গোলাম ওয়াদুদ
ঢাকা: করোনাভাইরাস এবং এর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি সবার ওপরই প্রভাব ফেলেছে। তফাৎ শুধু মাত্রায়। এ এক শাঁখের করাত। একদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে লকডাউন দিলে জীবন বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়ে নিম্ন আয়ের মানুষদের। এই দ্বিতীয় তালিকা ক্রমেই লম্বা হচ্ছে। কারণ, করোনা সমাজের বহু মানুষের শ্রেণি পরিচয় বদলে দিয়েছে, বদলে দিয়েছে পেশা। এমনই একজন মো. রুবেল।
করোনার প্রকোপ রোধে আগামী ১ জুলাই থেকে দেশে আবারও কঠোর লকডাউন আরোপ হচ্ছে। আর লকডাউন মানেই জরুরি কাজ ছাড়া রাস্তায় বেরোনো বারণ। কিন্তু রাস্তায় না বেরোলে রুবেলের চলবে কী করে? পেশা বদলে তিনি তো এখন পুরোদস্তুর রিকশাচালক। এই তিন চাকাতেই তো চলে তাঁর সাতজনের সংসার। রুবেল সবই বোঝেন। বোঝেন বলেই বললেন, ‘যেভাবে মানুষ মরছে, তাতে লকডাউন দেওয়া ঠিক আছে। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ, আমরা তো বাঁচতে পারি না। আবার সব দিক দেখলে ঠিক আছে। আমাদের বাঁচার ব্যবস্থা করে লকডাউন দিক, কোনো সমস্যা নেই।’
ধানমন্ডি–১৫ নম্বর এলাকায় কথা হয় রুবেলের সঙ্গে। বরগুনার আমতলী এলাকা থেকে রাজধানীতে রাজা হতে নয়, একটু ভালোভাবে বাঁচার আশায় এসেছিলেন। নিউমার্কেটে শার্ট–প্যান্টের বোতাম লাগানোর মেশিন চালাতে চালাতে সে আশায় হাওয়াও লাগছিল হয়তো। কিন্তু করোনা সব ওলট–পালট করে দিল। করোনার কারণে ব্যবসা সংকোচনের কারণে চাকরি চলে যায় তাঁর। হাজারিবাগের বউবাজারের ছোট্ট বাসার ভাড়া মেটানোও কষ্টকর হয়ে ওঠে। আর বৃদ্ধ বাবা, মা, ছোট ভাই, স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে সাতজনের সংসারের কথা তুললে রুবেলের ঘোলা চোখ ছাড়া আর কিছুই দেখার উপায় নেই।
রুবেল সত্যিকার অর্থেই তখন অথৈ সাগরে পড়েছিলেন। বাড়ি ভাড়া বাকি। অথচ মাস শেষে ভাড়া না দিলে ঢাকায় থাকাটাই তো হবে না। সে সময় এক রিকশা গ্যারেজের মহাজনের কাছ থেকে ধার নিয়ে বাড়ি ভাড়া শোধ করেন। এর পর থেকে নিয়মিত রিকশা চালিয়েই সংসার চালাচ্ছেন। দৈনিক ৬০০–৭০০ টাকা আয় হয়। এ দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলে তাঁর। এখন এই কঠোর লকডাউনের কথা শুনে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাঁর কপালে।
কঠোর লকডাউনে চলবেন কীভাবে—এমন প্রশ্নে রুবেল বলেন, ‘আমার এক মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি। মালিক বলেছেন এই মাসে টাকা না দিলে ঘরে তালা দেবে। আমাকে তাই রাস্তায় বের হতেই হবে। চাল কেনার টাকাটা যদি ইনকাম করতে পারি, তাও খাইতে পারমু।’
কিন্তু রাস্তায় নামতে না দিলে কী করবেন রুবেল? উত্তর পেতে কিছুক্ষণ লাগল। শেষে বললেন, ‘আমাদের মতো গরিবদের আল্লাহই দেখব। আল্লাহর কাছে চাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নাই আমাদের।’
কেন সরকার? না, রুবেল সরকার বা অন্য কারও কাছ থেকে এই দুঃসময়ে কোনো অনুদান বা সাহায্য পাননি। বললেন, ‘নেতাদের কাছে চাইলে তাঁরা দামই দেয় না। আমাদের তুচ্ছ–তাচ্ছিল্য করে। তাই এক আল্লাহর কাছেই চাই।’
রুবেলের এই কথার আর কোনো উত্তর খুঁজে পাওয়া গেল না। পাওয়া গেল না, পাল্টা কোনো প্রশ্নের খোঁজও। রুবেলের কথা ও জীবনের মধ্যে যে প্রশ্ন আছে, তাকে পাশ কাটিয়ে আর কোনো প্রশ্ন মুখে ও মগজে এল না।
ঢাকা: করোনাভাইরাস এবং এর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি সবার ওপরই প্রভাব ফেলেছে। তফাৎ শুধু মাত্রায়। এ এক শাঁখের করাত। একদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে লকডাউন দিলে জীবন বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়ে নিম্ন আয়ের মানুষদের। এই দ্বিতীয় তালিকা ক্রমেই লম্বা হচ্ছে। কারণ, করোনা সমাজের বহু মানুষের শ্রেণি পরিচয় বদলে দিয়েছে, বদলে দিয়েছে পেশা। এমনই একজন মো. রুবেল।
করোনার প্রকোপ রোধে আগামী ১ জুলাই থেকে দেশে আবারও কঠোর লকডাউন আরোপ হচ্ছে। আর লকডাউন মানেই জরুরি কাজ ছাড়া রাস্তায় বেরোনো বারণ। কিন্তু রাস্তায় না বেরোলে রুবেলের চলবে কী করে? পেশা বদলে তিনি তো এখন পুরোদস্তুর রিকশাচালক। এই তিন চাকাতেই তো চলে তাঁর সাতজনের সংসার। রুবেল সবই বোঝেন। বোঝেন বলেই বললেন, ‘যেভাবে মানুষ মরছে, তাতে লকডাউন দেওয়া ঠিক আছে। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ, আমরা তো বাঁচতে পারি না। আবার সব দিক দেখলে ঠিক আছে। আমাদের বাঁচার ব্যবস্থা করে লকডাউন দিক, কোনো সমস্যা নেই।’
ধানমন্ডি–১৫ নম্বর এলাকায় কথা হয় রুবেলের সঙ্গে। বরগুনার আমতলী এলাকা থেকে রাজধানীতে রাজা হতে নয়, একটু ভালোভাবে বাঁচার আশায় এসেছিলেন। নিউমার্কেটে শার্ট–প্যান্টের বোতাম লাগানোর মেশিন চালাতে চালাতে সে আশায় হাওয়াও লাগছিল হয়তো। কিন্তু করোনা সব ওলট–পালট করে দিল। করোনার কারণে ব্যবসা সংকোচনের কারণে চাকরি চলে যায় তাঁর। হাজারিবাগের বউবাজারের ছোট্ট বাসার ভাড়া মেটানোও কষ্টকর হয়ে ওঠে। আর বৃদ্ধ বাবা, মা, ছোট ভাই, স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে সাতজনের সংসারের কথা তুললে রুবেলের ঘোলা চোখ ছাড়া আর কিছুই দেখার উপায় নেই।
রুবেল সত্যিকার অর্থেই তখন অথৈ সাগরে পড়েছিলেন। বাড়ি ভাড়া বাকি। অথচ মাস শেষে ভাড়া না দিলে ঢাকায় থাকাটাই তো হবে না। সে সময় এক রিকশা গ্যারেজের মহাজনের কাছ থেকে ধার নিয়ে বাড়ি ভাড়া শোধ করেন। এর পর থেকে নিয়মিত রিকশা চালিয়েই সংসার চালাচ্ছেন। দৈনিক ৬০০–৭০০ টাকা আয় হয়। এ দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলে তাঁর। এখন এই কঠোর লকডাউনের কথা শুনে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাঁর কপালে।
কঠোর লকডাউনে চলবেন কীভাবে—এমন প্রশ্নে রুবেল বলেন, ‘আমার এক মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি। মালিক বলেছেন এই মাসে টাকা না দিলে ঘরে তালা দেবে। আমাকে তাই রাস্তায় বের হতেই হবে। চাল কেনার টাকাটা যদি ইনকাম করতে পারি, তাও খাইতে পারমু।’
কিন্তু রাস্তায় নামতে না দিলে কী করবেন রুবেল? উত্তর পেতে কিছুক্ষণ লাগল। শেষে বললেন, ‘আমাদের মতো গরিবদের আল্লাহই দেখব। আল্লাহর কাছে চাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নাই আমাদের।’
কেন সরকার? না, রুবেল সরকার বা অন্য কারও কাছ থেকে এই দুঃসময়ে কোনো অনুদান বা সাহায্য পাননি। বললেন, ‘নেতাদের কাছে চাইলে তাঁরা দামই দেয় না। আমাদের তুচ্ছ–তাচ্ছিল্য করে। তাই এক আল্লাহর কাছেই চাই।’
রুবেলের এই কথার আর কোনো উত্তর খুঁজে পাওয়া গেল না। পাওয়া গেল না, পাল্টা কোনো প্রশ্নের খোঁজও। রুবেলের কথা ও জীবনের মধ্যে যে প্রশ্ন আছে, তাকে পাশ কাটিয়ে আর কোনো প্রশ্ন মুখে ও মগজে এল না।
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪প্রতিদিন ভোরে ট্রেনের হুইসেলে ঘুম ভাঙে রাকিব হাসানের। একটু একটু করে গড়ে ওঠা রেলপথ নির্মাণকাজ তাঁর চোখে দেখা। এরপর রেলপথে ট্রেন ছুটে চলা, ট্রেন ছুঁয়ে দেখা—সবই হলো; কিন্তু এখনো হয়নি চড়া। রাকিবের মুখে তাই ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার বিখ্যাত গান। ‘আমার বলার কিছু ছিল না, চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪