচটি কুকুর তাঁর বন্ধু হয়ে গেছে। সাইফুন তাদের নাম দিয়েছেন ‘বডি গার্ডস’। এরা প্রতিদিন প্রায় তিন কিলোমিটার জগিং করত তাঁর সঙ্গে।
পরিচ্ছন্নতাপ্রিয় সাইফুনের বাংলাদেশের প্রিয় ঝকঝকে, তকতকে শহর রাজশাহী। থাইল্যান্ড ফিরে তিনি তাঁর বন্ধুদের বলবেন বাংলাদেশে ঘুরতে এলে যেন অবশ্যই একবার রাজশাহী ঘুরে যান।
রসনার গল্প
সাইফুনের সঙ্গে আলাপ হলো বাংলাদেশের খাবার নিয়ে। যে কদিন তিনি বাংলাদেশে ছিলেন, খেয়েছেন বাঙালি খাবারই। বারবার বলছিলেন, গরম ভাতের সঙ্গে গরুর মাংস ভুনার স্বাদ নাকি জিবেয় করে নিয়ে যাচ্ছেন থাইল্যান্ড। খাবারের আলাপের মধ্যেই বন্ধু তাঁকে মনে করিয়ে দিলেন ফ্রোজেন পরোটা কিনে নিয়ে যাওয়ার কথা। তিনি হেসে বললেন, পরোটা দিয়ে গরুর মাংস রেঁধে খেতে চান থাইল্যান্ডে বসে। তাই এত আয়োজন। তবে এরপর এলে অবশ্যই তিনি খেতে চান পুরান ঢাকার কাচ্চি।
অনুভূতি ভালো
বাংলাদেশে সাইফুনের অভিজ্ঞতা কেমন—জানতে চেয়েছিলাম দুরু দুরু বুকে। ছোট করে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘ভালো।’ ভেবেছিলাম, একটা অপরিচিত জায়গায় কত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনারই তো শিকার হতে পারে যে কেউ, হয়তো ভদ্রতা করেই বলছেন না। সেই সব দুশ্চিন্তায় পানি ঢেলে দিয়ে সাইফুন বলেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে বাংলাদেশে খারাপ কিছু ঘটেনি। এর চেয়ে ভালো তো আর কিছু হতে পারে না,
তাই না?’ নিজের অজান্তেই একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।
থাইল্যান্ডের চাচৌংসা প্রদেশের মানুষ সাইফুন ব্যক্তিজীবনে দুই সন্তানের মা। একাই বড় করেছেন তাদের। তিনি চান পরের বার তাঁর দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এ দেশে আসতে। বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্য তাদের ঘুরিয়ে দেখানোর আশা নিয়েই এবারের মতো নিজের দেশে ফিরে গেছেন এই বিদেশিনী।
অন্যতম পর্যটকপ্রিয় দেশ থাইল্যান্ড। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ ছুটি কাটাতে ছোটে সে দেশে। আর সে দেশেরই এক নারী যদি পড়ে যান বাংলাদেশের প্রেমে, তাহলে গল্পটা না শুনলে ঠিক ভাত হজম হবে না। শুরুতে আমিও যে অবাক হইনি, তা নয়। সে বিস্ময়ের ভার কাটাতেই তাঁর খোঁজে নেমে গেলাম মাসুদ রানার মতো। থাইল্যান্ডের চাচৌংসা প্রদেশের অধিবাসী সেই বিদেশিনীকে পেয়ে গেলাম ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। সেখানে বন্ধুর বাসায় ছিলেন তিনি। দেখা হলো সেখানেই। তবে খুব বেশি সময় পাওয়া গেল না। কারণ পরদিনই তাঁর ফিরতি ফ্লাইট।
বাসায় ঢুকেই যে বিদেশিনীর দেখা পাওয়া গেল, তা নয়। সৌজন্য বিনিময় হলো তাঁর বন্ধুর সঙ্গে। বিদেশিনীর জন্য অপেক্ষা করতে হলো আরও কিছুটা সময়। তিনি আসার আগ পর্যন্ত কথা হচ্ছিল তাঁর বন্ধুর সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, বাংলা বোঝেন না ওই নারী, ইংরেজিটাও কোনোভাবে চালিয়ে নিতে হবে। শুনেই যেন গলাটা একটু শুকিয়ে গেল আমার। শুকনো গলা ভেজাতে টেবিলে নাশতার প্লেটে সাজিয়ে রাখা তরমুজ থেকে এক পিস তুলে মুখে পুরতেই, লাল টুকটুকে শাড়ি পরে সামনে এসে দাঁড়ালেন তিনি। ইংরেজিতে অভিবাদন জানাতেই আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন, ‘আমি সাইফুন।’ তারপর শুরু হলো আলাপ। তবে বাংলা ভাষার কথোপকথন ওই ‘আমি সাইফুন’ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রইল। আড্ডা চলল ইংরেজি ভাষায়।
বন্ধুর আমন্ত্রণ
সাইফুন বাংলাদেশের খোঁজ পেয়েছেন তাঁর এ দেশীয় বন্ধুর কাছে। এক বছরে তিনি তৃতীয় দফায় বাংলাদেশে এসেছেন। প্রথমবার বাঙালি বন্ধুর নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে এসেই প্রেমে পড়ে যান বাংলাদেশের। এ দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ—সবকিছুতেই অভিভূত তিনি। জানতে চেয়েছিলাম, বন্ধুর আবদার রাখতেই কি এতবার আসা? প্রশ্ন শুনে সলজ্জ হাসি হাসলেন সাইফুন। তারপর বলেন, মূলত তিনি ঘুরতে পছন্দ করেন। মাত্র সাত দিন সময় নিয়ে এসেছিলেন বলে প্রথমবার খুব একটা ঘোরাঘুরি করা সম্ভব হয়নি। তাই দ্বিতীয়বার এসেছিলেন এক মাসের জন্য। তাতেও সাধ মেটেনি বলে সময় পেয়ে আবারও চলে এসেছেন বাংলাদেশে।
২০ জেলায় ভ্রমণ
রাতারগুল, জাফলং, টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বাংলাদেশের প্রায় ২০টি জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছেন সাইফুন। এর মধ্যে ভালো লেগেছে কক্সবাজার আর রাজশাহী। কক্সবাজারের পাঁচটি কুকুর তাঁর বন্ধু হয়ে গেছে। সাইফুন তাদের নাম দিয়েছেন ‘বডি গার্ডস’। এরা প্রতিদিন প্রায় তিন কিলোমিটার জগিং করত তাঁর সঙ্গে।
পরিচ্ছন্নতাপ্রিয় সাইফুনের বাংলাদেশের প্রিয় ঝকঝকে, তকতকে শহর রাজশাহী। থাইল্যান্ড ফিরে তিনি তাঁর বন্ধুদের বলবেন বাংলাদেশে ঘুরতে এলে যেন অবশ্যই একবার রাজশাহী ঘুরে যান।
রসনার গল্প
সাইফুনের সঙ্গে আলাপ হলো বাংলাদেশের খাবার নিয়ে। যে কদিন তিনি বাংলাদেশে ছিলেন, খেয়েছেন বাঙালি খাবারই। বারবার বলছিলেন, গরম ভাতের সঙ্গে গরুর মাংস ভুনার স্বাদ নাকি জিবেয় করে নিয়ে যাচ্ছেন থাইল্যান্ড। খাবারের আলাপের মধ্যেই বন্ধু তাঁকে মনে করিয়ে দিলেন ফ্রোজেন পরোটা কিনে নিয়ে যাওয়ার কথা। তিনি হেসে বললেন, পরোটা দিয়ে গরুর মাংস রেঁধে খেতে চান থাইল্যান্ডে বসে। তাই এত আয়োজন। তবে এরপর এলে অবশ্যই তিনি খেতে চান পুরান ঢাকার কাচ্চি।
অনুভূতি ভালো
বাংলাদেশে সাইফুনের অভিজ্ঞতা কেমন—জানতে চেয়েছিলাম দুরু দুরু বুকে। ছোট করে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘ভালো।’ ভেবেছিলাম, একটা অপরিচিত জায়গায় কত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনারই তো শিকার হতে পারে যে কেউ, হয়তো ভদ্রতা করেই বলছেন না। সেই সব দুশ্চিন্তায় পানি ঢেলে দিয়ে সাইফুন বলেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে বাংলাদেশে খারাপ কিছু ঘটেনি। এর চেয়ে ভালো তো আর কিছু হতে পারে না,
তাই না?’ নিজের অজান্তেই একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।
থাইল্যান্ডের চাচৌংসা প্রদেশের মানুষ সাইফুন ব্যক্তিজীবনে দুই সন্তানের মা। একাই বড় করেছেন তাদের। তিনি চান পরের বার তাঁর দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এ দেশে আসতে। বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্য তাদের ঘুরিয়ে দেখানোর আশা নিয়েই এবারের মতো নিজের দেশে ফিরে গেছেন এই বিদেশিনী।
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে