এ টি এম আনোয়ারুল কাদির
আজ ডাকটিকিট দিবস। ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ নামে প্রথম আটটি ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছিল। এই আট ডাকটিকিট গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর তাই বাংলাদেশে ডাকটিকিট সংগ্রাহকদের একমাত্র রেজিস্টার্ড সংগঠন ‘ফিলাটেলিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (পিএবি) এই বিশেষ দিনকে ২০০৩ সাল থেকে ডাকটিকিট দিবস হিসেবে উদ্যাপন করে আসছে।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকার গঠিত হয় এবং ১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহণ করে। দেশে তখন অবিরাম যুদ্ধ। যোগাযোগ ব্যবস্থা একপ্রকার বিচ্ছিন্ন। তাই মুজিবনগর সরকার ডাক ব্যবস্থা গড়ে তোলার গুরুত্ব বুঝে একটি কেন্দ্রীয় ডাকঘরসহ বেশ কিছু ফিল্ড পোস্ট অফিস স্থাপন করে। তৎকালীন সরকার একসময় উপলব্ধি করে স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টির জন্য ডাকটিকিট একটি শক্তিশালী প্রচারমাধ্যম হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের তৎকালীন সদস্য ও ব্রিটিশ ডাক বিভাগের পোস্টমাস্টার জেনারেল জন স্টোন হাউস মুজিবনগর সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করেন। মুক্তাঞ্চলে চিঠি আদান–প্রদানের জন্য ‘বাংলাদেশ’ নামে ডাকটিকিট ব্যবহার করা হলে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠা করা সহজ হবে বলে এ সময় মত দেন তিনি। মুজিবনগর সরকার এ প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ‘বাংলাদেশ’ নামে ডাকটিকিট প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়।
এর পর ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল জন স্টোন হাউস অপ্রত্যাশিতভাবে টেলিফোনের মাধ্যমে লন্ডনপ্রবাসী ভারতীয় বাঙালি নকশাকার বিমান মল্লিককে ডাকটিকিট ডিজাইনের দায়িত্ব দেন। বিমান মল্লিক বিনা পারিশ্রমিকে ডাকটিকিটের নকশা করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আটটি ডাকটিকিটের নকশা করেন। প্রাথমিকভাবে জন স্টোন হাউস ও প্রবাসে মুজিবনগর সরকারের বিশেষ দূত বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী সে নকশা অনুমোদন করেন। এর পর তাঁদের পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের ১৯ মে ডোনাল্ড চেসওয়ার্থ ডাকটিকিটের নকশা অনুমোদনের জন্য কলকাতায় মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করেন। মুজিবনগর সরকার সে নকশা অনুমোদন করে।
পরে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই লন্ডনের হাউস অব কমন্সে জন স্টোন হাউস ও প্রবাসে মুজিবনগর সরকারের বিশেষ দূত বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এই আটটি ডাকটিকিট দেখিয়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জোর দাবি উত্থাপন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিম জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, জাপানসহ বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের পক্ষে চলে আসে। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত ১২২ বাঙালি কূটনীতিক পাকিস্তানের আনুগত্য অস্বীকার করে বাংলাদেশের পক্ষে চলে আসেন। এর পর বিমান মল্লিকের নকশা করা আটটি ডাকটিকিট ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই একযোগে মুজিবনগর, কলকাতার বাংলাদেশ মিশন ও লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। এই ডাকটিকিটগুলো দেশের অস্তিত্ব প্রমাণে বড় ভূমিকা পালন করে।
ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ পর্যন্ত বিশেষ খাম, স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভনির শিট ও উদ্বোধনী খাম প্রকাশ করেছে। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ প্রথমবারের মতো ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে একটি বিশেষ খাম প্রকাশ করে। ২০০৮ সালের ২৯ জুলাই প্রথমবারের মতো ৫০ টাকা মূল্যমানের একটি স্যুভনির শিট প্রকাশ করে, যার নকশাকার জসিম উদ্দিন। নকশায় প্রথম আটটি ডাকটিকিটের ছবি স্থান পায়।
২০১৫ সালে বিমান মল্লিক ডাকটিকিট দিবসের জন্য প্রথমবারের মতো ১০ টাকা মূল্যমানের একটি ডাকটিকিটের নকশা করেন এবং সেটি ২৯ জুলাই প্রকাশিত হয়। পরের বছরের ২৯ জুলাই সঞ্জীব কান্তি দাসের নকশা করা ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে আনোয়ার হোসেনের নকশা করা ১০ টাকা মূল্যমানের একটি ও ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই সঞ্জীব কান্তি দাসের নকশা করা ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়।
সাদিয়া আফরিন লামিয়ার চিত্রকর্ম ‘চল দেখি বায়োস্কোপ’ দিয়ে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই ডাকটিকিট দিবসে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়। ২০২০ সালের ২৯ জুলাই ডাকটিকিট দিবসেও ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়, যার নকশা করেন সঞ্জীব কান্তি দাস। ডাকটিকিটের নকশায় বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, জন স্টোন হাউস, বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিটের নকশাকার বিমান মল্লিক ও প্রথম আটটি ডাকটিকিটের ছবি স্থান পায়।
এ টি এম আনোয়ারুল কাদির: সাধারণ সম্পাদক, ফিলাটেলিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পিএবি)
আজ ডাকটিকিট দিবস। ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ নামে প্রথম আটটি ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছিল। এই আট ডাকটিকিট গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর তাই বাংলাদেশে ডাকটিকিট সংগ্রাহকদের একমাত্র রেজিস্টার্ড সংগঠন ‘ফিলাটেলিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (পিএবি) এই বিশেষ দিনকে ২০০৩ সাল থেকে ডাকটিকিট দিবস হিসেবে উদ্যাপন করে আসছে।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকার গঠিত হয় এবং ১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহণ করে। দেশে তখন অবিরাম যুদ্ধ। যোগাযোগ ব্যবস্থা একপ্রকার বিচ্ছিন্ন। তাই মুজিবনগর সরকার ডাক ব্যবস্থা গড়ে তোলার গুরুত্ব বুঝে একটি কেন্দ্রীয় ডাকঘরসহ বেশ কিছু ফিল্ড পোস্ট অফিস স্থাপন করে। তৎকালীন সরকার একসময় উপলব্ধি করে স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টির জন্য ডাকটিকিট একটি শক্তিশালী প্রচারমাধ্যম হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের তৎকালীন সদস্য ও ব্রিটিশ ডাক বিভাগের পোস্টমাস্টার জেনারেল জন স্টোন হাউস মুজিবনগর সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করেন। মুক্তাঞ্চলে চিঠি আদান–প্রদানের জন্য ‘বাংলাদেশ’ নামে ডাকটিকিট ব্যবহার করা হলে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠা করা সহজ হবে বলে এ সময় মত দেন তিনি। মুজিবনগর সরকার এ প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ‘বাংলাদেশ’ নামে ডাকটিকিট প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়।
এর পর ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল জন স্টোন হাউস অপ্রত্যাশিতভাবে টেলিফোনের মাধ্যমে লন্ডনপ্রবাসী ভারতীয় বাঙালি নকশাকার বিমান মল্লিককে ডাকটিকিট ডিজাইনের দায়িত্ব দেন। বিমান মল্লিক বিনা পারিশ্রমিকে ডাকটিকিটের নকশা করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আটটি ডাকটিকিটের নকশা করেন। প্রাথমিকভাবে জন স্টোন হাউস ও প্রবাসে মুজিবনগর সরকারের বিশেষ দূত বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী সে নকশা অনুমোদন করেন। এর পর তাঁদের পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের ১৯ মে ডোনাল্ড চেসওয়ার্থ ডাকটিকিটের নকশা অনুমোদনের জন্য কলকাতায় মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করেন। মুজিবনগর সরকার সে নকশা অনুমোদন করে।
পরে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই লন্ডনের হাউস অব কমন্সে জন স্টোন হাউস ও প্রবাসে মুজিবনগর সরকারের বিশেষ দূত বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এই আটটি ডাকটিকিট দেখিয়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জোর দাবি উত্থাপন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিম জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, জাপানসহ বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের পক্ষে চলে আসে। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত ১২২ বাঙালি কূটনীতিক পাকিস্তানের আনুগত্য অস্বীকার করে বাংলাদেশের পক্ষে চলে আসেন। এর পর বিমান মল্লিকের নকশা করা আটটি ডাকটিকিট ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই একযোগে মুজিবনগর, কলকাতার বাংলাদেশ মিশন ও লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। এই ডাকটিকিটগুলো দেশের অস্তিত্ব প্রমাণে বড় ভূমিকা পালন করে।
ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ পর্যন্ত বিশেষ খাম, স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভনির শিট ও উদ্বোধনী খাম প্রকাশ করেছে। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ প্রথমবারের মতো ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে একটি বিশেষ খাম প্রকাশ করে। ২০০৮ সালের ২৯ জুলাই প্রথমবারের মতো ৫০ টাকা মূল্যমানের একটি স্যুভনির শিট প্রকাশ করে, যার নকশাকার জসিম উদ্দিন। নকশায় প্রথম আটটি ডাকটিকিটের ছবি স্থান পায়।
২০১৫ সালে বিমান মল্লিক ডাকটিকিট দিবসের জন্য প্রথমবারের মতো ১০ টাকা মূল্যমানের একটি ডাকটিকিটের নকশা করেন এবং সেটি ২৯ জুলাই প্রকাশিত হয়। পরের বছরের ২৯ জুলাই সঞ্জীব কান্তি দাসের নকশা করা ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে আনোয়ার হোসেনের নকশা করা ১০ টাকা মূল্যমানের একটি ও ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই সঞ্জীব কান্তি দাসের নকশা করা ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়।
সাদিয়া আফরিন লামিয়ার চিত্রকর্ম ‘চল দেখি বায়োস্কোপ’ দিয়ে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই ডাকটিকিট দিবসে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়। ২০২০ সালের ২৯ জুলাই ডাকটিকিট দিবসেও ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়, যার নকশা করেন সঞ্জীব কান্তি দাস। ডাকটিকিটের নকশায় বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, জন স্টোন হাউস, বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিটের নকশাকার বিমান মল্লিক ও প্রথম আটটি ডাকটিকিটের ছবি স্থান পায়।
এ টি এম আনোয়ারুল কাদির: সাধারণ সম্পাদক, ফিলাটেলিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পিএবি)
সংবিধান সংস্কার কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গত বুধবার (২ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৩৮ মিনিট আগে৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত গেজেটে বাদ পড়া ২২৭ জন প্রার্থী পুনর্বিবেচনার আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী রোববার তাঁরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বাদ পড়া প্রার্থীদের পুনর্বিবেচনার আবেদন গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত জানায়।
১২ ঘণ্টা আগেআগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের চারটি ফ্লোর অফিস করার উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। ফ্লোরগুলোতে ঠিক কবে থেকে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করা হবে, সে সিদ্ধান্ত দেবে সরকারের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি।
১২ ঘণ্টা আগেইসকনের সাবেক নেতা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস শিগগির জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আত্মবিশ্বাসী তাঁর আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে গ্লোবালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন
১৪ ঘণ্টা আগে