আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
শিশিরভেজা ভোরে হলুদবরণ মাঠে দাঁড়ালেই মনে পড়বে জসীমউদ্দীনের এই কবিতা। সত্যি সত্যি সারা রাতের স্বপ্ন ‘মিঠেল রোদে’ হেসে উঠবে। তৈরি হবে স্মৃতি। মানুষ নাকি স্মৃতিই তৈরি করে সারা জীবন।
‘পৌষের কাছাকাছি রোদমাখা সেই দিন’ স্মৃতি হয়ে ফিরে আসুক আর না আসুক, প্রতিবছর পৌষ ফিরে ফিরে আসে একরাশ হলুদ নিয়ে। রোদের রং যতই সোনালি হোক না কেন, হলুদ তাকে ফিকে করে দেয়। ব্রাসিকা বা ক্রুসিফেরি গোত্রের সরিষা নামের উদ্ভিদটির গাঢ় সবুজ পাতাকে ম্লান করে দিয়ে রূপ ছড়াতে থাকে তারই ফুল। আর সেই ফুলের উজ্জ্বল রং আকর্ষণ করে পতঙ্গ ও মানুষ, উভয়কেই। কী অদ্ভুত প্রকৃতির খেয়াল!
কুয়াশার আড়মোড়া ভেঙে উঁকি দেয় শীতের সকাল। ঝলমলে রোদেরা খেলা করে দিগন্তবিস্তৃত সরিষার ফুলে। যত দূর দেখা যায় চোখে পড়ে কেবল হলুদ আর হলুদ। প্রকৃতির নির্মল বাতাসে ভেসে বেড়ায় সরিষা ফুলের মৃদু ঘ্রাণ। মধু আহরণে ছোটাছুটি করে মৌমাছি। নাগরিক কোলাহল দূরে রেখে এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করে মানুষ। আপনিও আসতে পারেন।
রাজধানীর কাছেই মানিকগঞ্জ। চাইলে সপরিবারে কিংবা আপনার প্রিয় মানুষটিকেও এই ভ্রমণে সঙ্গী করতে পারেন। চোখে সরষে ফুলের অপার সৌন্দর্য দেখার সঙ্গে বোনাস হিসেবে পাবেন শীতের সকালে খেজুরের রস, স্থানীয় মজাদার খাবারের স্বাদ, মধ্য দুপুরে ধলেশ্বরী কিংবা কালীগঙ্গা নদীতে সাঁতার আর বিরামহীন ছবি তোলার সুযোগ।
পৌষের রোদমাখা কোনো এক ছুটির দিনে চলে আসুন শহর ছেড়ে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধরে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড পেরিয়ে বানিয়াজুরী, মহাদেবপুর, ঘিওর, আরিচা এলাকায় হলুদ সমুদ্র দেখতে, কিংবা যেতে পারেন হেমায়েতপুর থেকে ধল্লা হয়ে মানিকনগর, চারিগ্রাম, সিংগাইর, বাইমাইল, বায়রা, ঝিটকা এলাকার হলুদবরণ দিগন্তবিস্তৃত ফসলের মাঠে। এখানে এসে শহুরে জীবনের ব্যস্ততা আর কোলাহলকে বিদায় দিন একটি দিনের জন্য হলেও।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ডের অদূরে বিশাল রাথুরা চকে এলে দেখতে পাবেন, ফুলে ফুলে মৌমাছি, প্রজাপতি ও ছোট পাখিদের ওড়াউড়ি। রংবেরঙের প্রজাপতি ডানা ঝাপটানো চিত্তে জাগাবে আনন্দ। পাশেই
ঘুম হতে আজ জেগেই দেখি শিশির-ঝরা ঘাসে,
সারা রাতের স্বপন আমার মিঠেল রোদে হাসে।
আমার সাথে করতো খেলা প্রভাত হাওয়া, ভাই,
সরষে ফুলের পাপড়ি নাড়ি ডাকছে মোরে তাই।
রাখাল ছেলে, জসীম উদ্দীন
কয়েকটি চায়ের টং-দোকান। সেখানে পাওয়া যাবে গাভির দুধের চা, মালাই ছাড়া কিংবা মালাইসহ। আর পাবেন মুখরোচক নানান খাবার। ফুলের সুগন্ধে আবেশে চোখ বুজে এলে ফিরে যেতে পারেন দুরন্ত শৈশবে। তবে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি একটুখানি খেয়াল করতেই হবে, ফসলের যেন ক্ষতি না হয়।
সরিষাখেতের জন্য মানিকগঞ্জের ঝিটকা খুবই পরিচিত নাম। কোলাহল থেকে একটু দূরে ঘিওরের নালী, বড়টিয়া, পয়লা এলাকা এবং দৌলতপুর উপজেলার ফসলের মাঠ নদীর তীরবর্তী আবাদি ভূমিতে সরিষা ফুলের মাখামাখি। কুয়াশায় ধূসর প্রান্তর, তা–ও চারদিকে হলুদের সমাহার। মনে হয় যেন রূপকথার রাজকুমারীর গায়েহলুদ। সরিষাখেতগুলোর অনেক জায়গায় মধুচাষিরা বসেন মধু সংগ্রহের জন্য।
সরিষাখেত শুধু দেখতে চাইলে দেখতেই পারেন। আবার চাইলে চাষিদের সঙ্গে জমিয়ে দিতে পারেন আড্ডা। তাতে মিলবে সরিষা সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান। তা হয়তো কখনো কাজে লাগবে না। কিন্তু অন্য কোনো শীতের সকাল বা অলস বিকেলে স্মৃতি আপনাকে জানান দেবে, সরষে দেখার সময় হলো!
প্রয়োজনীয় তথ্য
কাছে কিংবা দূরে, যেখানেই বেড়াতে যান না কেন সরিষার রাজ্যে ভ্রমণে যেতে নিজস্ব কিংবা ভাড়া করা কোনো গাড়ি নেওয়া উচিত। খরচ কমাতে কয়েকজন মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করে নিন। তাহলে ইচ্ছেমতো ভালো লাগা যেকোনো জায়গাতেই থেমে যেতে পারবেন।
সরিষাখেতে ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো সময় সকাল কিংবা বিকেল। তবে মনে রাখতে হবে, ফসলের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।
শিশিরভেজা ভোরে হলুদবরণ মাঠে দাঁড়ালেই মনে পড়বে জসীমউদ্দীনের এই কবিতা। সত্যি সত্যি সারা রাতের স্বপ্ন ‘মিঠেল রোদে’ হেসে উঠবে। তৈরি হবে স্মৃতি। মানুষ নাকি স্মৃতিই তৈরি করে সারা জীবন।
‘পৌষের কাছাকাছি রোদমাখা সেই দিন’ স্মৃতি হয়ে ফিরে আসুক আর না আসুক, প্রতিবছর পৌষ ফিরে ফিরে আসে একরাশ হলুদ নিয়ে। রোদের রং যতই সোনালি হোক না কেন, হলুদ তাকে ফিকে করে দেয়। ব্রাসিকা বা ক্রুসিফেরি গোত্রের সরিষা নামের উদ্ভিদটির গাঢ় সবুজ পাতাকে ম্লান করে দিয়ে রূপ ছড়াতে থাকে তারই ফুল। আর সেই ফুলের উজ্জ্বল রং আকর্ষণ করে পতঙ্গ ও মানুষ, উভয়কেই। কী অদ্ভুত প্রকৃতির খেয়াল!
কুয়াশার আড়মোড়া ভেঙে উঁকি দেয় শীতের সকাল। ঝলমলে রোদেরা খেলা করে দিগন্তবিস্তৃত সরিষার ফুলে। যত দূর দেখা যায় চোখে পড়ে কেবল হলুদ আর হলুদ। প্রকৃতির নির্মল বাতাসে ভেসে বেড়ায় সরিষা ফুলের মৃদু ঘ্রাণ। মধু আহরণে ছোটাছুটি করে মৌমাছি। নাগরিক কোলাহল দূরে রেখে এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করে মানুষ। আপনিও আসতে পারেন।
রাজধানীর কাছেই মানিকগঞ্জ। চাইলে সপরিবারে কিংবা আপনার প্রিয় মানুষটিকেও এই ভ্রমণে সঙ্গী করতে পারেন। চোখে সরষে ফুলের অপার সৌন্দর্য দেখার সঙ্গে বোনাস হিসেবে পাবেন শীতের সকালে খেজুরের রস, স্থানীয় মজাদার খাবারের স্বাদ, মধ্য দুপুরে ধলেশ্বরী কিংবা কালীগঙ্গা নদীতে সাঁতার আর বিরামহীন ছবি তোলার সুযোগ।
পৌষের রোদমাখা কোনো এক ছুটির দিনে চলে আসুন শহর ছেড়ে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধরে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড পেরিয়ে বানিয়াজুরী, মহাদেবপুর, ঘিওর, আরিচা এলাকায় হলুদ সমুদ্র দেখতে, কিংবা যেতে পারেন হেমায়েতপুর থেকে ধল্লা হয়ে মানিকনগর, চারিগ্রাম, সিংগাইর, বাইমাইল, বায়রা, ঝিটকা এলাকার হলুদবরণ দিগন্তবিস্তৃত ফসলের মাঠে। এখানে এসে শহুরে জীবনের ব্যস্ততা আর কোলাহলকে বিদায় দিন একটি দিনের জন্য হলেও।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ডের অদূরে বিশাল রাথুরা চকে এলে দেখতে পাবেন, ফুলে ফুলে মৌমাছি, প্রজাপতি ও ছোট পাখিদের ওড়াউড়ি। রংবেরঙের প্রজাপতি ডানা ঝাপটানো চিত্তে জাগাবে আনন্দ। পাশেই
ঘুম হতে আজ জেগেই দেখি শিশির-ঝরা ঘাসে,
সারা রাতের স্বপন আমার মিঠেল রোদে হাসে।
আমার সাথে করতো খেলা প্রভাত হাওয়া, ভাই,
সরষে ফুলের পাপড়ি নাড়ি ডাকছে মোরে তাই।
রাখাল ছেলে, জসীম উদ্দীন
কয়েকটি চায়ের টং-দোকান। সেখানে পাওয়া যাবে গাভির দুধের চা, মালাই ছাড়া কিংবা মালাইসহ। আর পাবেন মুখরোচক নানান খাবার। ফুলের সুগন্ধে আবেশে চোখ বুজে এলে ফিরে যেতে পারেন দুরন্ত শৈশবে। তবে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি একটুখানি খেয়াল করতেই হবে, ফসলের যেন ক্ষতি না হয়।
সরিষাখেতের জন্য মানিকগঞ্জের ঝিটকা খুবই পরিচিত নাম। কোলাহল থেকে একটু দূরে ঘিওরের নালী, বড়টিয়া, পয়লা এলাকা এবং দৌলতপুর উপজেলার ফসলের মাঠ নদীর তীরবর্তী আবাদি ভূমিতে সরিষা ফুলের মাখামাখি। কুয়াশায় ধূসর প্রান্তর, তা–ও চারদিকে হলুদের সমাহার। মনে হয় যেন রূপকথার রাজকুমারীর গায়েহলুদ। সরিষাখেতগুলোর অনেক জায়গায় মধুচাষিরা বসেন মধু সংগ্রহের জন্য।
সরিষাখেত শুধু দেখতে চাইলে দেখতেই পারেন। আবার চাইলে চাষিদের সঙ্গে জমিয়ে দিতে পারেন আড্ডা। তাতে মিলবে সরিষা সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান। তা হয়তো কখনো কাজে লাগবে না। কিন্তু অন্য কোনো শীতের সকাল বা অলস বিকেলে স্মৃতি আপনাকে জানান দেবে, সরষে দেখার সময় হলো!
প্রয়োজনীয় তথ্য
কাছে কিংবা দূরে, যেখানেই বেড়াতে যান না কেন সরিষার রাজ্যে ভ্রমণে যেতে নিজস্ব কিংবা ভাড়া করা কোনো গাড়ি নেওয়া উচিত। খরচ কমাতে কয়েকজন মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করে নিন। তাহলে ইচ্ছেমতো ভালো লাগা যেকোনো জায়গাতেই থেমে যেতে পারবেন।
সরিষাখেতে ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো সময় সকাল কিংবা বিকেল। তবে মনে রাখতে হবে, ফসলের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে