হিগস–বোসনকে কেন ‘ঈশ্বরকণা’ বলা হয়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৪: ৫৫
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬: ১৪

ঈশ্বরকণা বলে পরিচিত হিগস–বোসন কণার জনকের কথা বললেই চলে আসে পিটার হিগসের নাম। আলোচিত এই পদার্থবিদ মারা গেছেন। গত সোমবার যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই ব্রিটিশ বিজ্ঞানী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। 

পিটার হিগস প্রায় পাঁচ দশক এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। তিনি ১৯৬৪ সালে হিগস–বোসন কণা তথা ঈশ্বরকণার অস্তিত্বের কথা বলে বৈজ্ঞানিক মহলে রীতিমতো হইচই ফেলে দেন। এর পাঁচ দশক পর ঈশ্বরকণার উপস্থিতি প্রমাণ করে সার্ন (CERN) বা ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ। ২০১৩ সালে এই তত্ত্বের জন্য পদার্থবিদ্যায় যৌথভাবে নোবেল পান হিগস। 

সার্নের বিজ্ঞানীরা ২০০৮ সাল থেকে জোরেশোরে ঈশ্বরকণার বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। টানা চার বছর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে ২০১২ সালে সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত সার্নের লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে বিজ্ঞানীরা এই উপস্থিতির প্রমাণ পান। 

ঈশ্বরকণার উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়ার এক বছর পর গুরুত্বপূর্ণ এই আবিষ্কারের জন্য নোবেল জেতেন পিটার হিগস। অবশ্য তিনি বেলজিয়ামের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রাঁসোয়া এনগেলার্টের সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার পান। ১৯৬৪ সালে পিটার হিগস যে তত্ত্ব দিয়েছিলেন, তাতে অবদান ছিল এনগেলার্টের। 

হিগস–বোসন কণা কী
সার্নের মতে, বিভিন্ন ধরনের কণার সমন্বয়েই মহাবিশ্বের সবকিছু গঠিত। কিন্তু মহাবিশ্ব সৃষ্টির সূচনায় এই কণাগুলোর ভর ছিল না। সে সময় থেকে সেগুলো আলোর বেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আর আজ আমরা যে গ্রহ, নক্ষত্র ও জীবনের বিকাশ দেখি, তা মূলত গঠিত হয়েছে হিগস–বোসন কণা সংশ্লিষ্ট একটি মৌলিক ক্ষেত্র থেকে অন্যান্য কণা ভর লাভ করে।

সার্নের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই হিগস–বোসন কণার ভর ১২৫ বিলিয়ন ইলেকট্রন ভোল্ট এবং এর আকার মৌলিক কণা প্রোটনের চেয়ে প্রায় ১৩০ গুণ বড়। মজার ব্যাপার হলো—হিগস–বোসন কণা আবিষ্কারের জন্য পিটার হিগস নোবেল পেলেও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে উপমহাদেশীয় বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নাম।

কেন হিগস–বোসন কণাকে ‘ঈশ্বর কণা’ বলা হয় 
হিগস–বোসন কণা সাধারণভাবে ‘ঈশ্বরকণা’ বা ‘দ্য গড পার্টিকল’ নামে পরিচিত। তবে এই নাম পিটার হিগস নিজে দেননি। এই নাম এসেছে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী লিওন লেডারম্যানের বই থেকে। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত বইটির নাম ছিল প্রথমে ‘গডড্যাম পার্টিকল’। কিন্তু উচ্চারণে ব্যাপক খটমট সৃষ্টি করা এই নাম শেষ পর্যন্ত বেশি দিন টেকেনি। পরে এই বইয়ের নামই করা হয় ‘দ্য গড পার্টিকল’ হিসেবে। 

পরে এই নামটিই হিগস–বোসন কণার প্রতিশব্দ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। বিশেষ করে, এই যে প্রকৃতি সেটির কারণেই আরও এই নামটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। কারণ, এটি এমন একধরনের কণা, যা বিশ্বের প্রতিটি ভরহীন কণাকে বল প্রদান করে। আর হিগস-বোসন কণা অন্যান্য কণাগুলোকে বল বা ভর প্রদান না করলে আমাদের এই মহাবিশ্বের কোনো কিছুই গঠিত হতো না। 

তথ্যসূত্র: এএফপি

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত