অবরুদ্ধ দেশের সাংবাদিকতা
জাহীদ রেজা নূর
ডিসেম্বর মাসে এসে বোঝা যাচ্ছিল, পাকিস্তানিদের চাপিয়ে দেওয়া সেন্সরশিপ সেভাবে কাজ করছে না। বহু খবরই তখন প্রকাশিত হচ্ছিল অবরুদ্ধ নগরীর সংবাদপত্রে। ইন্দিরা গান্ধীর বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন কিংবা আওয়ামী লীগ নেতাদের বিবৃতি একই দিনে প্রকাশিত হলো। সেদিন ইত্তেফাক ‘পিটুনি কর’ বিষয়ক রিপোর্টটির যে শিরোনাম করেছিল, সেটি সাধারণ শিরোনাম ছিল না। চোখ যেন সেদিকে যায়, তা নিশ্চিত করতে বড় ফন্টে ত্রিভুজের মধ্যে করেছিল শিরোনাম।
মার্কিন সিনেটর উইলিয়াম স্যাক্সবি পাকিস্তানিদের হাতে বন্দী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। ইত্তেফাক ছেপেছিল এপিপির পাঠানো সংবাদই। কিন্তু তা থেকে পাঠক জানতে পেরেছিল এ সময়ের বাস্তবতাও।
রিপোর্টটি ছিল এ রকম:
সিনেটর স্যাক্সবী শেখের সহিত দেখা করিতে পারেন নাই রাওয়ালপিণ্ডি, ২রা ডিসেম্বর (এপিপি)—সফররত মার্কিন সিনেটর মি. উইলিয়াম স্যাক্সবী আজ বিকালে এখানে বলিয়াছেন, বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সহিত সাক্ষাতের জন্য তিনি একটি অনুরোধ জানাইয়াছিলেন, কিন্তু সাক্ষাৎ করিতে পারেন নাই।
করাচী রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সহিত আলোচনাকালে তিনি বলেন, ‘শেখের নিকট তাঁহার নির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশের মতো কিছু ছিল না। তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে বলিয়াছিলেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান জীবিত আছেন কিনা তাহা তিনি দেখিতে চান। প্রেসিডেন্ট তাঁহাকে বলেন যে, শেখের স্বাস্থ্য চমৎকার রহিয়াছে। তিনি প্রেসিডেন্টকে জানান যে, শেখের মস্তিষ্ক শুদ্ধি করা হইয়াছে বলিয়া ভারতে বলাবলি করা হইতেছে।
সিনেটর উল্লেখ করেন, তিনি প্রেসিডেন্টকে এ কথাও বলিয়াছেন যে, শেখ মুজিবের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিলে তিনি পুনরায় এখানে আসিতে রাজি আছেন।
(দৈনিক ইত্তেফাক, ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১)
একটু পেছনে ফিরে জুলাই মাসে গেলে দেখা যাবে, পত্রিকায় প্রতীকী ভাষার ব্যবহার। দৈনিক ইত্তেফাক সে কাজটি করেছে জেনেবুঝে। ৮ জুলাই যেদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাজ্জাদ হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম মোহর আলী এক যৌথ বিবৃতি দিলেন, সেদিনকার ইত্তেফাকের নিউজ ট্রিটমেন্টের দিকে নজর রাখলেই বোঝা যাবে খবরের ভেতরের খবর খুঁজে নেওয়ার জন্য পাঠককে আহ্বান জানানো হচ্ছে। দুই অধ্যাপকের যৌথ বিবৃতির খবরটি আমরা নিচ্ছি দৈনিক পাকিস্তান থেকে:
উপাচার্য ড. সাজ্জাদ হোসেন ও অধ্যাপক ড. এম. মোহর আলীর যৌথ বিবৃতি ‘পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালীদের জীবনের নিরাপত্তা নেই—এ কথা ভিত্তিহীন’
লন্ডন, ৮ জুলাই (রয়টার)। পূর্ব পাকিস্তানের শহর ও গ্রামে বাঙালীদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই বলে যে কথা বলা হয়েছে, পূর্ব পাকিস্তানের ২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গতকাল তা অস্বীকার করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. এস. সাজ্জাদ হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের রীডার ড. এম. মোহর আলী টাইমস পত্রিকায় লিখিত এক দীর্ঘ চিঠিতে তাঁদের এই অস্বীকৃতির কথা জানান।
‘বিদেশে প্রচারিত নৃশংসতার কাহিনী’ উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এতে বিস্মিত হবার কিছু নেই যে এ ধরনের কাহিনী প্রচার অব্যাহত থাকার ফলেই এ রকম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে যে, পূর্ব পাকিস্তানে শহর ও গ্রামে বাঙালীদের বিশেষ করে শিক্ষিত বাঙালীদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই।
বুদ্ধিজীবীদের পাইকারী হত্যা করা হয়েছে বলে যে কাহিনী প্রচারিত হয়েছে, অধ্যাপকদ্বয় তাও অস্বীকার করেছেন। চিঠিতে বলা হয় যে, মার্চের ২৫/২৬ তারিখে জগন্নাথ ও ইকবাল হলের আশপাশের এলাকায় যুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয় যে, আমাদের ৩ জন সহযোগী প্রাণ হারাতেন না, যদি না তাঁরা যে ভবনগুলোতে বাস করতেন, সেগুলোকে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতো।
(দৈনিক পাকিস্তান, ৯ জুলাই ১৯৭১)
একই দিনে ইত্তেফাক এই সংবাদটির শিরোনাম করে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ৯ জন শিক্ষক প্রাণ হারান, ড. সাজ্জাদ হোসেন ও ড. মোহর আলী কর্তৃক হীন প্রচারণার প্রতিবাদ’। ‘মাত্র’ শব্দটির মধ্যে যে বিদ্রূপ আছে, সেটা সচেতন পাঠকের চোখে পড়বে।
সেদিনই ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ছিল:
‘ইয়াহিয়া-কিসিংগার বৈঠক আরম্ভ/বাস্তুত্যাগী সমস্যা ও উপমহাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে পাকিস্তানী অফিসারদের সঙ্গে নিক্সন সহকারীর আলোচনা’
এই প্রতিবেদনের ঠিক নিচেই ছাপা হয়েছে আরেকটি শিরোনাম:
ইসরাইলের ঘনবসতি এলাকায়/গেরিলাদের রকেট হামলা ইঙ্গিতটি পরিষ্কার। মুক্তিযোদ্ধারা যে এ সময় অবরুদ্ধ দেশে হামলা চালানো শুরু করেছে, তারই একটা আভাস দিয়ে দেওয়া হলো এই প্রতিবেদনে। ইয়াহিয়া-কিসিংগারের আলোচনার খবর জানার পাশাপাশি এটাও জানতে হবে যে গেরিলা বাহিনী কিন্তু সক্রিয় রয়েছে।
শুধু কি তাই? শেষের পাতার ষষ্ঠ কলামে যখন ইয়াহিয়া-কিসিংগারের খবর জাম্প হয়েছে, তার দুই পাশে দুটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। বাঁদিকের খবরের শিরোনাম:
থাইল্যান্ডে গেরিলা আক্রমণে ৭ জন সৈন্য নিহত
সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গত মঙ্গলবার দক্ষিণ থাইল্যান্ডের থাওসেইয়ান ক্যাম্পের নিকট কম্যুনিস্ট গেরিলাদের অতর্কিত আক্রমণে ৭ জন থাই সৈন্য নিহত ও ১৬ জন আহত হয়।
গত এক বৎসরের মধ্যে উক্ত এলাকায় এত সংঘর্ষ আর কখনও ঘটে নাই। ওয়াকিবহাল মহল বলেন, প্রায় ২০ জন কম্যুনিস্ট গেরিলা মেশিন গান ও হাতবোমা লইয়া একখানি সামরিক ট্রাকের উপর হামলা চালায়। মালয়েশীয় সীমান্তের নিকট সৈন্য পৌঁছানোর জন্য ট্রাকটি ব্যবহৃত হইতেছিল।’
এখানেও ইঙ্গিত পরিষ্কার। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, তখন থেকেই ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছিল। বোমা হামলা যারা করছিল, তাদের ‘দুষ্কৃতিকারী’ কিংবা ‘ভারতীয় এজেন্ট’ নামে ডাকা হলেও তারা যে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, সে কথা সে সময়ের পাঠকেরাও বুঝতে পারত।
ইয়াহিয়া-কিসিংগারের প্রতিবেদনটির ডান পাশেও ছিল আরেকটি ইঙ্গিতময় খবর। শিরোনাম:
ঐক্যই হইল চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পূর্বশর্ত/প্যালেস্টাইন আন্দোলনের দুর্বলতা সম্পর্কে আনোয়ার সাদাত।
আকলমন্দকে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়।
ডিসেম্বর মাসে এসে বোঝা যাচ্ছিল, পাকিস্তানিদের চাপিয়ে দেওয়া সেন্সরশিপ সেভাবে কাজ করছে না। বহু খবরই তখন প্রকাশিত হচ্ছিল অবরুদ্ধ নগরীর সংবাদপত্রে। ইন্দিরা গান্ধীর বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন কিংবা আওয়ামী লীগ নেতাদের বিবৃতি একই দিনে প্রকাশিত হলো। সেদিন ইত্তেফাক ‘পিটুনি কর’ বিষয়ক রিপোর্টটির যে শিরোনাম করেছিল, সেটি সাধারণ শিরোনাম ছিল না। চোখ যেন সেদিকে যায়, তা নিশ্চিত করতে বড় ফন্টে ত্রিভুজের মধ্যে করেছিল শিরোনাম।
মার্কিন সিনেটর উইলিয়াম স্যাক্সবি পাকিস্তানিদের হাতে বন্দী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। ইত্তেফাক ছেপেছিল এপিপির পাঠানো সংবাদই। কিন্তু তা থেকে পাঠক জানতে পেরেছিল এ সময়ের বাস্তবতাও।
রিপোর্টটি ছিল এ রকম:
সিনেটর স্যাক্সবী শেখের সহিত দেখা করিতে পারেন নাই রাওয়ালপিণ্ডি, ২রা ডিসেম্বর (এপিপি)—সফররত মার্কিন সিনেটর মি. উইলিয়াম স্যাক্সবী আজ বিকালে এখানে বলিয়াছেন, বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সহিত সাক্ষাতের জন্য তিনি একটি অনুরোধ জানাইয়াছিলেন, কিন্তু সাক্ষাৎ করিতে পারেন নাই।
করাচী রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সহিত আলোচনাকালে তিনি বলেন, ‘শেখের নিকট তাঁহার নির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশের মতো কিছু ছিল না। তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে বলিয়াছিলেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান জীবিত আছেন কিনা তাহা তিনি দেখিতে চান। প্রেসিডেন্ট তাঁহাকে বলেন যে, শেখের স্বাস্থ্য চমৎকার রহিয়াছে। তিনি প্রেসিডেন্টকে জানান যে, শেখের মস্তিষ্ক শুদ্ধি করা হইয়াছে বলিয়া ভারতে বলাবলি করা হইতেছে।
সিনেটর উল্লেখ করেন, তিনি প্রেসিডেন্টকে এ কথাও বলিয়াছেন যে, শেখ মুজিবের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিলে তিনি পুনরায় এখানে আসিতে রাজি আছেন।
(দৈনিক ইত্তেফাক, ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১)
একটু পেছনে ফিরে জুলাই মাসে গেলে দেখা যাবে, পত্রিকায় প্রতীকী ভাষার ব্যবহার। দৈনিক ইত্তেফাক সে কাজটি করেছে জেনেবুঝে। ৮ জুলাই যেদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাজ্জাদ হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম মোহর আলী এক যৌথ বিবৃতি দিলেন, সেদিনকার ইত্তেফাকের নিউজ ট্রিটমেন্টের দিকে নজর রাখলেই বোঝা যাবে খবরের ভেতরের খবর খুঁজে নেওয়ার জন্য পাঠককে আহ্বান জানানো হচ্ছে। দুই অধ্যাপকের যৌথ বিবৃতির খবরটি আমরা নিচ্ছি দৈনিক পাকিস্তান থেকে:
উপাচার্য ড. সাজ্জাদ হোসেন ও অধ্যাপক ড. এম. মোহর আলীর যৌথ বিবৃতি ‘পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালীদের জীবনের নিরাপত্তা নেই—এ কথা ভিত্তিহীন’
লন্ডন, ৮ জুলাই (রয়টার)। পূর্ব পাকিস্তানের শহর ও গ্রামে বাঙালীদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই বলে যে কথা বলা হয়েছে, পূর্ব পাকিস্তানের ২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গতকাল তা অস্বীকার করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. এস. সাজ্জাদ হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের রীডার ড. এম. মোহর আলী টাইমস পত্রিকায় লিখিত এক দীর্ঘ চিঠিতে তাঁদের এই অস্বীকৃতির কথা জানান।
‘বিদেশে প্রচারিত নৃশংসতার কাহিনী’ উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এতে বিস্মিত হবার কিছু নেই যে এ ধরনের কাহিনী প্রচার অব্যাহত থাকার ফলেই এ রকম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে যে, পূর্ব পাকিস্তানে শহর ও গ্রামে বাঙালীদের বিশেষ করে শিক্ষিত বাঙালীদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই।
বুদ্ধিজীবীদের পাইকারী হত্যা করা হয়েছে বলে যে কাহিনী প্রচারিত হয়েছে, অধ্যাপকদ্বয় তাও অস্বীকার করেছেন। চিঠিতে বলা হয় যে, মার্চের ২৫/২৬ তারিখে জগন্নাথ ও ইকবাল হলের আশপাশের এলাকায় যুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয় যে, আমাদের ৩ জন সহযোগী প্রাণ হারাতেন না, যদি না তাঁরা যে ভবনগুলোতে বাস করতেন, সেগুলোকে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতো।
(দৈনিক পাকিস্তান, ৯ জুলাই ১৯৭১)
একই দিনে ইত্তেফাক এই সংবাদটির শিরোনাম করে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ৯ জন শিক্ষক প্রাণ হারান, ড. সাজ্জাদ হোসেন ও ড. মোহর আলী কর্তৃক হীন প্রচারণার প্রতিবাদ’। ‘মাত্র’ শব্দটির মধ্যে যে বিদ্রূপ আছে, সেটা সচেতন পাঠকের চোখে পড়বে।
সেদিনই ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ছিল:
‘ইয়াহিয়া-কিসিংগার বৈঠক আরম্ভ/বাস্তুত্যাগী সমস্যা ও উপমহাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে পাকিস্তানী অফিসারদের সঙ্গে নিক্সন সহকারীর আলোচনা’
এই প্রতিবেদনের ঠিক নিচেই ছাপা হয়েছে আরেকটি শিরোনাম:
ইসরাইলের ঘনবসতি এলাকায়/গেরিলাদের রকেট হামলা ইঙ্গিতটি পরিষ্কার। মুক্তিযোদ্ধারা যে এ সময় অবরুদ্ধ দেশে হামলা চালানো শুরু করেছে, তারই একটা আভাস দিয়ে দেওয়া হলো এই প্রতিবেদনে। ইয়াহিয়া-কিসিংগারের আলোচনার খবর জানার পাশাপাশি এটাও জানতে হবে যে গেরিলা বাহিনী কিন্তু সক্রিয় রয়েছে।
শুধু কি তাই? শেষের পাতার ষষ্ঠ কলামে যখন ইয়াহিয়া-কিসিংগারের খবর জাম্প হয়েছে, তার দুই পাশে দুটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। বাঁদিকের খবরের শিরোনাম:
থাইল্যান্ডে গেরিলা আক্রমণে ৭ জন সৈন্য নিহত
সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গত মঙ্গলবার দক্ষিণ থাইল্যান্ডের থাওসেইয়ান ক্যাম্পের নিকট কম্যুনিস্ট গেরিলাদের অতর্কিত আক্রমণে ৭ জন থাই সৈন্য নিহত ও ১৬ জন আহত হয়।
গত এক বৎসরের মধ্যে উক্ত এলাকায় এত সংঘর্ষ আর কখনও ঘটে নাই। ওয়াকিবহাল মহল বলেন, প্রায় ২০ জন কম্যুনিস্ট গেরিলা মেশিন গান ও হাতবোমা লইয়া একখানি সামরিক ট্রাকের উপর হামলা চালায়। মালয়েশীয় সীমান্তের নিকট সৈন্য পৌঁছানোর জন্য ট্রাকটি ব্যবহৃত হইতেছিল।’
এখানেও ইঙ্গিত পরিষ্কার। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, তখন থেকেই ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছিল। বোমা হামলা যারা করছিল, তাদের ‘দুষ্কৃতিকারী’ কিংবা ‘ভারতীয় এজেন্ট’ নামে ডাকা হলেও তারা যে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, সে কথা সে সময়ের পাঠকেরাও বুঝতে পারত।
ইয়াহিয়া-কিসিংগারের প্রতিবেদনটির ডান পাশেও ছিল আরেকটি ইঙ্গিতময় খবর। শিরোনাম:
ঐক্যই হইল চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পূর্বশর্ত/প্যালেস্টাইন আন্দোলনের দুর্বলতা সম্পর্কে আনোয়ার সাদাত।
আকলমন্দকে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়।
বিজয় দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া একটি পোস্ট নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব গণমাধ্যমেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে পাকিস্তানি
১৪ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণার পর বিষয়টি নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ নিয়ে দলের বক্তব্য স্পষ্ট ক
১৪ ঘণ্টা আগেপৃথিবীতে গণহত্যা কিংবা জেনোসাইড কম হয়নি। যত যুদ্ধের যত গণকবর রয়েছে, সেগুলো বর্বরতার সাক্ষ্য দেয়, ইতিহাসের সাক্ষ্য দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হলোকাস্টে নিহত মানুষের গণকবর যেমন সাক্ষ্য দেয়, রুয়ান্ডার নিয়াবারোঙ্গো নদীও সাক্ষ্য দেয়, তার বুক দিয়ে ভেসে গেছে রক্তস্নাত মানুষের লাশ। তবে বর্বরতার চরম মাত্রা মনে
১৪ ঘণ্টা আগেসংস্কারের দাবিগুলো শুরু থেকেই উঠছিল। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বলা হচ্ছিল—এমন একটা ব্যবস্থা চাই, যাতে ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে, তারা যেন চাইলেও স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে না পারে। প্রত্যাশিত সেই ব্যবস্থা কায়েমের জন্যই সংস্কার। বলা হলো, এই যে আমাদের সংবিধান, কাটা-ছেঁড়া করতে করতে এটাকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়
২ দিন আগে