এ মাসেই বুস্টার ডোজ শুরুর আশা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৪৩
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৫৬

চলতি ডিসেম্বর মাসেই করোনার বুস্টার ডোজ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি এবং ফ্রন্টলাইনারদের প্রথমে এই ডোজ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বুস্টারের সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি, বুস্টার ডোজ আমরা দেব। যারা ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি, ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার আছেন তাঁদের দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। এ বিষয়ে কার্যক্রম চলছে। আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।’ 

করোনার বুস্টার ডোজ শুরুর আগে সুরক্ষা অ্যাপসে কিছু আপডেট করতে হবে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা আশা করছি এ মাসেই কাজ শুরু করতে পারব, প্রস্তুতি চলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে প্রস্তুতি সেটাও হয়ে যাবে। আইসিটির প্রস্তুতিটাও আমরা করে ফেলতে পারব। একটা প্রায়োরিটি সেট করতে হয়। সে অনুযায়ী যাঁরা বয়স্ক বা মৃত্যুঝুঁকি বেশি তাঁদের আমরা আগে দেব। ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদেরও আমরা দেব।’ 

যারা এখনো করোনার একটি ডোজ টিকাও পাননি তাঁদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই টিকা দেওয়া হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে বয়স্কদেরও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করোনার টিকা দেওয়ার পর সবার জন্য এই টিকাদান উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালগুলো যেভাবে ছিল আমরা সেভাবেই রেখেছি। এটাকে আরও জোরদার করা হয়েছে। আমরা প্রায় ৮০টি অক্সিজেন জেনারেটর এখন স্থাপন করছি, এর মধ্যে ৩০টি স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের পথে। বাকিগুলো অল্প দিনের মধ্যে দেশে আসলে আমরা সংযোজন করব। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, মিনিটে এক হাজার লিটার অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারে এমন জেনারেটর রোববার ঢাকায় বসানো হয়েছে। মিনিটে ৫০০ লিটার অক্সিজেন তৈরি করতে পারে এমন যন্ত্রও বসানো হয়েছে।’ 

এখন পর্যন্ত করোনার ১১ কোটি টিকা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এ মাসে আরও দেড় থেকে দুই কোটি টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। হাতে আছে প্রায় ৪ কোটি টিকা। আজকেও (সোমবার) ইউকে থেকে ৪০ লাখ ডোজ টিকা পাব। টিকার কোনো অসুবিধা নেই।’ 

স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকার অগ্রগতি প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছিলেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলেছি, সেখানে আমরা সে রকম অগ্রগতি লাভ করতে পারিনি। যেহেতু ফাইজার টিকা দিতে হচ্ছে। দেশের সব কর্নারে তো সেভাবে কোল্ড চেইন নেই। কাজেই যে জায়গায় কোল্ড চেইন আছে, সেখানেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এটা যাতে আরও বাড়ে, গতি যেন আনতে পারি, সে জন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। এক হাজার বুথ বাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। আড়াই হাজার বুথ যেটা আছে তার সঙ্গে আরও এক হাজার বুথ যোগ হলে আমরা মনে করি টিকা কার্যক্রম আরও বেগবান হবে।’ 

জাহিদ মালেক বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম জিম্বাবুয়ে থেকে ফিরে সোনারগাঁওয়ে কোয়ারেন্টিনে ছিল। আমরা তাঁদের বেশ কয়েকবার টেস্ট করেছি এবং দুজনের শরীরে ওমিক্রন পাওয়া গেছে। জিনোম সিকোয়েন্সিং করে আমরা এ তথ্য পেয়েছি। তাঁরা এখন ভালো আছে, সুস্থ আছে। অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তির শরীরে আমরা ওমিক্রন পাইনি। যাঁরা হোটেলে আছে এবং তাঁদের সংস্পর্শে এসেছে তাঁদেরও টেস্টের ব্যবস্থা করেছি। আমরা এখনো ভালো আছি। বর্ডার স্ক্রিনিং, এয়ারপোর্ট স্ক্রিনিংও আমরা এ কারণে জোরদার করেছি। ওমিক্রন এখনো খুব ক্ষতিকারক না। এটি সাংঘাতিক সংক্রামক কিন্তু মৃত্যুর খবর কোথাও আমরা পাইনি। এ জন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে। রোববারও করোনা সংক্রমণের হার দেড় শতাংশ ছিল, এটি এখন কিছুটা বাড়তির দিকে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের চলতে হবে। টিকা যারা নেয়নি তাঁদের আহ্বান করব টিকা নিয়ে আপনারা সুরক্ষিত হয়ে যান।’ 

এর আগে, ষাটোর্ধ্ব নাগরিক এবং ফ্রন্টলাইনারদের জন্য বুস্টার ডোজ টিকার জন্য সুপারিশসহ ওমিক্রন শনাক্তের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে অতিরিক্ত জনসমাগম ও মিছিল মিটিংয়ের মতো কার্যক্রম বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটি। 

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে এক জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে এই সুপারিশের কথা জানিয়েছে কোভিড ১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটি। 

সুপারিশে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ রুটিন ভ্যাক্সিনেসনের জন্য পর্যাপ্ত টিকা নিশ্চিতকরণ পূর্বক ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠী ও ফ্রন্টলাইনার যাদের দুই ডোজ কোভিড-১৯ টিকা অন্ততপক্ষে ছয় মাস আগে প্রদান করা হয়েছে এমন জনগোষ্ঠীকে কোভিড-১৯ টিকার বুস্টার ডোজ প্রধান করা যেতে পারে। 

পাশাপাশি ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জনসমাবেশ সীমিতকরণ এবং অতি প্রয়োজন ছাড়া অফলাইনে (সরাসরি) সভা পরিহার করে অনলাইনে করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত