এনসিটিবি কাগজ না কেনায় কর্ণফুলী পেপার মিলে বড় সংকট

ঝুলন দত্ত
Thumbnail image

কাপ্তাই (রাঙামাটি) : কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী পেপার মিলে (কেপিএম) ৫০ কোটি টাকার কাগজ অবিক্রীত পড়ে আছে। অথচ টাকার অভাবে ২ মাস ধরে মিলের শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রয়েছে। কাগজে গোডাউন পূর্ণ থাকায় উৎপাদনের পরিমাণও সীমিত করা হয়েছে। 

কেপিএমের একটি সূত্র জানায়, কেপিএম সরকারি প্রতিষ্ঠান। এনসিটিবিসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কেপিএম থেকে কাগজ কেনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতি বছর সরকার লাখ-লাখ শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে পাঠ্যবই তুলে দিচ্ছে। এই বইয়ের কাগজগুলো জাতীয় পাঠ্য পুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কে সরবরাহ করত কেপিএম। কিন্তু, বর্তমানে এনসিটিবি কেপিএম থেকে কাগজ না কিনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ কিনছে। এর ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠান কেপিএম আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কেপিএমের গুদামগুলোতে থরে থরে কাগজ রাখা আছে। বলা যায় কেপিএমে কাগজের পাহাড় জমে গেছে। গুদামে কাগজ রাখার জায়গা না থাকায় মেশিন হাউসের বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করেও কাগজ রাখা হয়েছে। 

এদিকে শ্রমিক নেতারা জানান, সর্বশেষ গত মার্চ মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। মার্চের পর আজ পর্যন্ত বেতন পান নাই। কর্তৃপক্ষ এপ্রিল মাসের বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে। কিন্তু কবে বেতন হবে তা জানায়নি।

কারখানার সদ্য বিদায়ী সিবিএ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান—শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দিনরাত পরিশ্রম করে কাগজ উৎপাদন করছে। উৎপাদনের স্বার্থে শ্রমিকেরা ওভারটাইম করেছে। কোন সরকারি ছুটিও (মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শিশু দিবস, বাংলা নববর্ষ, মে দিবস, ঈদ) ভোগ না করে সবাই কাগজ উৎপাদন কাজে ছিলেন। এত পরিশ্রমের পরও সময়মতো বেতন না পেয়ে দুঃখ কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে কেপিএমের জি এম (উৎপাদন) গোলাম সরওয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ৫ হাজার মেট্রিকটন কাগজ কেপিএম এর গোডাউনে পড়ে আছে। কাগজ বিক্রি না হওয়ায় উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে উৎপাদন সীমিত রাখা হয়েছে। এই কাগজ বিক্রি হলে কেপিএম আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান মো. এহছানে এলাহী এবং বিসিআইসি’র করপোরেট ডিরেক্টর আসাদুর রহমান সম্প্রতি কেপিএম পরিদর্শন করেন। তাঁরা কেপিএম কারখানা ঘুরে দেখেন এবং উৎপাদিত কাগজের মান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলো যাতে কেপিএমের কাগজ নেয় সে জন্য তাঁরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবার আশ্বাস দেন। তবে এখন পর্যন্ত কাগজ বিক্রির ব্যাপারে কার্যকর কোন সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত