শুধু ঢাকায় প্রয়োগ হবে ফাইজারের টিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২১, ১৭: ৫০

ঢাকা: দেশে চতুর্থ ভ্যাকসিন হিসেবে জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন পাওয়া ফাইজার-বায়োএনটেক টিকা কেবলমাত্র রাজধানী ঢাকায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঢাকার বাইরে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রার সংরক্ষণাগার না থাকা ও পরিবহন জটিলতার কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা টিকা নিতে নিবন্ধন করেও টিকা পাননি তারাই কেবল এই টিকা পাবেন। শিগগিরই এই টিকা প্রয়োগ শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, রাজধানীর যেসব কেন্দ্রে ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। যারা টিকা নিতে নিবন্ধন করেও টিকা পাননি তারাই কেবল এই টিকা পাবেন।

ডা. নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, গত মাসে সংক্রমণ মাত্রা কিছুটা কমলেও আবারও বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার আক্রান্তের হার ভয় বাড়াচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই সুস্থ হলেও প্রায় ১৩ হাজার মানুষকে আমরা হারিয়েছি।

তিনি বলেন, গত মাসের শেষের দিকে সংক্রমণ হার ৯ দশমিক ৮ শতাংশে ছিল, এরপরে ৪ জুনের পর সেটি আবারও ১০ শতাংশে দুই দিন গত মঙ্গলবার একবারে তা ১২ শতাংশে উঠে আসে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফাইজারের টিকা প্রয়োগের জন্য রাজধানীর চারটি কেন্দ্র নির্বাচন করা হয়েছে। কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সুরক্ষা অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধিত জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে এই টিকা।

প্রাথমিকভাবে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে দেওয়া টিকাদানের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। এর বাইরে আরও দু-একটি কেন্দ্র বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে কেন্দ্রগুলো প্রস্তাব করা হয়েছে, তার থেকে আরও কয়েকটি বাড়তে পারে। দু-একদিনের মধ্যে প্রয়োগ শুরু হতে পারে।’

ম্যাসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ) ভিত্তিক এই টিকা তাপ ও আলোর প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই, কোনোভাবেই এটি আলো ও তাপের সংস্পর্শে রাখা যাবে না। ফাইজারের এই টিকা দুই ডোজের। প্রথম ডোজ নেওয়ার ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে। প্রতি ডোজের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৩ এমএল।

গত ২৭ মে ফাইজারের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর তিন দিন পর ৩০ মে রাতে এক লাখ ৬০২ ডোজ টিকা নিয়ে এমিরটেস এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ঢাকায় পৌঁছে। পরে টিকাগুলো ইপিআইয়ের তত্ত্বাবধানে মহাখালীর হিমাগারে নেওয়া হয়।

ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। সেখানে আল্টা-লো ফ্রিজারে মাইনাস ৬০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা হয়েছে। তবে কেন্দ্রে নেওয়ার আগে আইএলআর রেফ্রিজারেটরে ৮ ঘণ্টা রেখে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখার উপযোগী করা হবে।
এ অবস্থায় টিকা সংরক্ষণ করা যাবে অন্তত পাঁচ দিন। তবে ভাইলুয়েন্ট নামের মিশ্রণ মিশিয়ে ছয় ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে। এই মিশ্রণও এসেছে বলে জানা গেছে।

দেশে এখন পর্যন্ত ফাইজারসহ অনুমোদন পেয়েছে পাঁচটি ভ্যাকসিন। বাকি চারটি হলো-ভারতের সেরাম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড, রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ও চীনের দুই টিকা সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাক।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত