জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘বর্তমানে নির্বাচনে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে, তাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। আমরা এর কিছু না কিছু পরিবর্তন দেখতে চাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার জন্য আমরা একসময়ে সব দলই আন্দোলন করেছি, নির্বাচন বর্জন করেছি। প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বাইরেও একটি ব্যবস্থা দরকার, যেখানে জনগণ তাঁদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারবেন।’
আজ বুধবার বিকেল রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেছেন, ‘সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকতে হবে নির্বাচনব্যবস্থা। সরকারের নিয়ন্ত্রণের ভেতরে থেকে যে নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে সরকারের ইচ্ছে মতো ফলাফল (জয়-পরাজয়) নির্ধারিত হচ্ছে। এটা কোনো নির্বাচনব্যবস্থা বলা যায় না।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। আমরা জাতীয় পর্যায়ের একটি রাজনৈতিক দল, দেশ শাসনের অভিজ্ঞতা আছে। দেশের সমস্ত এলাকায় আমাদের সমর্থক আছে, ভোটার আছে, আমাদের কিছু না কিছু সংগঠন আছে, নেতৃত্বও আছে। আমরা সেটাকে সংগঠিত করতে চাই। সামনের দিকে জাতীয় পার্টি একটি বিকল্প শক্তি হিসেবে গড়ে উঠবে।’
জোটের বিষয়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশে যে দুইটি বড় দল ’৯১-এর পর থেকে বারবার ক্ষমতায় আসছে, তাদের অনেক বিষয়ে জনগণ সন্তুষ্ট নয়। জনগণ কিছু পরিবর্তন চায়। সেই মৌলিক পরিবর্তনগুলো করার জন্য আমরা জাতীয় পার্টিকে গড়ে তুলতে চাই। নির্বাচনের আগে আমরা আমাদের অবস্থান, সাংগঠনিক শক্তি ও সমর্থন বিবেচনা করে যেটা ভালো মনে হয় করব, কারও সঙ্গে জোট করতে হলেও করব। এককভাবে করার অ্যাবিলিটি যদি থাকে সেটিও চিন্তা করব। তবে এখন পর্যন্ত আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিইনি।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে যদি নির্বাচন না হয়, সে ক্ষেত্রে কী করবেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে জি এম কাদের বলেন, ‘নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে দেশের রাজনীতির কী ধরনের অবস্থা দাঁড়ায়, সারা দেশের পরিস্থিতি কী হয়, তার ওপর ভিত্তি করে আমাদের নেতা-কর্মী এবং দলীয় নীতিনির্ধারক মহলের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা সাপেক্ষে দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে যেটা করা দরকার তখন আমরা সেটা করব। তবে এই মুহূর্তে আমরা সেই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হই নাই।’
ডলার সংকট নিয়ে জাপার চেয়ারম্যান বলেন, ‘ডলার সংকটটি একটি ভয়াবহ সংকট। আমি মনে করি, এটা রাজনৈতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। বর্তমান সরকারের জন্য এটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে। ডলার সংকটের কারণে সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হতে পারে। দেশে বড় ধরনের একটা রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হতে পারে।’
এ সময় তাঁর সঙ্গে রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসিরসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।