রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৯০ হাজার টন সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি আজ বুধবার এটিসহ মোট আটটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করে। 

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ফর্টিগ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ২ লাখ ৮০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি আগেই স্বাক্ষর হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি টন ইউরিয়া সার ৪৫০ দশমিক ৮৩৩ ডলার হিসাবে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ১১৫ কোটি ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৮ টাকা ব্যয় হবে। 

সামসুল আরেফিন জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে কাতারের মুনতাজ কোম্পানির কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি হয়েছিল গত ১৯ মে। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি টন ৪৩৬ দশমিক ৮৩ ডলার দরে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১১১ কোটি ৭১ লাখ ৯২ হাজার ৭২৫ টাকায় আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সৌদি বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের কাছ থেকে প্রতি টন ৪২৫ দশমিক ৮৩ ডলার হিসাবে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এতে খরচ হবে ১০৮ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার ২২৫ টাকা। 

বুধবার কমিটির বৈঠকে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় রামগড় স্থলবন্দর উন্নয়নের পূর্ত কাজ ১২৩ কোটি ৯১ লাখ ৭১ হাজার ৪৬৩ টাকায় ঢাকার মনিকো লিমিটেডকে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করার পর কাজটি করতে ছয়টি দরপত্র জমা পড়েছিল। সেখান থেকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানান সামসুল আরেফিন। 

একই বৈঠকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে উজু ও সুজিন কোরিয়া নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই কাজে ব্যয় হবে ৪১ কোটি ৩০ লাখ ১৪ হাজার টাকা। ক্রয় কমিটি ২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের (৩ য়,৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির) বাংলা ও ইংরেজি সংস্করণের ৯৮টি লটের মধ্যে ৪৬টি লটে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ২১ হাজার ১৯০ কপি বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ৭৩ কোটি ৮২ লাখ ৮১ হাজার ১৪০ টাকা। এ ছাড়া সিঙ্গাপুরভিত্তিক এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনালকে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রোটিন মাত্রার ৫০ হাজার টন গম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তারা ১৭৯ কোটি ৫০ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫০ টাকায় ৫০ হাজার টন গম সরবরাহ করবে। প্রতি টন গমের দাম ধরা হয়েছে ৪২১ দশমিক ৩৮ ডলার। রাশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, রোমানিয়া, ইউক্রেন থেকে এসব গম সংগ্রহ করে কোম্পানিটি সরবরাহ করবে। 

পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিতরণ ট্রান্সফরমার ও খুঁটি কেনার দুটি প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। একটি প্রস্তাবে ৮৪ কোটি ৪২ লাখ ৬৭ হাজার ৫১৩ টাকায় ১৩ হাজার ৪০টি ট্রান্সফরমার এবং আরেকটি প্রস্তাবে বাংলাদেশ মেশিন ট্যুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ৭১ কোটি ২৩ লাখ ২১৯২ টাকায় ৫১ হাজার ৩৫৯টি এসপিসি পোল বা খুঁটি কেনা হবে। এ ছাড়া নেত্রকোনা শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা ৪৯৮ দশমিক ৪৫ একর ভূমির উন্নয়নকাজ ২৩৯ কোটি ৫৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮৩২ টাকায় ঢাকার এম/এস নুরুজ্জামান খানকে দেওয়া হয়েছে।