Ajker Patrika

ঈদ মোবারক

সম্পাদকীয়
ঈদ মোবারক

এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদুল ফিতর। এটি মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ২০০ কোটি মুসলমান এ দিন আনন্দে মেতে ওঠে। বিভেদ ভুলে একে অপরকে আপন করে নেয়। ধনী-গরিব সবাই মিলে ঈদগাহে যায়, এক কাতারে ঈদের নামাজ আদায় করে। পুরো বিশ্বের মতো বাঙালি মুসলমানরাও ঈদ উদ্‌যাপন করে। নানা প্রতিকূলতা, দুঃখ-বেদনা ভুলে ঈদের আমেজে আনন্দ খোঁজে তারা। সমাজের প্রতিটি স্তরে পৌঁছে যায় খুশির ঢেউ।

ঈদের দিন নতুন জামা-কাপড় পরিধান ও ভালো খাবার পাতে তুলতে সবারই ইচ্ছা হয়। কিন্তু সাধ আর সাধ্য না মেলায় অনেকের রঙিন ঈদ ফিকে হয়ে যায়। পরস্পর আনন্দ ভাগাভাগি করার নাম ঈদ। তাই সমাজে যারা কষ্ট-দুর্দশায় দিনাতিপাত করে, তাদের ঘরেও যেন ঈদের আনন্দ আসে, সে বিষয়ে লক্ষ রাখা উচিত।

আমাদের ঈদকে উৎসবমুখর ও নিরাপদ করতে র‍্যাব, পুলিশ, আর্মি, বিজিবি, আনসার, ডাক্তার, সাংবাদিক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, নিরাপত্তাকর্মীসহ নানা পেশার মানুষ পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারে না। আমরা সাধ্য অনুযায়ী তাদের সঙ্গে ঈদের আমেজ ভাগাভাগি করতে পারি, খুশির দিনে পরিবার থেকে দূরে থাকার কষ্ট তাদের ভুলিয়ে দিতে পারি।

আমাদের অধীনস্থদের ঈদ যেন আনন্দময় হয়, সে বিষয়ে নিজেরা সতর্ক হওয়ার বিকল্প নেই। কর্মচারী, ড্রাইভার, গৃহকর্মীসহ যাঁদের আয়ের উৎস আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট; যেকোনোভাবে তাঁদের প্রাপ্য তথা বেতন-ভাতা ঈদের আগেই পরিশোধ করে দেওয়া উচিত। নিম্ন আয়ের মানুষের অনেকেই বেতন-বোনাসের জন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়, এটি লজ্জার। যাদের রক্ত-ঘামে আমরা সচ্ছল, আমাদের অবহেলায় তাদের আনন্দের দিনটি যেন কোনোভাবেই মাটি না হয়।

শহর ছেড়ে অনেকেই গ্রামে গিয়ে ঈদ করে। নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার আগে সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যক। কেননা, সামান্য অসতর্কতা কখনো কখনো বড় দুর্ঘটনার কারণ হয়। বাসা-বাড়িতে থাকা ইলেকট্রিক সংযোগ, গ্যাসলাইন, ইলেকট্রনিকস ডিভাইস—যেটা যেভাবে রেখে গেলে নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, সেভাবে রেখে যাওয়া উচিত। বাড়িওয়ালাদের ঈদের ছুটিতে ফাঁকা বাড়ির নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়াতে হবে। তা ছাড়া ঈদ ঘিরে সব ধরনের অপরাধ ও শান্তি বিনষ্টকারী অপচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।

ঈদযাত্রায় তাড়াহুড়ো না করে নিরাপদ মাধ্যম বেছে নেওয়াই কাম্য। ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে শৃঙ্খলার বিকল্প নেই। দীর্ঘ সফরের কারণে শরীর যেন অসুস্থ না হয়ে পড়ে, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এ ছাড়া যাত্রাপথে কোথাও কোথাও ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। ঈদযাত্রায় মানুষের যেন ভোগান্তি না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। পাশাপাশি হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারি-বেসরকারি জরুরি সেবা কার্যক্রম যেন কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

আমাদের দেশ সব সমস্যা-সংকট কাটিয়ে উঠুক, পৃথিবীর নানা প্রান্তে নির্যাতিত মানুষ মুক্তি পাক, ঈদের আনন্দে ধুয়ে-মুছে যাক সব দুঃখ-গ্লানি—এই প্রত্যাশায় সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

পরিবারের সামনে পুলিশ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতা-কর্মী আটক

নয়াদিল্লি হাসিনা আমলের দৃষ্টিভঙ্গিই ধরে রেখেছে: ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বিমসটেক সম্মেলনে ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি বৈঠক হচ্ছে

গ্রেপ্তার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মী আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত