উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাসই মুক্ত ছিল নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানার গাগলাজুর ইউনিয়ন। সিলেট-ভৈরব নৌপথসংলগ্ন এলাকাটিতে প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা আসার আগেই পাকিস্তানি সেনারা হানা দিতে চেষ্টা করেছিল। তবে সেই চেষ্টা বিফল হয়ে যায় গোলাম রব্বানী চৌধুরীর নেতৃত্বে এলাকাবাসীর প্রতিরোধে।
রব্বানী চৌধুরীসহ কয়েকজন পরে ভারতে চলে গেলেও এলাকা মুক্ত রাখার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন চাঁদপুর গ্রামের আবদুল খালেক তালুকদার, জানু মিয়া ও মান্দারবাড়ি গ্রামের লাট মিয়ার নেতৃত্বে একদল যুবক। মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার কারণে আবদুল খালেক তালুকদারকে গাগলাজুর এলাকায় নিজের প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছিলেন সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন হামিদ।
হৃদ্রোগসহ নানা জটিল রোগে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বছরখানেক চিকিৎসাধীন থাকার পর আবদুল খালেক তালুকদার ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মারা যান। এর আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এসব কারণে আবদুল খালেক মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য সময়মতো আবেদন করতে পারেননি। পরে ২০১৫ সাল থেকে তাঁর পরিবার দফায় দফায় আবেদন করেও শুনানিতে অংশ নেওয়ারই সুযোগ পায়নি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী প্রতিবারই আবেদনের ওপর ‘মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্তি অনলাইনে আবেদন না করে থাকলে কিছুই করণীয় নেই’ লেখাসংবলিত সিল মেরে দেন। যদিও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) মহাপরিচালক আবেদন গ্রহণ করেছিলেন। সেই আবেদনের অনুলিপিসহ অন্যান্য প্রমাণপত্র নিয়ে উপজেলায় গণশুনানিতে হাজির হলে কমিটি তা আলাদাভাবে জামুকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়। কিন্তু ইউএনও আরও কিছু আবেদনের সঙ্গে সেটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণ মানুষের আবেদন গৃহীত না হলেও মন্ত্রী-এমপি-মেয়রসহ প্রভাবশালী কেউ কেউ জামুকার বিশেষ কমিটির সুপারিশে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির সুযোগ পাচ্ছেন। অথচ তাঁরা সময়মতো অনলাইনে বা সরাসরি আবেদন করেননি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ব্যক্তিগত শুনানির মাধ্যমে সেসব আবেদন বিশেষ কমিটিতে পাঠান। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন বলেও অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জামুকার দলিল দেখে বলতে হবে। এ ধরনের কোনো ঘটনা আছে বলে আমার মনে পড়ছে না।’
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য জামুকা ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে ও সরাসরি আবেদন গ্রহণ করে। এরপর সাধারণ মানুষের জন্য সেই সুযোগ বন্ধ হলেও মন্ত্রী-এমপিদের সুপারিশে প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম এখনো তালিকায় উঠছে।
এ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রয়াত আবদুল খালেক তালুকদারের ছেলে হাফিজুর রহমান চয়ন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাবা অসুস্থ থাকায় নির্ধারিত সময়ে আমরা আবেদন করতে পারিনি। সব প্রমাণসহ আবেদন দিলেও তা বিবেচনা করেননি মন্ত্রী। অথচ এখনো অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি একই প্রক্রিয়ায় আবেদন করে তালিকাভুক্ত হচ্ছেন। তাহলে কি সাধারণের জন্য এক নিয়ম আর প্রভাবশালীদের জন্য অন্য নিয়ম?’
জামুকার সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রীসহ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখাতে আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও তাঁর ভাই জ্যাঁ-নেসার ওসমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সদ্য প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেন, বরিশালের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, গাইবান্ধা-৪ আসনের এমপি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, ঢাকা-১১ আসনের এমপি এ কে এম রহমতুল্লাহ, সাবেক সচিব খাজা মিয়ার বাবা প্রয়াত সোহরাব হোসেন, জামালপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
জামুকা সূত্রে জানা গেছে, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলীর আবেদন নাকচ হলেও বেশির ভাগ আবেদন প্রক্রিয়া শেষে গেজেট জারি হয়েছে। শ ম রেজাউল করিম ও ফারুক খানের নামে গেজেট জারির পর সমালোচনার মুখে তা আবারও যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সূত্রমতে, ইয়াফেস ওসমানের আবেদনে সুপারিশ করেন সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম। জাঁ-নেসার ওসমানের আবেদনে সুপারিশ করেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সৈয়দ আবুল হোসেনের আবেদনে সুপারিশ করেন জামুকার সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। মোহাম্মদ আলীর আবেদনে সুপারিশ করেন তাঁরই স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি তহুরা আলী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামুকার মহাপরিচালক ড. মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবরের পর স্থানীয় এমপি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সুপারিশ নিয়ে কেউ জামুকার চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি তা জামুকার সদস্য শাজাহান খানের নেতৃত্বে বিশেষ কমিটিতে পাঠান। তাদের সুপারিশ পাওয়া সাপেক্ষে আবেদন জামুকার সভায় উপস্থাপন করা হয়। জামুকার সম্মতি মিললেই শুধু গেজেটের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।’
জানা গেছে, বিভিন্ন সরকারের আমলে পাঁচবার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা হয়েছে। ১৯৮৬ সালে প্রথম জাতীয় কমিটি ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৮ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশ করেছিল। ১৯৮৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের করা তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার ৮৯২। ১৯৯৪ সালে করা তৃতীয় তালিকায় ৮৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সালে মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল থেকে চতুর্থ তালিকায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫২ জনের নাম মুক্তিবার্তায় প্রকাশিত হয়। ২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের আমলে গেজেটে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৯।
২০১১ সালে ষষ্ঠ দফা তালিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। নানা প্রক্রিয়া শেষে এ পর্যন্ত সমন্বিত তালিকায় (চূড়ান্ত তালিকা) গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩৫। খেতাবপ্রাপ্ত, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আছেন ১০ হাজার ৯৯৬ জন। এ ছাড়া বীরাঙ্গনা, প্রবাসী সংগঠক, শব্দসৈনিক, বিভিন্ন বাহিনীর বেসামরিক ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪৭৩ জন বীরাঙ্গনা, ১৭ জন প্রবাসী সংগঠক, ২৯৬ জন শব্দসৈনিক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
জামুকার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০১৩-১৪ সালে প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার আবেদন জমা পড়ে। ৪০টি উপজেলার আবেদন এখনো যাচাই-বাছাই বাকি। ৩৬টি উপজেলার যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন পুনরায় যাচাই হচ্ছে। এসব প্রতিবেদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন শেষ হতে পারে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। তারাই জানে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কারা। তাদের বাদ দিয়ে আমলাদের দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়ন করা সম্ভব নয়। বছরের পর বছর ধরে শুধু তালিকাই হচ্ছে। এর শেষ কোথায় বুঝতে পারছি না।’
মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাসই মুক্ত ছিল নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানার গাগলাজুর ইউনিয়ন। সিলেট-ভৈরব নৌপথসংলগ্ন এলাকাটিতে প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা আসার আগেই পাকিস্তানি সেনারা হানা দিতে চেষ্টা করেছিল। তবে সেই চেষ্টা বিফল হয়ে যায় গোলাম রব্বানী চৌধুরীর নেতৃত্বে এলাকাবাসীর প্রতিরোধে।
রব্বানী চৌধুরীসহ কয়েকজন পরে ভারতে চলে গেলেও এলাকা মুক্ত রাখার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন চাঁদপুর গ্রামের আবদুল খালেক তালুকদার, জানু মিয়া ও মান্দারবাড়ি গ্রামের লাট মিয়ার নেতৃত্বে একদল যুবক। মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার কারণে আবদুল খালেক তালুকদারকে গাগলাজুর এলাকায় নিজের প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছিলেন সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন হামিদ।
হৃদ্রোগসহ নানা জটিল রোগে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বছরখানেক চিকিৎসাধীন থাকার পর আবদুল খালেক তালুকদার ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মারা যান। এর আগে তাঁর স্ত্রী মারা যান বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এসব কারণে আবদুল খালেক মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য সময়মতো আবেদন করতে পারেননি। পরে ২০১৫ সাল থেকে তাঁর পরিবার দফায় দফায় আবেদন করেও শুনানিতে অংশ নেওয়ারই সুযোগ পায়নি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী প্রতিবারই আবেদনের ওপর ‘মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্তি অনলাইনে আবেদন না করে থাকলে কিছুই করণীয় নেই’ লেখাসংবলিত সিল মেরে দেন। যদিও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) মহাপরিচালক আবেদন গ্রহণ করেছিলেন। সেই আবেদনের অনুলিপিসহ অন্যান্য প্রমাণপত্র নিয়ে উপজেলায় গণশুনানিতে হাজির হলে কমিটি তা আলাদাভাবে জামুকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়। কিন্তু ইউএনও আরও কিছু আবেদনের সঙ্গে সেটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণ মানুষের আবেদন গৃহীত না হলেও মন্ত্রী-এমপি-মেয়রসহ প্রভাবশালী কেউ কেউ জামুকার বিশেষ কমিটির সুপারিশে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির সুযোগ পাচ্ছেন। অথচ তাঁরা সময়মতো অনলাইনে বা সরাসরি আবেদন করেননি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ব্যক্তিগত শুনানির মাধ্যমে সেসব আবেদন বিশেষ কমিটিতে পাঠান। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন বলেও অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জামুকার দলিল দেখে বলতে হবে। এ ধরনের কোনো ঘটনা আছে বলে আমার মনে পড়ছে না।’
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য জামুকা ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে ও সরাসরি আবেদন গ্রহণ করে। এরপর সাধারণ মানুষের জন্য সেই সুযোগ বন্ধ হলেও মন্ত্রী-এমপিদের সুপারিশে প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম এখনো তালিকায় উঠছে।
এ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রয়াত আবদুল খালেক তালুকদারের ছেলে হাফিজুর রহমান চয়ন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাবা অসুস্থ থাকায় নির্ধারিত সময়ে আমরা আবেদন করতে পারিনি। সব প্রমাণসহ আবেদন দিলেও তা বিবেচনা করেননি মন্ত্রী। অথচ এখনো অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি একই প্রক্রিয়ায় আবেদন করে তালিকাভুক্ত হচ্ছেন। তাহলে কি সাধারণের জন্য এক নিয়ম আর প্রভাবশালীদের জন্য অন্য নিয়ম?’
জামুকার সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রীসহ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখাতে আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও তাঁর ভাই জ্যাঁ-নেসার ওসমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সদ্য প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেন, বরিশালের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, গাইবান্ধা-৪ আসনের এমপি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, ঢাকা-১১ আসনের এমপি এ কে এম রহমতুল্লাহ, সাবেক সচিব খাজা মিয়ার বাবা প্রয়াত সোহরাব হোসেন, জামালপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
জামুকা সূত্রে জানা গেছে, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলীর আবেদন নাকচ হলেও বেশির ভাগ আবেদন প্রক্রিয়া শেষে গেজেট জারি হয়েছে। শ ম রেজাউল করিম ও ফারুক খানের নামে গেজেট জারির পর সমালোচনার মুখে তা আবারও যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সূত্রমতে, ইয়াফেস ওসমানের আবেদনে সুপারিশ করেন সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম। জাঁ-নেসার ওসমানের আবেদনে সুপারিশ করেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সৈয়দ আবুল হোসেনের আবেদনে সুপারিশ করেন জামুকার সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। মোহাম্মদ আলীর আবেদনে সুপারিশ করেন তাঁরই স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি তহুরা আলী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামুকার মহাপরিচালক ড. মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবরের পর স্থানীয় এমপি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সুপারিশ নিয়ে কেউ জামুকার চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি তা জামুকার সদস্য শাজাহান খানের নেতৃত্বে বিশেষ কমিটিতে পাঠান। তাদের সুপারিশ পাওয়া সাপেক্ষে আবেদন জামুকার সভায় উপস্থাপন করা হয়। জামুকার সম্মতি মিললেই শুধু গেজেটের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।’
জানা গেছে, বিভিন্ন সরকারের আমলে পাঁচবার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা হয়েছে। ১৯৮৬ সালে প্রথম জাতীয় কমিটি ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৮ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশ করেছিল। ১৯৮৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের করা তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার ৮৯২। ১৯৯৪ সালে করা তৃতীয় তালিকায় ৮৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সালে মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল থেকে চতুর্থ তালিকায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫২ জনের নাম মুক্তিবার্তায় প্রকাশিত হয়। ২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের আমলে গেজেটে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৯।
২০১১ সালে ষষ্ঠ দফা তালিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। নানা প্রক্রিয়া শেষে এ পর্যন্ত সমন্বিত তালিকায় (চূড়ান্ত তালিকা) গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩৫। খেতাবপ্রাপ্ত, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আছেন ১০ হাজার ৯৯৬ জন। এ ছাড়া বীরাঙ্গনা, প্রবাসী সংগঠক, শব্দসৈনিক, বিভিন্ন বাহিনীর বেসামরিক ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪৭৩ জন বীরাঙ্গনা, ১৭ জন প্রবাসী সংগঠক, ২৯৬ জন শব্দসৈনিক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
জামুকার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০১৩-১৪ সালে প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার আবেদন জমা পড়ে। ৪০টি উপজেলার আবেদন এখনো যাচাই-বাছাই বাকি। ৩৬টি উপজেলার যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন পুনরায় যাচাই হচ্ছে। এসব প্রতিবেদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন শেষ হতে পারে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। তারাই জানে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কারা। তাদের বাদ দিয়ে আমলাদের দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়ন করা সম্ভব নয়। বছরের পর বছর ধরে শুধু তালিকাই হচ্ছে। এর শেষ কোথায় বুঝতে পারছি না।’
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁদের অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এবং আইওএমের কর্মকর্তারা। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান ফেরত আসা বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
২ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোট গ্রহণ, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন তাঁরা।
৩ ঘণ্টা আগেপরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন সময়ের দাবি। বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের চাওয়া দ্রুত নির্বাচন। এ অবস্থায় নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন দলগুলোর নেতারা। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়
৩ ঘণ্টা আগেনির্বাচন কমিশনে আড়াই মাসের শূন্যতা কাটল অবশেষে। গতকাল বৃহস্পতিবার অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
৪ ঘণ্টা আগে