জগদীশ চন্দ্র বসু

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

জগদীশ চন্দ্র বসুকে বলা হয় ভারতীয় উপমহাদেশে বিজ্ঞানচর্চার জনক। একই সঙ্গে ভারতবর্ষে পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানচর্চা তাঁর হাত ধরেই প্রথম শুরু হয়। বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে তাঁর বিচরণ ছিল, বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞান ছাড়াও জীব পদার্থবিদ্যা, জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও পুরাতত্ত্ব—এগুলো নিয়েও তাঁর গবেষণাকাজ আছে।

তিনি সারা জীবন মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রার জন্য কাজ করে গেছেন। তাঁর আবিষ্কার ও গবেষণা সভ্যতাকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি প্রথম গবেষণা শুরু করেন মাইক্রোওয়েব প্রযুক্তি নিয়ে। তাঁর এমন গবেষণার কারণে রেডিও আবিষ্কৃত হয়। গাছেরও জীবন আছে— এটি তাঁর আবিষ্কার। ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করে তিনি প্রমাণ করেছিলেন মানুষ যেভাবে সাড়া দেয়, গাছও একইভাবে সাড়া দেয়।
তিনি তিন বছরে ১৩টি বিশ্বমানের বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তবে তাঁর কাজের দুই-তৃতীয়াংশই এখন পর্যন্ত ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়নি। বিজ্ঞানের ও জ্ঞানকাণ্ডের বিভিন্ন শাখায় তিনি কাজ করেছিলেন শুধু সত্য জানার উদ্দেশ্যে।

আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের অত্যন্ত দুরূহ বিষয়ে তাঁর আবিষ্কার নিয়ে ইংল্যান্ডে বক্তৃতা দিয়ে বিশ্বখ্যাত বহু বিজ্ঞানীকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। লন্ডনের ‘ডেইলি এক্সপ্রেস’ পত্রিকা তাঁকে গ্যালিলিও-নিউটনের সমকক্ষ বিজ্ঞানীর স্বীকৃতি দিয়েছিল। তিনি ‘ডক্টর অব সায়েন্স’ উপাধি পেয়েছিলেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৮৯৪ সালে তিনি বৈদ্যুতিক তরঙ্গের ওপর গবেষণার কাজ শুরু করেছিলেন। এ কারণেই

তাঁকে এত বড় উপাধি দেওয়া হয়েছিল। বিজ্ঞানী ছাড়াও জগদীশ চন্দ্রের বাইরের পরিচয় হলো তিনি একজন জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমী, মরমি সাধক ও গবেষক। সাহিত্যের প্রতি তাঁর প্রবল অনুরাগ ছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন জগদীশ চন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একবার টাকার অভাবে তাঁর গবেষণা প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। সে সময় রবীন্দ্রনাথ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বিলেত থেকে বসু যখন খ্যাতি অর্জন করে কলকাতায় ফিরে আসেন রবীন্দ্রনাথ ফুলের তোড়া দিয়ে তাঁকে বরণ করে নিয়েছিলেন।

বিখ্যাত এই বাঙালি বিজ্ঞানী ১৯৩৭ সালের ২৩ নভেম্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত