জাহাঙ্গীর আলম
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মূলত একজন ভাস্কুলার সার্জন। সারা জীবন ভেবেছেন জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে। ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টদের অন্যায় আধিপত্য এবং চিকিৎসাকে বাণিজ্যে পর্যবসিত করার প্রবণতার বিরুদ্ধে তিনি লড়েছেন। বহির্বিশ্ব তাঁকে চেনে একজন বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার করার জন্য ভারতে আসেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তখন যুক্তরাজ্যে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ছেন। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই ফিরে আসেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে।
মুজিবনগর সরকারের সহায়তায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরে গড়ে তোলেন ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল। এই হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন সেনাবাহিনীর ডাক্তার সিতারা বেগম।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চিকিৎসকদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করা, হাসপাতালের জন্য ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও ডা. জাফরুল্লাহর বড় ভূমিকা ছিল।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল স্থানান্তরিত হয় ঢাকার ইস্কাটন সড়কে। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে গ্রাম উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্য ‘চল গ্রামে যাই’ স্লোগান নিয়ে হাসপাতালটি সাভারে স্থানান্তরিত হয়। তখন নামকরণ করা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নিজ হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠান।
চিকিৎসা সেবার সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না এমন নারীদের মাত্র কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েই ফিল্ড হাসপাতালে সেবার কাজ করেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। মূলত সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব- সেটি করে দেখিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর এই অভিযাত্রা এবং অর্জন চিকিৎসা বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেট-এ প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নিবন্ধটি প্রকাশের পর প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ধারণাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ও শিক্ষাজীবন
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর স্কুল ছিল ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউট। এরপর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখানে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। মেডিকেলে পড়ার সময়ই তিনি বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মানুষের অধিকার আদায়ের ব্রত নিয়েই সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেছেন তিনি। কোনো অন্যায়ই সহ্য করেননি কখনো। ঢাকা মেডিকেল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে এমবিবিএম পাস করেন। এরপর সাধারণ সার্জারি ও ভাস্কুলার সার্জারিতে প্রশিক্ষণ নিতে চলে যান যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়াকালীনই শুরু হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে চলে আসেন ভারতে।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে তাঁর ভাবনা
মানুষের রোগ হবে এটিই স্বাভাবিক- এমনটাই বলতেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু সব মানুষের স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার লড়াই করেছেন আজীবন।
স্বাস্থ্য সেবার জন্য সব ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসক অপরিহার্য বলে মনে করতেন না তিনি। স্বল্প শিক্ষিত মানুষকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েও প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস করতেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি সেটি প্রমাণ করে দেখিয়েছেনও।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর কোনো উদ্যোগকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে চাননি। তাঁর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্ম কৌশল ও উদ্যোগ সরকারই যেন সারা দেশে প্রয়োগ করে- এটিই তিনি চাইতেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রথম স্বাস্থ্য বিমা চালু হয়। যার সুফল এখন বহু মানুষ পাচ্ছেন।
স্বাধীনতার পর দেশের ওষুধের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ছিল বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির। তখন বাজারে ৪ হাজার ধরনের ওষুধ ছিল। এর প্রায় সবই আমদানি করা হতো। ওষুধের দাম ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে, ১৯৮২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতি সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন এনে দেয়। এই ওষুধ নীতি দেশি কোম্পানিগুলোকে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। দেশে তৈরি হওয়া ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ হয়। এই ওষুধ নীতিই দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। এই নীতির ফলস্বরূপই বাংলাদেশ এখন ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ।
এই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এই ওষুধ নীতি নিয়ে বিরোধের জেরেই বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বা বিএমএ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
দেশের মানুষকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ দেওয়ার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ওষুধ কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বৈশ্বিকভাবে বিকল্প স্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন আয়োজন করে। এর বিকল্প হিসেবে কয়েক বছর পর পর আয়োজন করা হয় পাবলিক হেলথ অ্যাসেম্বলি বা জনগণের স্বাস্থ্য সম্মেলন। পিপলস হেলথ মুভমেন্ট নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এর আয়োজক। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে।
১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাঁকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড।
কানাডার ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি।
যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।
তিনি একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য।
গবেষণা ও বক্তৃতা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন এবং সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নিয়েছেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধ নীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে অন্যতম ‘রিসার্চ: অ্যা মেথড অব কলোনাইজেশন’। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে। এরপর বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্পেনিস ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
আলোচিত-সমালোচিত এক স্বাধীন চিন্তার মানুষ
ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আর নির্দিষ্ট কোনো মতের রাজনীতির সঙ্গে থাকেননি। তবে তাঁর রাজনৈতিক মত প্রভাব ফেলেছে সব সময়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বন্ধু ও সহযোদ্ধারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইংল্যান্ডে থাকার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রকাশ্যে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। এর বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ভারতে আসেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীকে বহনকারী হেলিকপ্টারে হামলা হয়েছিল। সেই হেলিকপ্টারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় সাভারে গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর অম্ল-মধুর সম্পর্কের কথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন। প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে বঙ্গবন্ধুকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর বাকশালের বিরোধিতা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানী রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁর হয়ে কাজ করেছেন।
সখ্য ছিল দুই সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এইচএম এরশাদের সঙ্গেও। এক সময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিএনপি এবং দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে।
তবে সামরিক শাসকদের সময়েই স্বাস্থ্য নীতি, ঔষধ নীতি ও নারী শিক্ষা, এমনকি সহজে দেশের মানুষের জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজি করানো এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকে প্রভাবিত করতে জাফরুল্লাহ ভূমিকা অনস্বীকার্য।
রাজনীতিতে সর্বশেষ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এ নিয়ে অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর জেরে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার ঘটনাও ঘটে। বেশ কিছু মামলাতেও তাঁকে আসামি করা হয়।
দেশে কোভিড মহামারির সময় সরকারের মহামারি মোকাবিলা কৌশল ও পদক্ষেপ এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত টেস্ট কিট ব্যাপক আলোচনায় আসেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শুরু থেকে সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবই প্রকাশ করা হয়েছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনের শেষ বছরগুলোতে রোগ–ব্যধির সঙ্গে লড়েছেন। নিজেই দীর্ঘদিন জটিল কিডনি রোগে ভুগেছেন। সাশ্রয়ী ডায়ালাইসিসের জন্য গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছেন।
মানুষ যাতে প্রতিস্থাপনের জন্য সহজে কিডনি পেতে পারে সেজন্য দেশের আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছে ডা. জাফরুল্লাহ। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করারও ইচ্ছা ছিল।
চিকিৎসার জন্য কখনো বিদেশে যেতে রাজি হননি। এমনকি বিনা খরচে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব পেয়েও শুধু বিদেশে যেতে হবে বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় সাধারণ মানুষের জন্য দেশেই কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করে যেতে চেয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসা নিয়েছেন সব সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ট্রাস্টি হিসেবে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মূলত একজন ভাস্কুলার সার্জন। সারা জীবন ভেবেছেন জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে। ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টদের অন্যায় আধিপত্য এবং চিকিৎসাকে বাণিজ্যে পর্যবসিত করার প্রবণতার বিরুদ্ধে তিনি লড়েছেন। বহির্বিশ্ব তাঁকে চেনে একজন বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংগ্রাম শুরু হয় মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭১ সালের মার্চে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন ডা. এএইচ সায়েদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই বছরের মে মাসে এমএ মোবিন ও জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার করার জন্য ভারতে আসেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তখন যুক্তরাজ্যে রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ছেন। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই ফিরে আসেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে।
মুজিবনগর সরকারের সহায়তায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘরে গড়ে তোলেন ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল। এই হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন সেনাবাহিনীর ডাক্তার সিতারা বেগম।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত চিকিৎসকদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করা, হাসপাতালের জন্য ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও ডা. জাফরুল্লাহর বড় ভূমিকা ছিল।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল স্থানান্তরিত হয় ঢাকার ইস্কাটন সড়কে। ১৯৭২ সালের এপ্রিলে গ্রাম উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্য ‘চল গ্রামে যাই’ স্লোগান নিয়ে হাসপাতালটি সাভারে স্থানান্তরিত হয়। তখন নামকরণ করা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নিজ হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠান।
চিকিৎসা সেবার সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না এমন নারীদের মাত্র কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েই ফিল্ড হাসপাতালে সেবার কাজ করেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। মূলত সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব- সেটি করে দেখিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর এই অভিযাত্রা এবং অর্জন চিকিৎসা বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেট-এ প্রবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নিবন্ধটি প্রকাশের পর প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ধারণাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ও শিক্ষাজীবন
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তাঁর স্কুল ছিল ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউট। এরপর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখানে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। মেডিকেলে পড়ার সময়ই তিনি বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মানুষের অধিকার আদায়ের ব্রত নিয়েই সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করেছেন তিনি। কোনো অন্যায়ই সহ্য করেননি কখনো। ঢাকা মেডিকেল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৬৪ সালে এমবিবিএম পাস করেন। এরপর সাধারণ সার্জারি ও ভাস্কুলার সার্জারিতে প্রশিক্ষণ নিতে চলে যান যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়াকালীনই শুরু হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে চলে আসেন ভারতে।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে তাঁর ভাবনা
মানুষের রোগ হবে এটিই স্বাভাবিক- এমনটাই বলতেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু সব মানুষের স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার লড়াই করেছেন আজীবন।
স্বাস্থ্য সেবার জন্য সব ক্ষেত্রে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসক অপরিহার্য বলে মনে করতেন না তিনি। স্বল্প শিক্ষিত মানুষকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েও প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস করতেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি সেটি প্রমাণ করে দেখিয়েছেনও।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর কোনো উদ্যোগকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে চাননি। তাঁর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্ম কৌশল ও উদ্যোগ সরকারই যেন সারা দেশে প্রয়োগ করে- এটিই তিনি চাইতেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রথম স্বাস্থ্য বিমা চালু হয়। যার সুফল এখন বহু মানুষ পাচ্ছেন।
স্বাধীনতার পর দেশের ওষুধের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য ছিল বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির। তখন বাজারে ৪ হাজার ধরনের ওষুধ ছিল। এর প্রায় সবই আমদানি করা হতো। ওষুধের দাম ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে, ১৯৮২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতি সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন এনে দেয়। এই ওষুধ নীতি দেশি কোম্পানিগুলোকে ওষুধ উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। দেশে তৈরি হওয়া ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ হয়। এই ওষুধ নীতিই দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। এই নীতির ফলস্বরূপই বাংলাদেশ এখন ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ।
এই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এই ওষুধ নীতি নিয়ে বিরোধের জেরেই বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বা বিএমএ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
দেশের মানুষকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ দেওয়ার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ওষুধ কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বৈশ্বিকভাবে বিকল্প স্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভূমিকা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন আয়োজন করে। এর বিকল্প হিসেবে কয়েক বছর পর পর আয়োজন করা হয় পাবলিক হেলথ অ্যাসেম্বলি বা জনগণের স্বাস্থ্য সম্মেলন। পিপলস হেলথ মুভমেন্ট নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এর আয়োজক। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে।
১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাঁকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড।
কানাডার ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি।
যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।
তিনি একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য।
গবেষণা ও বক্তৃতা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন এবং সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নিয়েছেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধ নীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে অন্যতম ‘রিসার্চ: অ্যা মেথড অব কলোনাইজেশন’। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে। এরপর বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্পেনিস ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
আলোচিত-সমালোচিত এক স্বাধীন চিন্তার মানুষ
ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আর নির্দিষ্ট কোনো মতের রাজনীতির সঙ্গে থাকেননি। তবে তাঁর রাজনৈতিক মত প্রভাব ফেলেছে সব সময়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বন্ধু ও সহযোদ্ধারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইংল্যান্ডে থাকার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রকাশ্যে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। এর বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ভারতে আসেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীকে বহনকারী হেলিকপ্টারে হামলা হয়েছিল। সেই হেলিকপ্টারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় সাভারে গড়ে তোলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর অম্ল-মধুর সম্পর্কের কথা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন। প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে বঙ্গবন্ধুকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর বাকশালের বিরোধিতা করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানী রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁর হয়ে কাজ করেছেন।
সখ্য ছিল দুই সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এইচএম এরশাদের সঙ্গেও। এক সময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন বিএনপি এবং দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে।
তবে সামরিক শাসকদের সময়েই স্বাস্থ্য নীতি, ঔষধ নীতি ও নারী শিক্ষা, এমনকি সহজে দেশের মানুষের জন্য পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজি করানো এবং প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে সরকারকে প্রভাবিত করতে জাফরুল্লাহ ভূমিকা অনস্বীকার্য।
রাজনীতিতে সর্বশেষ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এ নিয়ে অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর জেরে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার ঘটনাও ঘটে। বেশ কিছু মামলাতেও তাঁকে আসামি করা হয়।
দেশে কোভিড মহামারির সময় সরকারের মহামারি মোকাবিলা কৌশল ও পদক্ষেপ এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত টেস্ট কিট ব্যাপক আলোচনায় আসেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শুরু থেকে সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবই প্রকাশ করা হয়েছে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনের শেষ বছরগুলোতে রোগ–ব্যধির সঙ্গে লড়েছেন। নিজেই দীর্ঘদিন জটিল কিডনি রোগে ভুগেছেন। সাশ্রয়ী ডায়ালাইসিসের জন্য গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছেন।
মানুষ যাতে প্রতিস্থাপনের জন্য সহজে কিডনি পেতে পারে সেজন্য দেশের আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছে ডা. জাফরুল্লাহ। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করারও ইচ্ছা ছিল।
চিকিৎসার জন্য কখনো বিদেশে যেতে রাজি হননি। এমনকি বিনা খরচে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব পেয়েও শুধু বিদেশে যেতে হবে বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় সাধারণ মানুষের জন্য দেশেই কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করে যেতে চেয়েছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসা নিয়েছেন সব সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ট্রাস্টি হিসেবে।
দেশে বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা সাড়ে ১৫ লাখের মতো। তাদের সবাইকে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিতে হবে। তবে এরপর প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা জমা দিতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে গত ১ সেপ্টেম্বর এমনটাই জানানো হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেফরিদপুরের মল্লিকপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে খাগড়াছড়ি পরিবহন ও গ্রিন এক্সপ্রেস বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের দুর্ঘটনাস্থলকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ বা বারংবার দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতীয় তদন্ত কমিটি। মৃতুফাঁদে পরিণত ওই সড়কটির কাঠামোগত ত্রুটি সারানোসহ একগুচ্ছ সুপারিশ করে জরুরি ভিত্তিতে তা বাস্তবায়নের
২ ঘণ্টা আগেদেশের সব টিভি চ্যানেল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দিনে কমপক্ষে দুবার প্রচার করতে হবে ‘জুলাই অনির্বাণ’ ভিডিওচিত্র। আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কথা জানায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগ জনগণকে অবহিত করার লক্ষ্যে তথ্য..
৩ ঘণ্টা আগেনতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন ও অপর চার নির্বাচন কমিশনারের শপথ আগামী রোববার অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ রোববার বেলা দেড়টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাঁদের শপথ পাঠ করাবেন। সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে এ কথা জানান।
৪ ঘণ্টা আগে