Ajker Patrika

সংবিধান সংশোধন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না: আবদুর রব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সংবিধান সংশোধন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না: আবদুর রব

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহিতার কোন জায়গা রাখা হয়নি। ন্যায়পাল নিয়োগের কথা থাকলেও তা কখনো বাস্তবতার মুখ দেখেনি। এ কারণে সংবিধান সংশোধন না করে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর করা যাবে না এবং দেশে শান্তিও আসবে না।’  

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জেএসডি আয়োজিত আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ: বাস্তবতা ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে আ স ম আবদুর রব এ কথা বলেন। এর আগে সভার শুরুতে আলোচিত বিষয়ের ওপর প্রস্তাবনা পাঠ করেন তিনি। 

আবদুর রব বলেন, ‘পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশেই ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহি করার মত সংবিধান আছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা আমাদের সংবিধানে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারিনি।’

প্রস্তাবনায় বলা হয়, সরকার ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে সংবিধান বহির্ভূত কাজে সম্পৃক্ত করে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য এবং ‘ক্ষমতার বিভাজন’ বিনষ্ট করে ফেলেছে, প্রজাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য ক্ষুণ্ন করে ফেলেছে। সংবিধান এবং রাষ্ট্র এখন সরকারের ইচ্ছাধীন হয়ে পড়ছে।

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পরিবর্তন ও আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ পরিস্থিতি উত্তরণে প্রস্তাবনায় পাঁচটি সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলো হলো সংবিধান সংস্কার, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকারের নিশ্চয়তা, রাষ্ট্র মেরামত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। 

এ সময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকার সমস্যার সমাধান এবং জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ৩১ মার্চ সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেন তিনি।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকী, গণফোরামের (একাংশ) নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যে বাড়ায় ট্রাকের পেছনে মানুষের ছোটাছুটি দুর্ভিক্ষের ইঙ্গিত দেয়। সুখকে অনেক দেশ উন্নতির মাপকাঠি মনে করে। কিন্তু আমাদের ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভূত চেপে বসেছে। এর সমাধান হচ্ছে এ ভূতকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে হবে। অতএব উন্নত জীবন এবং সুখের জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে।’

সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক আবু সাইদ বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করার কথা বলা হয়েছে কিন্তু এখন সব ক্ষমতা এক জায়গায় এসে জমেছে। এমনকি রাষ্ট্রপিতাকে পর্যন্ত দলীয়করণ করা হয়েছে।’

আবু সাইদ বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলোতে সুযোগের সমতা, মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলো আছে। রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে তা সংবিধানে আছে। রাষ্ট্র শক্তিশালী হলে মানুষের অধিকার খর্ব করে এ জন্য মৌলিক মানবাধিকারের ঘোষণায় রাষ্ট্রের কিছু সীমাবদ্ধতা দেওয়া হয়েছে।’

আমলাদের ক্ষমতা চর্চার সমালোচনা করে আবু সাইদ বলেন, ‘আমলাদের ক্ষমতা খর্ব করে তাদেরকে প্রজাতন্ত্রের কামলা হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে।’  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত