আগামী বছর নির্বাচিত সরকার পাবে দেশবাসী, আশাবাদ উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২: ২৫
Thumbnail image
শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ফাইল ছবি

আগামী বছর দেশে একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘নতুন বছরে দেশবাসী একটি রাজনৈতিক সরকার পাবে বলে প্রত্যাশা করি। তবে এটি আমার একান্তই ব্যক্তিগত মত। ভবিষ্যতে কী হবে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা মুশকিল।’

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল শনিবার এক সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে দেশ ও অর্থনীতি নিয়ে আরও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের বক্তব্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সঙ্গে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার গুরুত্বের বিষয়টি বিশেষভাবে উঠে আসে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে অর্থনৈতিক বৈষম্য ও আয়বৈষম্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৈষম্য দূর করতে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হলেও বাংলাদেশের শিক্ষা ও কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নে এখনো দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া বাকি।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদ্মা সেতুর মতো কয়েকটি ভালো প্রকল্পের প্রশংসা করলেও ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের বেশ কয়েকটি প্রকল্প শুধু ‘প্রেস্টিজ প্রকল্প’ বা সুখ্যাতির জন্য নেওয়া হয়েছিল। এসব প্রকল্পের বাস্তব প্রভাব মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।

এ ছাড়া বড় কোম্পানিগুলোর অর্থ পাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ‘বেক্সিমকোর মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থিতিপত্রে (ব্যালান্সশিট) অনেক টাকা দেখালেও তা দেশে নেই। ব্যাংকে জনগণের টাকা থাকলেও সেই অর্থ দেশের বাইরে চলে গেছে। শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ইন্দরমিত এস গিল বলেন, মধ্যম আয়ের ফাঁদ থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিতে হবে। মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। উদ্যোক্তা তৈরি এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ সুগম করতে হবে।

ব্যবসায়ীরা নীতিনির্ধারণে প্রভাব খাটিয়েছে

চার দিনব্যাপী এই বার্ষিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্মেলনের ‘অ্যাজেন্ডা ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড সোশ্যাল রিফর্ম’ শীর্ষক পাবলিক লেকচার অনুষ্ঠানে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, গত সরকারে জাতীয় সংসদে অনেকে ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁরা নীতিনির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করেছেন। এ জন্য সংসদ থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত একটি ক্রনি ক্যাপিটালিজম তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে চামচা পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটায় বিগত সরকারের মধ্যে অগণতান্ত্রিক মনোভাব তৈরি হয়েছে।

দেশে কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করা না গেলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে না। আমাদের রপ্তানি খাত শুধু পোশাকনির্ভর হলে চলবে না। রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে। আমাদের নির্মাণশিল্প, সিরামিক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পের বাজার যখন কাজ করে না, তখন রাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। কিন্তু এখানে রাষ্ট্রই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত