বাজেটে অর্থনৈতিক সংকটের সমাধান নেই: ইনু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জুন ২০২৪, ২০: ২০
Thumbnail image

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে অর্থনৈতিক বিভিন্ন সংকট চিহ্নিত করা হলেও সেই সংকট সমাধানের কোনো উপায় দেখানো হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে জাসদ আয়োজিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। 

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বাজারে নিত্যপণ্যের উচ্চ মূল্য, ডলার সংকট, সুদের হারের গন্ডগোল, ব্যাংকের বিশৃঙ্খলা, রাজস্ব আনয়নে ধীর গতি এবং সমগ্র অর্থনীতিতে যে অনাস্থা ভাব ও শাসন প্রক্রিয়ার অনুপস্থিতি, সবকিছু মিলিয়ে একটা অর্থনৈতিক সংকট সময় পার করছি। এসব ধাক্কা সামলানোর বাজেট আমরা আশা করেছিলাম। এই বাজেটে অর্থমন্ত্রী সব সমস্যা চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু আমি যখন পাতার পর পাতা দেখি, তখন কোনো সমাধান খুঁজে পাইনি। শুধু কিছু বরাদ্দের হেরফের দেখি, আর কিছু নেই।’ 

এই বাজেটকে ‘ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট’ বাজেট উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবার প্রবৃদ্ধি ধরেছে। কী দরকার ছিল প্রবৃদ্ধি ধরার? আমাদের তো দরকার মূল্যস্ফীতি কমানো। প্রবৃদ্ধি বেশি না বাড়িয়ে প্রকল্প কাটছাঁট করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা খাতে টাকা বাড়িয়ে মানুষের মধ্যে স্বস্তি আনা যেত। উন্নয়নের এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে লোক দেখানো ফুটানি।’ 

দাগি ঋণখেলাপিদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে নিয়ে ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে জানিয়ে ইনু বলেন, ‘যারা ধনী ও সামর্থ্যবান, তাদের করের জালে আনেন। দাগি বড়লোকদের গলায় পা দিয়ে কর দিতে বাধ্য করেন। উপজেলায় রাজস্ব অফিস নেই কেন? একটা ইউনিয়নে পাঁচটা গ্রোথ সেন্টার আছে। ইউনিয়নে যারা স্থায়ী দোকান নিয়ে ব্যবসা করে, তাদের করের জালে আনেন।’ 

সভায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের পরিচালক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘বাজারব্যবস্থার সংশোধন ছাড়া মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব হবে না। তাই আমাদের বাজার নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য আরও ব্যয় বাড়ানো প্রয়োজন। আমাদের গার্মেন্টস শ্রমিকেরা যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার আনেন, তার থেকে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার আনেন প্রবাসী শ্রমিকেরা। তাই এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজন আছে।’ 

সভায় পর্যালোচনা বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। তিনি বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষের কাছে বাজেট মানে আতঙ্ক। সাধারণ মানুষ কোনো জিনিসের দাম কতটুকু বাড়বে, তাদের জীবনযাপন ব্যয় কতটুকু বাড়বে, এগুলো নিয়ে চিন্তিত।’ 

এ সময় ব্যক্তিমালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে উৎপাদন হোক বা না হোক, ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়ার চুক্তি সংশোধন করে ‘নো প্রোডাকশন নো চার্জ’ চুক্তি করা, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধ করা, সামাজিক সুরক্ষা বাস্তবায়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণে জিডিপির ২ শতাংশ ও জাতীয় বাজেটের ৮ শতাংশ বরাদ্দ এবং মোবাইল ফোনের টকটাইম-ইন্টারনেট ডেটার ওপর শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত