বর্তমান বাস্তবতায় মৃত্যুদণ্ড রহিত করা সম্ভব নয়: আসিফ নজরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ০৩
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ১৮
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করা সম্ভব নয় বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ককে জানিয়ে দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তাঁর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করা যায় কি-না সে বিষয়ে মি. টুর্ক কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে তাকে বলা হয়েছে, বর্তমান বাস্তবতায় এটা সম্ভব না। বাংলাদেশের পেনাল সিস্টেম ও শত বছরের জাস্টিস সিস্টেমে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যে ফ্যাসিস্টদের হাতে হাজার হাজার তরুণ নিহত হয়েছে, তাদের হত্যার বিচারকে সামনে রেখে হঠাৎ করে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া যে কোনো বড় ধরণের আইনগত পরিবর্তন সমাজ আকাঙ্খার সঙ্গে মিল রেখে করতে হয়।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচার নিয়ে ফলকার টুর্ককে আশ্বস্ত করে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এই ট্রাইব্যুনালে সুবিচার করা হবে। প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা থেকে এটা করা হচ্ছে না। অবিচার করার জন্য আগের আদালতে যেরকম হয়েছে, সেরকম অবিচার করা হবে না। এখানে কোন কিছু লুকানোর নেই। যে কেউ এসে এই বিচার দেখতে পারবেন।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচারকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য করতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন আইনগত সংস্কারে জড়িত রয়েছে। এছাড়া সংস্থাটি ফরেনসিক সাপোর্ট, টেকনিক্যাল সাপোর্ট বা ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়েও সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে তিনি জানান।

উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কাজ বিশেষ করে সংস্কার কাজ, ট্রান্জিশনাল ট্রান্সফরমেশন, ছাত্র-জনতার  ঐতিহাসিক অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তবর্তী সরকারের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘তাঁর পক্ষ থেকে দুটি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন, একটি বিচার বিভাগ স্বাধীন করা। তাঁকে বলা হয়েছে, এ প্রসঙ্গে অবশ্যই কমিটেড। প্রধান বিচারপতি ইতোমধ্যে একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন। এটি নীতিগতভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। এর ‘মডালিটিজ’ কেমন হবে, সেটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে। এটা ছাড়াও বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করা হয়েছে।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালত নিয়ে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কী কী সংস্কার ভাবনা রয়েছে, সেটা হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে। তিনি এসব বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত