Ajker Patrika

স্বাধীনতার পথে দেশকে নিয়ে যায় গণ-অভ্যুত্থান

শফি আহমেদ
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯: ৩৭
স্বাধীনতার পথে দেশকে নিয়ে যায় গণ-অভ্যুত্থান

মহান গণ-অভ্যুত্থান দিবস আজ। ১৯৬৯ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক ১১ দফার ভিত্তিতে রচিত হয় মহান গণ-অভ্যুত্থান। আত্মাহুতি দেন মতিউর ও রুস্তম। এর আগে ২০ জানুয়ারি ছাত্রদের মিছিলে গুলি হলে শহীদ হয়েছিলেন ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান। এই হত্যার প্রতিবাদেই ২৪ জানুয়ারি প্রদেশব্যাপী ডাকা হয়েছিল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। বস্তুত, এই মহান গণ-অভ্যুত্থানের বীজ রোপিত হয়েছিল ১৯৫২ সালের মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে।

২১ জানুয়ারি ঢাকায় ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম কমিটি’ ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি শোক ও হরতাল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। আসাদ হত্যার পরের তিন দিন সরকারের নিয়ন্ত্রণ বলে কিছু ছিল না। শহর থেকে সরকারি বাহিনী অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম কমিটির শোক ও হরতাল কর্মসূচির শেষ দিনে, অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি পুলিশ আবার বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর গুলি চালায়। এর ফলে পরিস্থিতি সরকারের এতই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে ‘লৌহমানব’ আইয়ুবশাহী তাঁর বাকি দুই মাস আয়ুষ্কালে আর কখনোই ১৪৪ ধারা জারি করতে পারেননি। 

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান নামক যে রাষ্ট্রটির গোড়াপত্তন হয়েছিল, তার প্রতি বাঙালির মোহমুক্তি ঘটে ১৯৪৮ সাল থেকেই। মহান ভাষা আন্দোলন বাঙালির জাতিসত্তাকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করে। 

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বাঙালির স্বার্থের পক্ষে আপসহীন যুক্তফ্রন্ট জয়ী হলেও সেই রায় মানা হয়নি। ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করেন। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে বিকশিত করার পক্ষে নিরলস প্রচেষ্টা চালানো হয়।

১৯৬২ ও ১৯৬৪ সালের শিক্ষা আন্দোলন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ করে। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণা করেন। ছয় দফা দাবির ভিত্তিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ দেশব্যাপী প্রচার চালায় ও একে জনপ্রিয় করে তোলে।

নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শফি আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ প্রমাণ করেছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও বাঙালি জাতি কত অসহায়। ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধুসহ অন্য নেতৃবৃন্দের নামে আইয়ুবশাহী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর মুক্তি ও ছয় দফাকে সামনে নিয়ে নিরন্তর আন্দোলনের সূচনা করে। পাশাপাশি মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর অনুসারীরা এবং পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও বিভিন্ন দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন অব্যাহত রাখে।

১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি মতিউর রহমানের আত্মদানের মধ্য দিয়ে গোটা পূর্ব পাকিস্তান অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। জনগণ রাজপথে নেমে আসে। এর পেছনে ছিল ছাত্রলীগ এবং এ দেশের ছাত্রসমাজ। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আইয়ুবশাহী ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এ দেশের ছাত্রসমাজ স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সুনির্দিষ্টভাবে কর্মপন্থা গ্রহণ করেছিল। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান দেশকে নিয়ে যায় স্বাধীনতার পথে এবং ছাত্রসমাজ থাকে এই আন্দোলনের সামনের সারিতে। 

১৯৬৯ সালের জানুয়ারিতে শেখ মুজিবুর রহমান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ১ নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে ফাঁসির আদেশের ঝুঁকির মুখে। তাঁকে মুক্ত করে আনে ছাত্র-জনতা। মুক্ত বিজয়ী বীর শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে ছাত্রসমাজ, ডাকসু ও ছাত্রলীগ ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পশ্চিমাদের ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহা বাঙালিকে এক দফা আন্দোলনের পথে নিয়ে যায়। সাড়ে ৭ কোটি মানুষের তখন একজনই নেতা—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অবশেষে নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসে আমাদের এই স্বাধীনতা। 

আসাদের শার্ট লাঠির মাথায় বেঁধে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক মিছিলের প্রেক্ষাপটে কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন তাঁর বিখ্যাত স্বাক্ষরফলক কবিতা—‘আসাদের শার্ট’। আসাদ-হত্যার প্রতিক্রিয়ায় তিনি আরও একটি অমর কবিতা লিখেছিলেন—‘এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়?’ হেলাল হাফিজ লিখেছিলেন তাঁর অন্যতম বা সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ (এখন যৌবন যার মিছিলে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়) কবিতাটি। 

আসাদ-হত্যাই আমাদের দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সামাজিক-রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ একক হত্যাকাণ্ড। এক অতি স্বল্প পরিচিত ছাত্রনেতার হত্যাজনিত স্ফুলিঙ্গ গণ-অভ্যুত্থানের দাবানল সৃষ্টি করেছিল যা আইয়ুবের পরিণতি অমোচনীয় ভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছিল। 

শুধু ক্ষমতাচ্যুতিই নয়, আসাদ হত্যাকাণ্ড নিমেষে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আইয়ুব খানের সমস্ত নাম-নিশানা, স্থাপনাও নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল।

সারা বিশ্ব আজ এক সংকট মোকাবিলা করছে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। প্রতিদিন নতুন নতুন অনিশ্চয়তা নিয়ে উঠছে ভোরের সূর্য। এমন পরিস্থিতিতে অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা। প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের বাজার মূল্য। ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক মাঠ। 

আগামী দিনগুলোর পথচলায় পাথেয় হোক নব্বইয়ের আন্দোলনের মূল চেতনা অসাম্প্রদায়িক, শোষণ-বৈষম্যমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের চেতনা। যে চেতনায় আত্মাহুতি দিয়ে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, হয়েছিল একাত্তরের সশস্ত্র সংগ্রাম। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। 

আসুন আমরা বাংলাদেশে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করি যাতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ করা যায়। আজকের এই দিনে মানুষের সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক মানবাধিকার ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই হোক গণ-অভ্যুত্থান দিবসের অঙ্গীকার। 

লেখক: নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনাসহ দণ্ডিতদের বক্তব্য প্রচার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার

৭ কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত, অধ্যাদেশ চূড়ান্তের অপেক্ষা

২০ জন শ্রমিকেই করা যাবে ট্রেড ইউনিয়ন, গেজেট জারি

হঠাৎ বেশ কটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইট ডাউন, যা জানা গেল

এনবিআর সদস্য বদিউল আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাজা পরোয়ানা মূলে হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে নোটিশ জারির আবেদন করা হবে: প্রসিকিউটর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গাজী এম এইচ তামিম। ছবি: সংগৃহীত
গাজী এম এইচ তামিম। ছবি: সংগৃহীত

সাজা পরোয়ানা মূলে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে নোটিশ জারির জন্য আবেদনের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এটা ইন্টারপোলে যাবে।

গাজী তামিম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করলে আপিলের সুযোগ থাকবে না। যদি তাঁরা ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করেন, তাহলে তাঁরা গ্রেপ্তার হলে রায় কার্যকর হবে। যেসব আইনে আপিলের সময়সীমা বর্ণনা করা নেই, সেসব আইনের আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ হয় তামাদি আইন অনুযায়ী। তামাদি আইন অনুযায়ী আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ হলে সময় পার হলেও বিলম্ব মার্জনার সুযোগ আছে। কিন্তু বিশেষ আইনগুলোতে যেখানে তামাদির সময় বলা আছে, ওই সময় পার হলে বিলম্ব মার্জনার কোনো সুযোগ নেই।

প্রসিকিউটর তামিম বলেন, এই রায়ের একটি সার্টিফায়েড কপি ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন পাবে এবং একটি সার্টিফায়েড কপি এই মামলায় যে আসামি উপস্থিত ছিলেন তিনি পাবেন। যে আসামিরা পলাতক আছেন, তাঁরা যদি ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করেন অথবা গ্রেপ্তার হন, তাহলে তাঁরাও পাবেন। এ ছাড়া রায়ের আরেকটি কপি ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মানে ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে কার্যকর করার জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনাসহ দণ্ডিতদের বক্তব্য প্রচার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার

৭ কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত, অধ্যাদেশ চূড়ান্তের অপেক্ষা

২০ জন শ্রমিকেই করা যাবে ট্রেড ইউনিয়ন, গেজেট জারি

হঠাৎ বেশ কটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইট ডাউন, যা জানা গেল

এনবিআর সদস্য বদিউল আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিল্লি সফরে এক দিন আগেই ঢাকা ছাড়লেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৩১
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের দিল্লিতে যাওয়ার কথা ছিল আগামীকাল বুধবার। কিন্তু তিনি আজ মঙ্গলবারই ভারতের রাজধানী পৌঁছে গেছেন।

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর দিল্লিতে পৌঁছেন খলিলুর রহমান। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সচিবালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সিএসসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলন আগামী বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হবে। সকালে জোটের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলন শুরু হবে। আর মধ্যাহ্নভোজের পর তা শেষ হবে। ওই দিন বিকেলেই খলিলুর রহমানের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এমন এক সময়ে দিল্লিতে গেলেন, যখন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে ভারতকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

সব মিলিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের দিল্লি অবস্থানকালে তাঁর সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয় কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে এক দিন আগেই তিনি দিল্লি পৌঁছানোয় সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানা জল্পনা।

সিএসসিরর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলনে যোগ দিতে গত মাসে খলিলুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানান অজিত দোভাল। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের বেশি সময়ে তাকে নিয়ে মাত্র দুজন উপদেষ্টা ভারত করলেন। ফেব্রুয়ারিতে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশ নেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনাসহ দণ্ডিতদের বক্তব্য প্রচার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার

৭ কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত, অধ্যাদেশ চূড়ান্তের অপেক্ষা

২০ জন শ্রমিকেই করা যাবে ট্রেড ইউনিয়ন, গেজেট জারি

হঠাৎ বেশ কটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইট ডাউন, যা জানা গেল

এনবিআর সদস্য বদিউল আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজ্ঞপ্তির পর আপত্তি, ডেসটিনির রফিকুল আমীনের দল ফের পর্যালোচনায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রফিকুল আমীন । ছবি: সংগৃহীত
রফিকুল আমীন । ছবি: সংগৃহীত

বাছাই চূড়ান্ত শেষে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আপত্তি আসায় ডেসটিনি গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের গড়া দল বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে ফের পর্যালোচনায় রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ এসব কথা জানান।

ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, নিবন্ধনের জন্য ১৪৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল। প্রথম পর্যায়েই ১২১টি আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। বাকি ২২টি দলকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে এনসিপি, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) বাছাই চূড়ান্ত করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

এনসিপি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) নিবন্ধন চূড়ান্ত করে গতকাল সোমবার রাতে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আম জনগণ পার্টির বিরুদ্ধে আপত্তি এসেছে জানিয়ে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, এনসিপি ও বাসদ (মার্ক্সবাদী) দলের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি পাওয়া যায়নি। তাই তাদের নিবন্ধন চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। আর আম জনগণ পার্টির বিষয়ে আপত্তি থাকায় পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আরও বলেন, রিভিউয়ের জন্য আবেদন করা সাতটি দল নিয়ে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সাতটি দল হলো বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (শাহজাহান সিরাজ), জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, আমজনতার দল ও জনতার দল।

শেষ মুহূর্তে নিবন্ধন পেলে এসব দল সুবিধাবঞ্চিত হবে কি না, জানতে চাইলে সচিব বলেন, যদি কেউ শেষ মুহূর্তে নিবন্ধন পায়, তাহলে তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাবে না, এটা বাস্তবতা।

সংলাপে জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, বিষয়টি আগামীকাল বুধবার জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনাসহ দণ্ডিতদের বক্তব্য প্রচার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার

৭ কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত, অধ্যাদেশ চূড়ান্তের অপেক্ষা

২০ জন শ্রমিকেই করা যাবে ট্রেড ইউনিয়ন, গেজেট জারি

হঠাৎ বেশ কটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইট ডাউন, যা জানা গেল

এনবিআর সদস্য বদিউল আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মেসার্স সিনথিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক ও কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট মোহাম্মদ শাহজাহানের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁর বিরুদ্ধে ২ কোটি ৮৩ হাজার ৭৩৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুদকের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মোহাম্মদ শাহজাহানের সম্পদ বিবরণী তলব করে দুদক। তাঁর দাখিল করা বিবরণীতে দায়দেনা বাদ দিয়ে মোট ১৭ কোটি ৩১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৪ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। তবে যাচাই-বাছাইয়ে তাঁর গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১৫ কোটি ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৭০০ টাকা।

দুদকের তদন্তে দেখা যায়, ঘোষিত আয় ও প্রকৃত সম্পদের মধ্যে ২ কোটি ৮৩ হাজার ৭৩৪ টাকার অসংগতি রয়েছে। কমিশনের দাবি, এই অর্থ জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অবৈধভাবে অর্জন করেছেন আসামি শাহজাহান।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মোহাম্মদ শাহজাহান জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে তথ্য-প্রমাণ মেলায় তাঁর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। দাখিলকৃত বিবরণীতে তিনি ১২ কোটি ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭৬৫ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৫৪ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১৭ কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৭১৯ টাকার সম্পদের তথ্য প্রদর্শন করেন।

তদন্তে শাহজাহানের নামে ৫ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৭ টাকার দায়দেনার তথ্য পাওয়া যায়। ফলে দায়দেনা বাদে তাঁর নিট সম্পদ দাঁড়ায় ১২ কোটি ৩ লাখ ৩ হাজার ৬৭২ টাকা। অপর দিকে আয়কর নথি অনুযায়ী ২০১৫-১৬ করবর্ষ থেকে ২০২২-২৩ করবর্ষ পর্যন্ত তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৫ কোটি ২৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭৯২ টাকা। এ হিসাবে পারিবারিক ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭ কোটি ৩১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৪ টাকা।

এজাহার অনুযায়ী, ওই মোট সম্পদের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১৫ কোটি ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৭৩০ টাকা। অর্থাৎ তাঁর ঘোষিত আয় অপেক্ষা ২ কোটি ৮৩ হাজার ৭৩৪ টাকা অতিরিক্ত সম্পদ পাওয়া যায়, যা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। এতে প্রমাণিত হয় যে আসামি মোহাম্মদ শাহজাহান অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করে নিজ দখলে রেখেছেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনাসহ দণ্ডিতদের বক্তব্য প্রচার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার

৭ কলেজ নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত, অধ্যাদেশ চূড়ান্তের অপেক্ষা

২০ জন শ্রমিকেই করা যাবে ট্রেড ইউনিয়ন, গেজেট জারি

হঠাৎ বেশ কটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইট ডাউন, যা জানা গেল

এনবিআর সদস্য বদিউল আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত