Ajker Patrika

নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও র‍্যাব বিলুপ্তির দাবি বিশিষ্টজনদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও র‍্যাব বিলুপ্তির দাবি বিশিষ্টজনদের

নাগরিকের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান অনেকাংশে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই সংবিধান অপ্রতুল। তাই বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। 

এ ছাড়া পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্তির দাবিও উঠেছে। 

বক্তারা বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত হয়েছে যাব। 

আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব দাবি তোলেন বক্তারা। 

‘নতুন বাংলাদেশে জনপ্রত্যাশা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন—নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ (নাবিক)। এতে সভাপতিত্ব করেন নাবিক সভাপতি শিহাব উদ্দিন খান। আলোচ্য বিষয়ে ধারণাপত্র পাঠ করেন নাবিকের সহসভাপতি বুরহান উদ্দিন ফয়সল। 

আলোচনায় অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ মুদ্দাসসির চৌধুরী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. মাসদার হোসেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া) সাবেক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ইকতেদার আহমেদ, জেলা জজ (অব.) বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ আলম, মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) আব্দুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, চট্টগ্রামের সাবেক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আব্দুর রহমান, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুসতাসীম তানজীর ও স্থপতি মারুফ হোসাইন। আরও ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইমুম রেজা পিয়াস। 

ধারণাপত্রে নাবিকের সহসভাপতি বুরহান উদ্দিন ফয়সল পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো—মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র‍্যাবের বিলুপ্তি; ডিজিএফআইয়ের আমূল সংস্কার এবং পুলিশের সংস্কার ও লোগো পরিবর্তন; আওয়ামী ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িত এবং সহযোগীদের কঠোর বিচার এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা; অকার্যকর ও আওয়ামী রেজিম টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন জনবান্ধব সংবিধান প্রণয়ন; ন্যায়বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নতুন বিচারক নিয়োগ এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ সব কালো আইন বাতিল; ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ। 

নুর খান লিটন বলেন, বিগত বছরগুলোতে এমন দুঃশাসনের মধ্যে কাটিয়েছি আমরা, যা বর্ণনা করা কঠিন। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যে, কারও পক্ষে এককভাবে কথা বলা কঠিন। আমাদের কথা বলার কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানের এনজিও ব্যুরোর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে অথবা অর্থ ছাড় করতে পারেনি। 

তিনি বলেন, এখনো পুলিশকে কাজে যোগ দিতে একটা গ্রুপ বাধা দিচ্ছে। এই গ্রুপটি গত সরকারের সময় দুর্নীতি লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ছিল। 

ইকতেদার আহমেদ বলেন, ছাত্র-জনতা আন্দোলনের কারণে শনিবার যোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান বিচারপতি (সৈয়দ রেফাত আহমেদ) হিসেবে আমরা পেয়েছি। আগে যে গুম-খুন হয়েছে সেসব নিয়ে বিচার বিভাগ থেকে একটা রুল দেওয়া হলে বন্ধ হয়ে যেতো গুম খুন। 

মাসদার হোসেন বলেন, স্বৈরাচারের পতনের পর আজ মুক্ত পাখির মতো ডানা ঝাপটাতে ইচ্ছে করছে। এত দিন বন্দী পাখির মতো ছিলাম। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলতে কিছুই নাই। শুধু আইন থাকলেই হবে না, মানুষগুলো বদলাতে হবে। এত দিন এক ব্যক্তির কথায় দেশ চলছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত