ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯: ৪২
Thumbnail image

আজ ১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন। পরে এই বৈদ্যনাথতলার নামকরণ হয় ঐতিহাসিক মুজিবনগর।

এর আগে একই বছরের ১০ এপ্রিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। পরদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন। তাঁর এই ভাষণ আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। এই ভাষণে তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধযুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।

এ ছাড়া ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তাজউদ্দীন আহমদের ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারেন, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে। এরই পথ পরিক্রমায় ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পরে ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্ররূপে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে প্রবাসী সরকারের এক অধ্যাদেশে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

১০ এপ্রিল পাকিস্তানের নির্বাচিত জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি গোপন স্থানে মিলিত হয়ে প্রবাসী সরকার গঠন করেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি) নির্বাচন করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম পরে তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন।

জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার এবং মেজর জেনারেল আবদুর রব চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। মুজিবনগর সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে ভারত ও ভুটান এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়।

ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত এই দিনকে বরাবরের মতো স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সবার সঙ্গে একত্র হয়ে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো যথাযথ মর্যাদা এবং গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ ও পালন করে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সোমবার ভোর ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারা দেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।

এদিকে মুজিবনগরের কর্মসূচির মধ্যে ভোর ৬টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে গার্ড অব অনার এবং বেলা ১১টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে মুজিবনগর দিবসের জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত