কাজী সালমা সুলতানা
জাতীয় পতাকা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক; একটি রাষ্ট্রের পরিচয়, একটি দেশের নাগরিকের অহংকার। তাই পতাকা রূপায়ণের মাঝে ফুটে ওঠে দেশের সব নাগরিকের পরিচয়, গর্ব করার উপাদান। জাতীয় পতাকার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সব দেশের নাগরিকই সদাসচেষ্ট থাকে। বাংলাদেশের মতো রক্ত দিয়ে কেনা পতাকার ক্ষেত্রে মর্যাদাবোধের জায়গাটি আরও বেশি স্পর্শকাতর। অথচ এই পতাকা নিয়ে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর নতুন বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। আর পতাকা তৈরির সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট ছিলেন, তাদের নীরবতা ইতিহাস বিকৃত করার পথকে সহজ করে দিচ্ছে। জাতীয় পতাকা রূপায়ণের ঘটনার আগের কিছু ইতিহাস প্রাসঙ্গিকভাবেই চলে আসে। ১৯৬২ সালের নভেম্বরে তৎকালীন ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদ পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন বাংলায় রূপান্তরের প্রশ্নে এক বৈঠকে বসেন। আলোচনায় এ তিন নেতা একমত হন এবং ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে প্রগতিশীল চিন্তার কর্মীদের নিয়ে একটি গোপন সংগঠন গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। এ সংগঠনের নাম দেওয়া হয় ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’। ১৯৬৬ সালের মধ্যে তারা সারা দেশে সংগঠনের বিস্তৃতি ঘটাতে সক্ষম হন। ছাত্রলীগের অন্য নেতারা মনে করতেন, বিষয়টি সংগঠনের অভ্যন্তরের উপদলীয় বিষয়। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সব কর্মকাণ্ড এ তিন নেতার মাধ্যমে পরিচালিত হতো। তাদের পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই নিউক্লিয়াস স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকার আন্দোলনকে স্বাধীনতা আন্দোলন এবং স্বাধীনতার আন্দোলনকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা ঘোষণার পর ছাত্রলীগের এই অংশই এগিয়ে আসে। ছয় দফার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে গেলেও ছাত্রলীগ পূর্ণ সমর্থন জানায়। প্রথমে ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর শাখা ছয় দফার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে। তৎকালীন ছাত্রলীগ মহানগর কমিটির সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ছয় দফার সমর্থনে মিছিল বের করা হয়। পরদিন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিও ছয় দফার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে। ১৯৬৬ সালের ৭ই জুন ছয় দফার সমর্থনে ঢাকায় অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করা হয়। এদিন ঢাকায় ১১ জন ছাত্র শ্রমিক নিহত হয়। সেই থেকে ৭ জুনকে ছয় দফা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। এরাই ছয় দফার আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দেয় এবং শেখ মুজিবকে মুক্ত করে বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভূষিত করে।
১৯৭০ সালের ৭ই জুন ছয়দফা দিবস পালন উপলক্ষ্যে পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধুকে অভিবাদন জানানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে শ্রমিক লীগ। ছাত্রলীগও একটি বাহিনী গঠন করে ওই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ কাজী আরেফ আহমেদকে এ বাহিনী গঠনের দায়িত্ব দেয়। এ বাহিনীর নাম দেওয়া হয় জয়বাংলা বাহিনী। ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় আ স ম আবদুর রবকে। নিউক্লিয়াসের পক্ষ থেকে ব্যাটালিয়ন পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেটা ব্যাটালিয়ানের হাতে বঙ্গবন্ধুর হস্তান্তরের কথা। ৬ জুন ১৯৭০ স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের নিউক্লিয়াস সদস্য কাজী আরেফ আহমেদ তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৬ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, ডাকসুর সহ-সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও ছাত্রনেতা মনিরুল ইসলামকে (মার্শাল মনি) ডেকে নিয়ে পতাকা তৈরি করতে বলেন। এ সময়ে মনিরুল ইসলাম ও আ স ম আবদুর রব একমত হন যে, পতাকার জমিন অবশ্যই গাঢ় সবুজ রঙের (বট্ল্ গ্রিন) হতে হবে। শাহজাহান সিরাজ বলেন, লাল রঙের একটা কিছু পতাকায় থাকতে হবে। এরপর কাজী আরেফ আহমেদ গাঢ় সবুজের ওপর লাল সূর্যের একটি পতাকার নকশা তৈরি করেন। পতাকার নকশা দেখে সবাই একমত হন। এ সময় কাজী আরেফ আহমেদ প্রস্তাব করেন, লাল সূর্যের মাঝে সোনালি রঙে পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র দিতে হবে, না হলে পাকিস্তানিরা আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে যে নানা অপপ্রচার করে থাকে, এ নিয়েও তা-ই করবে। পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে ‘ভারতের হাত আছে, ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের কাজ, বা ভারতীয় এজেন্টদের কার্যকলাপ’ বলে অপপ্রচার করত। এছাড়াও বাঙালির আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্ব পাকিস্তান এবং মিয়নমারের আরাকান রাজ্য নিয়ে একটি কাল্পনিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অপপ্রচার চালাত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। একাজে সরকারের প্রশাসনযন্ত্রেরও সাহায্য নেওয়া হতো। তারা কাল্পনিক এ রাষ্ট্রের নাম দিয়েছিল ‘ইউনাইটেড স্টেটস অব বেঙ্গল’ বা ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র’। এ ধরনের অপপ্রচার থেকে রক্ষা পেতে পতাকার লাল সূর্যের মাঝখানে সোনালি আঁশ ও পাকা ধানের রঙে বাংলাদেশের মানচিত্র রাখার কথা বলেন কাজী আরেফ আহমেদ। এবিষয়ে তারা একমত হন এবং পতাকা নিয়ে আলাপ করতে সিরাজুল আলম খানের কাছে যান।
সার্জেন্ট জহুরুল হক হলেরই তিন তলার একটি কক্ষে সিরাজুল আলম খান প্রায়ই থাকতেন। স্বভাবতই স্বাধীনতা কার্যক্রমের একজন ঊর্ধ্বতন নেতা হিসেবে তারা তার অনুমোদন নিতে গেলেন। পতাকা তৈরিসহ সব কার্যক্রম সম্পর্কে তাকে জানানো হলো। তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, যে নামেই পতাকা প্রদর্শন করো না কেন, সে পতাকাকে জনগণের ভবিষ্যৎ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা হিসেবে ভেবে নিতে কোনো বাধা থাকবে না। এরই মধ্যে এখানে যোগ দেন ছাত্রনেতা কামরুল আলম খান খসরু, স্বপন কুমার চৌধুরী, হাসানুল হক ইনু, ইউসুফ সালাহউদ্দিন আহমেদ ও নজরুল ইসলাম। তারা সবাই স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সদস্য। কামরুল আলম খান খসরু, স্বপন কুমার চৌধুরী, হাসানুল হক ইনু ও নজরুল ইসলামকে পাঠানো হলো পতাকা সেলাই করে আনতে। ছাত্রলীগের অফিসের অবস্থান বলাকা ভবনে এবং এখানে অনেক দর্জির দোকান আছে। তাই তারা নিউমার্কেটে গেলেন।
গভীর রাতে দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে অ্যাপোলো নামক দোকান থেকে সবুজ ও লাল রঙের লেডি হ্যামিলটন কাপড় কিনে অপর এক রঙের দোকানিকে জাগিয়ে সোনালি রং ও তুলি কিনে নিয়ে তারা যান বলাকা ভবনে। সেখানে পাক টেইলার্সকে ডেকে তুলে পতাকা সেলাই করা হয়। যে দর্জি এ পতাকা সেলাই করলেন তিনি ছিলেন অবাঙালি। সে সময়ে তিনি বুঝতেও পারেননি যে নতুন এক জাতির, নতুন এক দেশের পতাকা সেলাই করছেন। সেই পতাকাই এত শক্তিধর হবে যে, এর প্রভাবে তাকে পাকিস্তানে চলে যেতে হবে। স্বাধীনতার পর ওই দর্জি পাকিস্তান চলে যান। পতাকা সেলাইয়ের পর সমস্যা দেখা দেয় লাল বৃত্তের মাঝে বাংলাদেশের ম্যাপ আঁকা নিয়ে। এজন্য প্রয়োজন হয় শিল্পীর। সে সমস্যার সমাধান হিসেবে ডেকে আনা হয় শিবনারায়ণ দাসকে। শিবনারায়ণ দাস তখন কুমিল্লায় ছাত্রলীগ নেতা। তিনিও স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সদস্য। তিনি খুব ভালো পোস্টার লিখতে পারতেন এবং রং-তুলির কাজ জানতেন। ছাত্রলীগ সলিমুল্লাহ হল শাখার সম্মেলন উপলক্ষে ব্যানার-ফেস্টুন লেখার জন্য তাকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়েছে। তাকে ডেকে আনা হলো সলিমুল্লাহ হল থেকে। শিবনারায়ণ দাস জানালেন তিনি ম্যাপ আঁকতে পারবেন না, তবে রং করতে পারবেন। দেখা দিল আরেক সমস্যা।
এসমস্যা সমাধানের জন্য ছাত্রনেতা ইউসুফ সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাসানুল হক ইনু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন জিন্নাহ হলের (বর্তমানে তিতুমীর হল) ৪০৮ নম্বর কক্ষে যান। এ দুজনই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। সেই কক্ষে এনামুল হকও (হাসানুল হক ইনুর কাজিন) থাকতেন। তার কাছ থেকে অ্যাটলাস নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের ম্যাপ বের করা হলো। তার ওপর ট্রেসিং পেপার বসিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের ম্যাপ আঁকা হলো। সেই ম্যাপ নিয়ে তারা ফিরে এলেন ইকবাল হলে। তারপর শিবনারায়ণ দাস নিপুণ হাতে বৃত্তের মাঝে ম্যাপটি আঁকলেন। এর ভেতর দিয়ে শেষ হলো ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নতুন পতাকা তৈরির কাজ।
এরপর পতাকা অনুমোদনের জন্য বৈঠক বসে। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ অনুমোদন দিলেও চূড়ান্তভাবে বঙ্গবন্ধুর অনুমোদন প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুমোদনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় নিউক্লিয়াস সদস্য ছাত্রনেতা আবদুর রাজ্জাককে। ওই রাতেই আবদুর রাজ্জাক পতাকাটি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসায় যান এবং তা অনুমোদন করিয়ে আনেন। পরদিন অর্থাৎ ৭ জুন সকাল থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। কর্দমাক্ত মাঠে জয়বাংলা বাহিনী কুচকাওয়াজের সঙ্গে এগিয়ে আসছিল। বাহিনীর পোশাক ছিল সাদা প্যান্ট, সাদা শার্ট, মাথায় লাল-সবুজ টুপি এবং হাতে লাল-সবুজ কাপড়ের ব্যান্ডে লেখা ‘জয়বাংলা বাহিনী’। এ সময় মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মনি, তোফায়েল আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদ। আ স ম আবদুর রব মঞ্চের কাছে এসে বঙ্গবন্ধুকে অভিবাদন জানিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে পতাকা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বঙ্গবন্ধু কাজী আরেফের হাত থেকে পতাকাটি নিয়ে উপস্থিত জনতাকে প্রদর্শন করেন। এরপর আ স ম আবদুর রবের কাছে হস্তান্তর করেন। পতাকা গ্রহণ করে আ স ম আবদুর রব কুচকাওয়াজ করে মঞ্চের সামনে দিয়ে চলে যান।
সেই পতাকাটি ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ডাকসুর তৎকালীন সহসভাপতি হিসেবে আ স ম আবদুর রব লাখো ছাত্র-জনতার সমাবেশে জাতীয় পতাকা হিসেবে উত্তোলন করেন। ২৩ মার্চ ছিল পাকিস্তান দিবস। ১৯৭১ সালের এদিন সেনানিবাস ছাড়া সারা দেশের ঘরে ঘরে লাল বৃত্তের মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানো হয়। পরবর্তীকালে দীর্ঘ ৯ মাস রণাঙ্গনে এ পতাকাই ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা, বাঙালি জাতির বেঁচে থাকার অবলম্বন। এই পতাকা বুকে ধারণ করেই একাত্তরে রণাঙ্গনে অকাতরে মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, এ পতাকা ধারণ করেই রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।
স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পটুয়া কামরুল হাসানকে পতাকার সঠিক মাপ ও নকশা নিয়ে কাজ করার দায়িত্ব দেন। তখন প্রয়াত শিল্পী কামরুল হাসান পতাকা থেকে বাংলাদেশের ম্যাপ সরিয়ে ফেলার প্রস্তাব দেন। কারণ বাংলাদেশের ম্যাপ আঁকা কঠিন ছিল এবং উত্তোলনের সময়ও ভুল হয়ে যেত। সেই সময় বাংলাদেশের ম্যাপ সরিয়ে আজকের লাল-সবুজের পতাকা, বাঙালির অহংকার!
লেখক: রাজনৈতিক গবেষক ও বিশ্লেষক এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক।
তথ্যসূত্র:
১. ইউসুফ সালাহউদ্দিন আহমেদের নিবন্ধ ‘আমাদের জাতীয় পতাকার ইতিহাস’, দৈনিক আমাদের সময়, ৩ ডিসেম্বর ২০০৯।
২. শাহজাহান সিরাজের বক্তব্য, তৃতীয়মাত্রা, চ্যানেল আই, প্রচারকাল ২৩ মার্চ ২০১১।
৩. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সমাজতন্ত্র, মনিরুল ইসলাম, প্রকাশকাল ২০১৩।
৪. বাঙালির জাতীয় রাষ্ট্র, কাজী আরেফ আহমেদ, প্রকাশকাল ২০১৪।
৫. আ স ম আবদুর রব, বাংলামেইল ২৪, প্রচারকাল ৭ মার্চ ২০১৫
জাতীয় পতাকা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক; একটি রাষ্ট্রের পরিচয়, একটি দেশের নাগরিকের অহংকার। তাই পতাকা রূপায়ণের মাঝে ফুটে ওঠে দেশের সব নাগরিকের পরিচয়, গর্ব করার উপাদান। জাতীয় পতাকার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সব দেশের নাগরিকই সদাসচেষ্ট থাকে। বাংলাদেশের মতো রক্ত দিয়ে কেনা পতাকার ক্ষেত্রে মর্যাদাবোধের জায়গাটি আরও বেশি স্পর্শকাতর। অথচ এই পতাকা নিয়ে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর নতুন বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। আর পতাকা তৈরির সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট ছিলেন, তাদের নীরবতা ইতিহাস বিকৃত করার পথকে সহজ করে দিচ্ছে। জাতীয় পতাকা রূপায়ণের ঘটনার আগের কিছু ইতিহাস প্রাসঙ্গিকভাবেই চলে আসে। ১৯৬২ সালের নভেম্বরে তৎকালীন ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদ পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন বাংলায় রূপান্তরের প্রশ্নে এক বৈঠকে বসেন। আলোচনায় এ তিন নেতা একমত হন এবং ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে প্রগতিশীল চিন্তার কর্মীদের নিয়ে একটি গোপন সংগঠন গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। এ সংগঠনের নাম দেওয়া হয় ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’। ১৯৬৬ সালের মধ্যে তারা সারা দেশে সংগঠনের বিস্তৃতি ঘটাতে সক্ষম হন। ছাত্রলীগের অন্য নেতারা মনে করতেন, বিষয়টি সংগঠনের অভ্যন্তরের উপদলীয় বিষয়। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সব কর্মকাণ্ড এ তিন নেতার মাধ্যমে পরিচালিত হতো। তাদের পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই নিউক্লিয়াস স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকার আন্দোলনকে স্বাধীনতা আন্দোলন এবং স্বাধীনতার আন্দোলনকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা ঘোষণার পর ছাত্রলীগের এই অংশই এগিয়ে আসে। ছয় দফার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে গেলেও ছাত্রলীগ পূর্ণ সমর্থন জানায়। প্রথমে ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর শাখা ছয় দফার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে। তৎকালীন ছাত্রলীগ মহানগর কমিটির সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ছয় দফার সমর্থনে মিছিল বের করা হয়। পরদিন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিও ছয় দফার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে। ১৯৬৬ সালের ৭ই জুন ছয় দফার সমর্থনে ঢাকায় অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করা হয়। এদিন ঢাকায় ১১ জন ছাত্র শ্রমিক নিহত হয়। সেই থেকে ৭ জুনকে ছয় দফা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। এরাই ছয় দফার আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দেয় এবং শেখ মুজিবকে মুক্ত করে বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভূষিত করে।
১৯৭০ সালের ৭ই জুন ছয়দফা দিবস পালন উপলক্ষ্যে পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধুকে অভিবাদন জানানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে শ্রমিক লীগ। ছাত্রলীগও একটি বাহিনী গঠন করে ওই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ কাজী আরেফ আহমেদকে এ বাহিনী গঠনের দায়িত্ব দেয়। এ বাহিনীর নাম দেওয়া হয় জয়বাংলা বাহিনী। ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় আ স ম আবদুর রবকে। নিউক্লিয়াসের পক্ষ থেকে ব্যাটালিয়ন পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেটা ব্যাটালিয়ানের হাতে বঙ্গবন্ধুর হস্তান্তরের কথা। ৬ জুন ১৯৭০ স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের নিউক্লিয়াস সদস্য কাজী আরেফ আহমেদ তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৬ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, ডাকসুর সহ-সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও ছাত্রনেতা মনিরুল ইসলামকে (মার্শাল মনি) ডেকে নিয়ে পতাকা তৈরি করতে বলেন। এ সময়ে মনিরুল ইসলাম ও আ স ম আবদুর রব একমত হন যে, পতাকার জমিন অবশ্যই গাঢ় সবুজ রঙের (বট্ল্ গ্রিন) হতে হবে। শাহজাহান সিরাজ বলেন, লাল রঙের একটা কিছু পতাকায় থাকতে হবে। এরপর কাজী আরেফ আহমেদ গাঢ় সবুজের ওপর লাল সূর্যের একটি পতাকার নকশা তৈরি করেন। পতাকার নকশা দেখে সবাই একমত হন। এ সময় কাজী আরেফ আহমেদ প্রস্তাব করেন, লাল সূর্যের মাঝে সোনালি রঙে পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র দিতে হবে, না হলে পাকিস্তানিরা আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে যে নানা অপপ্রচার করে থাকে, এ নিয়েও তা-ই করবে। পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে ‘ভারতের হাত আছে, ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের কাজ, বা ভারতীয় এজেন্টদের কার্যকলাপ’ বলে অপপ্রচার করত। এছাড়াও বাঙালির আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্ব পাকিস্তান এবং মিয়নমারের আরাকান রাজ্য নিয়ে একটি কাল্পনিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অপপ্রচার চালাত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। একাজে সরকারের প্রশাসনযন্ত্রেরও সাহায্য নেওয়া হতো। তারা কাল্পনিক এ রাষ্ট্রের নাম দিয়েছিল ‘ইউনাইটেড স্টেটস অব বেঙ্গল’ বা ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র’। এ ধরনের অপপ্রচার থেকে রক্ষা পেতে পতাকার লাল সূর্যের মাঝখানে সোনালি আঁশ ও পাকা ধানের রঙে বাংলাদেশের মানচিত্র রাখার কথা বলেন কাজী আরেফ আহমেদ। এবিষয়ে তারা একমত হন এবং পতাকা নিয়ে আলাপ করতে সিরাজুল আলম খানের কাছে যান।
সার্জেন্ট জহুরুল হক হলেরই তিন তলার একটি কক্ষে সিরাজুল আলম খান প্রায়ই থাকতেন। স্বভাবতই স্বাধীনতা কার্যক্রমের একজন ঊর্ধ্বতন নেতা হিসেবে তারা তার অনুমোদন নিতে গেলেন। পতাকা তৈরিসহ সব কার্যক্রম সম্পর্কে তাকে জানানো হলো। তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, যে নামেই পতাকা প্রদর্শন করো না কেন, সে পতাকাকে জনগণের ভবিষ্যৎ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা হিসেবে ভেবে নিতে কোনো বাধা থাকবে না। এরই মধ্যে এখানে যোগ দেন ছাত্রনেতা কামরুল আলম খান খসরু, স্বপন কুমার চৌধুরী, হাসানুল হক ইনু, ইউসুফ সালাহউদ্দিন আহমেদ ও নজরুল ইসলাম। তারা সবাই স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সদস্য। কামরুল আলম খান খসরু, স্বপন কুমার চৌধুরী, হাসানুল হক ইনু ও নজরুল ইসলামকে পাঠানো হলো পতাকা সেলাই করে আনতে। ছাত্রলীগের অফিসের অবস্থান বলাকা ভবনে এবং এখানে অনেক দর্জির দোকান আছে। তাই তারা নিউমার্কেটে গেলেন।
গভীর রাতে দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে অ্যাপোলো নামক দোকান থেকে সবুজ ও লাল রঙের লেডি হ্যামিলটন কাপড় কিনে অপর এক রঙের দোকানিকে জাগিয়ে সোনালি রং ও তুলি কিনে নিয়ে তারা যান বলাকা ভবনে। সেখানে পাক টেইলার্সকে ডেকে তুলে পতাকা সেলাই করা হয়। যে দর্জি এ পতাকা সেলাই করলেন তিনি ছিলেন অবাঙালি। সে সময়ে তিনি বুঝতেও পারেননি যে নতুন এক জাতির, নতুন এক দেশের পতাকা সেলাই করছেন। সেই পতাকাই এত শক্তিধর হবে যে, এর প্রভাবে তাকে পাকিস্তানে চলে যেতে হবে। স্বাধীনতার পর ওই দর্জি পাকিস্তান চলে যান। পতাকা সেলাইয়ের পর সমস্যা দেখা দেয় লাল বৃত্তের মাঝে বাংলাদেশের ম্যাপ আঁকা নিয়ে। এজন্য প্রয়োজন হয় শিল্পীর। সে সমস্যার সমাধান হিসেবে ডেকে আনা হয় শিবনারায়ণ দাসকে। শিবনারায়ণ দাস তখন কুমিল্লায় ছাত্রলীগ নেতা। তিনিও স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের সদস্য। তিনি খুব ভালো পোস্টার লিখতে পারতেন এবং রং-তুলির কাজ জানতেন। ছাত্রলীগ সলিমুল্লাহ হল শাখার সম্মেলন উপলক্ষে ব্যানার-ফেস্টুন লেখার জন্য তাকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়েছে। তাকে ডেকে আনা হলো সলিমুল্লাহ হল থেকে। শিবনারায়ণ দাস জানালেন তিনি ম্যাপ আঁকতে পারবেন না, তবে রং করতে পারবেন। দেখা দিল আরেক সমস্যা।
এসমস্যা সমাধানের জন্য ছাত্রনেতা ইউসুফ সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাসানুল হক ইনু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন জিন্নাহ হলের (বর্তমানে তিতুমীর হল) ৪০৮ নম্বর কক্ষে যান। এ দুজনই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। সেই কক্ষে এনামুল হকও (হাসানুল হক ইনুর কাজিন) থাকতেন। তার কাছ থেকে অ্যাটলাস নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের ম্যাপ বের করা হলো। তার ওপর ট্রেসিং পেপার বসিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের ম্যাপ আঁকা হলো। সেই ম্যাপ নিয়ে তারা ফিরে এলেন ইকবাল হলে। তারপর শিবনারায়ণ দাস নিপুণ হাতে বৃত্তের মাঝে ম্যাপটি আঁকলেন। এর ভেতর দিয়ে শেষ হলো ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নতুন পতাকা তৈরির কাজ।
এরপর পতাকা অনুমোদনের জন্য বৈঠক বসে। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ অনুমোদন দিলেও চূড়ান্তভাবে বঙ্গবন্ধুর অনুমোদন প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুমোদনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় নিউক্লিয়াস সদস্য ছাত্রনেতা আবদুর রাজ্জাককে। ওই রাতেই আবদুর রাজ্জাক পতাকাটি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসায় যান এবং তা অনুমোদন করিয়ে আনেন। পরদিন অর্থাৎ ৭ জুন সকাল থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। কর্দমাক্ত মাঠে জয়বাংলা বাহিনী কুচকাওয়াজের সঙ্গে এগিয়ে আসছিল। বাহিনীর পোশাক ছিল সাদা প্যান্ট, সাদা শার্ট, মাথায় লাল-সবুজ টুপি এবং হাতে লাল-সবুজ কাপড়ের ব্যান্ডে লেখা ‘জয়বাংলা বাহিনী’। এ সময় মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মনি, তোফায়েল আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদ। আ স ম আবদুর রব মঞ্চের কাছে এসে বঙ্গবন্ধুকে অভিবাদন জানিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে পতাকা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বঙ্গবন্ধু কাজী আরেফের হাত থেকে পতাকাটি নিয়ে উপস্থিত জনতাকে প্রদর্শন করেন। এরপর আ স ম আবদুর রবের কাছে হস্তান্তর করেন। পতাকা গ্রহণ করে আ স ম আবদুর রব কুচকাওয়াজ করে মঞ্চের সামনে দিয়ে চলে যান।
সেই পতাকাটি ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ডাকসুর তৎকালীন সহসভাপতি হিসেবে আ স ম আবদুর রব লাখো ছাত্র-জনতার সমাবেশে জাতীয় পতাকা হিসেবে উত্তোলন করেন। ২৩ মার্চ ছিল পাকিস্তান দিবস। ১৯৭১ সালের এদিন সেনানিবাস ছাড়া সারা দেশের ঘরে ঘরে লাল বৃত্তের মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানো হয়। পরবর্তীকালে দীর্ঘ ৯ মাস রণাঙ্গনে এ পতাকাই ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা, বাঙালি জাতির বেঁচে থাকার অবলম্বন। এই পতাকা বুকে ধারণ করেই একাত্তরে রণাঙ্গনে অকাতরে মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, এ পতাকা ধারণ করেই রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।
স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পটুয়া কামরুল হাসানকে পতাকার সঠিক মাপ ও নকশা নিয়ে কাজ করার দায়িত্ব দেন। তখন প্রয়াত শিল্পী কামরুল হাসান পতাকা থেকে বাংলাদেশের ম্যাপ সরিয়ে ফেলার প্রস্তাব দেন। কারণ বাংলাদেশের ম্যাপ আঁকা কঠিন ছিল এবং উত্তোলনের সময়ও ভুল হয়ে যেত। সেই সময় বাংলাদেশের ম্যাপ সরিয়ে আজকের লাল-সবুজের পতাকা, বাঙালির অহংকার!
লেখক: রাজনৈতিক গবেষক ও বিশ্লেষক এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক।
তথ্যসূত্র:
১. ইউসুফ সালাহউদ্দিন আহমেদের নিবন্ধ ‘আমাদের জাতীয় পতাকার ইতিহাস’, দৈনিক আমাদের সময়, ৩ ডিসেম্বর ২০০৯।
২. শাহজাহান সিরাজের বক্তব্য, তৃতীয়মাত্রা, চ্যানেল আই, প্রচারকাল ২৩ মার্চ ২০১১।
৩. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সমাজতন্ত্র, মনিরুল ইসলাম, প্রকাশকাল ২০১৩।
৪. বাঙালির জাতীয় রাষ্ট্র, কাজী আরেফ আহমেদ, প্রকাশকাল ২০১৪।
৫. আ স ম আবদুর রব, বাংলামেইল ২৪, প্রচারকাল ৭ মার্চ ২০১৫
হুমায়ূন আহমেদ ও মেহের আফরোজ শাওনের ছেলে নিষাদ হুমায়ূনের একটা ভাইরাল ভিডিও ক্লিপ দেখলাম। বেশ মজা পেলাম। সত্যি বললে মজার চেয়েও ছোট্ট বাচ্চার কথায় ভাবনার উদ্রেক হলো। চিন্তার দুয়ার উন্মুক্ত হলো।
৩ মিনিট আগেপরিবেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সার্কুলার অর্থনীতি বা বৃত্তাকার অর্থনীতি এক নবদিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। বাংলাদেশে স্বল্প সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে সার্কুলার অর্থনীতির বিকল্প নেই।
১০ মিনিট আগেবগুড়ার শিবগঞ্জে ৪২০ টাকা কেজি দরে নতুন আলু বিক্রি হয়েছে। আজকের পত্রিকায় খবরটি দেখা গেছে ১৮ নভেম্বর। এই দামে বেচাকেনাও হচ্ছে। ক্রেতারাও নাকি এই দামে আলু কিনতে পেরে সন্তুষ্ট!
১৫ মিনিট আগেআমার যখন জন্ম হয়, সেই বছরই পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেছেন উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ক্ষুব্ধ স্বদেশ তখন আন্দোলনে ফেটে পড়েছিল। তৃণমূল থেকে একেবারে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কেঁপে উঠেছিল।
১ দিন আগে