ফজলুল কবির, ঢাকা
করোনাভাইরাস মহামারির এই দুঃসময়ে গোটা বিশ্বকে আশার আলো দেখিয়েছে টিকা। সরকারি অর্থায়নে বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে রেকর্ড সময়ের মধ্যে কোভিডের টিকার নাগাল পেয়েছে বিশ্ব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি ব্যবহারের জন্য এরই মধ্যে সাতটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষার চেয়ে ব্যবসার মুনাফাই মুখ্য হয়ে উঠছে।
বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, মডার্না বা স্পুতনিক নামগুলো পরিচিত। এগুলোর কোনোটি মার্কিন, কোনোটি চীনা আবার কোনোটি রুশ। ফলে অবধারিতভাবেই এই টিকার সঙ্গে জুড়ে গেছে ‘টিকা রাজনীতি’, ‘টিকা কূটনীতি’র মতো শব্দগুলো। আর এসব শব্দের আড়ালে হারিয়ে যেতে বসেছে ব্যবসার গোপন রহস্যটি।
করোনার টিকা সারা বিশ্বে এক অদ্ভুত বৈষম্য তৈরি করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন গবেষণা পত্রিকা বিএমজের এক নিবন্ধে টিকার দামের বৈষম্যের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বলা হচ্ছে, একই টিকার দাম একেক অঞ্চলে একেক রকম। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার ও ভারত ৪ ডলারে কিনলেও তা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় বিক্রি হয়েছে সোয়া ২ ডলারে। আবার যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র এই টিকা কিনছে ৩ ডলার ৪০ সেন্টে।
বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান-গুলোর দাবি, টিকার গবেষণায় তাদের অনেক ব্যয় হয়েছে। ফলে যেসব দেশ গবেষণা পর্যায়ে বিনিয়োগ করেছে, তারা টিকার দামে ছাড় পাচ্ছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রে মডার্নার টিকার প্রতি ডোজ ১৫ ডলার হলেও ইইউতে তা ছিল ১৮ ডলার। একই সময়ে ফাইজারের টিকার প্রতি ডোজের দাম যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে ১৯ ডলার হলেও ইইউতে তা ছিল ১৪ ডলার ৭০ সেন্ট। মার্কিন কোম্পানি নোভাভ্যাক্সের প্রতি ডোজ কোভিড টিকার দাম ১৬ ডলার। টিকার এই উচ্চমূল্য রাখছে রাশিয়া ও চীনও। রাশিয়ার স্পুতনিক ভি ও চীনের সিনোফার্মের প্রতি ডোজ টিকার দাম ১০ ডলার। যদিও দুই দেশে কখনো প্রকাশ্যে দামের কথা বলেনি। আর এই দুটি টিকা উৎপাদন করছে তাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান।
বিশ্ববাসীকে বিস্মিত করেছে লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের এক গবেষণা। গবেষকেরা হিসাব করে দেখিয়েছেন, ফাইজারের প্রতি ৮০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ৯৪০ কোটি ডলার হতে পারে। এই হিসাবে প্রতি ডোজ টিকার উৎপাদন ব্যয় দাম ১ ডলার ১৮ সেন্টের আশপাশে হওয়ার কথা। একইভাবে মডার্নার টিকার প্রতি ডোজের সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের হিসাব করা হয়েছে ২ ডলার ৮৫ সেন্টের আশপাশে। অথচ দরিদ্র দেশগুলোর জন্য নেওয়া উদ্যোগ কোভ্যাক্সই মডার্নার টিকা কিনেছে ৫ ডলারের বেশি দামে। এর বাইরে ফাইজারের প্রতি ডোজ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১৯ ডলারে। আর মডার্না দেশভেদে প্রতি ডোজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেমে ৩৭ ডলারে। আর সিনোভ্যাক্স প্রতি ডোজ বিক্রি হচ্ছে গড়ে ২৯ ডলার ৭৫ সেন্টে।
রাশিয়া বা চীন টিকার দাম নিয়ে প্রকাশ্যে টু শব্দটি করেনি। তারা এ ব্যাপারে এতটাই স্পর্শকাতর যে, বাংলাদেশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চীনের সিনোফার্মের টিকার দাম মুখ ফসকে বলে ফেলায় পুরো চুক্তিটা ভেস্তে যেতে বসেছিল। একই অবস্থা হয়েছে নেপালেরও। বাংলাদেশের সঙ্গে টিকা নিয়ে আলোচনার কোনো পর্যায়ে দামের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেনি রাশিয়া।
টিকার দাম ও প্রাপ্যতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে যে বৈষম্যে তৈরি হয়েছে তার বিরুদ্ধে বিশ্বের নানা প্রান্তের ৭০টি মানবাধিকার সংস্থাগুলো মিলে দ্য পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (পিভিএ) নামের একটি জোট করেছে, যেখানে অক্সফাম, ইউএএইড যেমন আছে, তেমনি বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও রয়েছে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর এই অতি মুনাফালোভী চরিত্রের বিষয়ে অক্সফামের স্বাস্থ্য নীতিবিষয়ক ব্যবস্থাপক অ্যানা ম্যারিয়টের মন্তব্য, ‘ওষুধ উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের মানুষকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছে। একে ইতিহাসের অন্যতম প্রাণঘাতী বাণিজ্য বলা যায়। যে অর্থ দরিদ্র দেশগুলো নিজেদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যবহার করতে পারত, সেই অর্থ এই ক্ষমতাধর করপোরেশনগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও অংশীদাররা লুট করে নিচ্ছে।’
টিকা উৎপাদকেরা যে বিপুল মুনাফা করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পিভিএ। বলা হচ্ছে, এই টিকা তৈরিতে ছিল সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ। গবেষণার জন্য মার্কিন জনগণের করের টাকা পেয়েছে ফাইজার, মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন বা নোভাভ্যাক্সের মতো কোম্পানিগুলোর। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস, গভর্নমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি অফিসের বরাত দিয়ে হেলথ অ্যাফেয়ার্স জানায়, কোভিডের টিকা তৈরির গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিনিয়োগ করেছিল ১৮০০ থেকে ২৩০০ কোটি ডলার। আর মার্কিন কংগ্রেসের বাজেট দপ্তর চলতি বছরের মাঝামাঝি জানিয়েছে, শুধু বায়োমেডিকেল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথোরিটির (বার্ডা) মাধ্যমেই এ সম্পর্কিত গবেষণায় ১ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার দেওয়া হয়েছে।
তবে এই মুনাফায় থেমে নেই বড় প্রতিষ্ঠানগুলো। বছর ঘোরার আগেই ইউরোপে বেড়েছে ফাইজার ও মডার্নার টিকার দাম। লন্ডনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, চলতি মাসে ইউরোপে ফাইজার প্রতি ডোজ টিকা ২৩ ডলার ১৫ সেন্টে বিক্রি করছে। আর মডার্নার দাম বেড়ে হয়েছে ২৫ ডলার ৫০ সেন্ট।
আফ্রিকান অ্যালায়েন্স, অক্সফাম, ইউএসএইডসহ বিশ্বের ৭০টি প্রতিষ্ঠানের জোট পিভিএ বলছে, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর একচেটিয়াকরণ মানসিকতা রোধে ধনী রাষ্ট্রগুলোর ব্যর্থ হওয়া বা তা করতে না চাওয়ার কারণে ভয়াবহ সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলোকে। ধনী রাষ্ট্রগুলোর প্রত্যক্ষ মদদে ওষুধ উৎপাদকেরা মৃত্যুকেই ব্যবসায় পরিণত করেছে এখন। দরিদ্র দেশগুলোর স্বাস্থ্য খাতের বাজেটের পুরোটাই ঢুকে গেছে ওষুধ কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের পকেটে।
ওষুধ কোম্পানিগুলোর এই একচেটিয়া ব্যবসার মানসিকতা সম্পর্কে করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ডা. ইকবাল আর্সলান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক বেনিয়া চক্রের খেলা এটি। এরা এই ভয়াবহ মহামারির মধ্যেও কাউকে প্রযুক্তি দিচ্ছে না। এটা না করে তারা একচেটিয়া ব্যবসা করছে। টিকার দাম ক্রমে বাড়ছে।’ তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য হলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কোভিড টিকা তৈরির চেষ্টা করেও সফল হয়নি। এতে গুটিকয়েক দেশের কয়েকটি কোম্পানির হাতে পুরো বিষয়টি চলে গেছে। টিকাকে তারা ব্যবসায়িক দিক থেকেই দেখছে, মানবিকতার জায়গা থেকে নয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতোই এদের চরিত্র। তিনি আরও বলেন, ভাইরাসটি সময়ের সঙ্গে নিজের ধরন পাল্টাচ্ছে। ডেলটা, ডেলটা প্লাস হয়ে এখন ল্যামডা ধরন এসেছে। ফলে এই টিকার চাহিদা বাড়তে থাকবে। আর একে পুঁজি করে টিকার দাম আরও বাড়াচ্ছে তারা।
করোনাভাইরাস মহামারির এই দুঃসময়ে গোটা বিশ্বকে আশার আলো দেখিয়েছে টিকা। সরকারি অর্থায়নে বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে রেকর্ড সময়ের মধ্যে কোভিডের টিকার নাগাল পেয়েছে বিশ্ব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি ব্যবহারের জন্য এরই মধ্যে সাতটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষার চেয়ে ব্যবসার মুনাফাই মুখ্য হয়ে উঠছে।
বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, মডার্না বা স্পুতনিক নামগুলো পরিচিত। এগুলোর কোনোটি মার্কিন, কোনোটি চীনা আবার কোনোটি রুশ। ফলে অবধারিতভাবেই এই টিকার সঙ্গে জুড়ে গেছে ‘টিকা রাজনীতি’, ‘টিকা কূটনীতি’র মতো শব্দগুলো। আর এসব শব্দের আড়ালে হারিয়ে যেতে বসেছে ব্যবসার গোপন রহস্যটি।
করোনার টিকা সারা বিশ্বে এক অদ্ভুত বৈষম্য তৈরি করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন গবেষণা পত্রিকা বিএমজের এক নিবন্ধে টিকার দামের বৈষম্যের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বলা হচ্ছে, একই টিকার দাম একেক অঞ্চলে একেক রকম। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার ও ভারত ৪ ডলারে কিনলেও তা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয় বিক্রি হয়েছে সোয়া ২ ডলারে। আবার যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র এই টিকা কিনছে ৩ ডলার ৪০ সেন্টে।
বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান-গুলোর দাবি, টিকার গবেষণায় তাদের অনেক ব্যয় হয়েছে। ফলে যেসব দেশ গবেষণা পর্যায়ে বিনিয়োগ করেছে, তারা টিকার দামে ছাড় পাচ্ছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রে মডার্নার টিকার প্রতি ডোজ ১৫ ডলার হলেও ইইউতে তা ছিল ১৮ ডলার। একই সময়ে ফাইজারের টিকার প্রতি ডোজের দাম যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে ১৯ ডলার হলেও ইইউতে তা ছিল ১৪ ডলার ৭০ সেন্ট। মার্কিন কোম্পানি নোভাভ্যাক্সের প্রতি ডোজ কোভিড টিকার দাম ১৬ ডলার। টিকার এই উচ্চমূল্য রাখছে রাশিয়া ও চীনও। রাশিয়ার স্পুতনিক ভি ও চীনের সিনোফার্মের প্রতি ডোজ টিকার দাম ১০ ডলার। যদিও দুই দেশে কখনো প্রকাশ্যে দামের কথা বলেনি। আর এই দুটি টিকা উৎপাদন করছে তাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান।
বিশ্ববাসীকে বিস্মিত করেছে লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের এক গবেষণা। গবেষকেরা হিসাব করে দেখিয়েছেন, ফাইজারের প্রতি ৮০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ৯৪০ কোটি ডলার হতে পারে। এই হিসাবে প্রতি ডোজ টিকার উৎপাদন ব্যয় দাম ১ ডলার ১৮ সেন্টের আশপাশে হওয়ার কথা। একইভাবে মডার্নার টিকার প্রতি ডোজের সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়ের হিসাব করা হয়েছে ২ ডলার ৮৫ সেন্টের আশপাশে। অথচ দরিদ্র দেশগুলোর জন্য নেওয়া উদ্যোগ কোভ্যাক্সই মডার্নার টিকা কিনেছে ৫ ডলারের বেশি দামে। এর বাইরে ফাইজারের প্রতি ডোজ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১৯ ডলারে। আর মডার্না দেশভেদে প্রতি ডোজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেমে ৩৭ ডলারে। আর সিনোভ্যাক্স প্রতি ডোজ বিক্রি হচ্ছে গড়ে ২৯ ডলার ৭৫ সেন্টে।
রাশিয়া বা চীন টিকার দাম নিয়ে প্রকাশ্যে টু শব্দটি করেনি। তারা এ ব্যাপারে এতটাই স্পর্শকাতর যে, বাংলাদেশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চীনের সিনোফার্মের টিকার দাম মুখ ফসকে বলে ফেলায় পুরো চুক্তিটা ভেস্তে যেতে বসেছিল। একই অবস্থা হয়েছে নেপালেরও। বাংলাদেশের সঙ্গে টিকা নিয়ে আলোচনার কোনো পর্যায়ে দামের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেনি রাশিয়া।
টিকার দাম ও প্রাপ্যতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে যে বৈষম্যে তৈরি হয়েছে তার বিরুদ্ধে বিশ্বের নানা প্রান্তের ৭০টি মানবাধিকার সংস্থাগুলো মিলে দ্য পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (পিভিএ) নামের একটি জোট করেছে, যেখানে অক্সফাম, ইউএএইড যেমন আছে, তেমনি বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও রয়েছে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর এই অতি মুনাফালোভী চরিত্রের বিষয়ে অক্সফামের স্বাস্থ্য নীতিবিষয়ক ব্যবস্থাপক অ্যানা ম্যারিয়টের মন্তব্য, ‘ওষুধ উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের মানুষকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছে। একে ইতিহাসের অন্যতম প্রাণঘাতী বাণিজ্য বলা যায়। যে অর্থ দরিদ্র দেশগুলো নিজেদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যবহার করতে পারত, সেই অর্থ এই ক্ষমতাধর করপোরেশনগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও অংশীদাররা লুট করে নিচ্ছে।’
টিকা উৎপাদকেরা যে বিপুল মুনাফা করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পিভিএ। বলা হচ্ছে, এই টিকা তৈরিতে ছিল সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ। গবেষণার জন্য মার্কিন জনগণের করের টাকা পেয়েছে ফাইজার, মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন বা নোভাভ্যাক্সের মতো কোম্পানিগুলোর। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস, গভর্নমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি অফিসের বরাত দিয়ে হেলথ অ্যাফেয়ার্স জানায়, কোভিডের টিকা তৈরির গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিনিয়োগ করেছিল ১৮০০ থেকে ২৩০০ কোটি ডলার। আর মার্কিন কংগ্রেসের বাজেট দপ্তর চলতি বছরের মাঝামাঝি জানিয়েছে, শুধু বায়োমেডিকেল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথোরিটির (বার্ডা) মাধ্যমেই এ সম্পর্কিত গবেষণায় ১ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার দেওয়া হয়েছে।
তবে এই মুনাফায় থেমে নেই বড় প্রতিষ্ঠানগুলো। বছর ঘোরার আগেই ইউরোপে বেড়েছে ফাইজার ও মডার্নার টিকার দাম। লন্ডনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, চলতি মাসে ইউরোপে ফাইজার প্রতি ডোজ টিকা ২৩ ডলার ১৫ সেন্টে বিক্রি করছে। আর মডার্নার দাম বেড়ে হয়েছে ২৫ ডলার ৫০ সেন্ট।
আফ্রিকান অ্যালায়েন্স, অক্সফাম, ইউএসএইডসহ বিশ্বের ৭০টি প্রতিষ্ঠানের জোট পিভিএ বলছে, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর একচেটিয়াকরণ মানসিকতা রোধে ধনী রাষ্ট্রগুলোর ব্যর্থ হওয়া বা তা করতে না চাওয়ার কারণে ভয়াবহ সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলোকে। ধনী রাষ্ট্রগুলোর প্রত্যক্ষ মদদে ওষুধ উৎপাদকেরা মৃত্যুকেই ব্যবসায় পরিণত করেছে এখন। দরিদ্র দেশগুলোর স্বাস্থ্য খাতের বাজেটের পুরোটাই ঢুকে গেছে ওষুধ কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের পকেটে।
ওষুধ কোম্পানিগুলোর এই একচেটিয়া ব্যবসার মানসিকতা সম্পর্কে করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ডা. ইকবাল আর্সলান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক বেনিয়া চক্রের খেলা এটি। এরা এই ভয়াবহ মহামারির মধ্যেও কাউকে প্রযুক্তি দিচ্ছে না। এটা না করে তারা একচেটিয়া ব্যবসা করছে। টিকার দাম ক্রমে বাড়ছে।’ তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য হলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কোভিড টিকা তৈরির চেষ্টা করেও সফল হয়নি। এতে গুটিকয়েক দেশের কয়েকটি কোম্পানির হাতে পুরো বিষয়টি চলে গেছে। টিকাকে তারা ব্যবসায়িক দিক থেকেই দেখছে, মানবিকতার জায়গা থেকে নয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতোই এদের চরিত্র। তিনি আরও বলেন, ভাইরাসটি সময়ের সঙ্গে নিজের ধরন পাল্টাচ্ছে। ডেলটা, ডেলটা প্লাস হয়ে এখন ল্যামডা ধরন এসেছে। ফলে এই টিকার চাহিদা বাড়তে থাকবে। আর একে পুঁজি করে টিকার দাম আরও বাড়াচ্ছে তারা।
ডেসক্রিপশন: থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় ভ্রমণের ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদের সতর্ক করেছে সরকার। স্ক্যাম চক্রের প্রতারণা এড়াতে নিয়োগ যাচাই এবং সাইবার নিরাপত্তা মেনে চলার পরামর্শ।
৪ মিনিট আগেহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁদের অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এবং আইওএমের কর্মকর্তারা। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান ফেরত আসা বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
৭ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোট গ্রহণ, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন তাঁরা।
৭ ঘণ্টা আগেপরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন সময়ের দাবি। বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের চাওয়া দ্রুত নির্বাচন। এ অবস্থায় নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন দলগুলোর নেতারা। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়
৭ ঘণ্টা আগে