আনু মুহাম্মদ অর্থনীতিবিদ ও অ্যাকটিভিস্ট। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। দীর্ঘ সময় তিনি জাতীয় স্বার্থে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির অন্যতম সংগঠক। তিনি ত্রৈমাসিক ‘সর্বজন কথা’ পত্রিকার সম্পাদক। অসময়ে ভ্যাট বৃদ্ধি করার কারণে জনজীবনে এর প্রভাব এবং অর্থনীতির সংকট থেকে উত্তরণ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানা।
মাসুদ রানা
দেশে দীর্ঘ সময় ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়িয়েই যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে ঋণের সুদহার। তারপরেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ কী?
কারণটা হলো, বাংলাদেশে এখনো প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যেমন শ্রীলঙ্কায় সব ধরনের অর্থনৈতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি ছিল, রিজার্ভের ধস নেমেছিল এবং জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতি ছিল—এ রকম নানা ধরনের সমস্যা সেখানে ছিল। সেই সমস্যাগুলো আমাদের চেয়ে বেশি ছিল। শ্রীলঙ্কা কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সবকিছু সমাধান করতে পেরেছে। তারা পারল এ কারণে যে প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথাযথভাবে কাজ করতে পেরেছিল।
বাংলাদেশের ধরনটা দাঁড়িয়েছিল, ওপরের আদেশে সবকিছু হয়। ধরেন মুদ্রানীতি কিংবা রাজস্ব নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যক্তির ভূমিকা বড় ছিল। সেখান থেকে বাংলাদেশ এখনো বের হয়ে আসতে পারেনি। আর বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ কিছু গোষ্ঠীর হাতে এখনো আছে। এটাকে অর্থনীতির ভাষায় বলা হয়, অলিগার্কি। সেটা কতিপয় গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ করে। কতিপয় গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অলিগার্কি ভেঙে দিতে হবে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ বাড়াতে হবে। এসব ক্ষেত্রে এখনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এর সঙ্গে ডলারের ক্রাইসিস বড় ভূমিকা পালন করছে। সমাজের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থার অভাবও বড় ভূমিকা পালন করেছে।
কীভাবে আস্থার অভাব তৈরি হয়েছে?
বিগত স্বৈরশাসক একটা জগদ্দল পাথরের মতো বসে ছিল। তারা সব প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে স্বৈরশাসনের কায়দায় প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছিল। স্বৈরশাসনের পতনের পরে সেই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে যে কার্যকর করা দরকার, সেটা এখন পর্যন্ত করা হয়নি। সরকারের সে রকম কোনো পদক্ষেপও আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
এখনো দেখা যাচ্ছে, সচিবালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বড় পদগুলো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও মব ভায়োলেন্স হচ্ছে, অন্য পক্ষ সেই পদগুলো দখল করার জন্য চেষ্টা করছে। মানে একটা অনিশ্চয়তা ও অনাস্থার অবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নতুন অনেক লোক নিয়োগ করা হয়েছে, কিন্তু তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এসবের ফলাফল জনগণের ওপর পড়ছে।
মূল্যস্ফীতি কমছে না, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। জনগণের মধ্যে যে ধরনের প্রত্যাশা ছিল, সেসবের পূরণ হচ্ছে না। আগের সমস্যা যেমন গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট, যানজটের সমস্যা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কোনোটারই কিন্তু কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। ফলে প্রথম দিকে জনগণের মধ্যে প্রত্যাশা অনেক উঁচুতে ছিল, কিন্তু কয়েক মাস চলে যাওয়ার পরে আস্তে আস্তে সেটা কমে যাচ্ছে। এই অনাস্থাটা অর্থনীতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে।
সম্প্রতি অসময়ে অনেক পণ্যে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির শর্তের কারণে করা হয়েছে। ভ্যাট আরোপ না করে কি অন্য উপায়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেত না?
অবশ্যই করা যেত। এটা তো নির্ভর করে সরকার কতটা দায়িত্ব নিতে সক্ষম বা ইচ্ছুক? সরকার জনগণের প্রত্যাশার ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না। উপলব্ধির মধ্যে থাকলে আইএমএফের চেয়ে জনগণের প্রত্যাশার গুরুত্ব বেশি পেত। সেটা পায়নি। আইএমএফের কিছু শর্ত থাকে, যেগুলো পালন না করলেও তার প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। যেমন, দুর্নীতি দূর করা, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্বচ্ছতা আনা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু তারা এসব ব্যাপারে সিরিয়াস না। তারা সিরিয়াস বিভিন্ন জিনিসের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি করতে। আইএমএফ বৃহৎ পুঁজিপতি গোষ্ঠীকে কখনো বৈরিতার মধ্যে ফেলতে চায় না। সুতরাং তাদের পাকড়াও করার জন্য কোনো প্রকার পরামর্শ দেখা যায় না।
সরকার বলে, আইএমএফের ঋণ না নিলে আমরা বিপদে পড়ব। সেটা আবার পরিমাণের দিক থেকে বড় কোনো অঙ্ক না। আইএমএফ তিন বছরের জন্য যে পরিমাণ ঋণ দিচ্ছে, দুই মাসে আমাদের প্রবাসীরা সেটা পাঠিয়ে থাকে। সুতরাং এটা না নিলে আমরা যে বিপদে পড়ব, ব্যাপারটা সে রকম না। তারপরও শেখ হাসিনার সরকার এ ঋণটা কেন নিয়েছিল? নিয়েছিল এ কারণে যে আইএমএফের ঋণ নিলে বিশ্বব্যাপী আরও ঋণ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু এ সরকারের মধ্যে তো সেসব ব্যাপার থাকার কথা না। সরকারের উচিত ছিল যে জনগণের ওপর চাপ পড়বে, তাই আমরা সেটা করতে পারব না। এ ধরনের মেরুদণ্ড থাকা এ সরকারের দরকার ছিল। আর প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম অনুযায়ী, বাজেট ছাড়া এটা করারই সুযোগ নেই। যেমন বাজেট হওয়ার পর আলাপ-আলোচনা হয়। তারপর বাজেট গৃহীত হয়। এখন এটার পথ ও পদ্ধতি কী হবে? সেটা নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।
আসলে রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য প্রধান উৎস আগের সরকার যেমন, তেমনি বর্তমান সরকারও মনোযোগ দিচ্ছে না। কারণ বিপুল সম্পদের কেন্দ্রীভবন রাতারাতি হয়েছে বেআইনি ও চোরাই পথসহ নানা উপায়ে। আসলে তাদের সম্পদের দিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। সেখান থেকে সম্পদ ও কর দুটোই সরকারের আওতায় নিয়ে আসা। আইএমএফ যে জিডিপির কর রেসিও বাড়ানোর কথা বলেছে, সেটা করা সম্ভব ছিল। সরকার সেসব দিকে মনোযোগ দিচ্ছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না।
ভ্যাট বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছেন, তাতে সাধারণ জনগণের কোনো সমস্যা হবে না!
আগের সরকারের বাণিজ্য বা অর্থমন্ত্রীরা যেভাবে কথা বলতেন, এখন আমরা দেখছি একই রকম কথাবার্তা শুনতে হচ্ছে উপদেষ্টাদের কাছ থেকে। ‘এটা জনগণের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না’ বা ‘জনগণের আয় বেড়েছে’—এসব কথা আগেও যেমন শোনা গেছে, এখনো আমাদের শুনতে হচ্ছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে চালাকি করে দাম বাড়িয়ে মানুষজন যখন প্রতিবাদ করে, তখন আবার কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগের সরকারের চেয়ে এই সরকারের পার্থক্যটা কোথায়, সেটা তো বুঝতে হবে? কিন্তু সেটা বোঝা যাচ্ছে না এবং সেটাই হলো একটা সমস্যা।
বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগ নেই বললে চলে, জ্বালানি সংকটের কারণে ব্যবসায় ধস নেমেছে। এই সরকার কি গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করতে পারছে?
এসব তো মতাদর্শিক রাজনীতির ওপর নির্ভর করে। যাঁরা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাঁরা যদি আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংকের দৃষ্টি দিয়ে অর্থনীতিকে দেখেন এবং তাঁদের ওপর নির্ভরশীল যে কাঠামো, সেই কাঠামো পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ না গ্রহণ করেন, তাহলে তো পরিবর্তন হবে না। অন্তত আগে এই নীতিগুলো গ্রহণের ফলে কী হয়েছে, সেটার যদি পর্যালোচনা না করে, কীভাবে দেশ আরও ঋণগ্রস্ত হয়েছে, কীভাবে প্রাণ-প্রকৃতিবিধ্বংসী প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, কীভাবে মহা দুর্নীতি সৃষ্টি হয়েছে—এই পথগুলো তো বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের দেখানো। সেই কাঠামোটা পরিবর্তনের আগ্রহটা আগে তো তৈরি হতে হবে। মানে দৃষ্টিভঙ্গিটা তৈরি করতে হবে আগে। এটার জন্য কাজ করতে হবে। এই নির্ভরশীলতার কাঠামো দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগটা নিতে হবে। সেটার জন্য অন্ততপক্ষে চেষ্টা এবং নীতিগত অবস্থান নিতে হবে। কিন্তু সেটা এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।
ভ্যাট বাড়িয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য। কিন্তু এটা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে কেন?
কতিপয় গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থেকে অর্থনীতিকে আগে মুক্ত করতে হবে। তারপর পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে। এই সরকার যদি সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থার সূচনা করতে পারত, তাহলে বড় ধরনের পরিবর্তনের একটা সূচনা হতে পারত। এই সরকার তো এসব ব্যাপকভাবে করতে পারবে না, কিন্তু সূচনা করতে পারত। এতে সরকারের নীতিগত অবস্থান তৈরি হতো। সেটা না করার কারণে দেশের অর্থনীতি আগের সরকারের আমলে যেভাবে কিছু গোষ্ঠীর হাতে নিয়ন্ত্রিত ছিল, এখনো ঠিক সে রকমই আছে। আবার বাজারব্যবস্থাপনায় আগের সরকারের যেমন প্রকৃত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অনীহা ছিল, এই সরকারের ক্ষেত্রেও কোনো ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে না। যেমন বাজারে পণ্যের দাম নির্দিষ্ট করে দেওয়া এবং ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার—সেসবের কিছু করা হচ্ছে না। সামগ্রিকভাবে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানো, সরবরাহ চেইন ঠিক করা। যেমন আগের সরকারের আমলে ব্যাপক চাঁদাবাজি ছিল। এটা পণ্যের দাম বাড়ানোর অন্যতম কারণ।
আগের চাঁদাবাজি তো নেই। তাহলে তো এমনিতেই পণ্যের দাম কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমরা শুনতে পাচ্ছি, নতুনভাবে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। প্রথমত, সরকারকে আগে এসব স্বীকার করতে হবে; দ্বিতীয়ত, এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না।
সার্বিকভাবে অর্থনীতির এই রুগ্ণ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে কী করণীয়?
এখন জ্বালানি-সংকট বড় ব্যাপার। আগের সরকার বাপেক্সকে পঙ্গু করে এবং কমিশনের লোভে বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। আমদানি, ঋণনির্ভর এবং পরিবেশবিধ্বংসী অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। যেমন এলএনজি আমদানি, কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র করার ফলে আমাদের ঋণ বেড়েছে, ব্যয় বেড়েছে কিন্তু অর্থনীতির কোনো স্থিতিশীলতা ও নিশ্চয়তা আসেনি। যেমন এলএনজি টার্মিনাল ও বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এসবের বোঝা জনগণের ওপর পড়ছে।
এই সরকারের প্রথম কাজটা করার দরকার ছিল বাপেক্সকে শক্তিশালী করা এবং তার কাজের ক্ষেত্র বাড়ানো। সমুদ্র এবং স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের দিকে নজর দেওয়া। একই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে জোরদার অবস্থান নেওয়া। এসব উদ্যোগ গ্রহণ করলে বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ-সংকট সমাধানের পথে যেতে পারত। এতে মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরত।
কারণ, জ্বালানি-সংকটের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। গ্যাস সরবরাহ, বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে।
অন্যদিকে খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা দরকার ছিল। তার বাইরে সহজ শর্তে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে হতো। সেগুলোর জন্য বিশেষ স্কিম চালু করা দরকার ছিল। যাতে ছোট ছোট বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হয়ে বিনিয়োগ করেন। মানে অর্থনীতিকে চাঙা করার জন্য স্বচ্ছতা, জবাবদিহি তৈরি করা দরকার।
আর সরকার যে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে এবং বিনিয়োগের নতুন নতুন ক্ষেত্রকে যথাযথভাবে অ্যাড্রেস করছে—সেই বার্তা তো দিতে হবে। এই বার্তাগুলো দিলে এমনিতেই সংকট কেটে যাওয়ার কথা। কারণ, বিদেশে বড় আকারের সম্পদ পাচার বন্ধ হয়েছে। এতে রিজার্ভ বেড়ে যাওয়ার কথা এবং জিনিসপত্রের দাম কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু পরিস্থিতির পরিবর্তন যে হচ্ছে না, এর একটা বড় কারণ হচ্ছে, বর্তমান সরকার পরিবর্তনের জন্য যে ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার, সে রকম সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করছে না।
দেশে দীর্ঘ সময় ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়িয়েই যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে ঋণের সুদহার। তারপরেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ কী?
কারণটা হলো, বাংলাদেশে এখনো প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যেমন শ্রীলঙ্কায় সব ধরনের অর্থনৈতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি ছিল, রিজার্ভের ধস নেমেছিল এবং জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতি ছিল—এ রকম নানা ধরনের সমস্যা সেখানে ছিল। সেই সমস্যাগুলো আমাদের চেয়ে বেশি ছিল। শ্রীলঙ্কা কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সবকিছু সমাধান করতে পেরেছে। তারা পারল এ কারণে যে প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথাযথভাবে কাজ করতে পেরেছিল।
বাংলাদেশের ধরনটা দাঁড়িয়েছিল, ওপরের আদেশে সবকিছু হয়। ধরেন মুদ্রানীতি কিংবা রাজস্ব নীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যক্তির ভূমিকা বড় ছিল। সেখান থেকে বাংলাদেশ এখনো বের হয়ে আসতে পারেনি। আর বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ কিছু গোষ্ঠীর হাতে এখনো আছে। এটাকে অর্থনীতির ভাষায় বলা হয়, অলিগার্কি। সেটা কতিপয় গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ করে। কতিপয় গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অলিগার্কি ভেঙে দিতে হবে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ বাড়াতে হবে। এসব ক্ষেত্রে এখনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এর সঙ্গে ডলারের ক্রাইসিস বড় ভূমিকা পালন করছে। সমাজের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থার অভাবও বড় ভূমিকা পালন করেছে।
কীভাবে আস্থার অভাব তৈরি হয়েছে?
বিগত স্বৈরশাসক একটা জগদ্দল পাথরের মতো বসে ছিল। তারা সব প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে স্বৈরশাসনের কায়দায় প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছিল। স্বৈরশাসনের পতনের পরে সেই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে যে কার্যকর করা দরকার, সেটা এখন পর্যন্ত করা হয়নি। সরকারের সে রকম কোনো পদক্ষেপও আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
এখনো দেখা যাচ্ছে, সচিবালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বড় পদগুলো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও মব ভায়োলেন্স হচ্ছে, অন্য পক্ষ সেই পদগুলো দখল করার জন্য চেষ্টা করছে। মানে একটা অনিশ্চয়তা ও অনাস্থার অবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নতুন অনেক লোক নিয়োগ করা হয়েছে, কিন্তু তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এসবের ফলাফল জনগণের ওপর পড়ছে।
মূল্যস্ফীতি কমছে না, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। জনগণের মধ্যে যে ধরনের প্রত্যাশা ছিল, সেসবের পূরণ হচ্ছে না। আগের সমস্যা যেমন গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট, যানজটের সমস্যা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কোনোটারই কিন্তু কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। ফলে প্রথম দিকে জনগণের মধ্যে প্রত্যাশা অনেক উঁচুতে ছিল, কিন্তু কয়েক মাস চলে যাওয়ার পরে আস্তে আস্তে সেটা কমে যাচ্ছে। এই অনাস্থাটা অর্থনীতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে।
সম্প্রতি অসময়ে অনেক পণ্যে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির শর্তের কারণে করা হয়েছে। ভ্যাট আরোপ না করে কি অন্য উপায়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেত না?
অবশ্যই করা যেত। এটা তো নির্ভর করে সরকার কতটা দায়িত্ব নিতে সক্ষম বা ইচ্ছুক? সরকার জনগণের প্রত্যাশার ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না। উপলব্ধির মধ্যে থাকলে আইএমএফের চেয়ে জনগণের প্রত্যাশার গুরুত্ব বেশি পেত। সেটা পায়নি। আইএমএফের কিছু শর্ত থাকে, যেগুলো পালন না করলেও তার প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। যেমন, দুর্নীতি দূর করা, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্বচ্ছতা আনা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু তারা এসব ব্যাপারে সিরিয়াস না। তারা সিরিয়াস বিভিন্ন জিনিসের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি করতে। আইএমএফ বৃহৎ পুঁজিপতি গোষ্ঠীকে কখনো বৈরিতার মধ্যে ফেলতে চায় না। সুতরাং তাদের পাকড়াও করার জন্য কোনো প্রকার পরামর্শ দেখা যায় না।
সরকার বলে, আইএমএফের ঋণ না নিলে আমরা বিপদে পড়ব। সেটা আবার পরিমাণের দিক থেকে বড় কোনো অঙ্ক না। আইএমএফ তিন বছরের জন্য যে পরিমাণ ঋণ দিচ্ছে, দুই মাসে আমাদের প্রবাসীরা সেটা পাঠিয়ে থাকে। সুতরাং এটা না নিলে আমরা যে বিপদে পড়ব, ব্যাপারটা সে রকম না। তারপরও শেখ হাসিনার সরকার এ ঋণটা কেন নিয়েছিল? নিয়েছিল এ কারণে যে আইএমএফের ঋণ নিলে বিশ্বব্যাপী আরও ঋণ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু এ সরকারের মধ্যে তো সেসব ব্যাপার থাকার কথা না। সরকারের উচিত ছিল যে জনগণের ওপর চাপ পড়বে, তাই আমরা সেটা করতে পারব না। এ ধরনের মেরুদণ্ড থাকা এ সরকারের দরকার ছিল। আর প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম অনুযায়ী, বাজেট ছাড়া এটা করারই সুযোগ নেই। যেমন বাজেট হওয়ার পর আলাপ-আলোচনা হয়। তারপর বাজেট গৃহীত হয়। এখন এটার পথ ও পদ্ধতি কী হবে? সেটা নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।
আসলে রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য প্রধান উৎস আগের সরকার যেমন, তেমনি বর্তমান সরকারও মনোযোগ দিচ্ছে না। কারণ বিপুল সম্পদের কেন্দ্রীভবন রাতারাতি হয়েছে বেআইনি ও চোরাই পথসহ নানা উপায়ে। আসলে তাদের সম্পদের দিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। সেখান থেকে সম্পদ ও কর দুটোই সরকারের আওতায় নিয়ে আসা। আইএমএফ যে জিডিপির কর রেসিও বাড়ানোর কথা বলেছে, সেটা করা সম্ভব ছিল। সরকার সেসব দিকে মনোযোগ দিচ্ছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না।
ভ্যাট বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছেন, তাতে সাধারণ জনগণের কোনো সমস্যা হবে না!
আগের সরকারের বাণিজ্য বা অর্থমন্ত্রীরা যেভাবে কথা বলতেন, এখন আমরা দেখছি একই রকম কথাবার্তা শুনতে হচ্ছে উপদেষ্টাদের কাছ থেকে। ‘এটা জনগণের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না’ বা ‘জনগণের আয় বেড়েছে’—এসব কথা আগেও যেমন শোনা গেছে, এখনো আমাদের শুনতে হচ্ছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে চালাকি করে দাম বাড়িয়ে মানুষজন যখন প্রতিবাদ করে, তখন আবার কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগের সরকারের চেয়ে এই সরকারের পার্থক্যটা কোথায়, সেটা তো বুঝতে হবে? কিন্তু সেটা বোঝা যাচ্ছে না এবং সেটাই হলো একটা সমস্যা।
বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগ নেই বললে চলে, জ্বালানি সংকটের কারণে ব্যবসায় ধস নেমেছে। এই সরকার কি গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করতে পারছে?
এসব তো মতাদর্শিক রাজনীতির ওপর নির্ভর করে। যাঁরা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাঁরা যদি আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংকের দৃষ্টি দিয়ে অর্থনীতিকে দেখেন এবং তাঁদের ওপর নির্ভরশীল যে কাঠামো, সেই কাঠামো পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ না গ্রহণ করেন, তাহলে তো পরিবর্তন হবে না। অন্তত আগে এই নীতিগুলো গ্রহণের ফলে কী হয়েছে, সেটার যদি পর্যালোচনা না করে, কীভাবে দেশ আরও ঋণগ্রস্ত হয়েছে, কীভাবে প্রাণ-প্রকৃতিবিধ্বংসী প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, কীভাবে মহা দুর্নীতি সৃষ্টি হয়েছে—এই পথগুলো তো বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের দেখানো। সেই কাঠামোটা পরিবর্তনের আগ্রহটা আগে তো তৈরি হতে হবে। মানে দৃষ্টিভঙ্গিটা তৈরি করতে হবে আগে। এটার জন্য কাজ করতে হবে। এই নির্ভরশীলতার কাঠামো দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগটা নিতে হবে। সেটার জন্য অন্ততপক্ষে চেষ্টা এবং নীতিগত অবস্থান নিতে হবে। কিন্তু সেটা এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।
ভ্যাট বাড়িয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য। কিন্তু এটা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে কেন?
কতিপয় গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থেকে অর্থনীতিকে আগে মুক্ত করতে হবে। তারপর পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে। এই সরকার যদি সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থার সূচনা করতে পারত, তাহলে বড় ধরনের পরিবর্তনের একটা সূচনা হতে পারত। এই সরকার তো এসব ব্যাপকভাবে করতে পারবে না, কিন্তু সূচনা করতে পারত। এতে সরকারের নীতিগত অবস্থান তৈরি হতো। সেটা না করার কারণে দেশের অর্থনীতি আগের সরকারের আমলে যেভাবে কিছু গোষ্ঠীর হাতে নিয়ন্ত্রিত ছিল, এখনো ঠিক সে রকমই আছে। আবার বাজারব্যবস্থাপনায় আগের সরকারের যেমন প্রকৃত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অনীহা ছিল, এই সরকারের ক্ষেত্রেও কোনো ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে না। যেমন বাজারে পণ্যের দাম নির্দিষ্ট করে দেওয়া এবং ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার—সেসবের কিছু করা হচ্ছে না। সামগ্রিকভাবে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানো, সরবরাহ চেইন ঠিক করা। যেমন আগের সরকারের আমলে ব্যাপক চাঁদাবাজি ছিল। এটা পণ্যের দাম বাড়ানোর অন্যতম কারণ।
আগের চাঁদাবাজি তো নেই। তাহলে তো এমনিতেই পণ্যের দাম কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমরা শুনতে পাচ্ছি, নতুনভাবে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। প্রথমত, সরকারকে আগে এসব স্বীকার করতে হবে; দ্বিতীয়ত, এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না।
সার্বিকভাবে অর্থনীতির এই রুগ্ণ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে কী করণীয়?
এখন জ্বালানি-সংকট বড় ব্যাপার। আগের সরকার বাপেক্সকে পঙ্গু করে এবং কমিশনের লোভে বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। আমদানি, ঋণনির্ভর এবং পরিবেশবিধ্বংসী অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। যেমন এলএনজি আমদানি, কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র করার ফলে আমাদের ঋণ বেড়েছে, ব্যয় বেড়েছে কিন্তু অর্থনীতির কোনো স্থিতিশীলতা ও নিশ্চয়তা আসেনি। যেমন এলএনজি টার্মিনাল ও বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এসবের বোঝা জনগণের ওপর পড়ছে।
এই সরকারের প্রথম কাজটা করার দরকার ছিল বাপেক্সকে শক্তিশালী করা এবং তার কাজের ক্ষেত্র বাড়ানো। সমুদ্র এবং স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের দিকে নজর দেওয়া। একই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে জোরদার অবস্থান নেওয়া। এসব উদ্যোগ গ্রহণ করলে বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ-সংকট সমাধানের পথে যেতে পারত। এতে মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরত।
কারণ, জ্বালানি-সংকটের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। গ্যাস সরবরাহ, বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে।
অন্যদিকে খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা দরকার ছিল। তার বাইরে সহজ শর্তে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে হতো। সেগুলোর জন্য বিশেষ স্কিম চালু করা দরকার ছিল। যাতে ছোট ছোট বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হয়ে বিনিয়োগ করেন। মানে অর্থনীতিকে চাঙা করার জন্য স্বচ্ছতা, জবাবদিহি তৈরি করা দরকার।
আর সরকার যে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে এবং বিনিয়োগের নতুন নতুন ক্ষেত্রকে যথাযথভাবে অ্যাড্রেস করছে—সেই বার্তা তো দিতে হবে। এই বার্তাগুলো দিলে এমনিতেই সংকট কেটে যাওয়ার কথা। কারণ, বিদেশে বড় আকারের সম্পদ পাচার বন্ধ হয়েছে। এতে রিজার্ভ বেড়ে যাওয়ার কথা এবং জিনিসপত্রের দাম কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু পরিস্থিতির পরিবর্তন যে হচ্ছে না, এর একটা বড় কারণ হচ্ছে, বর্তমান সরকার পরিবর্তনের জন্য যে ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার, সে রকম সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করছে না।
নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য দেড় শ সুপারিশ করেছে এ-সম্পর্কিত কমিশন—যেগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় সত্যিই একটা গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব। যদিও কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া কঠিন।
৪ ঘণ্টা আগেরাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরেও ফরিদপুরের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী খায়রুজ্জামান খাজার কর্মকাণ্ডের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমানের কাছের লোক ছিলেন। এখন হয়েছেন যুবদল নেতা। ফলে তাঁর দাপট সমানতালে চলছে। এ নিয়ে ১৫ জানুয়ারি আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে!’ এটি একটি প্রবাদ বাক্য। আমরা অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কিছু বোঝাতে গিয়ে প্রবাদ বাক্য ব্যবহার করে থাকি। যে বাক্য বা উক্তি সংক্ষিপ্ত আকারে এবং রূপক আকারে বিশেষ অর্থ বহন করে, যার মাঝে কোনো বাস্তব সত্য নিহিত রয়েছে এবং দীর্ঘদিন ধরে লোকের মুখে মুখে চলে আসছে, তাকেই আমরা প্রবাদ...
১ দিন আগেটানাপোড়েন যে একটা সৃষ্টি হবে, সে ইঙ্গিত শুরু থেকেই ছিল। সুনির্দিষ্ট ধারাবাহিকতায় এখন তা স্পষ্টতর হয়েছে। মূল প্রতিপাদ্য একটাই। সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচন, নাকি জাতীয় নির্বাচনের পরে সংস্কার? যদি সংস্কার করে নির্বাচন হয়, তাহলে সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য সব সংস্কার কার্যক্রম শেষ করার পরে নির্বাচন...
১ দিন আগে