কথায় কথায় গুলি করবেন না, প্রশাসনের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল 

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১: ৫৬
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২: ১৮

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা প্রশাসনকে সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, জনগণকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না। জনগণ থেকেই আপনারা এসেছেন। জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আপনাদের বেতন চলে, সংসার চলে। সুতরাং জনগণকে সম্মান করবেন। কথায় কথায় গুলি করবেন না, বেআইনি নির্দেশে। আজকে যেমন র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে, ঠিক তেমনি যেকোনো বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।’ 

আজ রোববার জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, নজিরবিহীন লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নূরে আলম, আব্দুর রহিম ও শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। জনসমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরা পশ্চিম ও উত্তরা পূর্ব থানা বিএনপি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই, এ দেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা। এই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য পরিষ্কার কথা বলতে চাই, এই ব্যর্থ সরকার, যারা এই দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে তাদেরকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে। পদত্যাগ করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।’ 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘চাল, তেল, সবজিসহ সবকিছুর দাম আমাদের আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। সবকিছু সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সাধারণ রিকশা চালক তার ছেলে-মেয়েকে পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ানোর জন্য ডিম নিয়ে যেতেন। এখন ডিমের দাম নাগালের বাইরে। চালের দাম হাসিনা বলেছিল ১০ টাকায় খাওয়াবে, সেই এখন ৬০ টাকার বেশি। হাসিনা বলেছিল, ঘরে ঘরে সরকারি চাকরি দেবে, কিন্তু এখন দেশে প্রায় ছয় কোটি যুবক বেকার। বলেছিল, বিনা পয়সার সার দেব। সেই স্যারের জন্য কৃষকেরা মিছিল করছে, প্রতিবাদ করছে, রাস্তা অবরোধ করছে।’ 

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মী যারা জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে, চাল ডালের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিল করে তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আমাদের ভাই আব্দুর রহিম, নূরে আলম ও নারায়ণগঞ্জের শাওনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শত শত নেতাকে আহত করা হয়েছে। এখন আমাদের নেতা–কর্মীরা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। গত পরশুদিন আমি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার একটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের ১৪ বছরের একটি ছোট ছেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তার বুকে, ফুসফুসে, কিডনিতে গুলি লেগেছে। বাঁচবে কিনা ডাক্তাররা বলতে পারছে না।’

ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরা পশ্চিম ও উত্তরা পূর্ব থানা বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান সভাপতিত্ব করেন। সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে সাবেক চিফ হুইপ জয়নাল আবেদিন ফারুক, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনসহ উত্তরার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

এদিকে বিএনপির জনসমাবেশকে প্রতিহত করতে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। দুপুরের পর থেকে আজমপুরে নেতা–কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এতে নেতৃত্ব দেন ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাবিব হাসান। এ সময় হাবিব হাসান বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত নৈরাজ্য, সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা করছে। তাই মাথাচাড়া দেওয়ার আগেই তাদের প্রতিহত করতে হবে।’ 

এতে দক্ষিণখান ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম তোফাজ্জল হোসেন ছাড়াও কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত