মিজান মাহী, দুর্গাপুর (রাজশাহী)
সেলুনের ভেতরে বেশ কয়েকজন বসে আছেন। এর মধ্যে একজনের দিকে চোখ যাবেই। তিনি পত্রিকা দিয়ে মুখ আড়াল করে রেখেছেন। প্রথম দেখায় মনে হবে, লজ্জায় হয়তো মুখ ঢেকে আছেন তিনি। ভালো করে দেখলে ও কান খাড়া করলে বোঝা যাবে, গুনগুন করে আসলে তিনি পত্রিকা পড়ছেন। নাম হাবিবুর রহমান। চোখে কম দেখেন বলেই পত্রিকা চোখের কাছে টেনে ধরেছেন। নিজেকে তিনি ‘ছাপা পত্রিকায় আসক্ত’ বলে দাবি করেন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় হাবিবুর রহমানের সাক্ষাৎ পাওয়া গেল রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা সদরের মোড়ের একটি সেলুনে। ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি পড়াশোনা করেছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। পেশায় কৃষক হাবিবুর থাকেন পৌর এলাকার গোড়খাই গ্রামে। তিনি যে সেলুনে বসে আছেন, সেখানে আর পাঁচজন থেকে তাঁকে আলাদা করে নজরে পড়বেই। পড়লও।
পরিচয় দিয়ে কথা শুরু করতেই হাবিবুর জানালেন, ৩০ বছর ধরে ছাপা পত্রিকা পড়ার নেশায় আসক্ত তিনি। এখন চোখে কম দেখেন। তাই পত্রিকা চোখের কাছে এনে পড়তে হয়। যত দিন বাঁচবেন, পত্রিকা পড়বেন।
হাবিবুরের চোখ ঠিকঠাকই ছিল। সমস্যার শুরু চার বছর আগে। গত চার বছর ধরে একটু দূরে থাকা অক্ষর আগের মতো আর স্পষ্ট দেখতে পান না। এ কারণে একেবারেই চোখের সামনে পত্রিকা ধরে পড়তে হয়।
দুর্গাপুর সদর বাজার থেকে হাবিবুরের গ্রাম গোড়খাই দুই কিলোমিটার দূরে। পত্রিকা পড়ার জন্য তাঁকে বাজার পর্যন্ত আসতে হয়। হাবিবুরের এতে কোনো ক্লান্তি নেই। প্রতিদিন মাঠের কাজ শেষে এই কৃষক সাইকেল চড়ে চলে আসেন বাজারে। বিকেলে থেকে রাত পর্যন্ত একে একে ৪-৫টি দোকান ও স্টলে বসে পত্রিকা পড়েন। প্রতিদিন প্রতিটি খবর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েন। ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক, প্রতিদিন পত্রিকার খবর পড়তেই হবে তাঁর। না পড়লে তাঁর ঘুমই আসে না বলে দাবি করলেন।
হাবিবুর জানান, ১৯৭২ সালে তিনি অষ্টম শ্রেণি পাস করেন। সুযোগের অভাবে আর পড়াশোনা হয়নি। তাই নেমে পড়েন কৃষি কাজে। ছোটবেলা থেকেই পড়ার প্রতি ঝোঁক ছিল। কিন্তু সামর্থ্য ছিল না। এখনো তেমন নেই। আগে বাজারে পত্রিকা আসত না। তখন লাইব্রেরি বা বইয়ের দোকানে মাসিক পত্রিকা পড়তেন। ১৯৯০ সালের দিকে শুরু হয় তাঁর দৈনিক পত্রিকা পড়ার। তবে কিনে পড়ার সামর্থ্য নেই। তাই বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে পত্রিকা পড়েন।
এক ছেলে ও তিন মেয়ের এ জনক বলেন, ‘এখন চোখে খুব কম দেখি। টাকার অভাবে চোখের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি। একটা চশমাও নেই।’ পত্রিকাপ্রীতি নিয়ে বললেন, ‘কখন পত্রিকা হাতে নিয়ে পড়ব। বিকেল হলেই এ দোকান থেকে ওই দোকান ছুটে বেড়াই। প্রতিদিন ৪-৫টা দোকানে বসি।’
পত্রিকায় কী পড়েন হাবিবুর রহমান? প্রশ্ন বরং কী পড়েন না? তবে হ্যাঁ, তাঁর আগ্রহ বেশি রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক খবরের দিকে। আর স্থানীয় খবর পেলে তাঁর বেশি ভালো লাগে।
হাবিবুরকে এলাকার সবাই পত্রিকাপ্রেমী হিসেবেই চেনে। ফলে যেসব দোকানে পত্রিকা রাখা হয়, তার সবগুলোতে তাঁর অবাধ যাতায়াত আছে। এমনই একটি দোকান হলো আফাজ টেলিকম। হাবিবুর সেখানে নিয়মিত যান এবং সেখানে রাখা পত্রিকা পড়েন।
উপজেলা মোড়ের আফাজ টেলিকমের স্বত্বাধিকারী আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘হাবিবুর পত্রিকাপ্রেমী। এই মোড়ের সবাই তাঁকে পত্রিকাপ্রেমী হিসেবে চিনে। তাঁকে কোথাও না পাওয়া গেলে বিকেলে এ মোড়ের যেকোনো দোকান বা স্টলে পত্রিকা হাতে পাওয়া যাবে। আমি দোকানে প্রায় পাঁচ বছর ধরে পত্রিকা রাখি। ঝড়ঝাপটা বৃষ্টি-বাদল নেই, তিনি কিছু মানেন না। বিকেল হলে একবার আমার দোকানে পত্রিকা পড়তে আসবেনই। চোখে দেখে না। অনেক কষ্ট ও ধৈর্য নিয়ে পত্রিকা চোখের সামনে টেনে গুনগুন করে পড়েন।
সেলুনের ভেতরে বেশ কয়েকজন বসে আছেন। এর মধ্যে একজনের দিকে চোখ যাবেই। তিনি পত্রিকা দিয়ে মুখ আড়াল করে রেখেছেন। প্রথম দেখায় মনে হবে, লজ্জায় হয়তো মুখ ঢেকে আছেন তিনি। ভালো করে দেখলে ও কান খাড়া করলে বোঝা যাবে, গুনগুন করে আসলে তিনি পত্রিকা পড়ছেন। নাম হাবিবুর রহমান। চোখে কম দেখেন বলেই পত্রিকা চোখের কাছে টেনে ধরেছেন। নিজেকে তিনি ‘ছাপা পত্রিকায় আসক্ত’ বলে দাবি করেন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় হাবিবুর রহমানের সাক্ষাৎ পাওয়া গেল রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা সদরের মোড়ের একটি সেলুনে। ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি পড়াশোনা করেছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। পেশায় কৃষক হাবিবুর থাকেন পৌর এলাকার গোড়খাই গ্রামে। তিনি যে সেলুনে বসে আছেন, সেখানে আর পাঁচজন থেকে তাঁকে আলাদা করে নজরে পড়বেই। পড়লও।
পরিচয় দিয়ে কথা শুরু করতেই হাবিবুর জানালেন, ৩০ বছর ধরে ছাপা পত্রিকা পড়ার নেশায় আসক্ত তিনি। এখন চোখে কম দেখেন। তাই পত্রিকা চোখের কাছে এনে পড়তে হয়। যত দিন বাঁচবেন, পত্রিকা পড়বেন।
হাবিবুরের চোখ ঠিকঠাকই ছিল। সমস্যার শুরু চার বছর আগে। গত চার বছর ধরে একটু দূরে থাকা অক্ষর আগের মতো আর স্পষ্ট দেখতে পান না। এ কারণে একেবারেই চোখের সামনে পত্রিকা ধরে পড়তে হয়।
দুর্গাপুর সদর বাজার থেকে হাবিবুরের গ্রাম গোড়খাই দুই কিলোমিটার দূরে। পত্রিকা পড়ার জন্য তাঁকে বাজার পর্যন্ত আসতে হয়। হাবিবুরের এতে কোনো ক্লান্তি নেই। প্রতিদিন মাঠের কাজ শেষে এই কৃষক সাইকেল চড়ে চলে আসেন বাজারে। বিকেলে থেকে রাত পর্যন্ত একে একে ৪-৫টি দোকান ও স্টলে বসে পত্রিকা পড়েন। প্রতিদিন প্রতিটি খবর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েন। ঝড়-বৃষ্টি যাই হোক, প্রতিদিন পত্রিকার খবর পড়তেই হবে তাঁর। না পড়লে তাঁর ঘুমই আসে না বলে দাবি করলেন।
হাবিবুর জানান, ১৯৭২ সালে তিনি অষ্টম শ্রেণি পাস করেন। সুযোগের অভাবে আর পড়াশোনা হয়নি। তাই নেমে পড়েন কৃষি কাজে। ছোটবেলা থেকেই পড়ার প্রতি ঝোঁক ছিল। কিন্তু সামর্থ্য ছিল না। এখনো তেমন নেই। আগে বাজারে পত্রিকা আসত না। তখন লাইব্রেরি বা বইয়ের দোকানে মাসিক পত্রিকা পড়তেন। ১৯৯০ সালের দিকে শুরু হয় তাঁর দৈনিক পত্রিকা পড়ার। তবে কিনে পড়ার সামর্থ্য নেই। তাই বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে পত্রিকা পড়েন।
এক ছেলে ও তিন মেয়ের এ জনক বলেন, ‘এখন চোখে খুব কম দেখি। টাকার অভাবে চোখের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি। একটা চশমাও নেই।’ পত্রিকাপ্রীতি নিয়ে বললেন, ‘কখন পত্রিকা হাতে নিয়ে পড়ব। বিকেল হলেই এ দোকান থেকে ওই দোকান ছুটে বেড়াই। প্রতিদিন ৪-৫টা দোকানে বসি।’
পত্রিকায় কী পড়েন হাবিবুর রহমান? প্রশ্ন বরং কী পড়েন না? তবে হ্যাঁ, তাঁর আগ্রহ বেশি রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক খবরের দিকে। আর স্থানীয় খবর পেলে তাঁর বেশি ভালো লাগে।
হাবিবুরকে এলাকার সবাই পত্রিকাপ্রেমী হিসেবেই চেনে। ফলে যেসব দোকানে পত্রিকা রাখা হয়, তার সবগুলোতে তাঁর অবাধ যাতায়াত আছে। এমনই একটি দোকান হলো আফাজ টেলিকম। হাবিবুর সেখানে নিয়মিত যান এবং সেখানে রাখা পত্রিকা পড়েন।
উপজেলা মোড়ের আফাজ টেলিকমের স্বত্বাধিকারী আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘হাবিবুর পত্রিকাপ্রেমী। এই মোড়ের সবাই তাঁকে পত্রিকাপ্রেমী হিসেবে চিনে। তাঁকে কোথাও না পাওয়া গেলে বিকেলে এ মোড়ের যেকোনো দোকান বা স্টলে পত্রিকা হাতে পাওয়া যাবে। আমি দোকানে প্রায় পাঁচ বছর ধরে পত্রিকা রাখি। ঝড়ঝাপটা বৃষ্টি-বাদল নেই, তিনি কিছু মানেন না। বিকেল হলে একবার আমার দোকানে পত্রিকা পড়তে আসবেনই। চোখে দেখে না। অনেক কষ্ট ও ধৈর্য নিয়ে পত্রিকা চোখের সামনে টেনে গুনগুন করে পড়েন।
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪প্রতিদিন ভোরে ট্রেনের হুইসেলে ঘুম ভাঙে রাকিব হাসানের। একটু একটু করে গড়ে ওঠা রেলপথ নির্মাণকাজ তাঁর চোখে দেখা। এরপর রেলপথে ট্রেন ছুটে চলা, ট্রেন ছুঁয়ে দেখা—সবই হলো; কিন্তু এখনো হয়নি চড়া। রাকিবের মুখে তাই ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার বিখ্যাত গান। ‘আমার বলার কিছু ছিল না, চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪